Tuesday 18 October 2022

সৌদিরা কি আসলেই যুক্তরাষ্ট্রের উপরে নির্ভরশীলতা কমাচ্ছে?

১৮ই অক্টোবর ২০২২
 
সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সাথে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। মার্কিন অর্থনীতির উপরে অগাধ বিশ্বাসের কারণেই তারা যুক্তরাষ্ট্রে ৮’শ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিনিয়োগ করেছে; যার বেশিরভাগই দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ। সৌদিরা যুক্তরাষ্ট্র থেকে দূরে সরে যেতে চায় না; বরং মার্কিন নীতির কারণেই দুই দেশের মাঝে সাম্প্রতিক টানাপোড়েনের জন্ম হয়েছে।

সাম্প্রতিক সময়ে জ্বালানি তেল রপ্তানিকারক দেশগুলির জোট ‘ওপেক’ এবং রাশিয়ার সমন্বয়ে গঠিত ‘ওপেক প্লাস’এর তেলের উৎপাদন কর্তন করার সিদ্ধান্ত এবং এর প্রত্যুত্তরে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে সৌদিদের প্রতি কঠোর বার্তা অনেক আলোচনার জন্ম দিচ্ছে। কেউ কেউ প্রশ্ন করা শুরু করেছেন যে, ওয়াশিংটনের সাথে সৌদি রাজ পরিবারের সম্পর্ক শেষ হতে যাচ্ছে কিনা। তবে অনেকেই এখানে যুক্তরাষ্ট্রের উপর সৌদিদের নির্ভরশীলতার শক্ত ভিত্তির দিকে নির্দেশ করছেন।

গত মার্চে সৌদি আরবের পক্ষ থেকে বলা হয় যে, তারা চীনের সাথে তেলের বাণিজ্য চীনা মুদ্রা ইউয়ানে করার জন্যে চিন্তাভাবনা করছে। ‘ওয়াল স্ট্রীট জার্নাল’এর এক প্রতিবেদনে বলা হয় যে, সৌদিরা গত ছয় বছর ধরে চীনের সাথে এব্যাপারে কথা বললেও হঠাৎ করেই তারা ইউয়ানে বাণিজ্য করার জন্যে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। প্যারিসভিত্তিক আর্থিক বাজারের কোম্পানি ‘জেনেরালি গ্রুপ’এর জ্যেষ্ঠ কৌসুলী গুইলাউমে ত্রেসকা ‘ব্লুমবার্গ’কে বলছেন যে, এই ঘটনাগুলি ঘটে যখনই ভূরাজনীতিতে কোন পরিবর্তন আসতে থাকে। সৌদিরা শুধু ওয়াশিংটনের কাছে বার্তা পাঠাচ্ছে যে, তারা মার্কিনীদের কাছ থেকে আরও কিছু আশা করছে। ‘ব্লুমবার্গ’এর প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে যে, মার্কিনীদের সাথে সৌদিদের সম্পর্কে টান পড়া শুরু হয়েছে জো বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবার পর থেকে। সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে হত্যা এবং ইয়েমেনের যুদ্ধের ব্যাপারে বাইডেন প্রশাসন সৌদিদের সমালোচনায় মুখর থাকার ফলে হোয়াইট হাউজের সাথে সম্পর্কের অবণতি ঘটে। এছাড়াও ইরানের সাথে বাইডেন প্রশাসনের পারমাণবিক চুক্তির আলোচনাকে এগিয়ে নেয়াকেও সৌদিরা ভালো চোখে দেখেনি। তবে সৌদিরা যখন চীনের সাথে বাণিজ্যে ইউয়ান ব্যবহার করার কথা বলছে, তখন সৌদিরা যে সত্যি কথা বলছে না, তার প্রমাণ রয়েছে। প্রথমতঃ সৌদি রিয়ালের মূল্য মার্কিন ডলারের সাথে সমন্বয় করা রয়েছে। এখন যদি ডলারের মূল্য পড়ে যায়, তাহলে সৌদি রিয়ালের মূল্যও পড়ে যাবে। সৌদিরা এত বড় একটা সুবিধা থেকে নিজেদেরকে সরিয়ে নিতে চাইবে না। এছাড়াও সৌদিরা তাদের আর্থিক নীতিকেও মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ‘ফেডারেল রিজার্ভ’এর সাথে সমন্বয় করে চলে।

