Monday 1 February 2021

পোল্যান্ড এবং আর্জেন্টিনায় গর্ভপাতের আইন পশ্চিমা চিন্তার অসঙ্গতিরই ফলাফল

১লা ফেব্রুয়ারি ২০২১

আইন করে পোল্যান্ডে গর্ভপাত নিষিদ্ধ করা, বা আর্জেন্টিনায় গর্ভপাত বৈধ করার ফলে তাদের সমাজের অসঙ্গতি চলে যাচ্ছে না। ক্যাথোলিক বিশ্বাসের দেশ হলেও সেকুলার চিন্তা বাস্তবায়নের কারণে নারী পুরুষের অবাধ যৌনাচার এই দেশগুলিতে অবৈধ নয়। একদিকে বামপন্থী লিবারালরা সেকুলার চিন্তা বাস্তবায়নের পক্ষে লড়ছে; অপরদিকে ডানপন্থী রক্ষণশীলরা ধর্মীয় বিশ্বাসকে রক্ষায় বদ্ধপরিকর। কিন্তু কেউই সমাজে অবাধ যৌনাচারের সংস্কৃতির বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়নি।

 
পূর্ব ইউরোপের দেশ পোল্যান্ডে গর্ভপাত বিরোধী আইন পাসের পর থেকেই রাজধানী ওয়ারস’র রাস্তায় কনকনে ঠান্ডা এবং করোনা মহামারির কারণে কড়াকড়ি উপেক্ষা করে চলছে বিক্ষোভ। ‘সিএনএন’এর এক প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে যে, আইন কার্যকর হবার পর থেকে তিন দিন ধরে নারীবাদী সংগঠনগুলি বিক্ষোভ করছে। এর আগে সাংবিধানিক আদালতে গর্ভপাত বিরোধী রুলিং দেয়া হয় অক্টোবর মাসে; যার পর থেকে কয়েক সপ্তাহ ধরে বিক্ষোভ চলেছে রাস্তায়। এই আইনের অধীনে ধর্ষণের ক্ষেত্রে এবং যেখানে গর্ভধারিনীর স্বাস্থ্যহানির আশংকা রয়েছে সেক্ষেত্রেও গর্ভপাত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ইউরোপের সেকুলার চিন্তাধারার দেশ হলেও ধর্মীয় বিশ্বাসের ব্যাপারগুলি দেশটাকে বিভক্ত করেছে।

