Monday 12 September 2022

স্টেলথ ফাইটারগুলি কি মার্কিন বিমান শক্তির একমাত্র স্তম্ভ হতে চলেছে?

১২ই সেপ্টেম্বর ২০২২
 
মার্কিন কংগ্রেসের অনেকেই ‘এফ-৩৫’ বিমানের মেইনটেন্যান্স খরচ কমাবার জন্যে চাপ দিচ্ছেন। কিন্তু সমস্যা হলো, ‘এফ-৩৫’ বিমানকে তৈরি করা হয়েছে অনেকগুলি বিমানের প্রতিস্থাপক হিসেবে। এতগুলি মিশন একত্রে নেবার ফলে বিমানটা অত্যন্ত জটিল এবং অতি ব্যয়বহুল হয়ে গেছে। ম্যারিন কোরের জন্যে ‘এফ-৩৫বি’ তৈরি করতে গিয়ে বিমানটার বডি চওড়া করতে হয়েছে; যার ফলে ডানা হয়ে গেছে ছোট। ছোট ডানার বিমান শত্রু বিমানের সাথে ডগফাইটে ভালো করবে না; তেলও বেশি খরচ হবে; তাই পাল্লাও হবে কম।

‘স্টেলথ’ প্রযুক্তি যেভাবে যুদ্ধক্ষেত্রে সহায়তা দিচ্ছে…

এভিয়েশন ম্যাগাজিন ‘কী এরো’র এক লেখায় ব্যাখ্যা দেয়া হচ্ছে যে, স্টেলথ অর্থ এই নয় যে, এই বিমানগুলি রাডারে দেখা যাবে না। বরং এগুলি রাডারে এতটাই ছোট হিসেবে দেখা যাবে যে, তার বিরুদ্ধে সহজে কিছু করা সম্ভব হবে না। ‘এফ-২২’ বিমান রাডারে একটা মার্বেলের আকৃতির দেখা যায়; আর ‘এফ-৩৫’ বিমান দেখা যায় একটা গলফ বলের আকৃতির। ‘রাডার ক্রস সেকশন’ বা ‘আরসিএস’ নামে পরিচিত এই হিসেবে যার আকার যত ছোট হবে, তাকে রাডারে তত ছোট দেখা যাবে। ‘এফ-২২’এর ‘আরসিএস’ এক বর্গমিটারের প্রায় ১০ হাজার ভাগের এক ভাগ; ‘এফ-৩৫’এর ১ হাজার ভাগের এক ভাগ। বিপক্ষের একটা ফাইটার বিমান ‘এফ-২২’ বিমানকে মাত্র ৫ থেকে ১০ কিঃমিঃ পাল্লার মাঝে আসলেই কেবল দেখতে পাবে; যার বহু আগেই ‘এফ-২২’ বিমান তার ক্ষেপণাস্ত্রগুলি ছুঁড়ে দেবে। তবে পঞ্চম জেনারেশনের সকল বিমানই অত সহজে শত্রুপক্ষের রাডারকে এড়াতে পারবে না। কারণ বিমানের একেক পাশ রাডারের চোখে ভিন্নভাবে ধরা দেবে। কাজেই কোন অবস্থাতে বিমানটা কোন দিকে ঘুরতে পারবে, তার কিছু বাধ্যবাধকতা থাকবে; নয়তো বিমানটা অপেক্ষাকৃত সহজেই রাডারে ধরা পড়ে যাবে।

‘এফ-২২’ এবং ‘এফ-৩৫’ বিমানগুলি তৈরিই করা হয়েছে স্টেলথ হিসেবে। এগুলির ডিজাইনের মাঝে বহু প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে, যার অনেকটাই বিমানের কাঠামোর সাথে সম্পৃক্ত। এছাড়াও বিমানের গায়ের উপরেও রাডার রশ্মি শুষে নেবার মতো রঙ দেয়া হয়েছে। যে বিমানগুলি স্টেলথ হিসেবে ডিজাইন করা হয়নি, সেগুলির ‘আরসিএস’ তুলনামূলকভাবে অনেক বড় এবং সেগুলি অনেক দূর থেকেই শত্রুর রাডারে ধরা পড়ে। ‘বি-৫২’ বোমারু বিমানের ‘আরসিএস’ প্রায় ১’শ বর্গমিটার; ‘এফ-১৫’ বিমানের প্রায় ২৫ বর্গমিটার; ‘এফ-১৬’ এবং ‘মিগ-২৯’ বিমানের প্রায় ৫ বর্গমিটার; ‘এফ/এ-১৮ই সুপার হর্নেট’ এবং ফরাসি ‘রাফাল’ ফাইটারের প্রায় ১ বর্গমিটার; আর ‘ইউরোফাইটার টাইফুন’এর প্রায় আধা বর্গমিটারের মতো। কাজেই যদিও এই বিমানগুলি রাডারে খুব সহজেই ধরা পড়ছে, তথাপি বিভিন্ন পদ্ধতিতে এগুলির ‘আরসিএস’ আরও কমানো সম্ভব; যার ফলে বিমানগুলি রাডারে ধরা পড়বে ঠিকই; তবে কিছুটা দেরিতে। উদাহরণস্বরূপ, যদি ‘এফ-১৬’ বিমানের ‘আরসিএস’ কমিয়ে ‘এফ/এ-১৮ই সুপার হর্নেট’এর কাছাকাছি নিয়ে আসা সম্ভব হয়, তাহলে শত্রুর রাডারে ‘এফ-১৬’কে খুঁজে পাবার দূরত্ব প্রায় ৩০ থেকে ৪৫ শতাংশ কমে যাবে। অর্থাৎ এর ফলে শত্রুর রাডারের পাল্লার বাইরে থেকেই ‘এফ-১৬’ তার অস্ত্রগুলিকে ব্যবহার করে ফেলতে সক্ষম হতে পারে।