গত জুনে দুবাই ভিত্তিক পত্রিকা ‘দ্যা ন্যাশনাল’এর এক প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে যে, সৌদি আরবের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২০২২ সালের শেষে ৫’শ ৮১ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাতে পারে; যা গত এপ্রিল মাসে ছিল প্রায় ৪’শ ৫২ বিলিয়ন ডলার। আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের মূল্যের ব্যাপক বৃদ্ধির উপর চড়ে সৌদিরা এই রিজার্ভ তৈরি করার পথে রয়েছে। আর্থিক ব্যবসায়িক কোম্পানি ‘জাদওয়া ইনভেস্টমেন্ট’এর প্রধান অর্থনীতিবিদ আসাদ খান এক লেখায় বলছেন যে, গত এপ্রিল মাস থেকে সৌদিদের রিজার্ভ প্রতিমাসে ৩’শ মিলিয়ন ডলার করে বেড়েছে। মার্চ মাসে এক কোটি ব্যারেল তেল উৎপাদনের ফলস্বরূপ তারা সেই মাসে প্রায় ৩০ বিলিয়ন ডলার আয় করে। কিন্তু সৌদিদের এই আয় কোথায় যাচ্ছে?

গত মার্চে ‘রয়টার্স’এর এক খবরে বলা হয় যে, সৌদি আরবের বাস্তবিক শাসক যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান সৌদি সরকারি বার্তা সংস্থা ‘এসপিএ’র সাথে এক সাক্ষাতে বলেন যে, যুক্তরাষ্ট্রে সৌদিদের যা বিনিয়োগ রয়েছে, তা তারা বাড়াতে যেমন পারে, কমাতেও পারে। ‘এসপিএ’ বলে যে, যুক্তরাষ্ট্রে সৌদি আরবের মোট বিনিয়োগ ৮’শ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। চীনের সাথে ইউয়ানে ব্যবসা করার মতো এই হুমকিটাও শুধু মৌখিক বলেই মনে করছেন অনেকে। কারণ এই কথাগুলির পর থেকে সৌদিরা যুক্তরাষ্ট্রে তাদের বিনিয়োগ আরও বাড়িয়েছে। এবং এই বিনিয়োগগুলির বেশিরভাগই দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ।

সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সাথে প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সৌদিরা যুক্তরাষ্ট্রের উপরে এতটাই নির্ভর করছে যে, তাদের রিজার্ভের প্রায় পুরোটাই তারা রেখেছে মার্কিন ডলারে। অর্থাৎ সৌদিরা তাদের নিজেদের ভাগ্যকে মার্কিন ডলারের উপরে নির্ভরশীল করেছে।

‘দ্যা ন্যাশনাল’এর অগাস্ট মাসের এক প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে যে, সৌদি সরকারের ‘পাবলিক ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড’ বা ‘পিআইএফ’এর যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগ বেড়েই চলেছে। মার্কিন সিকিউরিটি এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের এক প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে যে, সৌদিরা ১৭টা মার্কিন কোম্পানির স্টকে প্রায় ৭ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলারের অতিরিক্ত বিনিয়োগ করতে চাইছে। নতুন বিনিয়োগ যাচ্ছে ‘গুগল’, ‘মাইক্রোসফট’, ‘জে পি মরগ্যান চেইজ’, ‘স্টারবাকস’, ‘ব্ল্যাকরক’, ‘কস্টকো’, ‘আমাজন’, ‘হোম ডিপো’, ‘বুকিং হোল্ডিংস’, ইত্যাদি কোম্পানিতে। ‘রয়টার্স’এর এক প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে যে, ২০২১এর ডিসেম্বর নাগাদ যুক্তরাষ্ট্রের স্টক এক্সচেঞ্জে মার্কিন কোম্পানিগুলিতে সৌদিদের বিনিয়োগ দাঁড়ায় প্রায় ৫৬ বিলিয়ন ডলারে। গত অগাস্টে মার্কিন রাজস্ব দপ্তরের এক প্রতিবেদনে বলা হয় যে, জুন মাসে সৌদি আরবের হাতে মার্কিন সরকারের ট্রেজারি বন্ডের পরিমাণ ১’শ ১৯ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে; যা মে মাসে ছিল ১’শ ১৪ বিলিয়ন ডলার। এর মাঝে সিংহভাগই হলো দীর্ঘমেয়াদী বন্ড।

