Sunday 11 September 2022

মার্কিন সামরিক বাহিনী মারাত্মক রিক্রুটিং সমস্যায় পড়েছে কেন?

১১ই সেপ্টেম্বর ২০২২
 
মার্কিন তরুণরা সামরিক সার্ভিসে আসতে চাইছে না অথবা সার্ভিসে যোগ দেবার মতো যথেষ্ট শারীরিক বা মানসিক যোগ্যতা তাদের নেই; যা কিনা সামরিক বাহিনীতে রিক্রুটিংএর ক্ষেত্রে বিরাট সমস্যার জন্ম দিয়েছে। রিক্রুটরা হয় অতিরক্ত ওজনের অথবা তাদের অন্যান্য মেডিক্যাল সমস্যা রয়েছে, অথবা মানসিকভাবে পুরোপুরিভাবে কর্মক্ষম নয়, অথবা তাদের মাঝে গুরুতর অপরাধ করার প্রবণতা রয়েছে, অথবা তাদের মাদকের মাঝে ডুবে থাকার প্রবণতা রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন রাজ্যের পত্রিকা ‘দ্যা স্পোকসম্যান রিভিউ’এর সাথে এক সাক্ষাতে মার্কিন সেনাবাহিনীর প্রথম কোরএর কমান্ডার লেঃ জেনারেল জেভিয়ার ব্রানসন বলেন যে, মার্কিন তরুণরা সামরিক সার্ভিসে আসতে চাইছে না অথবা সার্ভিসে যোগ দেবার মতো যথেষ্ট শারীরিক বা মানসিক যোগ্যতা তাদের নেই; যা কিনা সামরিক বাহিনীতে রিক্রুটিংএর ক্ষেত্রে বিরাট সমস্যার জন্ম দিয়েছে। রিক্রুটরা হয় অতিরক্ত ওজনের অথবা তাদের অন্যান্য মেডিক্যাল সমস্যা রয়েছে, অথবা মানসিকভাবে পুরোপুরিভাবে কর্মক্ষম নয়, অথবা তাদের মাঝে গুরুতর অপরাধ করার প্রবণতা রয়েছে, অথবা তাদের মাদকের মাঝে ডুবে থাকার প্রবণতা রয়েছে। গত ২রা সেপ্টেম্বর প্রকাশিত সাক্ষাতকারে জেনারেল ব্রানসন বলছেন যে, এটা সেনাবাহিনীর কোন সমস্যা নয়; বরং এটা পুরো যুক্তরাষ্ট্রের সমস্যা।

বিভিন্ন গবেষণার উল্লেখ করে ‘ব্রেকিং ডিফেন্স’ বলছে যে, ৩ কোটি ২০ লক্ষ আমেরিকান, যারা কিনা সামরিক সার্ভিসের বয়সের মাঝে পড়ে, তাদের মাঝে মাত্র ২৩ শতাংশ সামরিক বাহিনীতে যোগ দেয়ার জন্যে শারীরিক ও মানসিক দিক থেকে যথেষ্ট যোগ্যতা রাখে। এই সংখ্যাটা কিছুদিন আগেও ছিল ২৯ শতাংশ। শিক্ষাগত যোগ্যতার কথা আসলে আরও ১০ শতাংশ বাদ পড়ে যায়। শুধু তাই নয়, গবেষণায় বলা হচ্ছে যে, বর্তমানে তরুণদের মাঝে মাত্র ৯ শতাংশ সামরিক বাহিনীর সার্ভিসে যোগ দিতে ইচ্ছুক। অর্থাৎ এর ফলে রিক্রুটিং বয়সের মানুষের মাঝে মাত্র ১ দশমিক ০১ শতাংশ মানুষ রিক্রুটিংএর জন্যে অবশিষ্ট থাকবে; বা মাত্র ৩ লক্ষ ২১ হাজার মানুষের মাঝ থেকে রিক্রুট পাওয়া যাবে!