পোল্যান্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসেব থেকে দেখা যায় যে, দেশটার কমিউনিস্ট শাসনামলে ১৯৮০এর দশকে প্রতিবছর ১ লক্ষ ২০ হাজার থেকে ১ লক্ষ ৪০ হাজার পর্যন্ত আইনগতভাবে বৈধ গর্ভপাত করা হতো। তবে কমিউনিস্ট শাসন থেকে বের হয়ে আসার পর ১৯৯০ সালে এক আইনের মাধ্যমে গর্ভপাত কঠিন করে দেয়া হয়। এরপর ১৯৯৩ সালের আইন অনুযায়ী শুধুমাত্র ‘কঠিন জীবন’এর কারণ দেখিয়ে গর্ভপাত করা যেতো। শুধুমাত্র গর্ভধারিনীর স্বাস্থ্য বা জীবনের প্রতি হুমকি তৈরি হলে বা ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটলেই গর্ভপাত করার অনুমতি দেয়া হতো। এরপর ১৯৯৬ সালে আইন করে সামাজিক কারণে গর্ভপাত করার অনুমতি দেয়া হয়। তবে ১৯৯৭ সালে সাংবিধানিক আদালতে সেই আইন বতিলও করা হয়। একুশ শতকে পোল্যান্ডে ডানপন্থী ‘ল এন্ড জাস্টিস’ এবং ‘পোল্যান্ড কামস ফার্স্ট’ দলগুলি গর্ভপাত পুরোপুরি বাতিল করার পক্ষে লবিং শুরু করে। অপরপক্ষে বামপন্থী ‘ডেমোক্র্যাটিক লেফট এলায়েন্স’ গর্ভপাত সমর্থন করে লবিং শুরু করে। পোল্যান্ডের বর্তমান পার্লামেন্টের ৪’শ ৬০টা আসনের মাঝে ১’শ ৯৮টা আসনই এখন ডানপন্থী ‘ল এন্ড জাস্টিস’ দলের দখলে। আর সরকার গঠন করা ডানপন্থী ‘ইউনাইটেড রাইট’এর আসন রয়েছে ২’শ ৩৪টা। বামপন্থী দলগুলির আসন রয়েছে ৪৮টা; যার মাঝে গর্ভপাতের পক্ষে থাকা ‘ডেমোক্র্যাটিক লেফট এলায়েন্স’এর আসন ২৪টা। অর্থাৎ গর্ভপাতবিরোধী ডানপন্থী দলগুলি পার্লামেন্টে বেশ শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে। ডানপন্থীদের মূল ভিত হলো পোল্যান্ডের রোমান ক্যাথোলিক খ্রিস্টান ঐতিহ্য। ৯০ শতাংশের বেশি ক্যাথোলিক এই দেশ তাদের খ্রিস্টান ঐতিহ্য নিয়ে গর্ব করে। ইউরোপের আর কোন দেশের জনসংখ্যার এত বড় অংশ ক্যাথোলিক নয়। কিন্তু ঐতিহ্য নিয়ে গর্ব করলেও পোল্যান্ডের সামাজিক অবস্থা গর্ব করার মতো নয়। ১৯৯০এর দশক থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত পোল্যান্ডে প্রতি বছর এক থেকে দুই হাজার বৈধ গর্ভপাত হয়ে থাকে। তবে নারীবাদী এনজিও ‘ফেডারেশন ফর উইমেন এন্ড ফ্যামিলি প্ল্যানিং’এর মতে পোল্যান্ডে প্রতিবছর ৮০ হাজার থেকে ২ লক্ষ অবৈধ গর্ভপাত হচ্ছে। ‘বিবিসি’ বলছে এই সংখ্যা ৮০ হাজার থেকে ১ লক্ষ ২০ হাজার। ‘দ্যা ল্যানসেট’ ম্যাগাজিনের এক লেখায় ৭৫ হাজার থেকে ৩ লক্ষ গর্ভপাতের কথা বলা হচ্ছে। ১০ থেকে ১৫ শতাংশ মহিলা গর্ভপাতের জন্যে পার্শ্ববর্তী জার্মানি, স্লোভাকিয়া এবং চেক রিপাবলিকে যায়। পোল্যান্ডে ধর্ষণের ঘটনা গত কয়েক বছরে বেশ কমে এসে ৭’শ নিচে এসে দাঁড়িয়েছে, যা ইউরোপের মাঝে ১১তম। কিন্তু লাখো গর্ভপাতের সংখ্যা পোল্যান্ডকে শান্তি দেয় না। ক্যাথোলিক বিশ্বাস এই সংখ্যাগুলির সামনে এসে দুর্বল হয়ে পড়ছে। ধর্মীয়ভাবে শক্ত ভিতের উপর দাঁড়িয়ে থাকার দাবি করলেও প্রতি বছর লাখো গর্ভপাতের বাস্তবতা তৈরি হয়েছে পোল্যান্ডের সমাজে। শুধুমাত্র আইন করে নিজের ক্যাথোলিক সত্ত্বার প্রমাণ দেয়ার চেষ্টাই করে যাচ্ছে পোল্যান্ডের ডানপন্থী নেতৃত্ব।

অপরদিকে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ আর্জেন্টিনাতেও শুরু হয়েছে অস্থিরতা। মূলতঃ ইউরোপিয় বংশোদ্ভূত স্প্যানিশ ভাষাভাষী এই দেশে ৩০শে ডিসেম্বর পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সিনেটে আইন পাস করে গর্ভপাত বৈধ করে দেয়া হয়। আর্জেন্টিনায় গর্ভপাত একটা সংবেদনশীল বিষয়। পার্লামেন্টে ম্যারাথন বাকবিতন্ডার পর এই সিদ্ধান্ত এসেছে। ‘বিবিসি’ বলছে যে, সিনেটে ৩৮ জন গর্ভপাতের পক্ষে ভোট দেন; বিপক্ষে ভোট দেন ২৯ জন। এর আগে ২০১৮ সালে পার্লামেন্টে আইন করার একটা চেষ্টা ভেস্তে গেলেও এবারে ক্ষমতাসীন মধ্য বামপন্থী ‘ফ্রেন্তে দে তোদোস’ কোয়ালিশন সরকার গর্ভপাতের পক্ষে থাকার কারণে আইন পাস হয়। কেউ কেউ ২০১৮ সালে বিপক্ষে ভোট দিলেও এবারে পক্ষে ভোট দেন। ক্ষমতাসীন ‘ফ্রেন্তে দে তোদোস’এর পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষে শক্ত অবস্থান রয়েছে। সেখানে ৭২টা আসনের ৪১টাই তাদের। তবে নিম্নকক্ষে ২’শ ৫৭টা আসনের মাঝে মাত্র ১’শ ১৯টা তাদের। ডিসেম্বরের শুরুতে পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইএর পর ১’শ ৩১ বনাম ১’শ ১৮ ভোটে এই আইন পাস হয়েছিল। প্রতিটা দলের মাঝেই কিছু সাংসদ পক্ষে ভোট দিয়েছিলেন; কিছু দিয়েছিলেন বিপক্ষে। ২০১৮ সালের ভোটে নিম্নকক্ষে গর্ভপাতের পক্ষে ছিল ১’শ ২৯ জন; বিপক্ষে ছিল ১’শ ২৫ জন। আর উচ্চকক্ষে গর্ভপাতের পক্ষে ছিল ৩১ জন; বিপক্ষে ছিল ৩৭ জন। ফলে সেবারে আইন পাস করা যায়নি। তবে এর মাধ্যমে গর্ভপাতের মতো বিষয়ে আর্জেন্টিনার সমাজের বিভক্তিটা পরিষ্কার হয়ে যায়।

