Thursday 18 February 2021

ডলার ছাপিয়ে চলছে যুক্তরাষ্ট্র ..... কিন্তু এভাবে কতদিন?

১৯শে ফেব্রুয়ারি ২০২১

মার্কিন সরকারের নিজের ব্যাংক থেকে ইচ্ছেমতো ঋণ নেয়া এবং শূণ্য থেকে ডলার তৈরি করে ঘাটতি পূরণ করার এহেন কাহিনী গায়ের জোরে এক মুদ্রাব্যবস্থাকে ধরে রাখাকেই দেখিয়ে দিচ্ছে। কেউ কেউ এই ব্যবস্থাকে সমর্থনও করে যাচ্ছেন এই ভেবে যে, এটা কখনোই ভেঙ্গে পড়বে না। কিন্তু করোনা মহামারি দেখিয়ে দিয়েছে যে, যুক্তরাষ্ট্রের গায়ের জোর কেন, কোনকিছুই আসলে স্থায়ী নয়। পরিবর্তিত বিশ্ব ব্যবস্থায় ডলারের স্থায়িত্ব কতদিন, তা নিশ্চিত করে বলা না গেলেও ডলারের উপর বিশ্ব অর্থনীতির নির্ভরশীলতা কতদিন যুক্তরাষ্ট্রকে টিকিয়ে রাখবে, সেব্যাপারে আলোচনা হতে পারে।


নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন করোনাভাইরাসের মহামারি এবং এর ফলশ্রুতিতে সৃষ্ট মহামন্দা থেকে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিকে বাঁচাতে ১ দশমিক ৯ ট্রিলিয়ন ডলার বা ১৯’শ বিলিয়ন ডলারের প্রণোদনা প্যাকেজ প্রস্তাব করেছেন। এর মাঝে ১ ট্রিলিয়ন বা ১ হাজার বিলিয়ন ডলার নগদ অর্থ সহায়তা হিসেবে খেটে খাওয়া মানুষকে দেয়া হবে। ৪’শ বিলিয়ন খরচ করা হবে ভ্যাকসিন এবং মেডিক্যাল ব্যবস্থার উন্নয়নের পিছনে। আরও ৪’শ ৪০ বিলিয়ন ডলার দেয়া হবে বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য এবং ছোট ব্যবসাগুলিকে, যারা পুঁজি বাজার থেকে ঋণ পাবে না। ‘কংগ্রেশনাল বাজেট অফিস’ বা ‘সিবিও’এর হিসেবে এই প্রণোদনা প্যাকেজ ২০২১ সালের পুরো মার্কিন জিডিপির প্রায় ৮ দশমিক ৭ শতাংশ। তবে সমস্যা সেখানে নয়, ‘সিবিও’ হিসেব করে বলছে যে, ২০২১ সালে সরকারের পুরো রাজস্ব হবে খুব বেশি হলে সাড়ে ৩ ট্রিলিয়ন বা ৩৫’শ বিলিয়ন ডলার হবে। অর্থাৎ ১৯’শ বিলিয়ন ডলারের প্রণোদনা প্যাকেজ মার্কিন সরকারের বাৎসরিক রাজস্বের ৫৪ শতাংশ। অথচ এই ‘রেসকিউ প্যাকেজ’ আসলে করোনাভাইরাসের কারণে বেড়ে যাওয়া খরচের উপরে যোগ হওয়া খরচ। ২০২১ সালে সরকারের বাজেট ঘাটতি হবে ২৩’শ বিলিয়ন ডলার; যা জিডিপির ১০ দশমিক ৩ শতাংশ। আর রাষ্ট্রীয় ঋণ দাঁড়াচ্ছে জিডিপির ১’শ শতাংশ বা জিডিপির সমান। এটা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সর্বোচ্চ।

