Monday 15 February 2021

তুরস্ক কেন বাইডেন প্রশাসনকে ছাড় দিতে চাইছে?

১৬ই ফেব্রুয়ারি ২০২১

২০১৬ সাল। তৎকালীন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সাথে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগান। তুরস্ক এখন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়। কিন্তু তুরস্ক কি সবসময় যুক্তরাষ্ট্রের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হবার আশাই করে যাবে? নাকি ভূরাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ হবার জন্যে যুক্তরাষ্ট্রের কক্ষপথ থেকে বের হবার চেষ্টা করবে? পরিবর্তিত বিশ্ব ব্যবস্থায় তুরস্ক আঞ্চলিকভাবে এবং বিশ্বব্যাপী তার প্রভাব বিস্তারে মনোনিবেশ করলেও এখনও যে তা যুক্তরাষ্ট্রের নীতিকে বাইপাস করতে পারেনি, তা পরিষ্কার।

 গত ১০ই ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র নেড প্রাইস সাংবাদিকদের বলেন যে, রুশ নির্মিত ‘এস ৪০০’ ক্ষেপণাস্ত্র কেনার জন্যে যুক্তরাষ্ট্র তুরস্কের উপর যে অবরোধ দিয়েছে, তা উঠিয়ে নেয়া হবে না। এব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের নীতির পরিবর্তন হয়নি। যুক্তরাষ্ট্র তুরস্ককে আহ্বান জানাচ্ছে যাতে তুরস্ক এই বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা না রাখে। ‘আল মনিটর’ বলছে যে, যুক্তরাষ্ট্রের এই বার্তা আসলো তুরস্কের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যের একদিন পরই, যেখানে তিনি ‘এস ৪০০’এর ব্যাপারে আলোচনায় বসার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। একইসাথে বার্তা সংস্থা ‘ব্লুমবার্গ’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তুর্কি কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বলে যে, ‘এস ৪০০’ ইস্যুতে তুরস্ক ছাড় দেয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে। নির্দিষ্ট গন্ডির মাঝে এগুলিকে ব্যবহার করার মাধ্যমে তুরস্ক যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা শিল্পের সাথে সম্পর্ক বজায় রাখতে চাইছে। গত ডিসেম্বরে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন তুরস্কের প্রতিরক্ষা ক্রয় দপ্তরের উপর অবরোধ আরোপ করে। নতুন বাইডেন প্রশাসনের সাথে তুরস্কের সম্পর্ক বেশ ঠান্ডাভাবেই শুরু হয়েছে। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বা পররাষ্ট্র সচিব এন্টনি ব্লিনকেন এখনও তুরস্কের নেতৃত্বের সাথে সরাসরি কথা বলেননি। তবে ফেব্রুয়ারির শুরুতেই মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেইক সুলিভান কথা বলেছেন তুরস্কের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ইব্রাহিম কালিনের সাথে। তুরস্কের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের মূল দরকষাকষির জায়গাটা ‘এস ৪০০’এর মাঝেই সীমাবদ্ধ নয়; এখানে কুর্দি প্রশ্নটাও জড়িত।