ব্রাজিলসহ ক্যাথোলিক সংখ্যাগরিষ্ঠ ল্যাটিন আমেরিকার বেশিরভাগ দেশে গর্ভপাত অবৈধ। শুধুমাত্র উরুগুয়ে, কিউবা, গায়ানা এবং মেক্সিকোর মেক্সিকো সিটিতে গর্ভপাত বৈধ। সেই হিসেবে সাড়ে ৪ কোটি জনসংখ্যার আর্জেন্টিনাই দক্ষিণ আমেরিকার সবচাইতে বড় দেশ, যেখানে গর্ভপাত বৈধ করা হলো। ভ্রুণের ১৪ সপ্তাহ বা সাড়ে তিন মাস বয়স পর্যন্ত গর্ভপাত করা যবে, এই মর্মে পাস করা আইনের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যেই বিভিন্ন গ্রুপ সোচ্চার হয়েছে। ‘এসোসিয়েটেড প্রেস’ বলছে যে, দক্ষিণ আমেরিকার নারীবাদী গ্রুপগুলি আর্জেন্টিনার এই আইনকে অত্র অঞ্চলের অন্যান্য দেশের জন্যে একটা উদাহরণ হিসেবে দেখতে চাইছে। গর্ভপাতের পক্ষে কাজ করা গ্রুপগুলি বলছে যে, আর্জেন্টিনার অপেক্ষাকৃত রক্ষণশীল রাজ্যগুলি থেকে মামলা হতে পারে; আর বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিক গর্ভপাত করতে অস্বীকৃতি জানাতে পারে। আর্জেন্টিনার নারী বিষয়ক মন্ত্রী এলিজাবেথ গোমেজ আলকর্তা বলছেন যে, এই আইন বাস্তবায়ন চ্যালেঞ্জিং হবে। আর্জেন্টিনার ‘কনসোর্টিয়াম অব ক্যাথোলিক ডক্টরস’ এবং ‘ক্যাথোলিক ল’ইয়ার্স কর্পোরেশন’সহ বিভিন্ন রক্ষণশীল গ্রুপ এই আইনের বিরুদ্ধে অবস্থানের ঘোষণা দিয়েছে। গর্ভপাত বিরোধী বড় গ্রুপ ‘ইউনিদাদ প্রোভিদা’ ডাক্তারদেরকে নিজেদের বিবেক ব্যবহার করার আহ্বান জানিয়েছে। অপরদিকে ‘দ্যা ন্যাশনাল ক্যাম্পেইন ফর দ্যা রাইট টু লিগ্যাল, সেইফ এন্ড ফ্রি এবোরশন’ নামের গর্ভপাতের পক্ষে কাজ করা সংস্থার মুখপাত্র লরা সালোমে বলছেন যে, তারা আইনের বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে কাজ করবেন।