‘সিএনএন’এর এক লেখায় ‘কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটি’র প্রফেসর জেফরি সাক্স বলছেন যে, বাইডেন তার করোনা প্রণোদনার ব্যাপারে বেশ শক্ত যুক্তি রেখেছেন; এবং একইসাথে দীর্ঘমেয়াদী উত্তোরণের পিছনেও কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এই অর্থ আসবে কোত্থেকে? বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘমেয়াদী অবকাঠামো উন্নয়নে আরও ২ ট্রিলিয়ন বা ২ হাজার বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। সাক্স বলছেন যে, তিন পদ্ধতিতে এই কয়েক ট্রিলিয়ন ডলারের ঘাটতি পূরণ করা যেতে পারে। প্রথমতঃ মার্কিন সরকার আরও ঋণ করতে পারে। দ্বিতীয়তঃ কেন্দ্রীয় ব্যাংক ‘ফেডেরাল রিজার্ভ’ বা ‘ফেড’ আরও ডলার ছাপাতে পারে। আর তৃতীয়তঃ সরকার ট্যাক্স বাড়াতে পারে। সরকার ঋণ করতেই পারে। কিন্তু যখন রাষ্ট্রীয় ঋণ জিডিপির সমান, তখন ঋণ করার সীমা নিয়ে প্রশ্ন আসতেই পারে। আর ‘ফেড’ ফেব্রুয়ারি ২০২০ থেকে জানুয়ারি ২০২১ সালের মাঝে প্রায় ১৮’শ বিলিয়ন ডলার ছাপিয়েছে! বর্তমানে বাজারে থাকা মোট ডলার হলো ৫ দশমিক ২ ট্রিলিয়ন বা ৫২’শ বিলিয়ন। অর্থাৎ ২০২০ সালের এক বছরে যুক্তরাষ্ট্র বাজারের মোট ডলারের ৩৪ শতাংশ ছাপিয়েছে! ২০০৮ সালে ‘ফেড’এর মোট ছাপানো ডলারের পরিমাণ ছিল মাত্র ৮’শ ৪৭ বিলিয়ন ডলার। সাক্স বলছেন যে, ঋণ করার যেমন সীমা রয়েছে, তেমনি ডলার ছাপানোরও সীমা রয়েছে। কারণ ডলার বেশি ছাপালে মুদ্রাস্ফীতি হবে। তিনি বলছেন যে, ইতোমধ্যেই বিভিন্ন পণ্যের মূল্য বেড়েছে, যা কিনা সামনের দিনগুলিতে আরও বেশি মুদ্রাস্ফীতির দিকেই ইঙ্গিত দেয়। এটা নিশ্চিত যে, ঋণ করে আর ডলার ছাপিয়ে সরকারের বাজেট ঘাটতি দূর করা যাবে না। তাই জনগণের উপর করের বোঝাও বাড়াতে হবে।

জেফরি সাক্সের কথার কিছু প্রমাণ পাওয়া যায় কিছু গুরুত্বপূর্ণ দ্রব্যের মূল্যের দিকে তাকালে। ‘গোল্ড হাব’এর হিসেবে, ২০২০এর অগাস্টে আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের মূল্য আউন্স প্রতি সর্বোচ্চ ২ হাজার ডলার পেরিয়ে যায়। ২০১৯এর ডিসেম্বরে তা ছিল প্রায় ১৪’শ ৭৯ ডলার। অর্থাৎ ২০২০ সালের আট মাসে স্বর্ণের মূল্য ৩৭ শতাংশ বেড়ে যায়! তবে এরপর কিছুটা কমে এসে স্বর্ণের মূল্য ২০২১এর ফেব্রুয়ারিতে প্রায় ১৭’শ ৮০ ডলার হয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে খাদ্যশস্যের মূল্যও বেড়েছে। ‘ট্রেডিং ইকনমিকস’এর হিসেবে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে গমের মূল্য যেখানে ছিল সর্বোচ্চ ৫’শ ৮০ ডলার, সেখানে ২০২১এর জানুয়ারিতে তা ৬’শ ৭৮ ডলারে উঠে যায়। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে গমের মূল্য বেড়েছে প্রায় ১৭ শতাংশ। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে গমের মূল্য ৬’শ ৪৮ ডলারের কাছাকাছি রয়েছে। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে তা সর্বোচ্চ ৫’শ ৬৩ ডলার ছিল। ফেব্রুয়ারি মাসেও মূল্য ১৫ শতাংশ বেশি রয়েছে।

