Sunday 3 January 2021

ইস্রাইলের সাথে তুরস্কের সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের ভূরাজনৈতিক গুরুত্ব

৩রা জানুয়ারি ২০২০

জুলাই ২০০৮। প্যারিসে ইস্রাইলি প্রধানমন্ত্রী এহুদ ওলমার্টের সাথে তুর্কি প্রধানমন্ত্রী রিচেপ তাইয়িপ এরদোগান। ১৯৪৯ সাল থেকেই তুরস্ক ইস্রাইলের সাথে ভালো সম্পর্ক রেখে চলেছে। ২০১০ সালের পর থেকে দুই দেশের মাঝে থেকে থেকে উত্তেজনা বিরাজ করলেও বাস্তবতা তুরস্কের নেতৃত্বকে আবারও ইস্রাইলের কাছে টেনে এনেছে, যদিও তা তুরস্ক ছাড়াও গোটা মুসলিম বিশ্বের কাছে অপছন্দনীয় ঠেকবে।


গত ৯ই ডিসেম্বর ‘আল মনিটর’ খবর দেয় যে, তুরস্ক প্রায় তিন বছর পর ইস্রাইলে একজন রাষ্ট্রদূত নিয়োগ দিতে চলেছে। উফুক উলুতাস নামের এই কূটনীতিবিদ বর্তমানে তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ‘সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক রিসার্চ’এর চেয়ারম্যান। জেরুজালেমের হিব্রু ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করা এই কূটনীতিবিদ মধ্যপ্রাচ্য এবং ইহুদি ইতিহাস নিয়ে লেখালেখি করেছেন। এর আগে নভেম্বরে নিজস্ব সূত্রের বরাত দিয়ে ‘আল মনিটর’ বলে যে, তুরস্ক এবং ইস্রাইলের ইন্টেলিজেন্স প্রধানরা গোপনে আলোচনা চালাচ্ছেন। ২০১৮ সালের মে মাসে অধিকৃত গাজা উপত্যকায় প্রতিবাদকারী ফিলিস্তিনিদের উপর ব্যাপক ইস্রাইলি হামলার প্রতিবাদে তুরস্ক তার রাষ্ট্রদূতকে তেল আভিভ থেকে প্রত্যাহার করে নেয়। সেসময় ফিলিস্তিনিরা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জেরুজালেমকে ইস্রাইলের রাজধানী ঘোষণা এবং তেল আভিভ থেকে জেরুজালেমে মার্কিন দূতাবাস সরিয়ে নেবার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ফেটে পড়েছিল। তবে এই ঘটনার বহু আগে ২০১০ সালের মে মাসে গাজা উপত্যকার উপর ইস্রাইলের অর্থনৈতিক অবরোধ ভাঙতে গিয়ে তুর্কি জাহাজ ‘মাভি মর্মরা’তে ইস্রাইলের স্পেশাল ফোর্সের সেনারা হামলা করে ৯ জন তুর্কি নাগরিককে হত্যা করে। এই ঘটনার প্রতিবাদে তুরস্ক ইস্রাইলের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে। ‘বিবিসি’ বলছে যে, ২০১৩ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার মধ্যস্ততায় ইস্রাইল এবং তুরস্কের মাঝে সম্পর্ক স্বাভাবিক হয়। ইস্রাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু তুর্কি প্রধানমন্ত্রী রিচেপ তাইয়িপ এরদোগানের সাথে ফোনে কথা বলে ‘মাভি মর্মরা’র ঘটনার জন্যে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। ২০১৬ সালে দুই দেশের মাঝে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিকতা পায়। ‘আল জাজিরা’ মনে করিয়ে দিচ্ছে যে, উফুক উলুতাসকে তেল আভিভ পাঠাবার সিদ্ধান্ত এমন সময়ে এলো, যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্ততায় সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, সুদান এবং মরক্কো ইস্রাইলের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করেছে। তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোগান ট্রাম্পের এই প্রচেষ্টা এবং আরব দেশগুলির ইস্রাইলের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের সমালোচনা করেছেন এবং নিজেকে মুসলিম বিশ্বের মাঝে ফিলিস্তিনি অধিকার আদায়ের শক্ত সমর্থক হিসেবে উপস্থাপন করেছেন। নেতানিয়াহু এবং এরদোগান বিভিন্ন সময়ে একে অপরের বিষোদগার করেছেন। তাহলে এখন আরব দেশগুলির মতো একই পথে হাঁটছে কেন তুরস্ক?

তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোগানের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক উপদেষ্টা মেসুত কাসিন ‘ভয়েস অব আমেরিকা’র সাথে কথা বলতে গিয়ে বলছেন যে, সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণে ইস্রাইল যদি এক পা এগোয়, তাহলে তুরস্ক দুই পা এগিয়ে আসতে পারে। তিনি বলেন যে, শান্তি এবং নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠা উভয় দেশের কাছেই গুরুত্বপূর্ণ। তারা কেউই ২০১০ সালের ‘মাভি মর্মরা’র মতো ঘটনা চান না। কারণ সেই ঘটনার পর থেকে সম্পর্ক শতভাগ স্বাভাবিকতা পায়নি। কাসিন বলছেন যে, উভয় দেশের মাঝে প্রতিরক্ষা এবং জ্বালানি ক্ষেত্রে অনেক সহযোগিতার ক্ষেত্র রয়েছে। দুই দেশের সামরিক সহায়তা আজেরবাইজানকে আর্মেনিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ জিততে সহায়তা করেছে। আর পূর্ব ভূমধ্যসাগরে আহরিত গ্যাসের জন্যে তুরস্ক হতে পারে গুরুত্বপুর্ণ বাজার এবং তুর্কি অঞ্চলের উপর দিয়ে পাইপলাইন বসিয়ে এই গ্যাস ইউরোপের বাজারে যেতে পারে। কাসিন ইঙ্গিত দিয়ে বলেন যে, নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ক্ষমতা নেবার পর অনেক কিছুই পরিবর্তন হবে। ‘ভোয়া’ বলছে যে, ট্রাম্প এবং এরদোগানের মাঝে বেশ ভালো বোঝাপড়া ছিল; কিন্তু বাইডেন হোয়াইট হাউজে আসার সাথেসাথেই আঙ্কারার জন্যে অনেককিছুই চ্যালেঞ্জিং হয়ে যাবে। ইস্তাম্বুলের বোগাজিচি ইউনিভার্সিটির গবেষক সেলিন নাসি মত দিচ্ছেন যে, মার্কিন কংগ্রেসে তুর্কিদের বিরোধী মতামতই বেশি। এমতাবস্থায় তুরস্ক হয়তো মনে করছে যে, ইস্রাইল এব্যাপারে তুরস্ককে কংগ্রেসের চোখে ভালো দৃষ্টিতে নিতে সহায়তা করবে। তবে তুরস্কের সাথে সম্পর্কোন্নয়নে ইস্রাইলের মূল উদ্দেশ্য বুঝতে পারা বেশ কঠিন বলে বলছেন নাসি। একটা উদ্দেশ্য হতে পারে পুরো মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের প্রভাব নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে দুই দেশের মাঝে ঐকমত্য রয়েছে। আর যখন ইস্রাইল মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করছে, তখন সেই তালিকায় তুরস্ক যোগ হলে আঞ্চলিক নেতৃত্বের চোখে ইস্রাইলের ইমেজ আরও শক্তিশালী হবে।

