Sunday 15 August 2021

তালিবান... আবার?

১৬ই অগাস্ট ২০২১ 
১৫ই অগাস্ট হেলিকপ্টার দিয়ে মার্কিন দূতাবাস খালি করার ভিডিও চিত্র দেখা যাচ্ছিল সকল টেলিভিশন চ্যানেলে। ছবিগুলি বিশ্বব্যাপী মার্কিন প্রভাব কমার উদাহরণ হিসেবেই প্রতিফলিত হবে। তবে আলোচনার টেবিলে বসে যুক্তরাষ্ট্র যে ব্যাপারগুলি নিশ্চিত করেছে তার মাঝে রয়েছে আইনের ব্যাপারে তালিবানকে কিছু ক্ষেত্রে ছাড় দিতে রাজি করানো এবং আন্তর্জাতিক সীমানা অমান্য করে খিলাফত ঘোষণা করা থেকে বিরত থাকা। হেরে গিয়েও যুক্তরাষ্ট্র তালিবানদেরকে দিয়ে তাদের উদ্দেশ্য কিছুটা হলেও বাস্তবায়িত করিয়ে নিয়েছে। তবে তা যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক নেতৃত্ব ধরে রাক্ষার জন্যে যথেষ্ট নাও হতে পারে। 


১৫ই অগাস্ট মার্কিনীদের জন্যে যেমন ভুলে যাবার মতো দিন হিসেবে থাকবে, আফগানিস্তানের তালিবানদের জন্যেও ঠিক একইভাবে মনে রাখার মতো দিন হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। হেলিকপ্টার দিয়ে মার্কিন দূতাবাস খালি করার ভিডিও চিত্র দেখা যাচ্ছিল সকল টেলিভিশন চ্যানেলে। অনেকেই এর সমান্তরাল টানছিলেন ১৯৭৫ সালের ২৯শে এপ্রিল দক্ষিণ ভিয়েতনামের রাজধানী সায়গন থেকে মার্কিন দূতাবাস খালি করার ঘটনার সাথে। ছবিগুলি বিশ্বব্যাপী মার্কিন প্রভাব কমার উদাহরণ হিসেবেই প্রতিফলিত হবে। অনেকেই অবাক হচ্ছেন এই ভেবে যে, আফগান সেনাবাহিনী প্রায় কোন যুদ্ধ ছাড়াই কিভাবে তালিবানদের হাতে পুরো দেশ ছেড়ে দিল। আর একইসাথে অনেকেই আলোচনা করছেন তালিবানদের চিন্তাধারা, নীতি এবং কর্মকান্ড নিয়ে।

বিশ্লেষকেরা বলছেন যে, তালিবানদের হাতে আফগান সেনাবাহিনীর পরাজয় প্রায় জানাই ছিল; তবে এটা কতটা দ্রুত হতে পারে, সেব্যাপারে কেউই নিশ্চিত ছিলেন না। ‘নিউ ইয়র্ক টাইমস’এর এক প্রতিবেদনে বলা হয় যে, আফগান সেনাবাহিনীর সদস্যসংখ্যা কাগজেকলমে ৩ লক্ষের মতো হলেও প্রকৃতপক্ষে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা তাদের আয় বৃদ্ধি করার জন্যে সেনাসদস্যের সংখ্যা বেশি দেখাতো। আফগান সেনারা এতটাই কম বেতন পেত যে, তারা তাদের অস্ত্র এবং যন্ত্রপাতি বিক্রি করে দিয়ে সংসার চালাতো। কোন দরকার ছাড়াই বেশি বুলেট ব্যবহার করতো এবং বুলেটের খোসাগুলি ব্জারে বিক্রি করে দিতো। আফগান সেনাবাহিনীর অস্ত্র এবং যন্ত্রপাতি তালিবানরা আফগান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধেই ব্যবহার করেছে। এমতাবস্থায় আফগান সেনাবাহিনীর অস্ত্রসস্ত্র নয়, বরং তাদের যুদ্ধ করার ইচ্ছাশক্তিটাই ছিল বেশি গুরুত্বপূর্ণ। অন্ততঃ গত কয়েকদিনের খবরে এটা পরিষ্কার যে, এই ইচ্ছাশক্তি পুরোপুরি নির্ভরশীল ছিল আফগানিস্তানের মাটিতে যুক্তরাষ্ট্রের উপস্থিতির উপর।