বছরের শুরু থেকেই মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের কর্মকর্তারা সাবধান করছিলেন যে, ২০২২ সালের রিক্রুটমেন্ট টার্গেট ধরা সম্ভব হবে না; আর সবগুলি সামরিক সার্ভিসের মাঝে সেনাবাহিনীই সবচাইতে খারাপ অবস্থানে থাকবে। সেনাবাহিনীর সচিবের মুখপাত্র লেঃ কর্নেল র‍্যান্ডি ফ্যারেল ‘এবিসি নিউজ’কে বলছেন যে, জুলাই মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত ৬০ হাজারের টার্গেটের মাঝে মাত্র ৩০ হাজার রিক্রুট করা সম্ভব হয়েছে। বছরের শুরুতেই টার্গেট ৫ হাজার কমিয়ে দেয়া হয়। বছর শেষে সেনাবাহিনীর মোট সদস্যসংখ্যার টার্গেট রয়েছে ৪ লক্ষ ৭৬ হাজার। ১৯শে জুলাই সিনেটের এক শুনানিতে সেবাহিনীর উপপ্রধান জেনারেল জোসেফ মার্টিন বলেন যে, তার ধারণা বছর শেষে সেনাবাহিনীর সদস্যসংখ্যা হবে ৪ লক্ষ ৬৬ হাজার; অর্থাৎ টার্গেটের ১০ হাজার কম। শুধু তাই নয়, প্রকৃতপক্ষে সেনাবাহিনী সময়ের সাথে তাদের সদস্যসংখ্যার টার্গেট ৪ লক্ষ ৭৩ হাজার থেকে নামিয়ে ৪ লক্ষ ৪৫ হাজার এবং ৪ লক্ষ ৫২ হাজারের মাঝামাঝি আনতে বাধ্য হচ্ছে। অর্থাৎ সেনাবাহিনীর আকার প্রায় ২১ থেকে ২৮ হাজার কমে যাচ্ছে!
 
সাম্প্রতিক সময়ে আফগানিস্তান এবং মধ্যপ্রাচ্যে সামরিক ব্যর্থতা সামরিক বাহিনীর প্রতি মার্কিনীদের আস্থাকে কমিয়ে দিয়েছে ঠিকই, কিন্তু তা বড় পরিসরে পুঁজিবাদী সমাজে ভোগবিলাসের আকাংক্ষার সমস্যাকে ছাপিয়ে যায় না; যার প্রতিফলন পাওয়া যায় বর্তমান তরুণ জেনারেশনের মাঝে কষ্ঠ সহ্য করতে পারার অক্ষমতার মাঝে। প্রতিরক্ষা দপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন যে, মার্কিন ‘জেনারেশন জেড’ সামরিক বাহিনীতে কাজ করার মতো যোগ্যতা রাখে না।

মার্কিন থিঙ্কট্যাংক ‘দ্যা হেরিটেজ ফাউন্ডেশন’এর সদস্য প্রাক্তন লেঃ জেনারেল টম স্পুহর সামরিক পত্রিকা ‘আর্মি টাইমস’কে বলছেন যে, ২০২২ সালে টার্গেট ধরতে পারার কোন সম্ভাবনাই নেই। শুধু তাই নয়, ২০২৩ সালে এই সমস্যা আরও খারাপ হবে। মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের বাজার গবেষণা বলছে যে, সামরিক বাহিনীতে যোগদানে ইচ্ছুক ব্যক্তির সংখ্যা দিনদিনই কমছে। এর সাথে যোগ হয়েছে ইতিহাসের সর্বনিম্ন বেকারত্বের হার। সকলেই মনে করছে যে, তারা স্থায়ী কর্মসংস্থানের ব্যাপারে নিশ্চিত; তাই কেউই সামরিক বাহিনীতে আসতে চাইছে না। থিঙ্কট্যাঙ্ক ‘র‍্যান্ড কর্পোরেশন’এর জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ বেশ এশ বলছেন যে, যখন চাকুরি পাওয়া কঠিন থাকে, তখন সাধারণতঃ উচ্চ সক্ষমতার রিক্রুট পাওয়া অপেক্ষাকৃত সহজ হয়। একইসাথে যখন মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে যায়, তখন নির্দিষ্ট বেতনে কাজ করা মানুষদের জীবন সমস্যায় পড়ে; যার ফলশ্রুতিতে সামরিক বাহিনীর বেতনের হিসেবে রিক্রুট পাওয়াও কঠিন হয়ে যায়। এছাড়াও সাম্প্রতিক সময়ে মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর যখন ঘোষণা দিয়েছিল যে, করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন না নিলে সামরিক বাহিনীতে নেয়া হবে না, তখন অনেকেই সামরিক বাহিনীতে যোগ দেয়া থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। ‘সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল’এর হিসেবে ১৮ থেকে ২৪ বছর বয়সীদের মাঝে মাত্র ৩৬ শতাংশ এবং ২৫ থেকে ৩৯ বছরের মাঝে মাত্র ৩৩ শতাংশ পুরোপুরিভাবে ভ্যাকসিন নিয়েছে। অথচ বয়সের দিক থেকে এরাই রিক্রুটিংএর মূল উৎস। আরও একটা সমস্যা হলো গত মার্চ মাসে নতুন সিস্টেম বাস্তবায়ন করা হয়েছে; যার মাধ্যমে সরাসরি মার্কিন মেডিক্যাল ব্যবস্থা থেকে রিক্রুটদের ব্যাপারে মেডিক্যাল রেকর্ড সংগ্রহ করা শুরু হয়েছে; এর ফলে অনেকেই বাদ পড়ে যাচ্ছে। এর আগে রিক্রুটরা নিজেরাই তাদের মেডিক্যাল রেকর্ডের কথা উল্লেখ করতো, এবং সেক্ষেত্রে যারা তাদেরকে রিক্রুট করতো, তারা শিখিয়ে দিতো যে কিভাবে মেডিক্যাল রেকর্ডের কিছু অংশ এড়িয়ে যাওয়া যায়।