ক্যাথোলিক আর্জেন্টিনাতে প্রতিবছর ৩ থেকে ৪ হাজার ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে; যদিও দেশটাতে মানুষের যৌনাচারের যথেষ্ট স্বাধীনতা রয়েছে। এই সংখ্যা প্রতি ১ লক্ষ জনসংখ্যার মাঝে ৮ থেকে সাড়ে ৮এর মতো। পার্শ্ববর্তী ব্রাজিলে এই সংখ্যা আরও অনেক ভয়াবহ; প্রতি লক্ষ জনসংখ্যায় তা ২৪এর উপর! ব্রাজিলের মিডিয়া ‘ফোলিয়া ডে সাও পাওলো’এর প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে যে, সেখানে ২০১৮ সালে ৬৬ হাজার ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে; যা দিনের ১’শ ৮০টার সমকক্ষ। এর মাঝে ৫৪ শতাংশের বয়স ১৩ বছরের নিচে। আর আর্জেন্টিনাতে প্রতিবছর কত আইন বহির্ভূত গর্ভপাত হচ্ছে, তার হিসেব মেলা কঠিন। ২০০৫ সালে প্রকাশ করা সর্বশেষ এক রিপোর্টে বলা হয়েছিল যে, প্রতিবছর ৩ লক্ষ ৭০ হাজার থেকে ৫ লক্ষ ২০ হাজার গর্ভপাত হয় আর্জেন্টিনায়। আর ২০১৪ সালে ‘ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব উইমেনস হেলথ’এর প্রকশিত এক রিপোর্টে বলা হয় যে, ব্রাজিলে প্রতি বছর ৪৮ হাজার অবৈধ গর্ভপাতের ঘটনা ঘটছে। অপরপক্ষে গর্ভপাতের পক্ষে কাজ করা সংস্থাগুলি বলছে যে, ব্রাজিলে প্রতিবছর ৫ লক্ষ আইনবহির্ভূত গর্ভপাত ঘটছে।

ধর্মীয় বিশ্বাসের দিক থেকে গর্ভপাত নিষিদ্ধ থাকায় সেকুলার রাষ্ট্রব্যবস্থার সাথে তা সাংঘর্ষিক অবস্থানে রয়েছে। তবে পশ্চিমা সেকুলার চিন্তা যে ধর্মীয় বিশ্বাসের বিষয়গুলিকে পুরোপুরি প্রতিস্থাপন করতে সক্ষম হয়নি, তা পোল্যান্ড এবং আর্জেন্টিনার ঘটনাগুলি দেখলে বোঝা যায়। সমাজের সাংঘর্ষিক পরিস্থিতিই বলে দিচ্ছে যে, এই দ্বন্দ্বের সমাধান পশ্চিমা বিশ্ব এখনও পায়নি। আইন করে পোল্যান্ডে গর্ভপাত নিষিদ্ধ করা, বা আর্জেন্টিনায় গর্ভপাত বৈধ করার ফলে তাদের সমাজের অসঙ্গতি চলে যাচ্ছে না। ক্যাথোলিক বিশ্বাসের দেশ হলেও সেকুলার চিন্তা বাস্তবায়নের কারণে নারী পুরুষের অবাধ যৌনাচার এই দেশগুলিতে অবৈধ নয়। বেশিরভাগ গর্ভপাতের কারণ হিসেবে ধর্ষণ বা গর্ভধারিনীর স্বাস্থ্য বা ভ্রুণের সমস্যা নয়, বরং বৈবাহিক সম্পর্ক বহির্ভূত যৌনাচারই সামনে আসছে। পোল্যান্ডে ৭’শর কম ধর্ষণের ঘটনা ঘটলেও গর্ভপাতের ঘটনা ঘটছে লাখে। আর্জেন্টিনা এবং ব্রাজিলের ক্ষেত্রেও একই। একদিকে বামপন্থী লিবারালরা সেকুলার চিন্তা বাস্তবায়নের পক্ষে লড়ছে; অপরদিকে ডানপন্থী রক্ষণশীলরা ধর্মীয় বিশ্বাসকে রক্ষায় বদ্ধপরিকর। কিন্তু কেউই সমাজে অবাধ যৌনাচারের সংস্কৃতির বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়নি। পশ্চিমা বিশ্বে ডানপন্থীদের উত্থান মূলত পশ্চিমা আদর্শের উপর জনগণের আস্থাহীনতার কারণেই। জনগণের ধর্মীয় বিশ্বাস এবং রাষ্ট্রের সেকুলার চিন্তার এহেন সাংঘর্ষিক অবস্থানই পশ্চিমা চিন্তার অসংগতিকে তুলে ধরে। একইসাথে ডানপন্থী বনাম লিবারাল আদর্শিক এই দ্বন্দ্ব পশ্চিমা সমাজের নড়বড়ে ভিতের দিকেই ইঙ্গিত দেয়। পরিবর্তিত বিশ্ব ব্যবস্থায় এই রাজনৈতিক মেরুকরণ পশ্চিমা বিশ্বকে ব্যতিব্যস্ত রাখবে সামনের দিনগুলিতে।

