Friday 10 June 2022

পশ্চিমারা একমত হতে পারছে না যে ইউক্রেন যুদ্ধ কিভাবে শেষ হওয়া উচিৎ

১০ই জুন ২০২২

 
ন্যাটোর সদস্যদেশগুলির পতাকা উড়ছে। পশ্চিমাদের মাঝে যুদ্ধ শেষ করার লক্ষ্যের ব্যাপারে অনৈক্য যখন আবারও মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে, তখন আবারও যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্যের উপরেই সকলকে নির্ভর করতে হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র যখন রাশিয়াকে ‘দুর্বল’ করার কথা বলছে, তখন রাষ্ট্র হিসেবে ইউক্রেনের লক্ষ্যগুলি গৌন হয়ে দাঁড়াচ্ছে। অর্থাৎ ইউক্রেনকে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্ব মেনে নিয়ে ‘প্রক্সি যুদ্ধ’ চালিয়ে যেতে হচ্ছে। ফলশ্রুতিতে যুদ্ধ দীর্ঘ হচ্ছে; যা গোটা বিশ্বের অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং রাজনৈতিক কাঠামোকে হুমকির মাঝে ফেলে দিয়ে বিকল্পের রাস্তা প্রসারিত করছে।


ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর সাড়ে তিন মাস পর পশ্চিমা দেশগুলি যুদ্ধ শেষ হবার ব্যাপারে একমত হতে পারছে না। যুদ্ধের শুরুতে পশ্চিমারা ইউক্রেনকে সহায়তা দেয়ার ব্যাপারে যতটা ঐক্য প্রদর্শন করেছিল, যুদ্ধ লম্বা হবার সাথেসাথে তাদের চিন্তাগুলি ততটাই অনৈক্যে রূপ নিচ্ছে।

বার্লিনের ‘রবার্ট বশ একাডেমি’র ফেলো এবং ‘লে মন্ড’ পত্রিকার কলামিস্ট সিলভি কাউফম্যান ‘ফিনানশিয়াল টাইমস’এর এক লেখায় বলেছেন যে, ইউক্রেন যুদ্ধ কিভাবে শেষ হওয়া উচিৎ, তা নিয়ে পশ্চিমাদের মাঝে দু’টা গ্রুপ তৈরি হয়েছে। প্রথম গ্রুপটা মনে করছে যে, রাশিয়াকে এমনভাবে শাস্তি দেয়া উচিৎ, যাতে করে সে আর এধরনের কাজ না করে। ২০০৮ সালে রাশিয়া জর্জিয়া আক্রমণ করার সময়ে এবং ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া দখল করার সময়ে পশ্চিমারা যদি যথেষ্ট শক্তভাবে বাধা দিতো, তাহলে রাশিয়া হয়তো ২০২২ সালের কাজটা করতে সাহস পেতো না। ২৫শে এপ্রিল মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড অস্টিন বলেছেন যে, রাশিয়াকে যথেষ্ট ‘দুর্বল’ করে ফেলা উচিৎ। তবে এই কথার সাথে ওয়াশিংটনের লক্ষ্যের সম্পর্ক কতটুকু, তা এখনও যথেষ্ট পরিষ্কার নয়। অপরদিকে দ্বিতীয় গ্রুপটা মনে করছে যে, যুদ্ধ শেষ হওয়া উচিৎ ইউক্রেনের জয় দিয়ে। আর ইউক্রেনের সীমানা নিয়ে সিদ্ধান্ত ইউক্রেনকেই নিতে দেয়া উচিৎ। ইউরোপের অনেকেই ভুলেনি কিভাবে পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলি প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপকে ভাগাভাগি করেছিল; যা কিনা পরবর্তীতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের জন্ম দেয়। আর এই দেশগুলিই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর পূর্ব ও মধ্য ইউরোপকে সোভিয়েত ইউনিয়নের হাতে তুলে দেয়।

ব্রিটেনের ‘দ্যা টেলিগ্রাফ’ পত্রিকার প্রতিরক্ষা বিষয়ক সম্পাদক কন কাফলিন কিছু ন্যাটো সদস্যদেশের মারাত্মক সমালোচনা করছেন। তিনি বলছেন যে, জার্মানি এবং ফ্রান্স ইউক্রেনকে রক্ষা করার চাইতে রাশিয়াকে তুষ্ট করাতেই বেশি আগ্রহী। হেনরি কিসিঞ্জারের মতো পশ্চিমা চিন্তাবিদও এখন যুদ্ধ শেষ করতে ইউক্রেনকে ছাড় দেয়ার কথা বলছেন। ১৯৯০এর দশকে সাদ্দাম হোসেনকে কুয়েত থেকে বের করতে পশ্চিমারা পাঁচ লক্ষ সেনার বিশাল বাহিনী মোতায়েন করেছিল। কিন্তু এখন পশ্চিমারা একনায়কদেরকে মোকাবিলা করতে যথেষ্ট ইচ্ছুক নয়। রুশ আগ্রাসন মোকাবিলায় ইউক্রেনকে যথেষ্ট সহায়তা না দেয়ার অর্থ হলো অন্যান্য একনায়কেরাও মনে করতে পারে যে, তারাও পশ্চিমাদের তেমন কোন বাধা ছাড়াই আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে পারে। কন কাফলিনের কথায়, ইউক্রেনকে সহায়তা দিয়ে যুদ্ধ জেতানোর মাধ্যমেই বিশ্বের অন্যান্য একনায়কদেরকে শিক্ষা দেয়া সম্ভব।