মার্কিন কূটনীতিবিদ জালমেই খলিলজাদ আফগানিস্তানের একাধিক টেলিভিশনের সাথে সাক্ষাতে বলেছেন যে, এই তালিবান আগের তালিবান নয়; তারা অনেক পরিবর্তিত হয়েছে; বিশেষ করে নারী শিক্ষা, বাকি বিশ্বের সাথে সম্পর্ক এবং সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলিকে থাকতে দেবার ক্ষেত্রে তারা তাদের আগের ভুলগুলি বুঝতে পেরেছে। তবে পশ্চিমা দুনিয়ার অনেকেই খলিলজাদের সাথে একমত নন। তারা মনে করছেন যে, তালিবানরা পশ্চিমা আদর্শ বাস্তবায়ন থেকে বহুদূরে রয়েছে। যেমন, তারা এখনও তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা এলাকায় মানুষের উপর প্রচুর করের বোঝা চাপাচ্ছে; স্কুল বন্ধ করে দিচ্ছে; সরকার পরিচালনায় নারী সদস্য রাখছে না; ইত্যাদি। তালিবানরা দোহা আলোচনায় কোন নারী সদস্য বা সংখ্যালঘুদের প্রতিনিধি রাখেনি বলেও পশ্চিমারা অভিযোগ করেছে। দোহাতে তারা সেকুলার আইনের স্থানে কিছু শরীয়াহ আইন বাস্তবায়নের কথা বলার কারণেও পশ্চিমারা নাখোশ হয়েছে। মার্কিন থিঙ্কট্যাঙ্ক ‘আটলান্টিক কাউন্সিল’এর এক লেখায় বলা হচ্ছে যে, তালিবানরা যে ব্যাপারটাতে সবচাইতে বেশি অদূরদর্শিতা দেখিয়েছে তা হলো, আফগানিস্তানের জন্যে নির্দিষ্ট কোন লক্ষ্য দেখাতে না পারা। সরকার পরিচালনা, সেবা দেয়া, অথবা আইনের শাসন বাস্তবায়নের কোন পরিকল্পনাই তারা দেখাতে সক্ষম হয়নি। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, দেশ পুনর্গঠন, ইত্যাদি কোন বিষয়েই তারা নির্দিষ্ট কোন দিকনির্দেশনা দিতে পারেনি।