সাম্প্রতিক সময়ের আরও আগে থেকেই মার্কিন বাহিনী সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে যে, তারা তাদের বহরে শুধুমাত্র স্টেলথ বিমানই রাখবে না; পুরোনো ‘নন-স্টেলথ’ বিমানগুলিও তারা রাখবে। একারণেই এই পুরোনো বিমানগুলির কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সেগুলির ‘আরসিএস’ কমাবার প্রযুক্তির উপর গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। যেহেতু পুরোনো বিমানগুলি ইঞ্জিনের ‘ইনটেক’ ও ‘ইনলেট ডাক্ট’ এবং ‘আফটারবার্নার নজল’এর কাঠামোগত পরিবর্তনের মাধ্যমে ‘আরসিএস’ কমানোটা অনেক বেশি ব্যয়বহুল, তাই সেটা নিশ্চিতভাবেই হচ্ছে না। তবে বিমানগুলির গায়ের উপর রাডার রশ্মি শুষে ফেলার মতো রঙ দেয়া সম্ভব।

প্রতিবেদনে বলা হয় যে, ১৯৮৬ সাল থেকে ‘হেইভ গ্লাস ১ ও ২’ প্রকল্পের অংশ হিসেবে ‘এফ-১৬’ বিমানের উপর রাডার শুষে নেবার রঙ দেয়া হতে থাকে। প্রথমদিকে শুধুমাত্র যে ‘এফ-১৬’গুলি শত্রুর বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার উপর হামলা করার মতো কঠিন কাজটা করবে, সেগুলির উপর এই রঙ দেয়া হতে থাকে। এর ফলে বিমানগুলির ‘আরসিএস’ প্রায় ১৫ শতাংশ কমেছিল বলে ধারণা করা হয়। ২০১২এর পর থেকে এরকম আরও রঙএর প্রকল্প হাতে নেয়া হয়। ‘হেইভ গ্লাস ৫’ প্রকল্পের পর ‘এফ-১৬’এর ‘আরসিএস’ মাত্র ১ দশমিক ২ বর্গমিটারে নেমে আসে; যা কিনা শুরুতে ছিল প্রায় ৫ বর্গমিটার। এই রঙ এখন ধীরে ধীরে বেশিরভাগ ‘এফ-১৬’ বিমানের উপরেই দেয়া হচ্ছে।

এছাড়াও আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি যার মাধ্যমে একটা বিমানকে শত্রুর নজরদারির বাইরে রাখা সম্ভব তা হলো বিমানের ইলেকট্রনিক সিগনেচার। অর্থাৎ বিমানটা যখন তার ইলেকট্রনিক যন্ত্রগুলি, যেমর রাডার বা যোগাযোগের যন্ত্রগুলিকে দ্রুত পরিবর্তনীয় ফ্রিকুয়েন্সির মাধ্যমে ব্যবহার করে, তখন শত্রু খুব সহজে বিমানটাকে খুঁজে পাবে না।

 
'এফ-১৫ইএক্স' 'বম্ব ট্রাক'। গত দুই দশকে ‘এফ-১৫’ বিমানের উন্নয়নের পিছনে মার্কিনীদের কোন অর্থই খরচ করতে হয়নি; পুরোটাই বন্ধু দেশগুলি দিয়েছে। স্টেলথ বিমানগুলি গতি এবং দ্রুতির দিক থেকে যেমন কিছুটা পিছিয়ে, তেমনি অস্ত্র বহণের ক্ষেত্রেও এগুলির কিছুটা ঘাটতি রয়েছে। ‘এফ-১৫ইএক্স’ বিমানগুলি হয়তো দূরপাল্লার আকাশ থেকে আকাশে নিক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্রগুলি বহণ করতে পারবে এই স্টেলথ বিমানগুলিকে সহায়তা দেয়ার জন্যে।

‘এফ-১৫ইএক্স’ প্রকল্প… খোলস পাল্টে ৫০ বছরের পুরোনো বিমান?