‘ফরেন পলিসি’ ম্যাগাজিনের এক লেখায় ‘সেন্টার ফর ইউরোপিয়ান পলিসি এনালিসিস’এর ফেলো ব্রিটিশ রাজনীতিবিদ এডওয়ার্ড লুকাস ব্যাখ্যা দিয়ে বলছেন যে, তিন বছর আগে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রঁ যখন বলছিলেন যে, ন্যাটোর ‘মস্তিষ্ক মৃত’, তখন তিনি সেসময়কার বাস্তবতাকেই তুলে ধরেছিলেন। কারণ তখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্রের নীতির ব্যাপারে কেউই নিশ্চিত হতে পারছিলো না। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু পর অনেকেই মনে করেছিলেন যে, এবার বুঝি ন্যাটো পুনরায় তার লক্ষ্য ফিরে পেয়েছে। তারা ইউক্রেনকে একযোগে অস্ত্র দিয়েছে, রাশিয়ার হুমকিকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করেছে, সামরিক বাজেট বৃদ্ধি করেছে, এবং পূর্বদিকের সীমানার নিরাপত্তা বৃদ্ধি করেছে। কিন্তু ন্যাটোর এই ‘হানিমুন’ এখন শেষ! লিথুয়ানিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী গ্যাব্রিয়েলিয়াস ল্যান্ডসবার্গিস বলেছেন যে, ‘হানিমুন’এর সময়টা ছিল স্বল্প সময়ের। যুদ্ধ যখন দীর্ঘ হতে শুরু করেছে, তখনই এই ঐক্যে টানাপোড়েন পড়েছে এবং এই জোট এখনও দোদুল্যমান। লুকাস বলছেন যে, মাত্র ১৪ বছর আগেও ন্যাটোর গোপন গ্রুপ ‘এমসি ১৬১’এর হিসেবের মাঝে রাশিয়া কোন হুমকি হিসেবে ছিল না; যার মূল কারণ ছিল জার্মানি এবং যুক্তরাষ্ট্র উভয়েই রাশিয়ার সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক রাখার পক্ষপাতি ছিল। রাশিয়াকে হুমকি হিসেবে না দেখার কারণে ন্যাটোর পূর্ব দিকের সদস্য রাষ্ট্র পোল্যান্ড এবং তিনটা বল্টিক রাষ্ট্র এস্তোনিয়া, লাটভিয়া ও লিথুয়ানিয়াকে দ্বিতীয় সাড়ির সদস্য দেশ হিসেবে দেখা হচ্ছিলো। পোল্যান্ডের প্রশ্নের উত্তরে ন্যাটো বলেছিল যে, ন্যাটোর পক্ষে এই দেশগুলিকে বেলারুশের আগ্রাসন থেকে বাঁচানো সম্ভব হলেও রাশিয়ার আগ্রাসন থেকে বাঁচানো সম্ভব নয়।

 
১৪ বছর আগে রাশিয়াকে হুমকি হিসেবে না দেখার কারণে ন্যাটোর পূর্ব দিকের সদস্য রাষ্ট্র পোল্যান্ড এবং তিনটা বল্টিক রাষ্ট্র এস্তোনিয়া, লাটভিয়া ও লিথুয়ানিয়াকে দ্বিতীয় সাড়ির সদস্য দেশ হিসেবে দেখা হচ্ছিলো। পোল্যান্ডের প্রশ্নের উত্তরে ন্যাটো বলেছিল যে, ন্যাটোর পক্ষে এই দেশগুলিকে বেলারুশের আগ্রাসন থেকে বাঁচানো সম্ভব হলেও রাশিয়ার আগ্রাসন থেকে বাঁচানো সম্ভব নয়।

