বাংলাদেশের অর্থনৈতিক এবং কূটনৈতিক সক্ষমতার বৃদ্ধির সাথে সাথে বিশ্বের কাছে বাড়ছে বাংলাদেশের সন্মান, প্রতিপত্তি, প্রভাব। এর মাঝে যে ব্যাপারটি বড় একটি ভূমিকা রাখে তা হলো সামরিক সক্ষমতা। এই সক্ষমতা বৃদ্ধিতে রাষ্ট্রের বর্তমান প্রচেষ্টা দৃশ্যমান। বাংলাদেশের সাবমেরিন ক্রয়ের সাথে সাথে সক্ষমতা তৈরির নীতির জানান দেয়া হয়েছে মাত্র। তবে সাবমেরিনের এই উপাখ্যান দরকার ছিল পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশের নামকে জাহির করার। যদিও এই জাহির করার মাঝে একটি কালো দাগ পড়েছে ভারতের সাথে সামরিক সমঝোতা করার মাঝ দিয়ে। তথাপি সক্ষমতা বৃদ্ধির এই প্রচেষ্টা রাষ্ট্রের চিন্তাশীল মহল অব্যাহতই রাখতে চান, এবং একইসাথে ভারতের প্রভাবকে নিষ্ক্রিয় দেখার ইচ্ছাই এক্ষেত্রে প্রবল। ভারতের প্রভাবকে নিষ্ক্রিয় করার ক্ষেত্রে একটি প্রধান চিন্তা হবে বাংলাদেশের প্রভাবকে বৃদ্ধি করা। এই প্রভাব বৃদ্ধি ইতোমধ্যে দেখা যাচ্ছে জাকার্তায় আইওআরএ শীর্ষ বৈঠকে, ঢাকায় আইপিইউ সন্মেলনে, কসোভোকে স্বীকৃতির মাঝ দিয়ে, এবং এশিয়া-আফ্রিকা-দক্ষিণ আমেরিকায় কূটনৈতিক এবং বাণিজ্যিক কর্মকান্ডকে ভিন্ন উচ্চতায় নেবার মাধ্যমে। এখান এই প্রভাবের মাঝে সামরিক সক্ষমতাকে ‘ফিট’ করার পালা।
বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের সৈন্যদের শান্তিরক্ষী মিশনে অংশগ্রহণের মাঝে দিয়ে বেশকিছু অভিজ্ঞতা সঞ্চয় হয়েছে বটে, তবে সেই অপারেশনগুলি বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সীমিত অবদানই রাখবে। কারণ শান্তিরক্ষী মিশনের লক্ষ্য বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর প্রভাব বৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে নয়। অর্থাৎ বাংলাদেশের প্রভাব বৃদ্ধিতে বিশ্বব্যাপী শান্তিরক্ষী মিশনে অংশগ্রহণ বড় ভূমিকা রাখবে না। সত্যিকার অর্থে, এধরনের প্রভাব বৃদ্ধি যাতে না হয়, জাতিসংঘ সেটা লক্ষ্য রাখে। কাজেই বাংলাদেশের সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধিতে শান্তিরক্ষী মিশনের বাইরেও অপশন খুঁজতে হবে।
বন্ধুর সাথে প্রশিক্ষণ – নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সহযোগিতার উত্তম ক্ষেত্র
বাংলাদেশ পৃথিবীতে বন্ধু খোঁজে। আর সেকারণেই আফ্রিকার বহু দেশে বাংলাদেশের বন্ধু তৈরি হয়েছে, যেখানে অনান্য অনেক দেশ নির্যাতকের তকমা নিয়ে আফ্রিকা ছাড়ছে। বন্ধু বন্ধুর বাড়িতে ঢোকে দরজা দিয়ে; কারণ বন্ধু বন্ধুর জন্যেই দরজা খুলে দেয়। চোর বা ডাকাত বাড়িতে ঢোকে সিঁদ কেটে। চোরের তাই দরকার হয় সিঁদ কাটা যন্ত্রপাতির। বাংলাদেশের সেধরণের