২০২০ সালের জুলাই মাসে মার্কিন বিমান বাহিনী ‘বোইং’ কোম্পানিকে নতুন একটা বিমান নির্মাণের কনট্রাক্ট দেয়; যার নাম হলে ‘এফ-১৫ইএক্স’। বিমানগুলি কেন কেনা হচ্ছে, সেবিষয়ে অনেকেই আলোচনা করছেন। বিশেষ করে বিমান বাহিনী যখন ‘এফ-৩৫’ স্টেলথ বিমানকেই ভবিষ্যতের ফাইটার হিসেবে নির্বাচন করেছে, তখন পাঁচ দশকের একটা পুরোনো ডিজাইনের বিমান কেন নতুন করে তৈরি করতে হবে, সেব্যাপারে অনেকেই প্রশ্ন করছেন। ১৯৭২ সালে প্রথম ওড়া ‘এফ-১৫’ বিমান ১৯৭৬ সালে উৎপাদন শুরু হয় এবং ২০০১ সালে মার্কিন বিমান বাহিনী শেষ ‘এফ-১৫’ বিমানটা অর্ডার করে। অর্থাৎ দুই দশক ধরে মার্কিনীরা কোন ‘এফ-১৫’ বিমান ক্রয় করেনি। বর্তমানে বিভিন্ন মডেলের প্রায় ৫’শ ‘এফ-১৫’ মার্কিন সার্ভিসে রয়েছে।

নিরাপত্তা ম্যাগাজিন ‘নাইনটিন ফোরটিফাইভ’এর এক লেখায় সামরিক বিশ্লেষক রবার্ট ফার্লে বলছেন যে, ‘এফ-১৫’ বিমানটা মার্কিনীরা তাদের বন্ধু দেশগুলির কাছে বিক্রি করেছে; যার মাঝে রয়েছে জাপান, ইস্রাইল, সৌদি আরব এবং কোরিয়া। এবং বহু বছর ধরে এই বিমানটা পশ্চিমা বিমান শক্তির মূলে রয়েছে। ‘এফ-১৫’ বিমানের এই রপ্তানি সাফল্যই ‘এফ-১৫ইএক্স’ বিমানকে সামনে এনেছে। দুই দশকে মার্কিনীরা কোন ‘এফ-১৫’ বিমান না কিনলেও তাদের বন্ধু দেশগুলি কেনা অব্যাহত রেখেছে। এর ফলে ‘বোইং’ কোম্পানি এই বিমানের উৎপাদন লাইন চালু রেখেছে এবং বিভিন্ন যন্ত্রাংশ প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে বিমানটাকে আরও উন্নত করেছে। অর্থাৎ গত দুই দশকে ‘এফ-১৫’ বিমানের উন্নয়নের পিছনে মার্কিনীদের কোন অর্থই খরচ করতে হয়নি; পুরোটাই বন্ধু দেশগুলি দিয়েছে। ফার্লে বলছেন যে, ‘এফ-১৫ইএক্স’ প্রকল্পের দু’টা উদ্দেশ্য রয়েছে। প্রথমতঃ আকাশ প্রতিরক্ষার জন্যে ব্যবহৃত বিমান বাহিনীর পুরোনো ‘এফ-১৫সি/ডি’ বিমানগুলিকে প্রতিস্থাপিত করা; যেগুলির অনেকগুলিই এখন নিয়মত আকাশে ওড়ার মতো অবস্থায় নেই এবং যেগুলির মেইনটেন্যান্সে অনেক বেশি খরচ হচ্ছে। দ্বিতীয়তঃ বিমান বাহিনীর ‘এফ-২২’ এবং ‘এফ-৩৫’ স্টেলথ ফাইটারগুলিকে সহয়তা দেয়ার উদ্দেশ্যে ‘এফ-১৫ইএক্স’ তৈরি করা। স্টেলথ বিমানগুলি গতি এবং দ্রুতির দিক থেকে যেমন কিছুটা পিছিয়ে, তেমনি অস্ত্র বহণের ক্ষেত্রেও এগুলির কিছুটা ঘাটতি রয়েছে। ‘এফ-১৫ইএক্স’ বিমানগুলি হয়তো দূরপাল্লার আকাশ থেকে আকাশে নিক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্রগুলি বহণ করতে পারবে এই স্টেলথ বিমানগুলিকে সহায়তা দেয়ার জন্যে। বিমান বাহিনী প্রথমে ১’শ ৪৪টা ‘এফ-১৫ইএক্স’ বিমানের কথা বললেও এখন শোনা যাচ্ছে যে, তারা ৮০টার মতো কিনতে পারে। কিন্তু এই সংখ্যাটা পুরোনো ‘এফ-১৫’গুলিকে প্রতিস্থাপন করার জন্যে মোটেই যথেষ্ট নয়।