তালিবান মনে করছে যে, তারা সারা দুনিয়ার মুসলিমদের মাঝে সবচাইতে আলাদা; কারণ তারা যুক্তরাষ্ট্রকে যুদ্ধে হারিয়েছে এবং তাদেরকে দেশ ছাড়ার জন্যে আলোচনায় বসতে বাধ্য করেছে। তবে তালিবানরা রাজনৈতিক লক্ষ্যের ব্যাপারে অপরিপক্বতা দেখিয়েছে। জালমেই খলিলজাদ তালিবানদের পরিবর্তিত হবার কথা বলেছেন, কারণ তালিবান আলোচনার মাধ্যমে ছাড় দেবার প্রবণতা দেখিয়েছে। হেরে যাবার পর যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনা ডাকার কোন অধিকারই ছিল না; অথচ তারপরেও তালিবানরা যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আলোচনায় বসেছে। তালিবানরা তাদের অবস্থান পাকাপোক্ত করতে রাশিয়া এবং চীনের সাথে আলোচনা করে তাদেরকে আস্বস্ত করেছে। এই ব্যাপারগুলি ১৯৯০এর দশকের তালিবান থেকে পুরোপুরিভাবে আলাদা। ‘আল জাজিরা’র এক প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে যে, বর্তমানের তালিবান মিডিয়া এবং প্রযুক্তির ব্যাপারে যথেষ্ট পরিবর্তিত। তারা নিয়মিতভাবে তাদের বিভিন্ন কর্মকান্ডের ছবি এবং ভিডিও মিডিয়াতে দিচ্ছে; বিভিন্ন ইস্যুতে মিডিয়াতে বিবৃতি দিচ্ছে; ফেইসবুক পেইজ আপডেট দিচ্ছে ঘনঘন। তালিবানরা পুরো আফগানিস্তান জুড়ে সাম্প্রতিক সময়ে যতগুলি শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে, সবগুলি শহরই তাদের হাতে এসেছে শান্তিপূর্ণভাবে। তারা কাবুলে ঢোকার আগেও বারংবার ঘোষণা দিয়েছে যে, তারা কোন রক্তপাত ছাড়াই ক্ষমতা হস্তান্তর চায়। আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনির দেশ ছেড়ে পালাবার পর তালিবান যোদ্ধারা আফগান প্রেসিডেন্সিয়াল প্যালেসে প্রবেশ করে। সেখানে তারা লাইভ টেলিভিশনের সামনেই প্যালেসের হস্তান্তর সম্পন্ন করে এবং সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেয়।

তালিবানরা বলছে যে, তারা ইসলামিক আমিরাত তৈরি করতে যাচ্ছে। তারা শরীয়াহর কিছু আইন বাস্তবায়নও করবে বলে ঘোষণা দিয়েছে। তবে আফগানিস্তানের আন্তর্জাতিক বাউন্ডারিগুলি মেনে নিয়ে তারা মূলতঃ জাতিরাষ্ট্রের চিন্তাকেই ভিত হিসেবে তুলে ধরেছে। জুলাই মাসে মস্কোতে তালিবান প্রতিনিধিরা গিয়েছিলেন রাশিয়াকে চিন্তামুক্ত করতে যে, তালিবানরা আফগানিস্তানের সাথে উজবেকিস্তান এবং তাজিকিস্তানের সীমানা মেনে চলবে। একই মাসে মোল্লা আব্দুল গনি বারাদারের নেতৃত্বে আফগান দল বেইজিং ঘুরে এসেছে চীনাদেরকে দুশ্চিন্তামুক্ত করতে। চীনারা যুক্তরাষ্ট্রের আফগানিস্তান প্রস্থানে নিজেদের বিরক্তি প্রকাশ করেছে। তাদের প্রধান দুশ্চিন্তা ছিল আঞ্চলিক নিরাপত্তা। এমতাবস্থায় তালিবান প্রতিনিধিদের বেইজিং গমন চীনের জন্যে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এই মোল্লা বারাদারকেই পাকিস্তান সরকার ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে আটক করেছিল যুক্তরাষ্ট্রকে খুশি করতে। আবার ২০১৮ সালে এই বারাদারকেই পাকিস্তান ছেড়ে দিয়েছে কাতাদের রাজধানী দোহায় যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আলোচনায় নেতৃত্ব দেবার জন্যে। পাকিস্তানই তালিবানকে রাজি করিয়েছে হেরে যাওয়া শক্তি যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আলোচনায় বসতে। আর এর মাধ্যমে তালিবান তাদের ছাড় দেয়ার মানসিকতা দেখাতে থাকে। ব্রিটেনের ‘দ্যা গার্ডিয়ান’ পত্রিকা বারাদারকে ২০ বছরের যুদ্ধের অবিসংবাদিত বিজয়ী বলে আখ্যা দিয়েছে। কিন্তু এখানে পাকিস্তানের ভূমিকাটা নিঃসন্দেহে সামনে চলে আসে এবং পাকিস্তানের উপর স্থলবেষ্টিত আফগানিস্তানের নির্ভরশীলতাকে তুলে ধরে। আলোচনার টেবিলে বারাদারের ভূমিকা পশ্চিমাদের কাছে ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আলোচনার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র যে ব্যাপারগুলি নিশ্চিত করেছে তার মাঝে রয়েছে আইনের ব্যাপারে তালিবানকে কিছু ক্ষেত্রে ছাড় দিতে রাজি করানো এবং আন্তর্জাতিক সীমানা অমান্য করে খিলাফত ঘোষণা করা থেকে বিরত থাকা। হেরে গিয়েও যুক্তরাষ্ট্র তালিবানদেরকে দিয়ে তাদের উদ্দেশ্য কিছুটা হলেও বাস্তবায়িত করিয়ে নিয়েছে। তবে তা যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক নেতৃত্ব ধরে রাক্ষার জন্যে যথেষ্ট নাও হতে পারে।

