Saturday 2 April 2022

পাকিস্তানের রাজনৈতিক কলহের ভূরাজনৈতিক গুরুত্ব

০২রা এপ্রিল ২০২২

পাকিস্তান সেনাবাহিনী যে ‘আইএমএফ’এর নিয়ন্ত্রণকে এড়াতে সক্ষম নয়, সেটাও এখন পরিষ্কার। আফগানিস্তান থেকে মার্কিন বাহিনীর পলায়নের পর থেকে কাবুলের তালিবান সরকারের উপর পাকিস্তানের সামরিক ইন্টেলিজেন্স যথেষ্ট প্রভাব বিস্তার করে রয়েছে। সেই হিসেবে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ কাবুলের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখার জন্যে যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি পাকিস্তানে চীনাদের কৌশলগত প্রকল্পগুলি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রেও কেন্দ্রীয় প্রশ্ন।

 
পাকিস্তানে যখন আবারও রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হয়েছে, তখন বেশিরভাগ মিডিয়াই ফোকাস করেছে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সরকার টিকবে কিনা, বা না টিকলে কে তার স্থলাভিষিক্ত হবে সেটা উপর। তবে দক্ষিণ এশিয়ার পারমাণবিক শক্তিধর এবং আঞ্চলিকভাবে প্রভাবশালী দেশ পাকিস্তানের রাজনীতির এই অস্থিরতার কারণ যেমন বেশ গভীর, তেমনি এর প্রভাবও হবে সুদূরপ্রসারী। বিশেষ করে আফগানিস্তানে পাকিস্তানের প্রভাব এবং পাকিস্তানে চীনের প্রভাব এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ আলোচ্য বিষয় হবে। তবে এর আগে বর্তমান রাজনৈতিক সমস্যার পিছনের মূল কারণ অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা এবং দেশের আর্থিক ব্যবস্থাপনার উপর বিদেশী প্রভাবের ব্যাপারগুলিকে দেখতে হবে।

‘ফিনানশিয়াল টাইমস’এর এক প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে যে, গত ডিসেম্বরে ইমরানের সরকার নতুন একটা আর্থিক আইন নিয়ে এসেছিল এমন সময়ে, যখন দেশের অর্থনীতি ধুঁকে ধুঁকে চলছিল। পাকিস্তান সরকারের হিসেবে দেশটার মুদ্রাস্ফীতি ১২ শতাংশের উপরে রয়েছে। এছাড়াও পাকিস্তানি রুপি সাম্প্রতিক সময়ে ডলারের বিপরীতে ১৭ শতাংশের বেশি মূল্য হারিয়েছে। বাজারের বিভিন্ন দ্রব্যের মূল্য ২০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ‘স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তান’ বা ‘এসবিপি’ সাম্প্রতিক সময়ে দু’বার সুদের হার বাড়িয়ে ৯ দশমিক ৭৫ শতাংশে উঠিয়েছে। ২০১৮ সালের অগাস্টে ক্ষমতায় আসার আগে ইমরান খানের সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে, পাকিস্তানের অর্থনীতির ব্যাপক অস্থিরতার অবসান ঘটানো হবে। ১৯৮০এর দশক থেকে পাকিস্তান মোট ১২ বার ‘ইন্টারন্যাশনাল মনেটারি ফান্ড’ বা ‘আইএমএফ’এর কাছ থেকে ঋণ নিয়ে অর্থনৈতিক বিপদ থেকে বাঁচার চেষ্টা করেছে। কিন্তু ইমরান নিজেই সেই একই পথে পা বাড়িয়েছেন। নতুন আইনের মাঝে ছিল সরকারের উন্নয়ন বাজেটে কর্তন, বিদ্যুৎ এবং গ্যাসের ক্ষেত্রে সরকারের ভর্তুকি তুলে ফেলা, এবং কাঁচামাল ও ফার্মাসিউটিক্যালস শিল্পের জন্যে যে সেলস ট্যাক্স ছাড় ছিল, তা তুলে নেয়া। এই পদক্ষেপগুলি ছিল ‘আইএমএফ’এর প্রেসক্রিপশন। ‘আইএমএফ’ থেকে ৬ বিলিয়ন ডলারের ঋণ পেতে ইমরানের সরকার এই আইনগুলি নিয়ে এসেছিল। ২০১৯ সালে পাকিস্তানের সাথে সমঝোতায় পৌছাবার পরেও শর্ত বাস্তবায়ন না করার কারণে ২০২১ সালে ঋণ দেয়া বন্ধ করে দেয় ‘আইএমএফ’। ২০২২ সালে নতুন করে ১ বিলিয়ন ডলার ছাড় দেয়ার জন্যে পাকিস্তান সরকার শর্ত পূরণে পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়। ‘ফিনানশিয়াল টাইমস’ বলছে যে, সেলস ট্যাক্স দেয়ার কারণে পাকিস্তানের প্রান্তিক জনগণ সবচাইতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এরপরেও গত ১৩ই জানুয়ারি পাকিস্তানের পার্লামেন্টে তুমুল বিতন্ডার মাঝেই ১’শ ৬৩ বনাম ১’শ ৪৬ ভোটে এই আইনে কিছু পরিবর্তন এনে পাস হয়।