তবে ইস্রাইল আসলে এই সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণে কতটা ইচ্ছুক, তা নিয়ে সন্দেহ পোষণ করছেন কেউ কেউ। ‘আল জাজিরা’র সাথে কথা বলতে গিয়ে ‘তেল আভিভ ইউনিভার্সিটি’র ‘ইন্সটিটিউট ফর ন্যাশনাল সিকিউরিটি স্টাডিজ’এর সিনিয়র রিসার্চ ফেলো গালিয়া লিন্ডেনস্ট্রস বলছেন যে, দুই দেশের মাঝে রাষ্ট্রদূত আদানপ্রদান হলেও সন্দেহ দূরীভূত হবে না। ইস্রাইল এই সম্পর্কোন্নয়নের ব্যাপারে অপেক্ষাকৃত কম আগ্রহী। ফিলিস্তিনি সংগঠন হামাসের জন্যে তুরস্কের সমর্থন ইস্রাইলের সাথে সম্পর্কোন্নয়নে বাধা। হামাসের কিছু নেতৃবৃন্দ তুরস্কে অবস্থান করে তাদের কর্মকান্ড চালান। তুরস্ক যদি হামাসকে সমর্থন দেয়ার ব্যাপারে ছাড় দেয়, তাহলে ইস্রাইলের চোখে তা হবে বড় পরিবর্তন। আঙ্কারার ‘মিডল ইস্ট টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি’র প্রফেসর হুসেইন বাগচির মতে তুরস্ক ইস্রাইলের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ করতে গিয়ে ছাড় দিতে প্রস্তুত। মধ্যপ্রাচ্যে, বিশেষ করে ফিলিস্তিনে, মুসলিম ব্রাদারহুডের জন্যে তুরস্ক সরাসরি সমর্থনের ক্ষেত্রে ছাড় দেবে।

তবে লিন্ডেনস্ট্রস বলছেন যে, যেহেতু উভয় দেশের নেতৃবৃন্দ একে অপরের প্রতি কটুবাক্য ছুঁড়ে রাজনৈতিক সুবিধা পান, তাই অত সহজেই তারা আবারও তেমন সুযোগ পেলে হাতছাড়া করতে চাইবেন না। ‘জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটি’র প্রফেসর লিসেল হিন্টজ ‘আল জাজিরা’কে বলছেন যে, এরদোগান যখন ফিলিস্তিনিদের পক্ষ নেন, তখন মুসলিম বিশ্বে তিনি জনসমর্থন পান। আর যখন তিনি ইস্রাইল বিরোধী অবস্থান নেন, তখন তুরস্কে তার জাতীয়তাবাদী সমর্থন বাড়া ছাড়াও মুসলিম বিশ্বে তার জনপ্রতিয়তা বৃদ্ধি পায়। তবে লিন্টজ বলছেন যে, এরদোগান সবসময় বাস্তবতাকেই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেন। ২০১৬ সালে অর্থনৈতিক কারণে তুরস্কের ইস্রাইলের সাথে সম্পর্কোন্নয়ন করাটা ইস্রাইলের জন্যে বড় জয় ছিল। এবারেও বিশ্লেষকেরা মনে করছেন যে, ইস্রাইলের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ তুরস্কের বর্তমান কঠিন বাস্তবতারই ফলাফল। বাইডেন প্রশাসন খুব সম্ভবতঃ সিরিয়া, লিবিয়া এবং ককেশাস ইস্যুতে তুরস্কের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপ তুরস্কের কর্মকান্ডকে নিয়ন্ত্রণ করতে অবরোধ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পূর্ব ভূমধ্যসাগরে তুরস্কের কোণঠাসা অবস্থানও হয়তো তুরস্ককে ইস্রাইলের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণে অনুপ্রেরণা যোগাতে পারে। পূর্ব ভূমধ্যসাগরে সামরিক এবং জ্বালানি ক্ষেত্রে গ্রিস এবং মিশরের সাথে ইস্রাইল সহযোগিতা বাড়িয়েছে। অনেকেই বলছেন যে, এর পিছনে অত্র অঞ্চলে তুরস্কের প্রভাবকে নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্য রয়েছে।

ইস্রাইলের জন্মের পরপরই ১৯৪৯ সালে তুরস্ক ইস্রাইলের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করে। পুরো ঠান্ডা যুদ্ধের সময়েই দুই দেশ ছিল পশ্চিমা ধাঁচে চলা বন্ধু রাষ্ট্র। ‘আল জাজিরা’ বলছে যে, ২০০২ সালে তুরস্কে ‘একে পার্টি’ ক্ষমতায় আসার পর থেকে দুই দেশের সম্পর্কে পরিবর্তন আসে। ২০০৮ সালের পর থেকে গাজায় ইস্রাইলের অভিযান শুরু হলে ‘একে পার্টি’ ফিলিস্তিনিদের পক্ষ নিলে দুই দেশের সম্পর্কের অবনতি হয়। তদুপরি গত ৮ বছরের মাঝে দুই দেশের মাঝে বাণিজ্য সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলার থেকে ৬ বিলিয়নের মাঝে ওঠানামা করেছে। ২০২০ সালের প্রথম ১০ মাসে দুই দেশের বাণিজ্য ৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। দুই দেশের সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ হলে এই বাণিজ্য আরও বাড়বে।