ফার্লে বলছেন যে, এখনই ‘এফ-১৫ইএক্স’ প্রকল্পের উপর ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব কতটুকু হবে, তা বলা মুশকিল। তবে যুক্তরাষ্ট্র নতুন করে কোন একটা যুদ্ধে জড়ালে যুদ্ধের কারণে ক্ষয়ক্ষতি দ্রুত পুষিয়ে নিতে পারাটা যে ফলাফলের উপর প্রভাব ফেলতে পারে, সেই চিন্তাটা ইউক্রেন যুদ্ধ আবারও জাগিয়ে তুলেছে। ক্ষতি দ্রুত পুষিয়ে নিতে হলে পুরোনো ডিজাইনের ফাইটারগুলি এগিয়ে থাকবে। এছাড়াও ‘এফ-১৫ইএক্স’এর মতো বিমানগুলি তৈরি করতে গিয়ে খরচ খুব দ্রুতই বেড়ে যাবে না; যেটা হতে পারে নতুন ডিজাইনের বিমানের ক্ষেত্রে।

‘ফ্লাইট গ্লোবাল’এর এক খবরে বলা হচ্ছে যে, ৭ই সেপ্টেম্বর মার্কিন বিমান বাহিনী ‘ব্রিটিশ এরোস্পেস সিস্টেমস’কে সাড়ে ৩’শ মিলিয়ন ডলারে নতুন একটা কনট্রাক্ট দিয়েছে; যার বলে কোম্পানিটা মার্কিন বিমান বাহিনীর ‘এফ-১৫ই’ এবং ‘এফ-১৫ইএক্স’ বিমানের জন্যে ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার যন্ত্রাংশ সরবরাহ করবে। ‘ঈগল প্যাসিভ একটিভ ওয়ার্নিং সারভাইভাবিলিটি সিস্টেমস’ বা ‘ইপিএডব্লিউএসএস’ নামের এই যন্ত্রাংশ কি কাজ করতে পারে, তার বর্ণনা দিতে গিয়ে কোম্পানির প্রকল্প পরিচালক ব্রিজেট ম্যাকডারমট বলছেন যে, এই প্রযুক্তি ‘এফ-১৫’ বিমানগুলিকে উন্নত প্রযুক্তির বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেবে। এর সহায়তায় বিমানের পাইলট তার আশেপাশের হুমকিগুলিকে আরও ভালোভাবে বুঝতে পারবেন এবং নিজেকে রক্ষা করতে পারবেন।

 
'এফ-৩৫' বিমানের ভেতর 'এমরাম' ক্ষেপণাস্ত্র বহণ। একেকটা ‘এফ-৩৫’ বিমান তার অত্যন্ত দামি সেন্সরগুলি ব্যবহার করে প্রচুর তথ্য সংগ্রহ করে এবং নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে আশেপাশের সকলের কাছ থেকেও তথ্য সংগ্রহ করে। এই তথ্য প্রসেস করে সে প্রচুর তথ্যের মালিক হয় ঠিকই, কিন্তু সেই তথ্য ব্যবহার করার মতো যথেষ্ট অস্ত্র সে বহণ করতে পারে না। স্টেলথ হিসেবে তৈরি করতে গিয়ে বিমানটার অস্ত্রগুলি এর পেটের ভিতরে নিতে হচ্ছে। এর ফলে যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহারের জন্যে মাত্র চারটা বোমা বা ক্ষেপণাস্ত্র বহণ করা সম্ভব হচ্ছে। একারণেই ‘এফ-১৫ইএক্স’ বিমান তৈরি করা হচ্ছে এবং ‘এফ-১৬’ বিমানগুলিকেও উন্নততর প্রযুক্তি দিয়ে ২০৪০এর পরেও অপারেশনে রাখতে চাইছে মার্কিনীরা।


‘এফ-১৫ইএক্স’ বিমান তৈরি অর্থের অপচয় নয় কি?