 
২০২০এর অগাস্টে আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের মূল্য আউন্স প্রতি সর্বোচ্চ ২ হাজার ডলার পেরিয়ে যায়। স্বর্ণের মূল্য বহুবার কমেছে বা বেড়েছে। আসলে স্বর্ণ আগের জায়গাতেই আছে; ডলারের মূল্য কমেছে বা বেড়েছে। ‘ফেড’ যখন ইচ্ছে ডলার ছাপিয়ে বা বাজার থেকে ডলার কিনে বাজারে ডলারের মূল্য ঠিক রাখার চেষ্টা করেছে।

‘ইউএসএ টুডে’র এক প্রতিবেদনে মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ‘ফেড’এর ডলার ছাপানোকে ‘জাদু’র সাথে তুলনা করা হয়। যখনই ডলারের দরকার পরবে, তখনই ‘ফেড’ কম্পিউটারের কিছু বাটন চাপ দিয়ে একেবারে শূণ্য থেকে ডলার তৈরি করে নেয়। ইলেকট্রনিক ডিপোজিটের মতো ‘ফেড’ ‘ভার্চুয়াল প্রিন্টিং’এর মাধ্যমে ডলার তৈরি করে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কের কাছে পাঠিয়ে দেয়। ‘অক্সফোর্ড ইকনমিক্স’ বলছে যে, এটা করোনা মহামারি এবং এর ফলশ্রুতিতে মহামন্দা থেকে উত্তোরণের জন্যে একটা উপায়। নিউ ইয়র্কের ‘বার্ড কলেজ’এর অর্থনীতিবিদ পাভলিনা চেরনেভা বুঝিয়ে বলেন যে, একজন ব্যক্তি অর্থ দরকার হলে যেভাবে চেক লিখে একাউন্ট থেকে অর্থ তুলতে পারে, তেমনি বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলিও ‘ফেড’ থেকে ঋণ নিতে পারে। মার্কিন কংগ্রেস বিশাল রাষ্ট্রীয় ঋণের অনুমোদন দিচ্ছে; আর সেটা পূরণ করে দিচ্ছে ‘ফেড’। ‘ফেড’এর ডলার ছাপানোর এই পদ্ধতির সমালোচক প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেনশনিয়াল প্রার্থী রন পল ‘ইউএসএ টুডে’কে বলছেন যে, যুক্তরাষ্ট্র মিথ্যা অর্থ দিয়ে কাজ করছে। এখানে মাপকাঠিটাও বানোয়াট; যা কিনা সত্যিকার অর্থেই অবিশ্বাস্য! ব্যক্তি বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তাদের ক্রেডিট কার্ডের বিল একটা বাটন চেপেই দিয়ে দিয়ে পারছেন না; নিজেদের কষ্ট করে আয় করে সেখান থেকে দিতে হচ্ছে। অথচ মার্কিন সরকার একটা বাটন চেপেই তার ঋণ পরিশোধ করে ফেলতে পারছে; কারণ সরকারের নিজস্ব ব্যাংক ডলার ছাপাচ্ছে!