‘আইএমএফ’এর শর্ত পূরণ করতে গিয়ে নতুন আর্থিক আইন বাদেও আরেকটা আইন ইমরানের সরকার নিয়ে আসে, যা পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ‘এসবিপি’এর স্বায়ত্বশাসনের ব্যাপারে। অনেকেই বলেছেন যে, এর ফলে ‘এসবিপি’এর কোন জবাবদিহিতা থাকবে না; এবং ‘এসবিপি’এর গভর্নর বাস্তবিকপক্ষে পাকিস্তানের ‘অর্থনৈতিক ভাইসরয়’ হয়ে যাবেন। পাকিস্তানের পত্রিকা ‘ডন’এর এক প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে যে, নতুন আইন অনুযায়ী ‘এসবিপি’র বোর্ড অব ডিরেক্টরসে সরকারের প্রতিনিধি থাকলেও তাদের কোন ভোটাধিকার থাকবে না। সরকার ‘এসবিপি’ থেকে কোন ঋণ নিতে পারবে না; এবং ‘এসবিপি’ও সরাসরি কোন সরকারি বন্ড কিনতে পারবে না।

সাম্প্রতিক সময়ে অর্থনৈতিক চাপের মাঝে ইমরান খানের দল ‘পিটিআই’এর সাথে শরীক দলগুলি দোদুল্যমান অবস্থায় রয়েছে। ‘এমকিউএম’ এবং ‘পিএমএল-কিউ’এর সদস্যরা বিরোধী দলের সাথে খোলাখুলিভাবেই কথা বলেছে। অনেকেই বলছেন যে, এর অর্থ হলো পাকিস্তানের রাজনীতিতে ব্যাপক প্রভাব রাখা সামরিক বাহিনী এবং তাদের ইন্টেলিজেন্স সংস্থা ‘আইএসআই’ এটা হতে দিচ্ছে। যেটা মূলতঃ ইমরানের সরকারের উপর থেকে সামরিক বাহিনীর আস্থা তুলে নেবারই লক্ষণ।

