Wednesday 10 February 2021

নাভালনি ইস্যু ইউরোপের বিভাজনকে আবারও সামনে নিয়ে এলো

১০ই ফেব্রুয়ারি ২০২১

ইইউএর জন্যে নাভালনি ইস্যু এবং ‘নর্ড স্ট্রিম ২’ পাইপলাইন একই সূত্রে গাঁথা। পরিবর্তিত বিশ্ব ব্যবস্থায় ইউরোপের জাতিরাষ্ট্রগুলির জাতীয় স্বার্থের কাছে ইইউএর স্বার্থ যখন গৌন হয়ে যাচ্ছে, তখন ইইউএর স্থায়িত্ব নিয়েই প্রশ্ন উঠছে। ইইউএর অভ্যন্তরীণ এই দ্বন্দ্বকে ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপে তার অবস্থানকে ধরে রাখতে চাইছে; যা প্রমাণ করে যে যুক্তরাষ্ট্র এখনো বিশ্বের সুপারপাওয়ার।

অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলর সেবাস্টিয়ান কুর্জ গত ৬ই ফেব্রুয়ারি জার্মান পত্রিকা ‘ওয়েম আম সনটাগ’এ প্রকাশিত এক সাক্ষাতে বলেন যে, ‘নর্ড স্ট্রিম ২’ গ্যাস পাইপলাইন ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের অনেকগুলি দেশের স্বার্থের জন্যে গুরুত্বপূর্ণ। কাজেই ইইউএর উচিৎ হবে না রাশিয়াতে বিরোধী রাজনীতিবিদ আলেক্সি নাভালনির কারাদন্ডের প্রতিবাদ করতে গিয়ে এই প্রকল্পকে বিপদে ফেলে দেয়া। তিনি বলেন যে, এটা একটা ইউরোপিয় প্রকল্প; যারা এটাকে রুশ স্বার্থের প্রকল্প হিসেবে দেখছেন, তারা ভুল করছেন। তবে চ্যান্সেলর নাভালনির কারাদন্ডাদেশের বিরুদ্ধাচরণ করেন এবং বলেন যে, রাশিয়ার উচিৎ নাভালনিকে মুক্ত করে দেয়া। ৭ই ফেব্রুয়ারি আরেক জার্মান পত্রিকা ‘বিল্ড আম সনটাগ’এ প্রকাশিত এক সাক্ষাতে জার্মান অর্থমন্ত্রী পিটার আল্টমায়ার বলেন যে, নাভালনি ইস্যুকে ‘নর্ড স্ট্রিম ২’ পাইপলাইনের সাথে একত্রে দেখা ঠিক হবে না। তিনি বলেন যে, বহুদিন ধরে চলে আসা ব্যবসা একটা বিষয়; আর মারাত্মক মানবাধিকার লঙ্ঘনের ব্যাপারে জার্মানির প্রতিক্রিয়া আরেকটা বিষয়। এর আগে ৫ই ফেব্রুয়ারি জার্মান চ্যান্সেলর এঙ্গেলা মার্কেল রাশিয়া থেকে জার্মানিসহ তিন দেশের কূটনীতিবিদ বহিষ্কারের ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে নাভালনির ইস্যুর সাথে ‘নর্ড স্ট্রিম ২’ প্রকল্পকে একত্রে না দেখার আহ্বান জানান। রাশিয়া অভিযোগ করে যে, সুইডেন, পোল্যান্ড ও জার্মানির সেই কূটনীতিবিদেরা নাভালনির পক্ষে রাস্তায় বিক্ষোভে জড়িয়েছিল। নাভালনি ইস্যু ভূরাজনৈতিকভাবে একটা অস্থিরতার জন্ম দিয়েছে, যা শুধুমাত্র রাশিয়ার রাজনীতিতেই সীমাবদ্ধ নয়।

