Saturday 12 February 2022

কর্ণাটকের হিযাব বিতর্ক মুসলিম বিশ্বের নেতৃত্বের দায়িত্ব না নেবার প্রবণতাকেই দেখিয়ে দেয়

১২ই ফেব্রুয়ারি ২০২২

মুসলিম বিশ্বের নেতৃত্বের মাঝে কেউই ভারতের সাথে শত্রুতা চাইছে না। আর বিজেপি সরকারের কাছে এটা অজানা নয় যে, সেকুলার চিন্তার অনুসারী হওয়ায় কোন মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশই ভারতের মুসলিম সংখ্যালঘুদের পক্ষে দাঁড়াবে না। এমতাবস্থায় ভারতের মুসলিমদের জন্যে মুসকান খানের মতো বলিষ্ঠ প্রতিবাদই যেন একমাত্র আশা; আর বাকি মুসলিম বিশ্বের রাজনৈতিক ও সামরিক নেতৃত্বের জন্যে লজ্জা। এই ঘটনাগুলি মুসলিম বিশ্বের জনগণের মাঝে নেতৃত্বের হাহাকারকে প্রবলতর করবে এবং পরিবর্তনের আকাংক্ষাকে আরও গভীরতা দেবে।


ভারতের দক্ষিণের কর্ণাটক রাজ্যে হিযাব নিয়ে বিতর্ক এখন শুধু ভারতের মাঝে সীমাবদ্ধ নেই। সোশাল মিডিয়ার বদৌলতে আন্তর্জাতিক সীমানা পার হবার কারণে এর ভূরাজনৈতিক গুরুত্ব যথেষ্ট। বিষয়টা মাত্র কিছুদিন হলো মিডিয়াতে আসলেও এর সূত্রপাত হয়েছে আরও আগেই। ২০২১এর ডিসেম্বরে কর্ণাটকের উদুপিতে একটা কলেজে ছয়জন মুসলিম ছাত্রীকে ক্লাসে ঢোকার আগে তাদের মাথার হিযাব খুলে ফেলতে বলা হয়। কলেজ কর্তৃপক্ষ বলে যে, ছাত্রীরা কলেজ ক্যাম্পাসে হিযাব পড়তে পারবে; তবে ক্লাসরুমে নয়। কলেজের প্রিন্সিপাল বলেন যে, শিক্ষকের জন্যে ছাত্রীদের চেহারা দেখতে পারাটা গুরুত্বপূর্ণ; আর ছাত্রদের একজনকে যেন অপরজন থেকে আলাদা করে না দেখা হয়, সেজন্য কলেজ ইউনিফর্ম রয়েছে। ছাত্রীরা হিযাবের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে। এরপর ৪ঠা জানুয়ারি উগ্র ডানপন্থী হিন্দু গ্রুপগুলির সমর্থনে কিছু হিন্দু ছাত্র গেরুয়া রঙের শাল পড়ে একই রাজ্যের কোপ্পাতে পাল্টা প্রতিবাদ শুরু করে। তাদের দাবি ছিল যে, যদি মুসলিম মেয়েদেরকে হিযাব পড়তে দেয়া হয়, তাহলে তাদেরকেও ক্লাসরুমে গেরুয়া শাল পড়তে দেয়া হোক। পরদিন ম্যাঙ্গালোরের ‘পম্পেই কলেজ’এও হিন্দু শিক্ষার্থীরা একই রকমের প্রতিবাদ শুরু করে।

এরপর ১৪ই জানুয়ারি উদুপি কলেজের মুসলিম ছাত্রীদেরকে হিযাব পড়ার কারণে ক্লাসে ঢুকতে বারণ করা হয়। ৩রা ফেরুয়ারি কুন্ডাপুর সরকারি কলেজের ছাত্রীরা তাদের মুখের উপরে গেট বন্ধ করে দেয়ার পর তারা কর্তৃপক্ষকে ক্লাস করতে দেয়ার অনুরোধ জানায়। পরদিন মহীশূরে উদুপি এবং ম্যাঙ্গালোরের ছাত্রীদের সমর্থন জানিয়ে প্রতিবাদ শুরু হয়। ৭ই ফেব্রুয়ারি ভারতের নিম্নবর্ণের দলিত শ্রেণীর হিন্দুরা মুসলিম মেয়েদের হিযাব পড়ার পক্ষে প্রতিবাদ করে। এই সময়েই গেরুয়া পরিহিত উগ্রবাদী হিন্দুদের সাথে হিযাবের সমর্থনে মুসলিমদের দ্বন্দ্বের মাঝেই মান্দিয়া জেলায় একজন হিযাব পরিহিত মুসলিম তরুণী কলেজের বাইরে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি দেয়া হিন্দু ছাত্রদের দ্বারা উত্তক্ত হবার মুহুর্তে হাত উঁচিয়ে ‘আল্লাহু আকবার’ বলে চিৎকার করে উঠলে সেই ঘটনার ভিডিও সারা দুনিয়াব্যাপী সোশাল মিডিয়াতে ভাইরাল হয়ে যায়। মেয়েটির একা হিন্দুদের বড় একটা গ্রুপের সামনে দাঁড়িয়ে শক্ত অবস্থান নেয়া সকলেই অবাক করে। এই সাহসী প্রতিবাদের পর মুসকান খান নামের মেয়েটি হিযাবের পক্ষে আন্দোলনে প্রধান অনুপ্রেরণা হয়ে দাঁড়ায়।