শুধু সেনাবাহিনীই নয়, নৌবাহিনীতে রিক্রুটিং ঘাটতি গত ১৫ বছরের মাঝে সর্বোচ্চ ৩০ হাজারে পৌঁছেছে; অথচ এটা ২০০৭ সালে ছিল মাত্র ২ হাজার। বিমান বাহিনী এবং ম্যারিন কোরও সাম্প্রতিক সময়ে সর্বনিম্ন রিক্রুটিংএর অবস্থানে রয়েছে বলে বলছে ‘ব্রেকিং ডিফেন্স’। বাৎসরিক ‘রেগ্যান ন্যাশনাল ডিফেন্স সার্ভে’র ফলাফলে বলা হচ্ছে যে, সামরিক বাহিনীর উপর জনগণের আস্থা ৩ বছরের মাঝে ২৫ শতাংশ কমে গেছে! এর মাঝে ১১ শতাংশ কমেছে মাত্র ৮ মাসের মাঝে! এর মূল কারণ হিসেবে বলা হয়েছে আফগানিস্তানে মারাত্মক সামরিক ব্যর্থতা এবং মধ্যপ্রাচ্যে বহুকাল ধরে যুদ্ধের মাঝে আটকে থাকা। একইসাথে সামরিক বাহিনীতে রাজনীতি ঢুকে যাওয়া, বাহিনীতে যৌন হয়রানি বেড়ে যাওয়া, এবং আরও কিছু ইস্যুও এর জন্যে দায়ী। সামরিক বাহিনী চাইছে সমাজের সেই সংস্কৃতির পরিবর্তন করতে, যা জনগণকে সামরিক বাহিনীতে যোগ দেয়া থেকে দূরে থাকতে আগ্রহী করে।

জুলাই মাসে মার্কিন সেনাবাহিনীর সচিব ক্রিস্টিন ওরমুথ এবং চিফ অব স্টাফ জেনারেল জেমস ম্যাককনভিল এক লেখায় রিক্রুটিং সমস্যা দূর করার জন্যে কিছু সমাধান দেয়ার চেষ্টা করেন। তারা রিক্রুটিংএ কাজ করা সবচাইতে ভালো রিক্রুটারদের পুরষ্কৃত করার কথা বলেন। একইসাথে তারা সামরিক বাহিনীতে নাম লেখাবার পর রিক্রুটদেরকে বিভিন্ন স্পেশাল ট্রেনিংএ ভর্তি হবার জন্যে আলাদাভাবে পুরষ্কৃত করার কথা বলেন। এছাড়াও যারা রিক্রুট হবার জন্যে যথেষ্ট শারীরিক এবং শিক্ষাগত যোগ্যতাসম্পন্ন নয়, তবে রিক্রুট হতে চায়, তাদের জন্যে আলাদাভাবে বিশেষ ট্রেনিংএর ব্যবস্থা করার কথা বলেন তারা।

 
সামরিক বাহিনীকে রিক্রুট পেতে বেসামরিক চাকুরির সাথে মারাত্মক প্রতিযোগিতার মাঝে যেতে হচ্ছে। অর্থাৎ উচ্চ বেতন এবং সুবিধাদির চাকুরির সাথে সামরিক সার্ভিসকে প্রতিযোগিতা করতে হচ্ছে। অর্থ উপার্জন যখন সমাজের বেশিরভাগ তরুণের ব্যক্তিগত জীবনের উদ্দেশ্য, তখন রাষ্ট্রের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে নিজেকে উৎসর্গ করার মতো কষ্টকর এবং বিপজ্জনক চাকুরি ক’জন করতে ইচ্ছুক হবে?