সৌদিরা যুক্তরাষ্ট্রের উপরে এতটাই নির্ভর করছে যে, তাদের রিজার্ভের প্রায় পুরোটাই তারা রেখেছে মার্কিন ডলারে। ‘সিইআইসি ডাটা’র হিসেবে গত দশ বছর ধরেই সৌদিদের স্বর্ণের রিজার্ভ প্রায় একই জায়গায় রয়েছে; যা প্রায় ৪’শ ৩৩ মিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ। এটা সাইপ্রাস বা বাংলাদেশের স্বর্ণের রিজার্ভের চাইতেও অনেক কম। সংখ্যাটা তাদের গত এপ্রিল মাসের সাড়ে ৪’শ বিলিয়ন ডলারের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ১ হাজার ভাগের ১ ভাগেরও কম।

শুধু তা-ই নয়, সৌদি সরকারের এই রিজার্ভ মূলতঃ সৌদি রাজপরিবারের মাঝে ভাগাভাগি করার কারণেই ওঠানামা করে থাকে। ‘ব্লুমবার্গ’এর এক প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে যে, সৌদি আরবের তেল উৎপাদন কোম্পানি ‘সৌদি আরামকো’র শেয়ারহোল্ডার সৌদি রাজপরিবারের সদস্যদের মাঝে যখন লভ্যাংশ বন্টন করা হয়, তখনই দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ওঠানামা করে। যেমন ২০২১ সালে শুধুমাত্র ত্রৈমাসিক লভ্যাংশই ছিল প্রায় ১৯ বিলিয়ন ডলার!

অর্থনৈতিকভাবে সৌদিরা তাদের তেলের ব্যবসার আয়ের প্রায় পুরোটাই মার্কিন ডলারে মজুত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অর্থাৎ সৌদিরা তাদের নিজেদের ভাগ্যকে মার্কিন ডলারের উপরে নির্ভরশীল করেছে। মার্কিন অর্থনীতির উপরে অগাধ বিশ্বাসের কারণেই তারা যুক্তরাষ্ট্রে ৮’শ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিনিয়োগ করেছে; যার বেশিরভাগই দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ। সৌদি রিয়ালের মূল্যকে ডলারের মূল্যের সাথে সমন্বয় করা হয় এবং সৌদি আর্থিক নীতি মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিকে অনুসরণ করে করা হয়। এতটা নির্ভরশীলতার মাঝে সৌদিদের ওয়াশিংটন থেকে দূরে চলে যাবার প্রশ্নটা অবান্তরই বটে। সৌদিরা যুক্তরাষ্ট্র থেকে দূরে সরে যেতে চায় না; বরং মার্কিন নীতির কারণেই দুই দেশের মাঝে সাম্প্রতিক টানাপোড়েনের জন্ম হয়েছে।

7 comments:

  1. ধন্যবাদ।
    তাহলে এটা স্পষ্ট যে, ডলার 'রিসার্ভ কারেন্সি ' সহজেই সরছে না। ফলে ইউ এস ডোমিনেন্ট ইকোনমিক পাওয়ার হিসাবে থেকে যাচ্ছে।

    এখানে কি ভবিষ্যতে ব্রিক্স কারেন্সি কোনো সম্ভাবনা রয়েছে?
    পেট্রো ডলার সিস্টেম যদি না ভেঙে পড়ে।

    ReplyDelete
    Replies
    1. প্রশ্নটা এটা নয় যে, মার্কিন ডলার বিশ্বের রিজার্ভ মুদ্রা থাকার কারণে যুক্তরাষ্ট্র শক্তিশালী থাকবে কিনা। বরং আসল প্রশ্ন হলো, যুক্তরাষ্ট্র কতদিন নিজেদের রাজনৈতিক ও সামরিক শক্তিকে ধরে রাখতে পারবে, যার কারণে তাদের নিজস্ব মুদ্রাকে সারা দুনিয়ার মানুষ স্বর্ণের চাইতে বেশি গুরুত্ব দিয়ে নিজেদের বালিশের নিচে রেখে ঘুমাবে?