২০১৫ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ার কুর্দি সশস্ত্র গ্রুপ ‘ওয়াইপিজি’কে ‘সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফোর্সেস’ বা ‘এসডিএফ’ নামে ডাকে। তুরস্ক বলছে যে, ‘ওয়াইপিজি’র মূল নেতৃত্ব হলো ‘পিকেকে’র হাতে; যাদের বিরুদ্ধে তুরস্ক সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের আভিযোগ করে আসছে বহুদিন থেকেই। তুরস্কের দুশ্চিন্তা হলো, ‘ওয়াইপিজি’র জন্যে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন শেষ পর্যন্ত সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে একটা আলাদা কুর্দি সায়ত্বশাসিত অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করবে। ৯ই ফেব্রুয়ারি তুরস্কের ‘হুরিয়েত ডেইলি নিউজ’এর সাথে এক সাক্ষাতে তুর্কি প্রতিরক্ষামন্ত্রী হুলুসি আকার বলেন যে, যুক্তরাষ্ট্রের সাথে তুরস্কের সম্পর্কের সবচাইতে সংবেদনশীল দিক হলো ‘ওয়াইপিজি’র জন্যে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন। ‘ওয়াইপিজি’ হলো ‘পিকেকে’র সিরিয় অংশ মাত্র। আইসিসের সাথে যুদ্ধ করার নিমিত্তে যুক্তরাষ্ট্র ‘ওয়াইপিজি’কে সমর্থন দিয়ে এসেছে। যুক্তরাষ্ট্র যে বলছে যে, ‘ওয়াইপিজি’র সাথে ‘পিকেকে’র কোন যোগাযোগ নেই, এটা পুরোপুরি ভিত্তিহীন একটা কথা। মার্কিন ইন্টেলিজেন্স ‘ওয়াইপিজি’ এবং ‘পিকেকে’র মাঝে যোগাযোগ সম্পর্কে অবগত নয়, এটা বিশ্বাসযোগ্য ব্যাপার নয়। হুলুসি আকার বলেন যে, তুরস্ক যুক্তরাষ্ট্রকে বারংবার বলেছে যে, আইসিসের সাথে যুদ্ধ করার জন্যে তুরস্কের সাথে সহযোগিতা করতে; ‘ওয়াইপিজি’র সাথে নয়। তবে ‘এস ৪০০’এর ব্যাপারে ছাড় দেবার আভাস দিয়েছেন মন্ত্রী। তিনি বলেন যে, ন্যাটোর অন্যান্য সদস্য রাষ্ট্র, যেগুলি একসময় সোভিয়েত ব্লকে ছিল, তারা এখনও রুশ অস্ত্র ব্যবহার করছে। এবং সেগুলি ন্যাটোর সিস্টেমের মাঝেই অপারেট করছে। গ্রিস রাশিয়ার কাছ থেকে ‘এস ৩০০’ বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কিনে সেগুলিকে ক্রিট দ্বীপে মোতায়েনের মাধ্যমে একটা সমাধানে পৌঁছেছে। তুরস্কও তেমনি একটা সমাধানে পৌঁছার জন্যে আলোচনা করতে রাজি আছে। ব্যাপারটা এমন নয় যে, এই বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সর্বদাই অপারেশনাল রাখতে হবে। বরং হুমকি বিবেচনায় এগুলিকে অপারেশনাল করা হবে। এগুলি অপারেশনাল রাখার ব্যাপারে তুরস্কই সিদ্ধান্ত নেবে।

আঙ্কারার ‘ফরেন পলিসি ইন্সটিটিউট’এর প্রফেসর হুসেইন বাগচি ‘ডেইলি সাবাহ’র সাথে এক সাক্ষাতে বলছেন যে, তুরস্কের রুশ ‘এস ৪০০’ ক্ষেপণাস্ত্র মূলতঃ ন্যাটোর সমস্যা; যা এতো সহজেই সমাধান হয়ে যাচ্ছে না। কারণ যুক্তরাষ্ট্র এক্ষেত্রে তুরস্ককে কোনরূপ ছাড় দেয়ার দরকার মনে করছে না। তুরস্ক এই মুহুর্তে যুক্তরাষ্ট্রের জন্যে প্রাধান্য নয়; প্রাধান্য এখন চীন, ইইউ, ন্যাটো এবং রাশিয়া। অপরদিকে তুরস্ক চাইছে রাশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের সাথে একটা সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলতে। যুক্তরাষ্ট্রের সাথে তুরস্কের দ্বন্দ্বের অতি গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয় হলো কুর্দি গ্রুপগুলি। কুর্দি গ্রুপ ‘ওয়াইপিজি’র সাথে তুরস্কের অভ্যন্তরের সন্ত্রাসী কার্যকলাপে জড়িত ‘পিকেকে’র সরাসরি যোগাযোগ থাকা সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্র ‘ওয়াইপিজি’কে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। যতক্ষণ পর্যন্ত তুরস্ক এব্যাপারে ছাড় না দেবে, ততক্ষণ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র সমস্যা তৈরি করতে থাকবে।