‘ডয়েছে ভেলে’ বলছে যে, আলেক্সি নাভালনি ২০০৮ সালে তার ব্লগের মাধ্যমে রুশ রাজনীতি এবং সরকারি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলির দুর্নীতির খবর প্রকাশ করে আলোচনায় আসেন। প্রাক্তন এই আইনজীবি ২০১১ সাল থেকে বেশ ক’বার বিক্ষোভ করার ফলশ্রুতিতে কারাগারে যান। ২০১৩ সালে তিনি মস্কোর মেয়রের পদের জন্যে নির্বাচনে দাঁড়িয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভোট পান। রুশ সরকারি মিডিয়াতে আসতে বাধা দেয়ায় নাভালনি সোশাল মিডিয়া ব্যবহার করে পুতিনের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিতে থাকেন। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে রুশ প্রেসিডেনশিয়াল নির্বাচনে অংশ নেবার ঘোষণা দেবার পর বিভিন্ন মামলার ফাঁদে পড়ে তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে সক্ষম হননি। ২০১৭ সালের এপ্রিলে এক রাসায়নিক হামলায় তার এক চোখ মারাত্নকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলে রুশ সরকার তাকে চিকিৎসার জন্যে স্পেনে যেতে অনুমতি দেয়। তবে ২০১৯ সালে তিনি আরও কয়েকবার গ্রেপ্তার হন এবং এই সময়ের মাঝেই তিনি বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হন। তিনি অভিযোগ করেন যে, রুশ সরকারই তাকে আক্রান্ত করেছে। সেবছরের ডিসেম্বরে তার অফিসে পুলিশের হামলার পর ২০২০ সালের মার্চে তার এবং তার পরিবারের ব্যাংক একাউন্ট জব্দ করা হয়। অগাস্ট মাসে তার মুখপাত্র জানান যে, হঠাত মারাত্মক অসুস্থ্য হবার কারণে জরুরি ভিত্তিতে তাকে জার্মানিতে চিকিৎসার জন্যে পাঠানো হয়েছে। জার্মান সরকার বলে যে, নাভালনিকে ‘নোভিচক’ নামের নার্ভ এজেন্টের মাধ্যমে আক্রান্ত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তিনি দেশে ফেরত আসলে আইন ভেঙ্গে জার্মানিতে বেশি সময় থাকার কারণে তাকে দুই বছর ৮ মাস কারাদন্ড দেয়া হয়। নাভালনির এই কারাদন্ডাদেশের পরই তার সমর্থকেরা রাস্তায় নেমে আসে।

‘নর্ড স্ট্রিম ২’ গ্যাস পাইপলাইনের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বার্তা সংস্থা ‘ব্লুমবার্গ’ বলছে যে, এই পাইপলাইন বল্টিক সাগরের তলদেশ দিয়ে নির্মিত হচ্ছে, যা রাশিয়া থেকে সরাসরি জার্মানিতে গ্যাস সরবরাহ করবে। রুশ সরকারি কোম্পানি ‘গ্যাজপ্রম’এর তত্বাবধানে নির্মিত হওয়া এই পাইপলাইন ইতোমধ্যেই মার্কিন অবরোধের শিকার হয়েছে। মার্কিনীরা বলছে যে, এই পাইপলাইন নির্মিত হলে ভূরাজনৈতিকভাবে জার্মানি রাশিয়ার উপর আরও বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়বে। এর মাধ্যমে জার্মানি এবং ন্যাটোর উপর ক্রেমলিনের প্রভাব অনেক বেড়ে যেতে পারে। নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এই প্রকল্পকে ‘ইউরোপের জন্যে খারাপ চুক্তি’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। ‘ডয়েচে ভেলে’ বলছে যে, বাইডেন প্রশাসন খুব সম্ভবতঃ এই প্রকল্পে কাজ করা কোম্পানিগুলির উপর আরও অবরোধ দিতে চলেছে। ৬ই ফেব্রুয়ারি রুশ জাহাজ ‘ফরচুনা’ ডেনমার্কের সমুদ্রসীমায় পাইপ বসাবার কাজ চালাচ্ছে বলে এক বিবৃতিতে বলা হয়। ১২’শ ৩০ কিঃমিঃ লম্বা এই ডাবল পাইপলাইন বাস্তবায়ন হলে জার্মানিতে রুশ প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহ দ্বিগুণ হবে। এখন মাত্র ১’শ ৫০ কিঃমিঃ পাইপলাইন বসানো বাকি রয়েছে।
 