      মার্কিন ডলার একটা কাগজের টুকরা ছাড়া কিছু নয়। কিন্তু তারপরেও এর এত গুরুত্ব কেন? কারণ দুনিয়ার মানুষ এখনও মনে করছে যে, যুক্তরাষ্ট্রের শক্তি চিরস্থায়ী; কিয়ামত পর্যন্ত। কাজেই এই শক্তির মুদ্রাকে স্বর্ণের চাইতে বেশি গুরুত্ব দেয়া যায়। এই ধারণাটা ভুল প্রমাণিত হতে শুরু হয়েছে মাত্র। সারা দুনিয়াতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব কমার সাথে সাথে তার শক্তিও যে কমছে, সেটা মানুষের কাছে পরিষ্কার হচ্ছে। তথাপি বিশ্বব্যবস্থা এখনও যুক্তরাষ্ট্রের; যদিও সেটা এখন অনেকটাই অকার্যকর। এই ব্যবস্থার একটা অংশ হলো যুক্তরাষ্ট্রের উপরে নির্ভরশীল বিভিন্ন ব্যক্তি, গোষ্ঠী, পরিবার এবং সংস্থা; যারা যুক্তরাষ্ট্রের এই ব্যবস্থাটাকে টিকিয়ে রাখছে। তারা জানে যে, ব্যবস্থাটা গুড়িয়ে গেলে, তারাও শেষ। তাই তারা সকল চেষ্টা করবে এই ব্যবস্থাটাকে টিকিয়ে রাখতে।

      আর যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিদ্বন্দ্বীরাই বা কতটা চাইছে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রতিস্থাপিত করতে? তাদের সক্ষমতার কথা বাদই দিলাম; তারা কি আসলে চায় যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে দিতে? চীনের মতো যুক্তরাষ্ট্রের এতবড় প্রতিদ্বন্দ্বী তাদের ৩ ট্রিলিয়ন ডলার বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের মাঝে মাত্র ১'শ ৭ বিলিয়ন ডলার সমপরিমাণ রেখেছে স্বর্ণে; যা মোট রিজার্ভের মাত্র সাড়ে ৩ শতাংশ। চীনারা ৯'শ বিলিয়ন ডলারের বেশি মার্কিন সরকারের ট্রেজারি বন্ড কিনেছে; অর্থাৎ মার্কিন সরকারকে ঋণ দিচ্ছে; যা দিয়ে মার্কিনীরা তাদের বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ, পারমাণবিক সাবমেরিন এবং 'এফ-৩৫' বিমান তৈরি করছে। অর্থাৎ চীন নিজেই চাইবে না যে, ডলারের মূল্য পড়ে যাক।

      চীনারা যুক্তরাষ্ট্রের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্বব্যবস্থাটার মাঝে নিজেদের অবস্থানকে আরও সুসংহত করতে; আরও বেশি বেনেফিট নিতে। এজন্য তারা ওয়াশিংটনের সাথে দরকষাকষিতে যেতে যায়; যা যুক্তরাষ্ট্র চায় না। দ্বন্দ্বটা সেখানে। চীনারা মনে করে যে, তারা যুক্তরাষ্ট্রে বেশি করে বিনিয়োগ করলে যুক্তরাষ্ট্রের নীতির উপরে তাদের প্রভাব বাড়বে। কারণ তারা পশ্চিমা সেকুলার ব্যবস্থার বিরোধী নয়; শুধু সেখানে কিছু পরিবর্তন আনতে যায়; নিজেদের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করতে যায়; ব্যবস্থাকে প্রতিস্থাপন করতে চায় না।

      মোটকথা যুক্তরাষ্ট্রের শক্তি তার নিজের উপরে নির্ভর করছে; অন্যদের উপরে নয়। যুক্তরাষ্ট্রের শক্তি তার সম্পদ বা জনসংখ্যা বা অন্য কিছু নয়। তার শক্তি হলো তার আদর্শ। আদর্শিক শক্তি হবার কারণে সারা বিশ্বে তার রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সামরিক প্রভাব। এই আদর্শকে যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যেই হারাতে বসেছে। তার অভ্যন্তরীণ কোন্দল এই শক্তি হারাবার একটা লক্ষণ। এই শক্তি হারালে তার নিজস্ব মুদ্রা মার্কিন ডলারও এক টুকরা কাগজ ছাড়া আর কিছুই থাকবে না। সেটা হলে অবশ্য হাজার হাজার মানুষ সর্বস্ব হারিয়ে সুইসাইড করবে।