সুপারপাওয়ার হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের দুর্বল হওয়াটা সকলের কাছে অজানা না থাকলেও ওয়াশিংটনে ক্ষমতার পট পরিবর্তন এখনও বাকি বিশ্বের জন্যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা ইস্রাইলের সাথে মুসলিম দেশগুলির সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের সাড়িবদ্ধতা দেখেই বোধগম্য। হোয়াইট হাউজে বাইডেন প্রশাসনের আগমণের আগেই তুরস্ক প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে; যার অংশ হিসেবে ইস্রাইলের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের পথকেই বাস্তববাদিতা বলে দেখেছে তুরস্ক। গণতন্ত্র, মানবাধিকার এবং বাকস্বাধীনতার ব্যাপারে আসন্ন বাইডেন প্রশাসনের দৃষ্টিভঙ্গি বিদায়ী ট্রাম্প প্রশাসনের থেকে আলাদা হওয়ায় মুসলিম দেশগুলির নেতৃবৃন্দ সতর্ক অবস্থান নিচ্ছে। তবে বিভক্ত যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের সাথে ভূরাজনৈতিক প্রতিযোগিতা যখন জো বাইডেন প্রশাসনের জন্যে বড় সমস্যা হিসেবে দেখা দিতে যাচ্ছে, তখন মধ্যপ্রাচ্যের ব্যাপারে ইস্রাইলের দৃষ্টিভঙ্গিই ওয়াশিংটনের কাছে অধিক গ্রহণযোগ্য হিসেবে ঠেকবে। এমতাবস্থায় মধ্যপ্রাচ্যে ইস্রাইলের টিকে থাকার ব্যাপারে তেল আভিভ সরকারের ওয়াশিংটন নির্ভরশীলতা যেমন কমছে, তেমনি তার মধ্যপ্রাচ্য কেন্দ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাও গুরুত্ব পাচ্ছে বেশি। যুক্তরাষ্ট্র নয়, বরং মুসলিম দেশগুলিই এখন ইস্রাইলের নিরাপত্তার পিছনে অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে চাইছে, যদিও তা মুসলিম বিশ্বের সাধারণ জনগণের কাছে অগ্রহণীয় হবে এবং তা তৈরি করবে অস্থিরতার। মুসলিম বিশ্বের নেতৃবৃন্দ বর্তমান বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে ইস্রাইলের সাথে বন্ধুত্ব করাকে যখন মুসলিম আবেগের উপর স্থান দিচ্ছে, তখন একদিকে তা মুসলিম জনগণের মাঝে তাদের নেতৃত্বের প্রতি যেমন ঘৃণার জন্ম দিচ্ছে, তেমনি শাসনব্যবস্থা পরিবর্তনের জন্যে জনগণকে আরও মরিয়া করে তুলছে। এহেন অস্থিরতা সামনের দিনগুলিতে নতুন এক ভূরাজনৈতিক বাস্তবতার জন্ম দিতে যাচ্ছে, তা থেকে পরিত্রাণ পাবার ক্ষমতা মুসলিম দেশগুলির নেতৃবৃন্দের নেই।

6 comments:

  1. ইসরায়েলের জন্মের সত্যিকার ইতিহাস জানতে চাই

    ReplyDelete
    Replies
    1. এই ব্লগেই ইস্রাইলের জন্মের পিছনে চিন্তাটার উদ্ধৃতি দেয়া রয়েছে। লেখাগুলি পড়লে এটা জানার কথা।

      https://koushol.blogspot.com/2016/07/gulshan-79-ideological-furuncle.html

      Delete
  2. স্যার এই লেখা অনুযায়ী জঙ্গিরা জানে না যে ইসলাম কিভাবে বিশ্ব নেতৃত্ব নিতে পারে। তাহলে ইসলাম কিভাবে বিশ্ব নেতৃত্ব নিতে পারবে একটু বুঝিয়ে বলবেন। পশ্চিমারা আসলে ইসলামের কি দেখে ভয় পায়। ইসলামী দেশের তো ওই রকম সামরিক শক্তি নেই যা তাদের সামরিক শক্তিকে টিক্কা দেবে। একটু বুঝিয়ে বলবেন।