5 comments:

  1. নারীবাদ আসলে কি ধরনের আর্দশ ও সেকুরাজিমের সাথে এর কি সংযোগ আছে। পশ্চিমা সমাজে এটা কি ধরনের সমস্যা তৈরি করেছে তারা কেন তাদের আর্দশের সাথে যুদ্ধরত

    ReplyDelete
    Replies
    1. পশ্চিমা সেকুলার চিন্তা থেকে আসা পুঁজিবাদী আদর্শের একটা ভিত্তি হলো মানবাধিকার। নারীর অধিকার প্রকৃতপক্ষে মানবাধিকারের একটা অংশ।

      এই আদর্শের আরেকটা অংশ হলো স্বাধীনতা। স্বাধীনতার মাঝে রয়েছে ব্যক্তিস্বাধীনতা, মালিকানার স্বাধীনতা, চিন্তার স্বাধীনতা, বাকস্বাধীনতা, বিশ্বাসগত স্বাধীনতা। এই ভিত্তিগুলি একটা অপরটার সাথে সাংঘর্ষিক। যেমন মালিকানার স্বাধীনতার মাঝে বেশ্যাবৃত্তির ব্যবসাও রয়েছে, যা নারীকে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নামিয়ে আনে। আরেকটা ভিত্তি মুক্তবাজার অর্থনীতি সকলকিছুকে পণ্য হিসেবে দেখে - এমনকি নারীকেও সে পণ্য হিসেবে দেখে। এর ফলে নারীকে সমাজের সামনে ভোগ্যপণ্যের মতো করে উপস্থাপন করা হয়। এর ফলে সমাজে বিকৃত যৌনাচারের সংস্কৃতি তৈরি হয়। নারীর অধিকার হয় লঙ্ঘিত। এর ফলশ্রুতিতে তারা নারীর অধিকারকে আলাদাভাবে দেখতে শুরু করে। তবে বেশ্যাবৃত্তিকে স্বাভাবিক পেশা এবং ব্যবসা হিসেবে দেখতে থাকে; এবং নারীকে পণ্য হিসেবে দেখা অব্যাহত রাখে।

      ব্যক্তিস্বাধীনতার মাঝে যৌনাচারের স্বাধীনতাও রয়েছে। এর ফলে বৈবাহিক সম্পর্কের বাইরে যৌনাচার এবং সমকামিতার মতো বিকৃত যৌনাচারও মানুষ স্বাভাবিক হিসেবে দেখতে থাকে। এগুলির ফলশ্রুতিতে বৈবাহিক সম্পর্কের বাইরে গর্ভধারণ একটা স্বাভাবিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর যেহেতু ব্যক্তিস্বাধীনতাকে পবিত্র হিসেবে রক্ষা করতেই হবে, তাই বৈবাহিক সম্পর্কের বাইরে অবাধ যৌনাচারকেও রক্ষা করতে হবে। ফলশ্রুতিতে বৈবাহিক সম্পর্কের বাইরে সন্তান প্রসব, ডাস্টবিনে নবজাতক, অথবা গর্ভপাত। এগুলি পশ্চিমা সেকুলার চিন্তার স্বাভাবিক ফলাফল।

      Delete
  2. নাউজুবিল্লাহ।আল্লাহর গজব পরুক কাফেরদের উপর।

    ReplyDelete
  3. ইসলামী দেশগুলো যে নারী অধিকারে জন্য যে ফালতু কথা বার্তা বলা এসকল খারাপ লোকগুলোকে কেন সরকার সর্মথন করে

    ReplyDelete
    Replies
    1. এই মুহুর্তে কোন ইসলামিক রাষ্ট্র দুনিয়াতে নেই; সবগুলিই সেকুলার রাষ্ট্র। হয়তো তাদের জনগোষ্ঠী মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ।

      খারাপ লোকগুলিকে খারাপ মনে হবে না যদি আপনি তাদের চিন্তার অনুসারী হন। যেহেতু সকল রাষ্ট্রই বর্তমানে পশ্চিমা সেকুলার চিন্তার উপরে স্থাপিত, তাই খারাপ লোকগুলিকে আসলে খারাপ মনে হয় না।

      Delete