জার্মান চ্যান্সেলর এঙ্গেলা মার্কেল এবং ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রঁ ৫ই ফেব্রুয়ারি বলেছেন যে, তারা মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সাথে ইউরোপের বৈঠকের আগে ইউরোপের জ্বালানি নীতির ব্যাপারে একমত হবার দরকারের ব্যাপারে ঐকমত্যে পৌঁছেছেন। এর আগে পহেলা ফেব্রুয়ারি ফ্রান্সের ইউরোপিয়ার এফেয়ার্স মন্ত্রী ক্লিমেন্ট বিউন ‘ফ্রান্স ইন্টার’ রেডিওতে এক সাক্ষাতে বলেন যে, জার্মানির উচিৎ রাশিয়ার সাথে ‘নর্ড স্ট্রিম ২’ প্রকল্প বাতিল করে দেয়া। ফ্রান্স সবসময়ই বলে আসছিল যে, এই প্রকল্পের ব্যাপারে ফ্রান্সের যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। বার্তা সংস্থা ‘এএফপি’ মনে করিয়ে দিচ্ছে যে, প্রায় এক বছর মার্কিন অবরোধের কারণে কাজ থেমে থাকার পর গত ডিসেম্বর থেকে পাইপলাইনের কাজ আবারও শুরু হয়েছে। ক্লিমেন্ট বিউন বলেন যে, নাভালনি ইস্যুতে ইইউ রাশিয়ার উপর নতুন করে অবরোধ দেয়ার চিন্তা করছে। এই পাইপলাইন নিয়ে ইতোমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও পোল্যান্ড, তিনটা বল্টিক রাষ্ট্র এবং ইউক্রেন তাদের দুশ্চিন্তার কথা প্রকাশ করেছে।

ইইউএর জন্যে নাভালনি ইস্যু এবং ‘নর্ড স্ট্রিম ২’ পাইপলাইন একই সূত্রে গাঁথা। ব্রাসেলস ইতোমধ্যেই বলেছে যে, ‘নর্ড স্ট্রিম ২’ প্রকল্প ইউরোপের প্রকল্প নয়; এটা একটা জার্মান প্রকল্প। ২১শে জানুয়ারি ইইউ পার্লামেন্টের এক ভোটাভুটিতে বিপুল ভোটে ‘নর্ড স্ট্রিম ২’ পাইপলাইনের বিরুদ্ধে রেজোলিউশন পাস হয়। কেউ কেউ বলছেন যে, জার্মানি বা ইউরোপের জন্যে এই পাইপলাইন অবশ্য প্রয়োজনীয় নয়। তবে এই প্রকল্পে কাজ করা কোম্পানিগুলির বিরুদ্ধে ইইউএর কোন ব্যবস্থা গ্রহণের কার্পণ্য থেকে বোঝা যায় যে, ইইউএর মাঝে জার্মানির প্রভাব কতটুকু। পরিবর্তিত বিশ্ব ব্যবস্থায় ইউরোপের জাতিরাষ্ট্রগুলির জাতীয় স্বার্থের কাছে ইইউএর স্বার্থ যখন গৌন হয়ে যাচ্ছে, তখন ইইউএর স্থায়িত্ব নিয়েই প্রশ্ন উঠছে। ইইউএর অভ্যন্তরীণ এই দ্বন্দ্বকে ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপে তার অবস্থানকে ধরে রাখতে চাইছে; যা প্রমাণ করে যে যুক্তরাষ্ট্র এখনো বিশ্বের সুপারপাওয়ার।