কাউফম্যান বলছেন যে, ইউক্রেন যুদ্ধের মাধ্যমে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের স্বার্থের দ্বন্দ্বগুলি সবার সামনে চলে এসেছে। একদিকে জার্মানি, ফ্রান্স এবং ইতালি ঠান্ডা যুদ্ধের পর থেকে রাশিয়ার সাথে তৈরি করা বাণিজ্যিক সম্পর্ককে ক্ষতিগ্রস্ত হতে দেখে বিপদে পড়ে গেছে। আর ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রঁ মনে করছেন যে, ফ্রান্সের নেতৃত্বে ইউরোপের যে নিরাপত্তা কাঠামো তিনি তৈরি করার স্বপ্ন দেখছিলেন, তা ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ভেস্তে যাচ্ছে। অপরদিকে, পোল্যান্ড এবং বল্টিক রাষ্ট্রগুলি মনে করছে যে, তারা এতদিন যাবত রাশিয়াকে যেভাবে অবিশ্বাস করতো, তা এখন শক্ত ভিত্তির উপর দাঁড়িয়েছে। আর ফিনল্যান্ড এবং সুইডেন ন্যাটোতে যোগদানের ইচ্ছা ব্যক্ত করাতেও তারা নিজেদেরকে আরও বলীয়ান ভাবছে। পোল্যান্ড তো ভাবতে শুরু করেছে যে, ইউক্রেনের সাথে একযোগ হয়ে তারা ফ্রান্স ও জার্মানির পুরোনো জোটের বিপরীতে একটা নতুন জোট গঠন করতে পারবে, যা যথেষ্ট শক্তিশালী হবে এবং প্রভাব বহণ করবে। আর পশ্চিমাদের কাছ থেকে রাশিয়ার অপমানিত হবার কিছু নেই; কারণ পুতিন নিজেই নিজেকে যথেষ্ট অপমানিত করেছেন।

ইউক্রেনে হামলা করার আগে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যে ব্যাপারগুলি ভেবেছিলেন তার মাঝে হয়তো বৈশ্বিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের শক্তি ক্ষয়ের সাথেসাথে পশ্চিমাদের সিদ্ধান্তহীনতার ব্যাপারটাও ছিল। তবে এর অর্থ তা নয় যে, তিনি ইউক্রেনকে যেনতেনভাবে হারাতে পারতেন। কিয়েভ এবং খারকিভ থেকে সেনা প্রত্যাহারের পর বুঝতে বাকি নেই যে, পুতিনও যুদ্ধ শেষ করার সর্বোচ্চ চেষ্টাই করছেন। তবে পশ্চিমাদের মাঝে যুদ্ধ শেষ করার লক্ষ্যের ব্যাপারে অনৈক্য যখন আবারও মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে, তখন আবারও যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্যের উপরেই সকলকে নির্ভর করতে হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র যখন রাশিয়াকে ‘দুর্বল’ করার কথা বলছে, তখন রাষ্ট্র হিসেবে ইউক্রেনের লক্ষ্যগুলি গৌন হয়ে দাঁড়াচ্ছে। অর্থাৎ ইউক্রেনকে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্ব মেনে নিয়ে ‘প্রক্সি যুদ্ধ’ চালিয়ে যেতে হচ্ছে। ফলশ্রুতিতে যুদ্ধ দীর্ঘ হচ্ছে; যা গোটা বিশ্বের অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং রাজনৈতিক কাঠামোকে হুমকির মাঝে ফেলে দিয়ে বিকল্পের রাস্তা প্রসারিত করছে।

2 comments:

  1. ধন্যবাদ। বিকল্পটা কি? কে সন্ধান দিবে?

    ReplyDelete
    Replies
    1. কি বা কেএর চাইতে বেশি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হলো বিকল্পটা কেমন হতে হবে। অর্থাৎ সমাধানের মাপকাঠিটা কেমন হওয়া উচিৎ। সেটাই দেখিয়ে দেবে যে কোন সমাধানটা যুক্তিযুক্ত এবং কোনটা প্রকৃতপক্ষে বাস্তবিক।

      খুব সহজ কথায় বলতে গেলে বর্তমান ব্যবস্থায় যেসকল সমাধান দেয়া সম্ভব হচ্ছে না, সেসকল বিষয়ের সমাধান যে ব্যবস্থা দিতে পারবে, সেটাই হওয়া উচিৎ প্রকৃত সমাধান। কিছু উদাহরণ দিলেই ব্যাপারটা পরিষ্কার হয়ে যাবে।

      প্রথমঃ মানুষের মৌলিক অধিকার পূরণের ব্যবস্থা থাকতে হবে।
      বৈশ্বিক খাদ্যসংকটের কথাই ধরা যাক। কিছু মানুষ খাদ্য নষ্ট করছে, আর বাকি বেশিরভাগই খেতে পারছে না। সারা বিশ্বে যে পরিমাণ খাদ্য উৎপাদন সক্ষমতা রয়েছে, তা সকল মানুষের চাহিদা মেটাবার জন্যে যথেষ্ট। তারপরেও মানুষ না খেয়ে থাকছে। এখানে সমস্যা হলো খাদ্যের অসম বন্টন। বিকল্প ব্যবস্থায় সুসম বন্টনের ব্যবস্থা থাকতে হবে।