তবে প্রশ্ন দাঁড়িয়েছে ‘এফ-১৫ইএক্স’ বিমানের ৮৮ মিলিয়ন ডলার খরচ নিয়ে; যা কিনা ‘এফ-৩৫’ স্টেলথ বিমানের মতোই। কিছু কংগ্রেস সদস্য এই বিমান কেনার ব্যাপারে প্রশ্ন তুলেছেন। ইলিনয়া রাজ্যের সিনেটর ট্যামি ডাকওয়ার্থ ২০১৯ সালেই বলেছেন যে, ‘এফ-৩৫’ বিমানের উৎপাদন কমিয়ে ‘এফ-১৫’ বিমান তৈরি করাটা ঠিক হবে না। তবে এখানে বলাই বাহুল্য যে, ‘এফ-৩৫’এর ওয়েবসাইটে বলা হচ্ছে যে, সিনেটর ডাকওয়ার্থএর ইলিনয়া রাজ্যে ‘এফ-৩৫’ তোরির জন্যে ৫ হাজার ৭’শ ৯০ জন মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে এবং তা রাজ্যের অর্থনীতিতে ২ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার যোগ করবে। অর্থাৎ সিনেটর ‘এফ-৩৫’এর পক্ষে বলবেন, সেটাই স্বাভাবিক। অপরদিকে যারা ‘এফ-১৫ইএক্স’এর পক্ষে, তারা বলছেন যে, ‘এফ-৩৫’ একটা স্টেলথ বিমান ঠিকই, কিন্তু স্টেলথ হবার জন্যে বিমানটা তার অস্ত্রগুলি বিমানের ভেতরে লুকিয়ে রাখে। ফলশ্রুতিতে এই বিমানটা সর্বোচ্চ ২ দশমিক ৩ টনের মাত্র ৪টা বোমা বা ক্ষেপণাস্ত্র বহণ করতে পারে। যদিও বিমানটা তার দেহের বাইরে আরও প্রায় ৫ দশমিক ৯ টন বোমা বহণ করতে পারে, তথাপি এটা করলে ‘এফ-৩৫’ আর স্টেলথ থাকবে না; অর্থাৎ সহজেই রাডারে দেখা যাবে। অপরদিকে ‘এফ-১৫ইএক্স’ বিমান ১৩ টনের বেশি অস্ত্র বহণ করতে সক্ষম। ‘ইপিএডব্লিউএসএস’ প্রকল্পের পরিচালক ব্রিজেট ম্যাকডারমট বলছেন যে, নতুন করে ‘এফ-১৫’ বিমানের জন্যে ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার যন্ত্রাংশ অর্ডার করার অর্থ হলো, বিমান বাহিনী দীর্ঘমেয়াদে ‘এফ-১৫’ বিমানগুলিকে কৌশলগত প্রতিরক্ষার অংশ হিসেবে দেখছে।

‘এফ-১৬’ বিমান ২০৪০এর দশক পর্যন্ত চলবে

‘এয়ার এন্ড স্পেস ফোর্সেস ম্যাগাজিন’এর এক খবরে বলা হচ্ছে যে, মার্কিন বিমান বাহিনী বিভিন্ন উন্নয়ন কাজের মাধ্যমে ২০৪০এর দশক পর্যন্ত ‘এফ-১৬’ বিমানগুলিকে সার্ভিসে রাখতে চাইছে। বিমান বাহিনীর ‘এফ-১৬’ প্রকল্পের প্রধান কর্নেল টিম বেইলি গত অগাস্ট মাসে এক সাংবাদিক সন্মেলনে বলছেন যে, বিমান বাহিনী আশা করছে যে, সামনের কয়েক দশকে কয়েক’শ ‘এফ-১৬’ সার্ভিসে থাকবে। বিমান বাহিনীর ফাইটার এবং আধুনিক বিমানের প্রকল্প এক্সিকিউটিভ অফিসার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডেইল হোয়াইট বলছেন যে, সাম্প্রতিক সময়ে ‘এফ-১৬’ বিমানের সার্ভিসের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে যেসকল কাজ করা হয়েছে, তাতে এই বিমানগুলি আরও বহুদিন ওড়ার মতো অবস্থায় থাকবে। আর তার কাছে এই বিমানকে প্রতিস্থাপন করার মতো কোন বিমান খোঁজার জন্যে কোন নির্দেশ আসেনি। ‘লকহীড মার্টিন’ বলছে যে, প্রথমে এই বিমানগুলির সার্ভিস লাইফ ৮ হাজার ঘন্টা থাকলেও এখন তা ১২ হাজার ঘন্টায় উন্নীত করা হয়েছে। এর ফলে বিমানগুলি ২০৪৮ সাল পর্যন্ত উড়তে পারবে।
 

'এফ-১৬' বিমান, যার উপরে রয়েছে 'হেইভ গ্লাস ৬' রাডার রশ্মি শুষে নেবার মতো রঙ। ‘হেইভ গ্লাস ৫’ প্রকল্পের পর ‘এফ-১৬’এর ‘আরসিএস’ মাত্র ১ দশমিক ২ বর্গমিটারে নেমে আসে; যা কিনা শুরুতে ছিল প্রায় ৫ বর্গমিটার। এই রঙ এখন ধীরে ধীরে বেশিরভাগ ‘এফ-১৬’ বিমানের উপরেই দেয়া হচ্ছে। ‘লকহীড মার্টিন’ কোম্পানি এখনও ‘এফ-১৬’ বিমান তৈরি করছে মার্কিনীদের বন্ধুদের জন্যে। এর ফলে তারা এই বিমানটাকে নতুন নতুন প্রযুক্তি দিয়ে সাজাচ্ছে। মার্কিন বিমান বাহিনী এই প্রযুক্তিগুলিকে সহজেই পেয়ে যাচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে ‘এফ-১৬’ বিমানের রাডারের যে উন্নয়ন করা হয়েছে, তা প্রকৃতপক্ষে তাইওয়ান অর্থায়ন করেছে।