সামরিক বাহিনীতে অটোমেশন বা যন্ত্রের ব্যবহার বাড়িয়ে জনবলের সংকট কিছুটা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব বলে কেউ কেউ মনে করলেও বেশিরভাগই এর সাথে একমত নন। অটোমেশন নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠান ‘এপলাইড ইনটুইশন’এর নিকোলাস কাজিভি-গোর এবং জন মার্ক উইলসন ‘দ্যা ন্যাশনাল ইন্টারেস্ট’ ম্যাগাজিনের এক লেখায় বলছেন যে, রিক্রুটমেন্ট সমস্যার মতো জাতীয় নিরাপত্তার ইস্যুগুলি শুধুমাত্র অটোমেশনের মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে শারীরিক এবং মানসিক দিক দিয়ে সক্ষম জনগণকে সামরিক বাহিনীতে আনার ব্যবস্থা করা ছাড়া কোন গত্যন্তর নেই; যদিও আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের মতো প্রযুক্তিগুলি মার্কিন সামরিক বাহিনীর সক্ষমতাকে চীনের মতো প্রতিযোগীর বিরুদ্ধে এগিয়ে থাকার জন্যে অবশ্য প্রয়োজন।

‘দ্যা হেরিটেজ ফাউন্ডেশন’এর টম স্পুহর এক লেখায় বলছেন যে, প্রেসিডেন্ট এবং সরকারি কর্মকর্তাদের উচিৎ তাদের কথাবার্তায় সামরিক সার্ভিসে যোগ দেয়ার ভালো দিকগুলি এবং সেখানে কি কি সুবিধা পাওয়া যাবে, তা বর্ণনা করা। এক্ষেত্রে কংগ্রেসের ভূমিকা বৃদ্ধি করা ছাড়াও মার্কিন স্কুল, জনপদ এবং ইন্ডাস্ট্রিগুলির সমন্বয়ে রিক্রুটরা তাদের বয়সে পৌঁছাবার আগেই তাদের সাথে যোগাযোগ বৃদ্ধি করার কথা বলা হচ্ছে। যখন সামরিক বাহিনীর জন্যে উপযুক্ত বয়সের তরুণদের মাঝে মাত্র ৯ শতাংশ সামরিক বাহিনীতে যোগ দিতে ইচ্ছুক এবং ইচ্ছুকদের মাঝে যখন ২৩ শতাংশ শারীরিক ও মানসিক দিক দিয়ে সক্ষম, তখন বুঝতে পারা যায় যে মার্কিনীদের বৈশ্বিক সামরিক শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখাটা এখন কতটা কঠিন হয়ে গেছে। বিশেষ করে ‘গ্রেট পাওয়ার’ প্রতিযোগিতার মাঝে যখন চীনকে মোকাবিলায় মার্কিনীরা তাদের সামরিক বাহিনীর আকার বৃদ্ধি করতে চাইছে, তখন সকলেই বলছেন যে, অটোমেশনের মাধ্যমে রিক্রুটিং সমস্যা দূর করা একেবারেই সম্ভব নয়। সাম্প্রতিক সময়ে আফগানিস্তান এবং মধ্যপ্রাচ্যে সামরিক ব্যর্থতা সামরিক বাহিনীর প্রতি মার্কিনীদের আস্থাকে কমিয়ে দিয়েছে ঠিকই, কিন্তু তা বড় পরিসরে পুঁজিবাদী সমাজে ভোগবিলাসের আকাংক্ষার সমস্যাকে ছাপিয়ে যায় না; যার প্রতিফলন পাওয়া যায় বর্তমান তরুণ জেনারেশনের মাঝে কষ্ঠ সহ্য করতে পারার অক্ষমতার মাঝে। প্রতিরক্ষা দপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন যে, মার্কিন ‘জেনারেশন জেড’ সামরিক বাহিনীতে কাজ করার মতো যোগ্যতা রাখে না। তথাপি তারা এও বলছেন যে, সামরিক বাহিনীকে রিক্রুট পেতে বেসামরিক চাকুরির সাথে মারাত্মক প্রতিযোগিতার মাঝে যেতে হচ্ছে। অর্থাৎ উচ্চ বেতন এবং সুবিধাদির চাকুরির সাথে সামরিক সার্ভিসকে প্রতিযোগিতা করতে হচ্ছে। অর্থ উপার্জন যখন সমাজের বেশিরভাগ তরুণের ব্যক্তিগত জীবনের উদ্দেশ্য, তখন রাষ্ট্রের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে নিজেকে উৎসর্গ করার মতো কষ্টকর এবং বিপজ্জনক চাকুরি ক’জন করতে ইচ্ছুক হবে?

No comments:

Post a Comment