যুক্তরাষ্ট্রের সাথে তুরস্কের সমস্যার আসলেই যেন কোন শেষ নেই। ৯ই ফেব্রুয়ারি মার্কিন সিনেটররা একটা চিঠি দেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে। চিঠিটা লেখেন ডেমোক্র্যাট সিনেটর রন ওয়াইডেন এবং রিপাবলিকান সিনেটর মার্কো রুবিও। ৫৪ জন সিনেটর সেটাতে স্বাক্ষর করেন। চিঠিতে অভিযোগ করা হয় যে, তুরস্ক ক্রমেই একটা একনায়কোচিত নেতৃত্বের দিকে ধাবিত হচ্ছে। সেখানে বিরোধীদেরকে চাপের মুখে রাখা হচ্ছে। এবং সেখানে গুরুত্বপূর্ণ মিডিয়াগুলিকে নিয়ন্ত্রণে রাখা হচ্ছে অথবা চুপ করিয়ে দেয়া হচ্ছে। এই চিঠির জবাবে তুরস্কের পার্লামেন্টের ৮৭ জন সদস্য একটা বিবৃতি দেন। এরা সকলেই ‘টার্কি ইউএস পার্লামেন্টারি ফ্রেন্ডশিপ গ্রুপ’এর সদস্য। তারা সমালোচনা করে বলেন যে, কৌশলগত সহযোগী যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে তারা এটা আশা করেন না। তারা যুক্তরাষ্ট্রকে পারস্পরিক সন্মান প্রদর্শনের ব্যাপারটা মনে করিয়ে দেন। একইসাথে তারা বলেন যে, যুক্তরাষ্ট্র ৬ই জানুয়ারি মার্কিন কংগ্রেসে হামলাকারীদেরকে ‘সন্ত্রাসী’ বলে আখ্যা দিলেও ২০১৬ সালে তুরস্কের ব্যর্থ অভ্যুত্থানের সাথে জড়িত থাকা ফেতুল্লা গুলেনের অনুসারীদেরকে মানবাধিকার কর্মী বলে আখ্যা দিচ্ছে। সেই অভ্যুত্থান চেষ্টায় ২’শ ৫১ জনের মৃত্যু হয়েছিল। গুলেনের সমর্থকদের কথাগুলিকে তুলে ধরে মার্কিন সিনেটররা একাধারে যেমন দ্বিমুখী নীতি নিয়েছেন, তেমনি তা ২০১৬ সালের সেই অভ্যুত্থান প্রচেষ্টায় জড়িত না থাকার মার্কিন বিবৃতিগুলিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।