২০২১ সালে মার্কিন বিমান বাহিনী ভবিষ্যতের ফাইটার ফোর্সের একটা কাঠামো প্রকাশ করে; যেখানে বর্তমানে ব্যবহৃত ৭ প্রকারের বিমানের বদলে “৪ প্লাস ১” প্রকারের বিমানের কথা বলা হয়েছে। এর মাঝে ‘এফ-২২’ এবং এর ভবিষ্যৎ প্রতিস্থাপককে একটা প্রকার হিসেবে দেখানো হয়েছে। দ্বিতীয় প্রকার হল ‘এফ-৩৫’ বিমান। তৃতীয় প্রকার হলো ‘এফ-১৫ই’ এবং ‘এফ-১৫ইএক্স’। আর চতুর্থ প্রকার হলো ‘এফ-১৬’। এর সাথে ‘এ-১০’ বিমানগুলিকে “প্লাস ১” হিসেবে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে; যেগুলি ২০৩০ সালে রিটায়ার করার কথা রয়েছে। ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হোয়াইট বলছেন যে, ‘লকহীড মার্টিন’ কোম্পানি এখনও ‘এফ-১৬’ বিমান তৈরি করছে মার্কিনীদের বন্ধুদের জন্যে। এর ফলে তারা এই বিমানটাকে নতুন নতুন প্রযুক্তি দিয়ে সাজাচ্ছে। মার্কিন বিমান বাহিনী এই প্রযুক্তিগুলিকে সহজেই পেয়ে যাচ্ছে। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন যে, সাম্প্রতিক সময়ে ‘এফ-১৬’ বিমানের রাডারের যে উন্নয়ন করা হয়েছে, তা প্রকৃতপক্ষে তাইওয়ান অর্থায়ন করেছে। ‘একটিভ ইলেকট্রনিক্যালি স্ক্যানড এরে’ বা ‘এইএসএ’ ধরণের এই রাডার ‘এফ-১৬’ বিমানের দূরের টার্গেট খুঁজে পাবার সক্ষমতাকে বাড়িয়ে দিয়েছে। একইসাথে এই রাডারের মাধ্যমে বিমানগুলি একসাথে বেশি টার্গেট মোকাবিলা করতে সক্ষম হবে। এছাড়াও বিমানগুলি ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ারের বেশকিছু যন্ত্রাংশ পেতে চলেছে। ১৯৭৮ সালে সার্ভিসে ঢোকার পর থেকে ‘এফ-১৬’ বিমানে ইঞ্জিন, রাডার, স্বপ্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, এবং বিমান বাহিনীর সকল অস্ত্র বহণ করার সক্ষমতার উপর বহু উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। তবে জেনারেল হোয়াইট বলেন যে, যেহেতু বিমান বাহিনীতে প্রায় ৯’শ ‘এফ-১৬’ রয়েছে, কাজেই শুধুমাত্র সংখ্যার কারণেই এই বিমানের যেকোন উন্নয়ন যথেষ্ট ব্যয়বহুল হবে। একারণেই ভবিষ্যতের উন্নয়নগুলি মার্কিনীদের বন্ধুদের কাছে নতুন করে যা বিক্রি করা হয়েছে, সেগুলির মাঝেই থাকবে। আর সামনের দিনগুলিতে বেশিরভাগ ‘এফ-১৬’এর গায়ের উপর রাডার রশ্মি শুষে ফেলার মতো কিছু রঙ করা হবে।

‘এফ-৩৫’এর মেইনটেন্যান্স খরচ এবং সময়

মার্কিন সামরিক সদস্যদের ম্যাগাজিন ‘স্যান্ডবক্স’এর এক লেখায় বলা হচ্ছে যে, একেকটা ‘এফ-৩৫’ বিমান তৈরি করা হয়েছে ৮ হাজার ঘন্টা ওড়াবার জন্যে। প্রতি ঘন্টা ওড়ার পিছনে খরচ হয় ৪৪ হাজার ডলার (যদিও কেউ কেউ বলছেন যে এটা ৩৬ হাজার বা ৩৮ হাজার ডলার)। অপরদিকে ‘এফ-১৫ইএক্স’ বিমানগুলি তৈরি করা হচ্ছে ২০ হাজার ঘন্টা ওড়াবার জন্যে; যেখানে প্রতি ঘন্টায় খরচ হবে ২৯ হাজার ডলার। দু’টা বিমানের খরচের কোন রকম তুলনা করা সম্ভব নয়। কারণ একটা ‘এফ-১৫ইএক্স’ যতদিন উড়বে, তা প্রকৃতপক্ষে তিনটা ‘এফ-৩৫’এর জীবনের সমান। দু’টা বিমানের কাজ পুরোপুরিভাবে ভিন্ন হবার কারণেই এই হিসেবটা করাটা অর্থহীন। অন্য কথায় বলতে গেলে, একটা বিমান আরেকটার প্রতিস্থাপক নয়।