মার্কিন সরকার ঋণ নেবার জন্যে ট্রেজারি বন্ড ইস্যু করে। সেটা কিনে নেয় বিনিয়োগকারীরা। এর বিনিময়ে তারা সরকার থেকে সুদ আয় করে। মার্কিন সরকারের ‘গভর্নমেন্টে একাউন্টাবিলিটি অফিস’ বা ‘জিএও’এর ২০১৯ সালের হিসেবে সরকারের ইস্যু করা মোট ট্রেজারি বন্ডের প্রায় ১৪ শতাংশ ‘ফেড’ কিনেছে; বাকিটা কিনেছে মার্কিন এবং অন্য দেশের বিনিয়োগকারীরা। কিন্তু গত মার্চ মাস থেকে মার্কিন সরকারের ইস্যু করা বেশিরভাগ ট্রেজারি বন্ড কিনেছে মার্কিন সরকারের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ‘ফেডেরাল রিজার্ভ’। অর্থাৎ মার্কিন সরকারের একটা প্রতিষ্ঠান আরেকটা সরকারি প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দিচ্ছে! আর সেই ঋণের অর্থ এসেছে শূণ্য থেকে! রন পল বলছেন যে, এভাবে ডলার ছাপানোর অর্থ হলো অর্থনীতি ফুলে ফেঁপে বেলুনের মতো হয়ে যাবে। বাজারে পণ্য যা রয়েছে, তার চাইতে ডলার বেশি হয়ে যাবে। ফলশ্রুতিতে মুদ্রাস্ফীতি হবে। এক ডলারে আগে যত পণ্য কেনা যেত, এখন তার চাইতে অনেক কম কেনা যাবে। রন পলের উল্টো কথা বলছেন ‘মডার্ন মনেটারি থিওরি’র অনুসারীরা। তারা বলছেন যে, বর্তমান ব্যবস্থায় ডলার ছাপিয়ে সরকার সর্বদাই তার ঋণগুলি শোধ করতে পারবে। কাজেই বাজেট ঘাটতি বা অনেক বেশি ঋণ কোন সমস্যা নয়। কিন্তু বিশ্বের সকল দেশ দরকার হলেই নিজের অর্থ নিজে ছাপিয়ে নিতে পারে না। আর বিশ্বের সবচাইতে শক্তিশালী সামরিক বাহিনী এবং সুপারপাওয়ার হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে ঋণ পেতে পারে, তা দুনিয়ার আর কেউ পেতে পারে না। সকলেই মার্কিন সরকারের ট্রেজারি বন্ড কিনতে চায়। কিন্তু এভাবে কতদিন চলবে?

যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রীয় ঋণ প্রায় ২৭ ট্রিলিয়ন বা ২৭ হাজার বিলিয়ন ডলার! এই ঋণ যুক্তরাষ্ট্রের জিডিপির ১’শ ২৭ শতাংশ! সরকারি ও বেসরকারি মিলে যুক্তরাষ্ট্রের মোট ঋণ দেশটার জিডিপির ৩’শ ১৯ শতাংশ বা তিন গুণেরও বেশি! এই ঋণের বেশিরভাগটাই স্বাভাবিক অর্থনৈতিক কর্মকান্ড থেকে আসেনি। যখনই দরকার হয়েছে, তখনই কেন্দ্রীয় ব্যাংক ‘ফেডেরাল রিজার্ভ’ বা ‘ফেড’ শূণ্য থেকে ডলার তৈরি করে দিয়েছে! এই ডলারই ১৯৭১ সাল থেকে সারা বিশ্বের রিজার্ভ মুদ্রা হিসেবে চলছে।


যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি চলছে ঋণের উপর। বিশ্বব্যাংকের হিসেবে ২০১৯ সালের শেষে যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি ঋণ ছিল জিডিপির প্রায় ১’শ ৯২ শতাংশ! মার্কিন ‘ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট’এর হিসেব বলছে যে, যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রীয় ঋণ প্রায় ২৭ ট্রিলিয়ন বা ২৭ হাজার বিলিয়ন ডলার! ‘ফ্রেড ইকনমিক ডাটা’ বলছে যে, এই ঋণ যুক্তরাষ্ট্রের জিডিপির ১’শ ২৭ শতাংশ! অর্থাৎ সরকারি ও বেসরকারি মিলে যুক্তরাষ্ট্রের মোট ঋণ দেশটার জিডিপির ৩’শ ১৯ শতাংশ বা তিন গুণেরও বেশি! এই ঋণের বেশিরভাগটাই স্বাভাবিক অর্থনৈতিক কর্মকান্ড থেকে আসেনি। যখনই দরকার হয়েছে, তখনই কেন্দ্রীয় ব্যাংক ‘ফেডেরাল রিজার্ভ’ বা ‘ফেড’ শূণ্য থেকে ডলার তৈরি করে দিয়েছে! এই ডলারই ১৯৭১ সাল থেকে সারা বিশ্বের রিজার্ভ মুদ্রা হিসেবে চলছে। সেবছরের অগাস্ট মাসে যুক্তরাষ্ট্র একতরফাভাবে ১৯৪৪ সালে করা ‘ব্রেটন উডস’ চুক্তি থেকে বের হয়ে যায়। সেই চুক্তি মোতাবেক মার্কিন ডলারের মূল্য স্বর্ণের সাথে যুক্ত করা ছিল। স্বর্ণকে মুদ্রা ব্যবস্থার মাপকাঠি হিসেবে রাখাকে বলা হতো ‘গোল্ড স্ট্যান্ডার্ড’। কিন্তু চুক্তি থেকে বের হয়ে যাবার পর মার্কিন ডলারের মূল্যের কোন হদিসই থাকলো না। বরং অন্যান্য মুদ্রার মূল্য নির্ধারিত হতে থাকলো মার্কিন ডলারের বিপরীতে। ডলারই হয়ে গেল বৈশ্বিক মুদ্রাব্যবস্থার মাপকাঠি। ‘ম্যাক্রোট্রেন্ডস’এর এক হিসেবে দেখানো হচ্ছে যে, ১৯৪৪ সালে এক আউন্স স্বর্ণ কিনতে লাগতো প্রায় ৫’শ ডলারের মতো। সেটা ২০২১ সালের ১৭ই ফেব্রুয়ারি ছিল ১৭’শ ৭২ ডলার ৮০ সেন্ট। এর মাঝে স্বর্ণের মূল্য বহুবার কমেছে বা বেড়েছে। আসলে স্বর্ণ আগের জায়গাতেই আছে; ডলারের মূল্য কমেছে বা বেড়েছে। ‘ফেড’ যখন ইচ্ছে ডলার ছাপিয়ে বা বাজার থেকে ডলার কিনে বাজারে ডলারের মূল্য ঠিক রাখার চেষ্টা করেছে। মার্কিন সরকারের নিজের ব্যাংক থেকে ইচ্ছেমতো ঋণ নেয়া এবং শূণ্য থেকে ডলার তৈরি করে ঘাটতি পূরণ করার এহেন কাহিনী গায়ের জোরে এক মুদ্রাব্যবস্থাকে ধরে রাখাকেই দেখিয়ে দিচ্ছে। কেউ কেউ এই ব্যবস্থাকে সমর্থনও করে যাচ্ছেন এই ভেবে যে, এটা কখনোই ভেঙ্গে পড়বে না। কিন্তু করোনা মহামারি দেখিয়ে দিয়েছে যে, যুক্তরাষ্ট্রের গায়ের জোর কেন, কোনকিছুই আসলে স্থায়ী নয়। পরিবর্তিত বিশ্ব ব্যবস্থায় ডলারের স্থায়িত্ব কতদিন, তা নিশ্চিত করে বলা না গেলেও ডলারের উপর বিশ্ব অর্থনীতির নির্ভরশীলতা কতদিন যুক্তরাষ্ট্রকে টিকিয়ে রাখবে, সেব্যাপারে আলোচনা হতে পারে।

No comments:

Post a Comment