      দ্বিতীয়তঃ ১ শতাংশ মানুষের হাতে সারা দুনিয়ার ৫০ শতাংশ সম্পদ চলে গেছে। এটা একটা অবাস্তব সমাধান; যা মানুষকে দুর্ভিক্ষের দিকে ঠেলে দেবে; যুদ্ধ সংঘাতের জন্ম দেবে। বিকল্প সমাধানে সম্পদের মালিকানা কিছু মানুষের হাতে যাতে চলে না যায়, সেই ব্যবস্থা থাকতে হবে। অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা, নিরাপত্তার মতো মৌলিক অধিকার থেকে মানুষ যাতে বঞ্চিত না হয়, সেই ব্যবস্থা থাকতে হবে। এর পরে কেউ যদি ধনী হতে চায় হতে পারে; কিন্তু বাকি সকলকে অভাবের মাঝে ফেলে নয়।

      তৃতীয়তঃ মানুষের প্রবৃত্তিগুলিকে খুশি করতে হবে এমনভাবে, যাতে করে সমাজে অসঙ্গতি না হয়। উদাহরণস্বরূপ, পশ্চিমা বিশ্বে এখন 'মি-টু' আন্দোলন হচ্ছে; কারণ নারীদের কোন সন্মান দেয়া হচ্ছে না। যদিও সেখানে মানুষকে যথেষ্ট স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ স্বাধীনতা দেয়াটা অর্থবহ হয়নি। নারীরা সন্মানতো পায়ই নি, বরং পণ্যে পরিণত হয়েছে। ফলশ্রুতিতে সমাজে বিবাহবিচ্ছেদ, ব্যাভিচার, এবং বিকৃত যৌনাচার স্বাভাবিক হয়ে গেছে; পরিবারের অস্তিত্বই থাকছে না। অথচ পরিবারই হবার কথা ছিল পরবর্তী জেনারেশনের প্রথম শিক্ষাকেন্দ্র।

      চতুর্থতঃ বিকল্প সমাধানে মানুষকে যার যা প্রাপ্য, তা দিতে হবে। অর্থাৎ সুবিচার দিতে হবে। 'ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার'এর মতো অন্দোলন চলছে পশ্চিমা বিশ্বে। কারণ মানুষের বর্ণ এবং জাতিগোষ্ঠীর উপর ভিত্তি করে তাকে বিচার করা হচ্ছে। সাদা চামড়ার মানুষ না হলে তাকে তার প্রাপ্য দেয়া হচ্ছে না।

      পঞ্চমতঃ বর্তমান বিশ্বের একটা বড় সমস্যা হলো অর্থনৈতিক অব্যবস্থা। এর মূলে রয়েছে সুদভিত্তিক অর্থনীতি এবং ছাপানো অর্থের উপর নির্ভরশীলতা। এর ফলে মূল্যস্ফীতি চরমে ওঠা ছাড়াও মানুষকে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের উপর নির্ভরশীল করে ফেলা হয়েছে। এর ফলশ্রুতি আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যের ওঠানামার সাথেসাথে একেকটা দেশে সামাজিক এবং রাজনৈতিক অসন্তোষ দেখা দিচ্ছে। কেউ ইচ্ছামতো মুদ্রা ছাপাচ্ছে; আর বাকিদেরকে বাধ্য করা হচ্ছে সেই মুদ্রাকে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ব্যবহার করতে।

      ষষ্ঠতঃ বর্তমান ব্যবস্থা মানুষকে জাতীয়তাবাদী করেছে। এর ফলশ্রুতিতে কোটি কোটি মানুষ সংঘাতে মৃত্যুবরণ করেছে। নিজ জাতিকে তুলে ধরতে মানুষ আরেক জাতিকে ধ্বংস করছে। কোটি কোটি মানুষ তাদের সহায় সম্বল হারিয়েছে; বাস্তুচ্যুত হয়েছে; দুর্ভিক্ষের মাঝে পড়েছে। বিকল্প ব্যবস্থায় জাতিগত এই সহিংসতা বন্ধের একটা দিকনির্দেশনা থাকতে হবে।

      এখানে একটা কাঠামো দেয়া হলো; যার মাধ্যমে বিকল্প ব্যবস্থা নেবার সময় কি কি বিষয় দেখতে হবে, সেটার একটা ধারণা নিয়ে কথা বললাম। এটাই হওয়া উচিৎ মূল আলোচনা।

      Delete