মার্কিন ‘কংগ্রেশনাল বাজেট অফিস’ বা ‘সিবিও’এর এক প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে যে, ‘এফ-৩৫’ বিমানগুলি এখন পূর্বের তুলনায় বেশি সময় ওড়ানো সম্ভব হচ্ছে। এখন এই বিমানগুলি প্রায় ৫০ থেকে ৬০ ভাগ সময় ওড়াবার জন্যে প্রস্তুত থাকছে; যা কিনা সামরিক বাহিনীর অন্যান্য বিমানের চাইতে কিছু বেশি অথবা প্রায় সমান। ‘এফ-২২’ বিমানগুলি প্রায় ৪০ শতাংশ ওড়াবার জন্যে প্রস্তুত থাকছে। অপরদিকে ‘এফ-১৫ই’ এবং ‘এফ-১৬সি/ডি’ বিমানগুলি অনেক পুরোনো হবার পরেও ‘এফ-৩৫সি’ বিমানের মতোই প্রস্তুত থাকছে। বিমান বাহিনীর ‘এফ-৩৫এ’ এবং ম্যারিন কোরের ‘এফ-৩৫বি’ বিমানগুলি প্রায় ৬০ শতাংশের মতো প্রস্তুত থাকছে। তবে এখানে যে ব্যাপারটা গুরুত্বপূর্ন তা হলো, ‘এফ-৩৫’ বিমানগুলি একেবারেই নতুন; অপরদিকে বাকিগুলি এগুলির তুলনায় অনেক পুরাতন। পুরাতন বিমানের মেইনটেন্যান্স বেশি লাগে। ‘এফ-৩৫’ বিমানগুলি একেবারে নতুন হবার পরেও অন্য ডিজাইনের কয়েক দশকের পুরাতন বিমানের মতোই প্রস্তুত থাকছে। এছাড়াও প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে যে, যে ‘এফ-৩৫’গুলির বয়স ৮ বছরের উপরে, সেগুলির ৪৬ শতাংশ ১ বছরের বেশি সময় ডিপো লেভেল মেইনটেন্যান্সে কাটিয়েছে। অথচ ৭ বছর বা এর কম বছরের পুরোনো বিমানগুলির মাত্র ১০ শতাংশ এক বছর বা তার বেশি সময় ডিপো লেভেল মেইনটেন্যান্সে কাটিয়েছে।
 

যুক্তরাষ্ট্রের অডিট সংস্থা ‘গভার্নমেন্ট একাউন্টাবিলিটি অফিস’ বা ‘জিএও’এর ২০২১এর জুলাইএর এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে যে, একটা সময় আসবে, যখন মার্কিন সামরিক বাহিনী ‘এফ-৩৫’এর মেইনটেন্যান্স খরচ বহণ করতে পারবে না। তখন তাদেরকে হয় ক্রয়কৃত বিমানের সংখ্যা কমাতে হবে; অথবা বিমানগুলির ওড়ানো কমিয়ে দিয়ে বেশিরভাগ সময়ে বসিয়ে রাখতে হবে।


‘এফ-৩৫’এর উচ্চ প্রযুক্তির বাস্তবতা

যুক্তরাষ্ট্রের অডিট সংস্থা ‘গভার্নমেন্ট একাউন্টাবিলিটি অফিস’ বা ‘জিএও’এর ২০২১এর জুলাইএর এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে যে, একটা সময় আসবে, যখন মার্কিন সামরিক বাহিনী ‘এফ-৩৫’এর মেইনটেন্যান্স খরচ বহণ করতে পারবে না। তখন তাদেরকে হয় ক্রয়কৃত বিমানের সংখ্যা কমাতে হবে; অথবা বিমানগুলির ওড়ানো কমিয়ে দিয়ে বেশিরভাগ সময়ে বসিয়ে রাখতে হবে। ২০৩৬ সাল নাগাদ মার্কিনীদের হাতে ‘এফ-৩৫’ বিমানের সংখ্যা সর্বোচ্চ হবে। তখন যদি বর্তমানের চাইতে মেইনটেন্যান্স খরচ যথেষ্ট পরিমাণে কমানো সম্ভব না হয়, তাহলে সেই খরচ বহণ করা মারাত্মক কঠিন হয়ে যাবে। যে খরচ তারা বহণ করতে সক্ষম, আর যে খরচ প্রকৃতপক্ষে নিতে হবে, তার মাঝে প্রায় ৬ বিলিয়ন ডলারের একটা ঘাটতি দেখা দিতে পারে। অপরদিকে বিমান বাহিনী বলছে যে, যদি তারা ‘এফ-৩৫’এর সকল খুচরা যন্ত্রাংশ বিনামূল্যেও পেয়ে যায়, তাহলেও তাদের মেইনটেন্যান্স খরচ তাদের বহণক্ষমতার চাইতে ১৪ শতাংশ বেশি হবে!