এদিকে চীনারা পাকিস্তানের দ্বন্দ্বকে কিভাবে দেখছে, তার গুরুত্ব যথেষ্ট। ‘নিকেই এশিয়া’র এক প্রতিবেদনে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বলা হচ্ছে যে, এই দ্বন্দ্বে চীনারা অপেক্ষা করার নীতিতে রয়েছে। চীনের পছন্দের দল হলো প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফের দল ‘পিএমএল-এন’। তবে তারা বাধ্য হলে ইমরানের ‘পিটিআই’এর সাথেও কাজ করে যাবে। ইসলামাবাদের ‘কায়েদ ই-আজম ইউনিভার্সিটি’র এসোসিয়েট প্রফেসর ইশতিয়াক আহমেদ বলছেন যে, ২০১৮ সাল থেকে ইমরানের সরকারের অধীনে চীনের অর্থায়নে পাকিস্তানের সবচাইতে বড় প্রকল্প ৫০ বিলিয়ন ডলারের ‘চায়না পাকিস্তান ইকনমিক করিডোর’ বা ‘সিপেক’এর অগ্রগতি বেশ কমই ছিল। এতে মনক্ষুন্ন হওয়া চীনারা হয়তো মনে করতে পারে যে, ‘পিএমএল-এন’ ক্ষমতায় আসলে এই প্রকল্প নতুনভাবে গুরুত্ব পাবে। মার্কিন থিঙ্কট্যাঙ্ক ‘উইলসন সেন্টার’এর ডেপুটি ডিরেক্টর মাইকেল কুগেলম্যান বলছেন যে, ‘সিপেক’ প্রকল্প শুরু করেছিল ‘পিএমএল-এন’। সেই হিসেবে তাদের সাথে চীনাদের সাচ্ছন্দ্য অপেক্ষাকৃত বেশি। আর চীনারা এও মনে করেছে যে, ইমরান এই প্রকল্পের এবং পাকিস্তানে কাজ করা চীনা নাগরিকদের যথেষ্ট নিরাপত্তা দেয়নি। তবে ‘সারগোদা ইউনিভার্সিটি’র ‘পাকিস্তান ইন্সটিটিউট অব চায়না স্টাডিজ’এর ডিরেক্টর ফজল রেহমান বলছেন যে, যদি ইমরান খানকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়, সেক্ষেত্রে পাকিস্তানের রাস্তায় বিক্ষোভ এবং রাজনৈতিক অসন্তোষ দেখা দিতে পারে; যা কিনা অর্থনৈতিক দৈন্যতার মাঝে আরও জটিল সমস্যার জন্ম দেবে। সেই হিসেবে চীনারা চাইবে ইমরান তার পুরো সময় শেষ করে ক্ষমতা হস্তান্তর করুক।

মাইকেল কুগেলম্যান বলছেন যে, চীনাদের মূল চিন্তা হলো অনিশ্চয়তা এবং অস্থিতিশীলতা। যদি পাকিস্তানে সরকার পরিবর্তনে সময়ক্ষেপণ হয়, তাহলে চীনাদের সেই ভয়টাই বাস্তবে রূপ নেবে। তবে পাকিস্তানের সাম্প্রতিক সময়ের ঘটনাগুলির মাঝ দিয়ে যে ব্যাপারটা পরিষ্কার হয়েছে তা হলো, পশ্চিমা আর্থিক প্রতিষ্ঠান ‘আইএমএফ’এর শর্তগুলি পাকিস্তানের অর্থনৈতিক দুর্দশাকে আরও ঘনীভূত করেছে; যার ফলশ্রুতিতে পাকিস্তানের রাজনৈতিক অঙ্গন অস্থিরতার মাঝে পড়েছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর ইমরান খানের উপর থেকে তাদের আস্থা সরিয়ে নেবার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। তথাপি পাকিস্তান সেনাবাহিনী যে ‘আইএমএফ’এর নিয়ন্ত্রণকে এড়াতে সক্ষম নয়, সেটাও এখন পরিষ্কার। আফগানিস্তান থেকে মার্কিন বাহিনীর পলায়নের পর থেকে কাবুলের তালিবান সরকারের উপর পাকিস্তানের সামরিক ইন্টেলিজেন্স যথেষ্ট প্রভাব বিস্তার করে রয়েছে। সেই হিসেবে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ কাবুলের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখার জন্যে যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি পাকিস্তানে চীনাদের কৌশলগত প্রকল্পগুলি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রেও কেন্দ্রীয় প্রশ্ন।

4 comments:

  1. ধন্যবাদ।
    ১, পাকিস্তান আর্মি কি পাকিস্তান এ প্রভাব হারাচ্ছে?
    ২, "তবে দক্ষিণ এশিয়ার পারমাণবিক শক্তিধর এবং আঞ্চলিকভাবে প্রভাবশালী দেশ পাকিস্তানের রাজনীতির এই অস্থিরতার কারণ যেমন বেশ গভীর, তেমনি এর প্রভাবও হবে সুদূরপ্রসারী। "
    এই বিষয়টি যদি আরো বিস্তারে ব্যাখ্যা করেন, য়বে খুব ভাল হয়।
    ৩, কাবুল তথা আফগানিস্তানের উপর কিরকম প্রভাব পড়বে? যদি বিস্তারে বলেন।