যন্ত্রপাতির দরকার নেই। বরং বন্ধুত্ব প্রগাঢ় হয়, এমন জিনিসই বাংলাদেশ সাথে নেবে। বন্ধুর কাছ থেকে বন্ধু কিছু পায়; চোরের কাছ থেকে নয়। বরং চোর মানুষের কাছ থেকে জিনিস কেড়ে নেয়। বাংলাদেশের বন্ধুরাও বাংলাদেশের কাছ থেকে কিছু পাবে; তাই তারাও বাংলাদেশের বন্ধু হতে চাইবে। বাংলাদেশ সামরিক দিক থেকে প্রশিক্ষণকে এমন এক পর্যায়ে নিয়ে গেছে, যা সারা বিশ্বের কাছে একটি উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর প্রফেশনালিজম বাকি দুনিয়ার মানুষ দেখেছে বিভিন্ন সময়ে। আর সেকারণেই পৃথিবীর বহু দেশের সামরিক অফিসাররা এখানে আসে প্রশিক্ষণের জন্যে। এই একই ইমেজটা বাংলাদেশের সামরিক বাহিনী ধরে রেখেছে বিশ্বব্যাপী শান্তিরক্ষী মিশনে। তবে এখন এই শান্তিরক্ষী মিশনের মাঝে আটকে না থেকে অভিজ্ঞতা এবং প্রফেশনালিজমকে পুঁজি করে বাকি বিশ্বের কাছে বন্ধুত্বের বাণী পৌঁছে দিতে হবে। আর এক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ হবে উত্তম একটি সহযোগিতার ক্ষেত্র। বিশ্ব পরিসরে বাংলাদেশের সামরিক সক্ষমতার প্রভাবকে গুরুত্বপূর্ণ চালিকাশক্তি হিসেবে ব্যবহার করতে গেলে যে বিষয়গুলি বেশি গুরুত্ব পাবে, তার মাঝে থাকবে প্রশিক্ষণ।
বাংলাদেশের সামরিক বাহিনী নিজ দেশে অন্য দেশের সেনাদের প্রশিক্ষণ দেয়। কিন্তু বাংলাদেশের বর্তমান বাস্তবতায় দেশের মাটিতে নিজেকে আটকে রাখাটা দূরদর্শিতার পরিচায়ক নয়। বাংলাদেশের নিরাপত্তা এখন শুধু ১৯৪৭-এ ব্রিটিশদের নির্ধারণ করে দেয়া ১ লক্ষ ৪৪ হাজার বর্গ কিলোমিটারের মাঝে নয়। যখন প্রায় কোটিখানেক বাংলাদেশী দুনিয়ার আনাচে কানাচে ছড়িয়ে আছে, তখন এদেশের সশস্ত্র বাহিনীর দেশে বসে বসে ভাববার সময় নেই। বাংলাদেশের হাজারো সৈন্য এখন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে; বিশেষ করে আফ্রিকায়। সুতরাং নিরাপত্তার সংজ্ঞা নিয়ে ভাববার সময় এখন এসেছে; নিরাপত্তা-সম্পর্কিত প্রশিক্ষণ এবং অভিজ্ঞতা নিয়েও ভাববার সময় এসেছে। বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ের নিরাপত্তা দেবার মতো সক্ষমতা বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর থাকতে হবে। নাহলে রাজনৈতিক-কূটনৈতিক বুলি ফাঁপা ঠেকবে। ইয়েমেনে যুদ্ধ শুরুর পর সেই দেশ থেকে বাংলাদেশীদের সরিয়ে আনার জন্যে ভারতের (যাকে কিনা শত্রু রাষ্ট্র জ্ঞান করে দেশের বেশিরভাগ জনগণ) দ্বারে ধর্ণা দিতে হয়েছে, যা কিনা বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে উন্নত করেনি, বরং আরেকটি রাষ্ট্রের কাছে ঋণগ্রস্ত করে কূটনৈতিকভাবে দেশকে দুর্বল করেছে। কাজেই বাংলাদেশের বিশ্বব্যাপী