4 comments:

  1. আপনার বিশ্লেসন এর জন্য ধন্যবাদ। আমার কিছু প্রশ্ন ছিল আপনার কাছে।
    ১) আপনি কি আসলেই মনে করেন আদর্শিক এবং সামরিক দিক থেকে আফগানিস্তানে আমেরিকার পরাজয় হয়েছে?
    ২) তালেবান এর বিজয় কি সম্পুর্নই নিরেপক্ষ? তারা কি নিজেদের সমর কৌশল দ্বারা আমেরিকান জোটকে হারিয়েছে?
    ৩) আফগানিস্তান ভবিষ্যতে কি ধরনের রাষ্ট্র হতে যাচ্ছে এবং এর পিছনে আমেরিকান স্বার্থ কি?
    অনুগ্রহপুর্বক আপনার বিশ্লেষনধর্মী উত্তর আশা করছি।
    ধন্যবাদ।

    ReplyDelete
    Replies
    1. ধন্যবাদ আপনার প্রশ্নের জন্যে।

      প্রথমতঃ আফগানিস্তান শুধু একটা পরাজয় নয়; এটা ছিল একটা বিপর্যয়। এটা বিশ বছরে মার্কিন অর্থনীতি, সামরিক সক্ষমতা এবং বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বকে ধ্বংস করেছে।

      দ্বিতীয়ঃ তালিবানের বিজয় ছিল কঠিন পরিস্থিতিতে টিকে থাকার বিজয়। এর আগে সেই দেশে যতো বিদেশী আগ্রাসন হয়েছিল, সকল ক্ষেত্রেই আফগানরা একইভাবে জিতেছে। আফগানরা কোন শক্তিশালী রাষ্ট্রের মতো মারাত্মক সব সমরাস্ত্রে সজ্জিত ছিল না কোনকালেই। কাজেই অন্যান্য শক্তিশালী রাষ্ট্রের কৌশল ধরে যুদ্ধ করাটা তাদের ক্ষেত্রে অবাস্তব। তাদেরকে তাই সেভাবে মূল্যায়ন করাটাও সঠিক নয়।

      তৃতীয়তঃ আফগানিস্তান কি ধরনের রাষ্ট্র হয়েছে বা হবে, সেটা উপরে পরিষ্কারভাবেই উল্লেখ করা হয়েছে - একটা ইসলামিক আমিরাত, যেখানে শরীয়াহর কিছুটা বাস্তবায়িত থাকবে। তবে এই রাষ্ট্র মূলতঃ হবে একটা জাতিরাষ্ট্র।

      ধন্যবাদ।

      Delete
    2. ধন্যবাদ।
      আপনার এই আর্টিকেলে উল্লেখ করেছেন যে, ১, তালিবান যুক্তরাষ্ট্রের সাথে চুক্তি করে রাজনৈতিক অপরিপক্কতা দেখিয়েছে, এটা হয়ত আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে স্বীকৃতি পাওয়ার জন্যি দেখিয়েছে, কারন পশ্চিমা বিশ্বব্যবস্থা দুর্বল হলেও/হতে থাকলেও এখনো ভেঙে পড়েনি । এই ব্যাপারে আপনার কি মত?