6 comments:

  1. আমেরিকা বনাম জার্মানি রাশিয়ার পাইপলাইনের দ্বন্দ্বে ফান্স কেন সন্দেহ পোষণ করে। ফান্সের স্বার্থ কিরুপ এই খেলায় বিট্রেনর অবস্থান কি রকম।

    ReplyDelete
    Replies
    1. ইউরোপের নেতৃত্ব দেয়ার ব্যাপারে ফ্রান্স এবং জার্মানির প্রতিযোগিতা মধ্যযুগ থেকেই। ৮০০ সাল থেকে ১৫০০ সাল পর্যন্ত পুরো খ্রিস্টান দুনিয়ার নেতৃত্ব দেয়ার ব্যাপারে জার্মানরা এগিয়ে ছিল। এরপর সেটা ভাগাভাগি হয়ে জার্মানরা দুর্বল হয়ে পড়ে। এর সুযোগ নেয় ব্রিটেন ও ফ্রান্স। ব্রিটেন অস্ট্রিয়ান হ্যাবসবার্গ সাম্রাজ্যকে তৈরি করে এবং রাশিয়ান জারের সাম্রাজ্যকে সাথে নিয়ে একদিকে জার্মানদেরকে নিয়ন্ত্রণ করেছে, তেমনি উসমানিদের কাছ থেকে দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপ দখল করেছে। ব্রিটেন ও ফ্রান্স কখনোই জার্মানির কাছে ইউরোপের নেতৃত্ব দিতে চায়নি। ব্রিটেন এবং ফ্রান্স একে অপরের প্রতিযোগী হলেও জার্মানিকে নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে তারা একমত ছিল। ন্যাপোলিয়নের সময় ব্রিটেন ইউরোপের নিয়ন্ত্রণ কিছুদিনের জন্যে হারায়। সেটা আবারও তারা পুনরায় ফিরে পায় ১৮১৫ সালে ফ্রান্সে পরিবর্তনের সাথে সাথে। কিন্তু ১৮৭০ সালে জার্মানির একত্রীকরণের ফলে ব্রিটেন আবারও ইউরোপের নিয়ন্ত্রণ নিতে হিমসিম খেয়ে যায়। প্রকৃতপক্ষে এরপর থেকে ব্রিটেন আর কখনোই ইউরোপের নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরিভাবে নিতে পারেনি। ফ্রান্স জার্মানিকে নিয়ন্ত্রণে সক্ষম ছিল না কখনোই; এখনও নেই।

      ব্রিটেন ইউরোপে তার প্রভাব ধরে রাখে সমমনা দেশগুলির মাধ্যমে - নেদারল্যান্ডস, ডেনমার্ক, নরওয়ে, সুইডেন, ফিনল্যান্ড, লিথুয়ানিয়া, লাটভিয়া, এস্তোনিয়া - এদের মাধ্যমে। পোল্যান্ডও বহু আগ থেকেই ব্রিটেনের প্রভাবের মাঝেই ছিল। এখন পুরো নিয়ন্ত্রণ না থাকলেও সেখানে এখনও বেশ প্রভাব রয়েছে ব্রিটেনের।

      Delete
  2. আপনার বক্তব্য অনুযায়ী বৃটেন ইউরোপ ও এশিয়ায় পূনরায় প্রভাব বিস্তারের জন্য (ঔপনোবেশিক আমলের মত) গা-ঝাড়া দিয়ে উঠতে চাচ্ছে? যেমন একটা পোস্টে (মন্তব্যে) বলেছিলেন যে বার্মার জান্তার সাথে ঐতিহাসিকভাবে বৃটেনের সুসম্পর্ক আছে? কিন্তু বৃটেনের বর্তমানের আর্থিক ও সামরিক সামর্থ্য বহুলাংশে কম এই ধরনের আকাংখ্যা পূরনের জন্য। তবে বৃটিশদের ভূ-রাজনৈতিক কৌশল এবং পর্যবেক্ষন ক্ষমতা খুবই উন্নত ও দক্ষ এটা আমাদের মানতেই হবে।