রাজনৈতিক এবং সামরিক সক্ষমতা গড়াটা রাষ্ট্রীয় সক্ষমতা গড়ার সাথে সম্পর্কিত। আর এখানেই আবারও আসছে প্রশিক্ষণ এবং অভিজ্ঞতার কথা। বাংলাদেশের বন্ধুত্বের নীতির সাথে এর সমন্বয়ের প্রয়োজন রয়েছে। বন্ধুর সাথে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে অভিজ্ঞতার বিনিময় – এটাই হতে পারে সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধির মূলমন্ত্র।
বন্ধু রাষ্ট্রের সাথে বাংলাদেশের বাইরে প্রশিক্ষণ এবং অভিজ্ঞতা বিনিময়ের পদ্ধতি নিয়ে সক্ষমতা-বিষয়ক কিছু প্রশ্নের উত্তর খোঁজা জরুরি। যেমন বাংলাদেশের বাইরে এই প্রশিক্ষণ কর্মকান্ড পরিচালনা করার মতো সক্ষমতা কি বাংলাদেশের আছে? উত্তরে বলতে হবে যে অবশ্যই আছে। তবে একইসাথে এটাও বলতে হবে যে এই সক্ষমতা যথেষ্ট নয়। এই সক্ষমতাকে পরবর্তী উচ্চতায় নিতে কিছু সাংগঠনিক পরিবর্তন দরকার। যেমন, বাংলাদেশের বাইরে প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের উদ্দেশ্যে কিছু ইউনিট গঠন করে সেগুলিতে সামরিক বাহিনীর সদস্যদের পোস্টিং দেয়া যেতে পারে। এধরণের একটি ইউনিট সব বাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত হতে পারে। একটি ‘ওভারসীজ ট্রেনিং কমান্ড’এর অধীনে নিম্নোক্ত কিছু ইউনিট গঠন করা যেতে পারে –
সেনা ইউনিটঃ
সেনাবাহিনীর একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ ইউনিট থাকা উচিত, যা কিনা একত্রে বাংলাদেশের বাইরে মোতায়েন করা যাবে। আর বেশ কিছুদিনের জন্যে মোতায়েনও থাকতে পারবে। এর মূল ইউনিটটি একটি ব্যাটালিয়ন হলেও এর সাথে বেশকিছু অনান্য ইউনিট থাকা উচিত, যা কিনা একে কমপক্ষে ব্রিগেড পর্যায়ের মর্যাদা দেবে। আর ইউনিটটির একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য হবে এর মোবিলিটি। এর সকল কিছুই হবে হাইলি মোবাইল। তবে মোতায়েনের এলাকার উপর ভিত্তি করে এর কম্পোজিশন পরিবর্তিত করা যেতে পারে। এখানে ইউনিটের সংখ্যা সম্পর্কে একটি ধারণা দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।
এই ইউনিটে থাকতে পারে -
১। একটি পদাতিক ব্যাটালিয়ন
২। মেকানাইজড ইউনিট (বিটিআর-৮০ এপিসি – ২০টি এবং অতোকার কোবরা এপিসি – ১২টি)
৩। আর্টিলারি ইউনিট (ডব্লিউএস-২২ রকেট লঞ্চার – ৪টি, নোরা বি-৫২ হাউইটজার – ৬টি এবং এসএলসি-২ রাডার – ১টি)
৪। এয়ার ডিফেন্স ইউনিট (একটি এফএম-৯০ ইউনিট)
৫। ট্রান্সপোর্ট ইউনিট (২০টি ট্রাক, ২০টি টেকনিক্যাল। সাথে এটিজিম থাকা উচিত।)
৬। ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিট (সাথে মাইন ক্লিয়ারেন্স এবং রিভার ক্রসিং ইকুইপমেন্ট থাকতে পারে)