    ReplyDelete
    Replies
    1. ইসলাম নেতৃত্ব যে নেবে, সেটা কুরআন এবং হাদিসে রয়েছে বহুবার। কিভাবে নেবে, সেটা ম্যাটার অব মেথড বা পদ্ধতি। যে পদ্ধতি রাসূল (সাঃ) অবলম্বন করেছেন, সেটাই মেথড। উদাহরণস্বরূপ, যেভাবে নামাজ পড়তে হয়, সেটা কিন্তু কুরআনের কোথাও লেখা নেই; কিন্তু তা রাসূল (সাঃ)এর সুন্নাহর অংশ। অর্থাৎ সুন্নাহ ফলো করলেই আপনি নামাজ পড়তে পারবেন। কি কি করতে হবে, তা কুরআন এবং হাদিসে রয়েছে; আর কাজগুলি কিভাবে করতে হবে, তার জন্যে রাসূল (সাঃ)এর সুন্নাহ বা পদ্ধতি দেখানো রয়েছে। এটা একটা পূর্ণ জীবন ব্যবস্থা বা আদর্শ বা ideology.

      পশ্চিমারা এটা জানে বলেই তাদের নিজস্ব পশ্চিমা সেকুলার জীবন ব্যবস্থা (যা দিয়ে এখন দুনিয়া চলছে) হুমকির মাঝে পড়ে যায়। একারণেই পশ্চিমারা মুসলিম বিশ্বকে নিয়ন্ত্রণে রাখার পিছনে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

      আপনি প্রযুক্তি নিয়ে যে কথাগুলি বলছেন, ইসলামের ইতিহাস দেখলে সেগুলি নিয়ে অন্যভাবে চিন্তা করতেন। সপ্তম শতাব্দীতে আরবদের কাছে কি ছিল? তারা সংখ্যায় কতজন ছিল? কোন প্রযুক্তি ছিল তাদের কাছে? তাহলে কিভাবে তারা তৎকালীন দুই সুপারপাওয়ার পারস্য এবং রোমের বিরুদ্ধে লড়তে পারলো?

      সবশেষ কথা হলো, সবকিছু গায়ের জোরে হয় না। একটা ideology বা আদর্শ চিন্তার উতকর্ষতার উপর নির্ভরশীল; শক্তির উপর নয়। শক্তি অবশ্যই দরকার। তবে শক্তির কারণে জয় আসে না; আসে চিন্তার উতকর্ষতার কারণে।

      Delete
    2. রোম এবং পারস্য নিজেরা নিজেরা যুদ্ধ করে নিজেদের শক্তি ক্ষয় করে তাই আরবরা পারস্য দখল করতে সক্ষম হয় । ধর্ম ইসলাম হলেও অনেক ইরানি/পারসিক এখনও তা ভুলে নি । আরব এবং ইরানিদের মাঝে দন্দের একটি কারণও এটি । + বর্তমানে পশ্চিম চায় মুসলিম দেশগুলো proxy warare zone এ পরিনত হোক । অর্থাৎ ইরাক , সিরিয়া , আগানিস্তানের মত হয়ে যাক । যাতে মুসলিম বিশ্ব জ্ঞানে বিজ্ঞানে , আদর্শ এর দিক থেকে , অর্থনৈতিক ও সামরিক ভাবে পিছিয়ে পড়ে + মুসলিম বিশ্বের আরও এক দুর্বলতা যা হল তার BLOOD BORDERs ... অর্থাৎ মুসলিম বিশ্বের সিমান্ত ইউরোপ , africa . চিন , ভারত , Buddhist nations ও রাশিয়ার সাথে অবস্থিত । এ জন্য মুসলিম বিশ্বের চারদিক নিয়েই চিন্তা করতে হয় ।

      Delete
  3. জাজাকাল্লাহ আল্লাহ তায়ালা মুসলিমদের সেই শক্তি দান করুন

    ReplyDelete