    ReplyDelete
    Replies
    1. ব্রিটেন ব্রেক্সিটের খেলাটা খেলেছে 'গ্লোবাল ব্রিটেন' নামের চিন্তাটাকে এগিয়ে নেবার জন্যে। এর মাধ্যমে তারা নিজেদের বৈশ্বিক প্রভাবকে আবারও পুনরুদ্ধার করার পরিকল্পনা করছে। তাদের এই পরিকল্পনা শুরু হয়েছে ১৯৯০এর দশকে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর থেকে। নিজেদের ম্যাটেরিয়াল শক্তি কখনোই ছিল না ব্রিটেনের; বরং অন্যের সম্পদ ব্যবহার করেই ব্রিটেন নিজের শক্তিকে বিশ্বের বুকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। যেমন এর আগেরবার ব্রিটেন যখন সুপারপাওয়ার ছিল, তখন সে ভারত ও চীনকে তার অর্থনৈতিক শক্তির কেন্দ্র হিসেবে রেখেছিল। এবারে সেটা তাদের পক্ষে করা কঠিন। তারা আপাততঃ অস্ট্রেলিয়া, কানাডা এবং নিউজিল্যান্ডকে তাদের পরিকল্পনায় তাদের সাথে রেখেছে। তবে ভারত এবং চীনকে এড়িয়ে যাওয়া তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তাই তারা বার বার ঐদিকেই ফিরে আসতে চাইবে।

      এ নিয়ে এর আগে বেশকিছু লেখা রয়েছে। আপনি 'যুক্তরাষ্ট্রের পর...' বইখানা পড়তে পারেন। সেখানে 'গ্লোবাল ব্রিটেন'এর উপর একটা আলাদা অধ্যায় রয়েছে।

      Delete
  3. মুলত ইউরোপ নিয়ন্ত্রণ করে কোন রাষ্ট্র

    ReplyDelete
    Replies
    1. আপনি এই ব্লগে ব্রিটিশ-ডাচ বিরোধ নিয়ে পড়ুন। এবং জার্মানির একত্রীকরণ নিয়ে পড়ুন। একটা ধারণা পাবেন যে, ব্রিটেন কিভাবে ইউরোপে তার প্রভাব ধরে রেখেছে কয়েক শতক ধরে। এর মাঝে কিছু সময়ের জন্যে ব্রিটেনের হাতে পুরো নিয়ন্ত্রণ ছিল না। এব্যাপারে উপরের কমেন্টেই লিখেছি।

      দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে সোভিয়েত ইউনিয়নকে ঠেকানোর নিমিত্তে যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপের নিরাপত্তার দায়িত্ব নেয়। সেসময় থেকে যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপের উপর তার নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখার চেষ্টা করছে। এই নিয়ন্ত্রণ কখনোই একচ্ছত্র হয়নি; এখন তো নয়ই। তবে যতদিন যুক্তরাষ্ট্র প্রমাণ করতে পারবে যে, ইউরোপের উপর রাশিয়ার হুমকি বিদ্যমান, ততদিন যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারবে। তথাপি ব্রেক্সিটের পর ব্রিটেনও এক্ষেত্রে ইউরোপের উপর নিয়ন্ত্রণ নেবার চেষ্টা করছে। অর্থাৎ ইউরোপকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রিটেনের মাঝে একটা দ্বন্দ্ব থাকবে। উভয়েই রাশিয়ার তথাকথিত হুমকিকে ব্যবহার করবে।

      Delete