কর্ণাটনের উত্তেজনা ইতোমধ্যেই খুব দ্রুতই সারা ভারতে ছড়িয়ে পড়েছে। ‘বিবিসি’ বলছে যে, কোলকাতা, চেন্নাই এবং হায়দ্রাবাদে শতশত মানুষ কর্ণাটকের হিযাবের উপর নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছে। বিভিন্ন স্থানে হিন্দু মুসলিমদের মাঝে ঢিল নিক্ষেপ এবং অগ্নিসংযোগের খবরও পাওয়া গেছে। শিভামজ্ঞা জেলায় কিছু হিন্দু ছাত্র নিজেরদের কলেজে গেরুয়া পতাকাও উত্তোলন করে। কর্ণাটকের শিক্ষামন্ত্রী নাগেশ বিসি বলছেন যে, হিযাবের পক্ষে এই অন্দোলন পুরোপুরিভাবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত। তিনি এই অন্দোলনের পিছনে ‘পপুলার ফ্রন্ট অব ইন্ডিয়া’র ইন্ধন রয়েছে বলে অভিযোগ করেন।

১১ই ফেব্রুয়ারি কর্ণাটকের হাই কোর্ট ৫টা নির্দেশনা দেয়। প্রথমতঃ সেকুলার রাষ্ট্র হিসেবে ভারতে যেকোন ধর্মের সম্প্রদায়ের ধর্ম পালনের অধিকার রয়েছে। তবে ক্লাসরুমে হিযাব পড়ার ব্যাপারে ইসলামের নির্দেশনা রয়েছে কিনা এবং সেটা ভারতের সংবিধানে কতটা অনুমতি দিয়েছে, সেটা আরও গভীরভাবে খতিয়ে দেখতে হবে। দ্বিতীয়তঃ সবগুলি পিটিশনের রায় না হওয়া পর্যন্ত ছাত্রদেরকে ক্লাসরুমে হিযাব বা গেরুয়া শাল পড়তে বারণ করা হয়েছে। তৃতীয়তঃ এই নির্দেশনা শুধুমাত্র ঐসব কলেজের জন্যে, যেখানে ড্রেস কোড দেয়া রয়েছে। চতুর্থতঃ ধর্মের নামে কাউকেই বিশৃংখলা সৃষ্টি করতে দেয়া যাবে না। পঞ্চমতঃ আন্দোলন এবং প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার চাইতে ছাত্ররা যদি ক্লাসে ফিরে যায়, সেটাই হবে তাদের জন্যে মঙ্গল। ইউনিফর্মের ব্যাপারে আদালতের সিদ্ধান্তের মাত্র ছয়দিন আগে ৫ই ফেব্রুয়ারি কর্ণাটকের রাজ্যসরকার এক আদেশের মাধ্যমে রাজ্যের সকল স্কুল কলেজে ইউনিফর্ম পড়া বাধ্যতামূলক করে। ‘ডেকান হেরাল্ড’ বলছে যে, এর একদিন আগেই রাজ্যসরকার বলেছিল যে, তারা হিযাব এবং গেরুয়া কোনটারই পক্ষে নয়। রাজ্যসরকারের কর্মকর্তারা বলছে যে, যারা কলেজে হাজিরা দেবে না, তাদেরকে পরীক্ষা দিতে দেয়া হবে না। রাজ্যসরকারের এই নির্দেশের বৈধতার ব্যাপারে নির্দেশনা চেয়ে আদালতে পিটিশন করা হয়েছে।

ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় হলেও কর্ণাটকের ঘটনা নিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে বিবৃতি দিয়েছেন অনেকে। পাকিস্তান সরকার ইসলামাবাদে ভারতের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাকিস্তান সরকারের উদ্বিগ্নতার কথা জানিয়েছে। ৮ই ফেব্রুয়ারি নোবেল পুরষ্কার জয়ী মালালা ইউসুফজাই এক বিবৃতিতে আপাতদৃষ্টে হিযাব আন্দোলনের পক্ষে কথা বললেও, তিনি উল্লেখ করেন যে, মহিলাদের কম কাপড় বা বেশি কাপড় পড়ার ব্যাপারে বিতর্কের পক্ষপাতি নন। অর্থাৎ তিনি হিযাব পড়া বা না পড়ার আলোচনার সমর্থক নন। ১১ই ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ‘অফিস অব ইন্টারন্যাশনাল রিলিজিয়াস ফ্রিডম’এর দূত রাশাদ হুসাইন এক টুইটার বার্তায় কর্ণাটক রাজ্যসরকারের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বলেন যে, কর্ণাটক রাজ্যের ধর্মীয় কাপড়চোপড়ের ব্যাপারে নির্দেশনা দেয়া উচিৎ নয়। এতে ছাত্রীদের ধর্মীয় অধিকার খন্ডিত হচ্ছে। পরদিন ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী সাংবাদিকদের বলেন যে, ভারতের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে অন্য দেশের মন্তব্য করা উচিৎ নয়।