তুর্কি পার্লামেন্টের সদস্যরাও যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক ভালো রাখারই পক্ষপাতি। পার্লামেন্টের সদস্যরা যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটরদের চিঠির সমালোচনা করেছেন সম্পর্কোন্নয়নের উদ্দেশ্যেই; শত্রু ভেবে নয়। তারা বলেছেন যে, ২০১৬ সালের অভ্যুত্থান চেষ্টায় যুক্তরাষ্ট্র জড়িত ছিল; তবুও তারা যুক্তরাষ্ট্রকে বন্ধু হিসেবেই দেখতে চাইছেন। তারা বলছেন যে, যুক্তরাষ্ট্র তাদের সাথে দ্বিমুখী আচরণ করছে; তবুও তারা যুক্তরাষ্ট্রকে পাশে চাইছেন। তুরস্ক সরকার ‘এস ৪০০’ বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ব্যাপারে বাইডেন প্রশাসনকে ছাড় দিতে চাইছে; যদিও যুক্তরাষ্ট্র কুর্দি গ্রুপ ‘ওয়াইপিজি’কে সমর্থন দিয়ে আসছে। কারণ যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা শিল্পের সহযোগিতা হারাতে চাইছে না তুরস্ক। হুসেইন বাগচি বলছিলেন যে, তুরস্ক এখন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়। কিন্তু তুরস্ক কি সবসময় যুক্তরাষ্ট্রের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হবার আশাই করে যাবে? নাকি ভূরাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ হবার জন্যে যুক্তরাষ্ট্রের কক্ষপথ থেকে বের হবার চেষ্টা করবে? পরিবর্তিত বিশ্ব ব্যবস্থায় তুরস্ক আঞ্চলিকভাবে এবং বিশ্বব্যাপী তার প্রভাব বিস্তারে মনোনিবেশ করলেও এখনও যে তা যুক্তরাষ্ট্রের নীতিকে বাইপাস করতে পারেনি, তা পরিষ্কার। তবে সাম্প্রতিক সময়ে তুরস্কের জনগণের মাঝে যে ভূরাজনৈতিক আকাংক্ষার উদ্ভব হয়েছে, তা কতোদিন মার্কিন নীতির শৃংখলের মাঝে আটকে থাকবে, তা এখন প্রশ্নবিদ্ধ। বাস্তবিকপক্ষে, যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্বব্যাপী প্রভাব হারাবার বাস্তবতায় সেটাই মূল আলোচ্য বিষয়।

6 comments:

  1. স্বাধীন কুর্দিস্থান কি রকমের ভয়াবহ বাস্তবতা তুরস্ক ও মধ্যপ্রাচ্যের জন্য। আমেরিকা কি চাইছে মধ্যপ্রাচ্যে। আপনি বলছেন আমেরিকার প্রধান চিন্তা যদি চীন ইইউ রাশিয়া এবং নাট্যো হয় তাহলে ইসলাম পশ্চিম আর্দশিক দ্বন্দ খেলার কি অবস্থা বর্তমানে। এই দ্বন্দ্ব কি রকম বাস্তবতার জন্ম দিতে পারে। আপনার একটা লেখা পড়েছিলামম আমরা হেরে যাওয়া দলে যেতে চাই না। সে বাস্তবতায় মেসিক্রো আমেরিকা দ্বন্দ্বের কি অবস্থা। মুলত পশ্চিমাা বিশ্বের ভবিষ্যৎ কি

    ReplyDelete
    Replies
    1. 'স্বাধীন' অর্থ কি? 'স্বাধীন' অর্থ হলো পশ্চিমা দেশগুলির কাছ থেকে রাষ্ট্র হিসেবে অফিশিয়াল স্বীকৃতি পাওয়া। অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন যাদেরকে 'স্বাধীন' বলবে, তারা স্বাধীন। তবে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে সার্টিফিকেট পাবার জন্যে সেই নতুন রাষ্ট্রকে যুক্তরাষ্ট্রের অধীনতা স্বীকার করে নিতে হয়।

      মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলির জন্মদাতা ব্রিটেন। ১৯১৭-১৮ সালে উসমানি খিলাফতের অধীনে অঞ্চলগুলি দখল করে ব্রিটেন এই দেশগুলির জন্ম দেয়। যুক্তরাষ্ট্র চাইতে তার নিজের মতো করে এই রাষ্ট্রীয় বাউন্ডারিগুলি তৈরি করতে; যাতে করে তাদের তৈরি করা রাষ্ট্রগুলি তাদের অনুগত থাকে। একারণেই একটা স্বাধীন কুর্দিস্তানের পিছনে সমর্থন দিতে থাকে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু সমস্যা হলো ব্রিটেনের তৈরি করা তুরস্ক, ইরাক, সিরিয়া এই কুর্দিস্তান মেনে নেবে না। আর যুক্তরাষ্ট্রকে এই দেশগুলিকে সাথে রাখতে হয়। ফলে এই কুর্দি রাষ্ট্র একটা অবাস্তব ধারণা। ব্রিটেন এদিক থেকে কাগজে কলমে সফল হলেও কার্যক্ষেত্রে নয়। কারণ এই মুহুর্তে তুরস্ক-সিরিয়া-ইরাকের সীমানা বলতে কিছুই নেই। বিশেষ করে সিরিয়া রাষ্ট্রটা এখন আসলে কোনটা এবং এর প্রকৃত বাউন্ডারি কতটুকু, তা নির্দিষ্ট করে বলা মুশকিল।

      যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যের বাউন্ডারিগুলিকে নিজের মতো করে সাজাতে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছে। এবং একইসাথে ব্রিটেনের তৈরি করা বাউন্ডারিগুলিও অকার্যকর হয়ে গিয়েছে। সুতরাং যে ভবিষ্যৎ এখন অপেক্ষা করছে, তা হলো জাতিরাষ্ট্রের সীমানা ভেঙ্গে নতুন কোন রাষ্ট্র, যার চিন্তা পশ্চিমা চিন্তার উপর ভিত্তি করে হবে না।

      যুক্তরাষ্ট্র ইসলামকে ঠেকিয়ে রাখার অনেক চেষ্টাই করেছে। ২০০১ সাল থেকে তথাকথিত 'সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে' জড়িয়ে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্র তার অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে। এর মাঝে চীনের আবির্ভাব হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র বুঝতে পেরেছে যে মুসলিম বিশ্বকে ধ্বংস করে ইসলামকে থামানো সম্ভব হবে না। বরং চীনকে নিয়ন্ত্রণ গেলে এটা নিশ্চিত করা যাবে যে, চীন অত সহজে মুসলিম বিশ্বকে ম্যাটেরিয়াল সহায়তা দিতে সক্ষম হবে না। এতে ইসলামের উত্থানকে কিছুটা সময়ের জন্যে হলেও দেরি করানো সম্ভব হলেও হতে পারে।

      ব্রিটেন নিজেকে তৈরি করছে এই ভেবে যে, যুক্তরাষ্ট্র শেষ পর্যন্ত পশ্চিমা সভ্যতাকে রক্ষা করতে পারবে না; কাজেই দায়িত্বটা "যুক্তরাষ্ট্রের মাতা" ব্রিটেনকেই নিতে হবে।

      Delete
  2. তাহলো উইঘুর চীনের জন্য কোন ধরনের বাস্তবতা। চীন কেনো উইঘুর মুসলিমদের মেরে ফেলছে। উইঘুর কোন ধরনের ভূরাজনৈতি তৈরি করেছে

    ReplyDelete
    Replies
    1. লেখার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ প্রশ্ন আশা করছি।

      আপনার প্রশ্নের উত্তর জানতে "মার্কিন দুনিয়ায় পরিবর্তনের হাওয়া" বইটা পড়ুন।

      Delete
  3. ভূরাজনৈতি আসলে কি। আসলে তা কিভাবে কোন শক্তিশালী রাষ্ট্রকে সাহায্য করে। বস্তুূত এ বিষয় সম্পর্কে ধারনা নেই জানতে এটি কি

    ReplyDelete
    Replies
    1. ভূরাজনীতি হলো ভৌগোলিক রাজনীতি, যেখানে পুরো বিশ্বের সকল কিছুই আলোচ্য বিষয়বস্তু। এটা তাদেরই আলোচ্য বিষয়, যারা দুনিয়া এবং দুনিয়ার মানুষকে নিয়ে চিন্তা করে। যারা শুধুমাত্র নিজের এলাকা বা নিজের দেশ বা জাতি বা নিজের পরিবার নিয়ে চিন্তা করে, তাদের জন্যে নয়।

      Delete