৭। সিগনালস ইউনিট (স্যাটেলাইট কমিউনিকেশন সহ)
৮। মেডিক্যাল ইউনিট
৯। মেইনটেন্যান্স ইউনিট
১০। প্যারাকমান্ডোদের একটি ডিটাচমেন্ট
নৌ ইউনিটঃ
এর প্রধান কাজ হবে সেনা এবং বিমান ইউনিটসমূহকে পরিবহণ করা এবং পরিবহণ করার ও বাংলাদেশের বাইরে অবস্থানের সময় সমুদ্রিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। একইসাথে বন্ধুদেশের নৌবাহিনী এবং কোস্টগার্ডের সাথে প্রশিক্ষণে অংশ নেয়া। এখানে সাতটি জাহাজের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তবে এই ইউনিট এর চাইতে ছোট বা বড় হতে পারে। যে জাহাজগুলি এখনও বাংলাদেশের নেই, সেগুলি সম্পর্কে কিছুটা ধারণা দেয়া হয়েছে কিছু উদাহরণের মাধ্যমে। এখানে এই নৌ ইউনিটটি বন্ধু দেশের বন্দরের উপরে নির্ভর করবে; অর্থাৎ বন্ধুর বাড়িতে ঢোকার পথ হলো বন্ধুই দরজা খুলবে। এখানে এমন কোন ইউনিট থাকবে না, যা কিনা বন্ধুর বাড়ির জানালার সিঁদ কেটে ঢোকার মতো মনে হয়।
এই ইউনিটে থাকতে পারে -
১। একটি ফ্রিগেট (সাথে একটি হেলিকপ্টার থাকলে সবচাইতে ভালো; না থাকলে অন্য কোন ইউনিটে হেলিকপ্টারের ব্যবস্থা করতে হবে)
২। একটি এলপিসি (দুর্জয়-ক্লাস)
৩। একটি ওপিভি (কোস্ট গার্ডের সাদা রঙের একটি জাহাজ এখানে বেশি মূল্যবান হবে)
৪। একটি ট্রুপ শিপ (১,০০০ ধারণক্ষমতা সম্পন্ন একটি জাহাজ, যা বাণিজ্যিকভাবে কিনে নিজেদের প্রয়োজনে পরিবর্তন করে নেয়া যেতে পারে। এতে অবশ্যই ১,০০০ মানুষের কমপক্ষে তিন সপ্তাহ থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা থাকতে হবে। হেলিপ্যাড এবং স্যাটেলাইট কমিউনিকেশন অতি দরকারী ব্যাপার হবে। উদাহরণ হিসেবে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর প্রাক্তন জাহাজ বিএনএস শহীদ সালাহউদ্দিন-এর নাম বলা যেতে পারে, যদিও এখন এর চাইতে আরও আপডেটেড জাহাজ দরকার হবে।)
৫। একটি কনটেইনার শিপ (১৬০ থেকে ১৮০ মিটারের মাঝে, যা কিনা চট্টগ্রাম বন্দরে ঢুকতে পারে এবং আফ্রিকার বেশিরভাগ বন্দরে ঢুকতে পারবে। এটিকে বিমান এবং অনান্য সরঞ্জামাদি পরিবহণে ব্যবহার করা হবে। বাণিজ্যিকভাবে কিনে এটাকে এমনভাবে পরিবর্তন করতে হবে যাতে ডেকের উপরে বিমান বহণ করা যায়। মোটামুটি ১৪-১৫টা বিমান বহণ করার মতো সক্ষমতা থাকলে এটা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে। কিছু অংশ হেলিপ্যাডের জন্যে খোলা রাখতে হবে। এক্ষেত্রে উদাহরণ হবে ফকল্যান্ড যুদ্ধের সময়ে ব্রিটিশ রয়াল নেভির ব্যবহৃত ২১২ মিটার লম্বা এবং ১৫,০০০ টনের ‘আটলান্টিক কনভেয়র’ এবং ‘আটলান্টিক কজওয়ে’, যেগুলির ডেকের উপরে করে ২৪ থেকে ২৮টি বিমান নেয়া হয়েছিল ফকল্যান্ডে।)