    ReplyDelete
    Replies
    1. প্রথমতঃ পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী রাজনীতিতে কিভাবে এলো? ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশরা পাকিস্তান তৈরি করলেও খুব কম সময়ের মাঝেই তা যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবের অধীনে চলে যায়। পাকিস্তানের জন্মের পর তার সকল রাজনীতিবিদই (পূর্ব পাকিস্তান, পাঞ্জাব, গুজরাট, ওয়াজিরিস্তান থেকে আসা) ছিল ব্রিটিশ সময়ের রাজনীতিবিদ; এরা কেউই যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ দেখার প্রয়োজন মনে করেনি। নতুন সুপারপাওয়ার হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের উপর তার প্রভাব বিস্তার করেছে সামরিক বাহিনীর মাধ্যমে। সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে পাকিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। সেই প্রভাব এখনও চলমান। বহু খাড়াই উতড়াই পার হয়ে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী এখনও যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধুই থেকে গেছে।

      দ্বিতীয়তঃ পাকিস্তানের এই সামরিক শক্তিকে নিয়ন্ত্রণে রাখাটা সুপারপাওয়ারদের সবসময়কার একটা লক্ষ্য ছিল; এখনও আছে। ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিপ্লব ব্রিটিশরা দমন করেছিল পাঞ্জাবের সেনাদের সহায়তায়। ১৯৪৭ সালে ভারতীয় উপমহাদেশ বিভক্ত করার সময় ভারত এবং পাকিস্তান উভয়েই পাঞ্জাবের সামরিক শক্তির কিছুটা পেয়েছিল। তবে ব্রিটিশ ভারতের ইন্টেলিজেন্সের প্রায় পুরোটাই পেয়ে গিয়েছিল পাকিস্তান। কারণ ১৯৪৭এর আগে ব্রিটিশরা মুসলিমদের উপরেই গোয়েন্দাগিরি করতো। তাই সকল গোয়েন্দা শক্তি পাকিস্তান পেয়ে যায়; ভারত কিছুই পায়নি। সেই হিসেবে পাকিস্তান জন্মলগ্ন থেকেই সামরিক শক্তি এবং ইন্টেলিজেন্সে পারঙ্গম। একারণে পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণ দক্ষিণ এশিয়ার নিয়ন্ত্রণের জন্যে গুরুত্বপূর্ণ। ১৯৮০এর দশকে পাকিস্তানের ইন্টেলিজেন্সের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানে সোভিয়েত ইউনিয়নকে পরাজিত করতে পেরেছিল; যার ফলশ্রুতিতে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙ্গেই পড়ে। ২০০১ সালের পর যুক্তরাষ্ট্র যখন আফগানিস্তানে হামলা করে, তখনও পাকিস্তানই যুক্তরাষ্ট্রকে সহায়তা দিয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্র সর্বদাই চেয়েছে পাকিস্তানের এই শক্তিকে নিয়ন্ত্রণে রেখে নিজেদের পক্ষে ব্যবহার করতে। এই লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র অনেকটাই সফল হয়েছে; যদিও সময়ের সাথে সাথে পাকিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ঘৃণা বৃদ্ধি পেয়েছে।