      Delete
    2. লোকেরা ভাবতেই পারছেনা যে, সিস্টেম চ্যাঞ্জ হয়।
      কিন্তু এই বিশ্বব্যবস্থাকে টক্কর দেওয়ার মত একটা আইডিয়োলজির প্রয়োজন। এই টার একমাত্র সন্ধান চাই।
      আর কিছু মানুষ চাই যারা আইডিয়োলজিটাকে ইমপ্লিমেন্ট করতে পারবে। দ্যাস্ট ইট।

      Delete
  2. এই বিকল্প আইডিওলজিটি কি ছোট কোনো অঞ্চল থেকে শুরু হতে পারে? মানে কি তাকে অঞ্চল বৃদ্ধির মাধ্যমে প্রভাব বিস্তার করতে হবে?

    ReplyDelete
    Replies
    1. সবকিছুরই একটা শুরু থাকে। ইউরোপে রেনেসাঁ শুরু হয়েছিল উত্তর ইতালিতে; পরে ছড়িয়েছে পুরো ইউরোপে। ফরাসি বিপ্লবের আইডিয়াগুলিও ফ্রান্স থেকে বাকি ইউরোপে ছড়িয়েছে। ইসলামও শুরু হয়েছে আরব উপদ্বীপ থেকে; পরে ছড়িয়েছে আফ্রিকা, এশিয়া, ইউরোপে। কমিউনিজমও রাশিয়াতে রাষ্ট্র তৈরির পরে সারা দুনিয়াতে ছড়াবার চেষ্টা করেছে। আসলে ব্যাপারটা এরকমই। যখন মানুষ বিশ্বাস করতে শুরু করে যে, তার আদর্শই সেরা, তখন সে সারা দুনিয়াতে সেই বিশ্বাসকে ছড়িয়ে দিতে চায়।

      Delete
  3. আপনি বলেছেন যে আদর্শিক শক্তি হবার কারণে সারা বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সামরিক প্রভাব। সেই আদর্শকে যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যেই হারাতে বসেছে।

    এই যুক্তিটি তো ভারতের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। ধর্মনিরপেক্ষতার মুখোস পরিধান করে যে বিশাল সাম্রাজ্য তৈরি হয়েছিল, সেটি এখন হিন্দু রাস্ট্র। এটি একক রাস্ট্র হিসাবে তার টিকে থাকার যোগ্যতাকেই এখন প্রশ্নবিদ্ধ করে ফেলেছে নয় কি?

    ReplyDelete
    Replies
    1. আপনি আদর্শ কি সেটা ধরতে পারেননি। একারণেই আপনি মনে করছেন যে, ব্রিটিশদের তৈরি করে দেয়া সেকুলার ভারত একটা আদর্শিক রাষ্ট্র।

      ভারত একটা দুর্বল এবং ব্রিটিশ-মার্কিন অনুগত রাষ্ট্র। তারা সর্বদাই পশ্চিমাদের স্বার্থ রক্ষা করে চলেছে; এখনও তাই। কংগ্রেসের সময় তারা ছিল ব্রিটিশদের অনুগত, আর বিজেপির অধীনে আমেরিকার। তবে চার দশকে কংগ্রেস ক্ষমতায় থাকার সময় দেশটার সিভিল সোসাইটির একটা বড় অংশকে নিজেদের মতো করে গড়ে তুলেছিল। এরা মার্কিন জোট এড়িয়ে চলতে চেষ্টা করে; যাকে বলা হয় জোট নিরপক্ষে। এখন আরএসএসএর লোকেরা এদেরকে প্রতিস্থাপন করার চেষ্টা করছে। এরা চাইছে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে জোট বাঁধতে। কিন্তু জোট নিরপেক্ষপন্থীরা বাধা দিচ্ছে।

      Delete