ব্রিটিশ রয়েল নেভির 'পয়েন্ট-ক্লাস'-এর রো-রো ফেরি, যা কিনা বেশ কয়েক'শ গাড়ি বহনে সক্ষম। এরকম জাহাজে একটি সামরিক ইউনিটের প্রায় সকল গাড়িই বহুদূর পর্যন্ত বহন করা সম্ভব। |
৭। একটি সাপ্লাই জাহাজ (পথে জ্বালানি বা অন্য কোনকিছুর সরবরাহের ঘাটতি পূরণ করতে পারার মতো। তবে পুরো পথের সরবরাহ নিশ্চিতের দরকার নেই। বাংলাদেশের জাহাজ পৃথিবীর বেশিরভাগ বন্দরেই “ওয়েলকাম”)
৮। স্পেশাল ফোর্স সোয়াডস-এর একটি ডিটাচমেন্ট (সাথে হাই-স্পিড বোট থাকা উচিত।)
আফ্রিকার কঙ্গোতে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর সি-১৩০ পরিবহণ বিমান। বাংলাদেশের বাইরে প্রশিক্ষণ মিশনে বিমান থাকাটা অবশ্য দরকারি। |
বিমান ইউনিটঃ
বিমান ইউনিটের মাঝে সব ধরনের বিমানই রাখা হয়েছে। প্রশিক্ষণ সকল ক্ষেত্রেই দরকার; তাই বিমানের ধরনের ক্ষেত্রেও তা-ই হওয়া উচিৎ। সংখ্যার দিক থেকে একটা ধারণা এখানে দেয়া হয়েছে। মনে রাখতে হবে যে এখানে যে সংখ্যা বলা হবে, তা কিন্তু পরিবহণও করতে হবে।
এই ইউনিটে থাকতে পারে -
১। একটি ফাইটার ইউনিট (এফ-৭বিজি – ৪টি এবং এফ-৭বিজিআই ৪টি)
২। একটি ট্রান্সপোর্ট ইউনিট (এলইটি-৪১০ – একটি। এটি নিজ শক্তিতে উড়ে গন্তব্যে যাবে, যদিও বাকিরা যাবে জাহাজে।)
৩। হেলিকপ্টার ইউনিট (এমআই-১৭১ – ৪টি এবং আগুস্টা এ-১০৯ – ২টি)
৪। ড্রোন ইউনিট (অবজারভেশন মিশনের জন্যে একটি ড্রোন ইউনিট অবশ্যই থাকা উচিত)
৫। রাডার ইউনিট (একটি এয়ার সার্চ রাডার গ্রাউন্ডে বসানোর জন্যে এই কমান্ডে থাকা উচিত)
৬। মেইনটেন্যান্স ইউনিট
৭। এয়ারবেইস ইউনিট (এরকম ইউনিট বাংলাদেশ আফ্রিকার একাধিক দেশে মোতায়েন করেছে। এরকমই আরেকটি ইউনিট এই কমান্ডে থাকতে পারে।)
উদাহরণ হিসেবে কয়েকটি রাষ্ট্রের কথা বলা যেতে পারে, যাদের সাথে বন্ধুপ্রতীম প্রশিক্ষণ এবং অভিজ্ঞতা আদান-প্রদান হতে পারে; যেমন – শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, তাঞ্জানিয়া, কেনিয়া, সোমালিয়া, মোজাম্বিক, নাইজেরিয়া, সিয়েরা লিওন, ইত্যাদি। দূরত্ব হিসেবে এধরনের প্রশিক্ষণ মিশনের দৈর্ঘ্য নির্ধারিত হতে পারে। ‘ওভারসীজ ট্রেনিং কমান্ড’এর মাধ্যমে এরকম মিশনে বাংলাদেশের সামরিক সক্ষমতা এবং প্রফেশনালিজম যেমন আরও উন্নত হবে, তেমনি বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের বন্ধুর সংখ্যা বাড়বে। একইসাথে বাংলাদেশের ভাবমূর্তির উন্নয়ন হবে এবং বিশ্বব্যাপী প্রভাবও বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে। শক্তিশালী বাংলাদেশ শুধু কাগজে-কলমে থাকলেই হবে না, বাস্তব জীবনে দেখাতে হবে। আর সেক্ষেত্রে সামরিক সক্ষমতা একটি অপরিহার্য প্রয়োজন।
No comments:
Post a Comment