      তৃতীয়তঃ যুক্তরাষ্ট্র সর্বদাই চেয়েছে পাকিস্তানের সাথে চীনের সম্পর্ককে নিজেদের পক্ষে ব্যবহার করতে। কিন্তু নিজেদের আদর্শিক অধঃপতনের সাথেসাথে যুক্তরাষ্ট্র নিজেও এই নিয়ন্ত্রণ হারাতে থাকে। কাজেই চীনে যখন যুক্তরাষ্ট্রের চোখে হুমকি হয়ে উঠতে থাকে, তখন থেকেই পাকিস্তানের সাথে চীনের সম্পর্ক যুক্তরাষ্ট্রের জন্যে সমস্যা হয়ে দেখা দিতে থাকে। অথচঃ এত যুগ ধরে পাকিস্তানের সাথে চীনের সম্পর্ক যুক্তরাষ্ট্র মেনেই নিয়েছিল। পাকিস্তানের যেকোন ঘটনা তাই চীনের জন্যে গুরুত্বপূর্ণ। 'সিপেক' প্রকল্পের মাধ্যমে চীন মালাক্কা প্রণালিকে বাইপাস করে ভারত মহাসাগরে পৌঁছাতে চাইছে। পাকিস্তানের সহায়তা ছাড়া ভারত মহাসাগরে চীনের উপস্থিতি মূল্যহীন। অপরদিকে যুক্তরাষ্ট্রও চায় পাকিস্তানের ঘটনাগুলি তাদের স্বার্থের পক্ষেই যেন যায়। তবে নিম্নগামী সুপারপাওয়ার যুক্তরাষ্ট্র এখন যা চাইছে তার সবগুলিই পাচ্ছে না।

      চতুর্থতঃ যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান ছেড়ে আসার সময় পাকিস্তানের হাতেই আফগানিস্তানের মূল নিয়ন্ত্রণ ছেড়ে দিয়ে এসেছে। এব্যাপারে এই ব্লগে আগের লেখাগুলি পড়লে আরও বিষদ জানবেন আশা রাখি।

      Delete
  2. পাকিস্তানে ইমরান খানের পতন হল।
    ১,এই অবস্থায় পাক আর্মি নাকি ফরেইন মদতে কি ইমরান পতন হল?
    পাক আর্মি কি ফরেইন পলিসি নির্ধারণ করে?

    ২, নতুন সরকার আমেরিকা আর ব্রিটেনের সংগে ভাল সম্পর্ক রাখতে ইচ্ছুক, তাই ইউএস কি আবার পাকিস্তানে মিলিটারি বেস করে এশিয়ায় বিশেষ করে আফগানিস্তান সহ সেন্ট্রাল এশিয়ায় প্রভাব বিস্তার করবে? যাতে চিন আর রাশিয়া কে চেকমেট দিতে পারে?

    অন্য প্রসঙ্গঃ
    ন্যাটোর স্পেনে জুন মাসে বৈঠক আছে যাতে, চিনকে মোকাবিলার প্রস্তুতি নিতে পারে এব্যাপার এ নাকি সিদ্ধান্ত হতে পারে।
    যদি ইউ এস, পাকিস্তানে আবার বেস করে তা ন্যাটো সহ ওয়েস্ট এর জন্য খুব সুবিধা হবে।

    ReplyDelete
    Replies
    1. পাকিস্তান সেনাবাহিনী যে সর্বদাই পাকিস্তানের কিংমেকার, সেটা উপরের কমেন্টে লিখেছি। এবং সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের কতটুকু মদদ রয়েছে, সেটাও সেখানে লিখেছি। এর বাইরে আর কিছু বলার প্রয়োজন রয়েছে কি?

      যুক্তরাষ্ট্র এখন কতটা দুর্বল, তা এই ব্লগের আগের লেখাগুলিতে যথেষ্ট বিস্তারিত আলোচনা রয়েছে। নতুন করে আরেকটা অঞ্চলে সেনা মোতায়েন বা যুদ্ধপ্রস্তুতি নেবার মতো সামরিক সক্ষমতা বা জনসমর্থন বা রাজনৈতিক সদিচ্ছা, কোনটাই যুক্তরাষ্ট্রের নেই।

      যুক্তরাষ্ট্রের জন্যে সবই নেগেটিভ নিউজ; পজিটিভের মাঝেও রয়েছে নেগেটিভ নিউজ। যেমন, ইউক্রেনে রাশিয়া আটকে গেলেও যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি না সহায়তা দিয়ে তার বিশ্বাসযোগ্যতা পুরোপুরিভাবে হারিয়েছে। হয়তো ইউক্রেনের আগে আফগানিস্তান থেকে পলায়নের ঘটনা না ঘটলে এতটা খারাপ অবস্থা হতো না। দুঃখিত, যুক্তরাষ্ট্রের কোন সুবিধা নেই; শুধু অসুবিধাই রয়েছে।

      Delete