      ২, তালিবান পুরোপুরি শরিয়াহ্ ভিত্তিক শাসনব্যবস্থা কায়েম করতে পারবে বলে মনে হয়না, যেটা আপনি প্রকৃতই তুলে ধরেছেন। কারন হিসাবে বলতে গেলে পশ্চিমা বিশ্বব্যবস্থার বিশেষ করে অর্থনৈতিক কাঠামো ভেঙে পড়েনি। বিশ্বটাই চলছে সুদ ভিত্তিক অর্থনৈতিক কাঠামোর উপর।
      তালিবান যদি পুরোপুরি ইসলাম কায়েম করতে চায়, তবে তাদের ইসলামি অর্থনৈতিক মডেল্কে বাস্তবায়িত করতে হবে। এই পরিস্থিতিতে , তারাকি পারবে? আমারতো মনে হয় না৷ সময়ই বলবে৷
      আমার মনে হয়, যদি তারা ইসলামি অর্থনৈতিক মডেল বাস্তবায়ন করতে পারে সেটা এই ধুকতে থাকা বিশ্বব্যাবস্থাকে জোর ধাক্কা দেবে এই ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নাই৷
      এই বিশ্বব্যাবস্থার কফিনে শেষ পেরেকটি পুরে দিবে।

      তারা কতটুকু বাস্তবায়ন করতে পাবে, আল্লাহ্ই ভালো জানেন৷ সময়ই আমাদের উত্তর দেবে।

      Delete
    3. প্রথমতঃ তালিবানরা যুক্তরাষ্ট্রের চুক্তি করেছে বাস্তবতাকে চিন্তার ভিত্তি হিসেবে নিয়ে। তারা এই চুক্তি করতে গিয়ে এমন কিছু ক্ষেত্রে ছাড় দিয়েছে, যা কিনা শরীয়াহ বাস্তবায়নের বিপরীতে। যুক্তরাষ্ট্র এতেই সন্তুষ্ট ছিল। তারা চাইছিল তালিবানরা তাদের অবস্থান থেকে ছাড় দিক। রাশিয়া এবং চীনের কাছ থেকে সম্মতি নেবার ব্যাপারটাও সেইরকমই। এখানে পাকিস্তান সবচাইতে বড় ভূমিকা পালন করেছে তালিবানের পিছনে থেকে।

      দ্বিতীয়তঃ একটা ইসলামি অর্থনীতির পরিকল্পনা করার মতো মেধা তালিবানদের আছে বলে তারা জানান দেয়নি। বর্তমান বিশ্বের অর্থনীতি মডেলকে পাশ কাটিয়ে ইসলামিক অর্থনীতির মডেল বাস্তবায়ন এই তালিবানের কাজ নয়; যেখানে তারা ব্রিটিশদের এঁকে দেয়া সীমানাই মেনে নিয়েছে।

      একটা নির্দিষ্ট ভূখন্ডের মাঝে শরীয়াহর কিছুটা বাস্তবায়ন খুব কঠিন কাজ না। কারণ এটা করার ঘোষণা দেয়া মাত্রই শক্তিশালী রাষ্ট্ররা বুঝতে পারবে যে, এই রাষ্ট্র মূলতঃ তাদের সাথে মানিয়ে নিয়েই চলবে। কাজেই শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলিও তালিবানের সাথে মানিয়ে নেবে। মুখে অনেক কিছুই হয়তো বলবে তালিবানকে আরও ছাড় দিতে বাধ্য করতে। এবং সেটা তালিবানরা হয়তো বাধ্য হবেও। কারণ একবার ছাড় দিলে বারবারই দিতে হবে। আর সেক্ষেত্রে রাজি করাতে পাকিস্তান তো রয়েছেই।

      Delete