মার্কিন কংগ্রেসের অনেকেই ‘এফ-৩৫’ বিমানের মেইনটেন্যান্স খরচ কমাবার জন্যে চাপ দিচ্ছেন। কিন্তু সমস্যা হলো, ‘এফ-৩৫’ বিমানকে তৈরি করা হয়েছে অনেকগুলি বিমানের প্রতিস্থাপক হিসেবে। এতগুলি মিশন একত্রে নেবার ফলে বিমানটা অত্যন্ত জটিল এবং অতি ব্যয়বহুল হয়ে গেছে। ম্যারিন কোরের জন্যে ‘এফ-৩৫বি’ তৈরি করতে গিয়ে বিমানটার বডি চওড়া করতে হয়েছে; যার ফলে ডানা হয়ে গেছে ছোট। ছোট ডানার বিমান শত্রু বিমানের সাথে ডগফাইটে ভালো করবে না; তেলও বেশি খরচ হবে; তাই পাল্লাও হবে কম। তবে স্টেলথ হবার কারণে বিমানের দূর থেকে যুদ্ধ করার সক্ষমতা বেশি থাকবে। একেকটা ‘এফ-৩৫’ বিমান তার অত্যন্ত দামি সেন্সরগুলি ব্যবহার করে প্রচুর তথ্য সংগ্রহ করে এবং নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে আশেপাশের সকলের কাছ থেকেও তথ্য সংগ্রহ করে। এই তথ্য প্রসেস করে সে প্রচুর তথ্যের মালিক হয় ঠিকই, কিন্তু সেই তথ্য ব্যবহার করার মতো যথেষ্ট অস্ত্র সে বহণ করতে পারে না। স্টেলথ হিসেবে তৈরি করতে গিয়ে বিমানটার অস্ত্রগুলি এর পেটের ভিতরে নিতে হচ্ছে। এর ফলে যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহারের জন্যে মাত্র চারটা বোমা বা ক্ষেপণাস্ত্র বহণ করা সম্ভব হচ্ছে। একারণেই ‘এফ-১৫ইএক্স’ বিমান তৈরি করা হচ্ছে এবং ‘এফ-১৬’ বিমানগুলিকেও উন্নততর প্রযুক্তি দিয়ে ২০৪০এর পরেও অপারেশনে রাখতে চাইছে মার্কিনীরা। পুরোনো ডিজাইনের এই বিমানগুলি ‘এফ-৩৫’এর পাশে ‘বম্ব ট্রাক’ হিসেবে থাকবে। ‘এফ-৩৫’ টার্গেট খুঁজে দেবে; আর ‘এফ-১৫’ বা ‘এফ-১৬’ ক্ষেপণাস্ত্র বা বোমা ছুঁড়বে সেই টার্গেটে। ‘এফ-৩৫’ বিমানের মেইনটেন্যান্স খরচ যদি বাজেটের বাইরে চলে যায়, তখন বিমানগুলিকে বেশিরভাগ সময় বসিয়েই রাখতে হবে। এতে ট্রেনিং ফ্লাইট কমে যাবে এবং পাইলটদের দক্ষতাও ধীরে ধীরে কমতে থাকবে। এছাড়াও যদি ক্রয়কৃত বিমানের সংখ্যা কমিয়ে ফেলতে হয়, তখন ৫০ বছরের পুরোনো ডিজাইনের ‘এফ-১৫’ এবং ‘এফ-১৬’ বিমান দিয়েই যুদ্ধ চালিয়ে নিতে হবে। মোটকথা, মার্কিনীরা বুঝতে পারছে যে, পঞ্চম জেনারেশনের স্টেলথ যুদ্ধবিমান শুনতে যতটাই মধুর লাগুক না কেন, বাস্তবতা এগুলির ব্যবহারকে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে রাখছে। একারণেই ‘নন-স্টেলথ’ বিমানগুলিকে কমপক্ষে সমান গুরুত্ব দিতে বাধ্য হচ্ছে তারা।



সূত্রঃ

‘Have Glass: Making the F-16 less observable’ by Jon Lake, in Key.Aero, 01 April 2021 (https://www.key.aero/article/have-glass-making-f-16-less-observable)

‘Strengthening Our Supply Chain. Securing Our Future.’ In F-35 Lightning II by Lockheed Martin (https://www.f35.com/f35/about/economic-impact.html)

‘Air Force Keeping F-16s, Not Moving Toward Fighter Derived From MR-F or T-7 for Now’ in Air & Space Forces Magazine, 14 April 2022

‘Why the Air Force Wants the F-15EX Fighter’ by Robert Farley in 1945, 10 September 2022 (https://www.19fortyfive.com/2022/09/f-15-ex-still-much-not-known/)

‘Boeing expands purchase of F-15 electronic warfare systems from BAE’ in Flight Global, 08 September 2022

‘How much cheaper is the F-15EX compared to the F-35?’ by Alex Hollings, in Sandboxx, 17 March 2021

‘Availability and Use of F-35 Fighter Aircraft’ in Congressional Budget Office, April 2022

‘U.S. Air Force Authorizes Extended Service Life for F-16’ by Lockheed Martin, 12 April 2017 (https://news.lockheedmartin.com/2017-04-12-U-S-Air-Force-Authorizes-Extended-Service-Life-for-F-16)

‘Watchdog group finds F-35 sustainment costs could be headed off affordability cliff’ in Breaking Defence, 08 July 2021

No comments:

Post a Comment