ক্ষমতাসীন বিজেপির নেতা অমিত মালভিয়া ভারতীয় সংবাদ সংস্থা ‘এএনআই’কে বলেন যে, ইরান এবং তুরস্কতে যেখানে হিযাবের বিরুদ্ধে আন্দোলন চলছে, সেখানে ভারতে মেয়েদেরকে হিযাবের পিছনে লুকানো হচ্ছে। ২০১৮ সালে কেরালা হাই কোর্ট রায় দিয়েছিল যে, স্কুলের কর্তৃপক্ষই সিদ্ধান্ত নেবে কি ইউনিফর্ম পড়তে হবে। ২০১৯ সালে কেরালাতেই একটা মুসলিম শিক্ষা সংস্থা হিযাব পড়া নিষিদ্ধ করেছিল। বিজেপির সমালোচনাকারী কংগ্রেসের কেরালার এমপি হিসেবে রাহুল গান্ধীর তো এগুলি জানা থাকার কথা। তিনি বলেন যে, হিযাবের কথা বলে মুসলিম মেয়েদেরকে সমাজ থেকে আলাদা করে ফেলা হচ্ছে। ১০ই ফেব্রুয়ারি ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উত্তর প্রদেশে এক নির্বাচনী ভাষণে বলেন যে, তার সরকার তিন তালাকের নিয়ম বাতিল করে মুসলিম মহিলাদের মুক্ত করেছে।

‘সিএনএন’ বলছে যে, অনেক মুসলিম মহিলার কাছেই হিযাব বিশ্বাসের একটা অংশ। অপরদিকে অনেক পশ্চিমা দেশেই হিযাব বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। ভারতে প্রকাশ্যে হিযাব পড়ার উপর কোন নিষেধাজ্ঞা নেই, যা পশ্চিমা কিছু দেশে আরোপ করা হয়েছে। তবে কর্ণাটকে হিযাব নিষিদ্ধ করার গভীরতা অনেক। কর্ণাটকের বিজেপি সরকার ইতোমধ্যেই মুসলিমদের কুরবানির জন্যে পশু বেচা এবং জবাই করা নিষিদ্ধ করেছে। সেখানে হিন্দু ধর্ম থেকে মুসলিম বা খ্রিস্টান হওয়াটাও অনেক কঠিন করে দেয়া হয়েছে। তদুপরি প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে যে, আগামী বছর সেখানে রাজ্যসভার নির্বাচনের আগে আগে সহিংসতা আরও বাড়তে পারে।

ভারতে হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দেশটাতে ধর্মীয় সংখ্যালঘু, বিশেষ করে মুসলিমদের উপর অত্যাচার বেড়েছে। একইসাথে বেড়েছে ভারতের অভ্যন্তরীণ বিভাজন। চীনের বিরুদ্ধে কৌশলগত মিত্র হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ভারতের গুরুত্ব যথেষ্ট; যেকারণে ভারতের উপর সাম্প্রদায়িক অসম্প্রীতির কথা বলে চাপ সৃষ্টি করে ওয়াশিংটন দিল্লীর সাথে সম্পর্ক খারাপ করতে চায় না। অপরদিকে মুসলিম বিশ্বের নেতৃত্বের মাঝে কেউই ভারতের সাথে শত্রুতা চাইছে না। আর বিজেপি সরকারের কাছে এটা অজানা নয় যে, সেকুলার চিন্তার অনুসারী হওয়ায় কোন মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশই ভারতের মুসলিম সংখ্যালঘুদের পক্ষে দাঁড়াবে না। এমতাবস্থায় ভারতের মুসলিমদের জন্যে মুসকান খানের মতো বলিষ্ঠ প্রতিবাদই যেন একমাত্র আশা; আর বাকি মুসলিম বিশ্বের রাজনৈতিক ও সামরিক নেতৃত্বের জন্যে লজ্জা। এই ঘটনাগুলি মুসলিম বিশ্বের জনগণের মাঝে নেতৃত্বের হাহাকারকে প্রবলতর করবে এবং পরিবর্তনের আকাংক্ষাকে আরও গভীরতা দেবে।

8 comments:

  1. একদম কথাই বলেছেন,

    ১,মুসলিমদের নেতৃত্ব দেওয়ার মত কোনো দেশ নেই। কারন স্পষ্ট, প্রায় সব দেশই পশ্চিমা শক্তিদের ভেসাল স্টেট বা সেকুলার ডেমোক্রেসি মেনে চলে ; তাদের নেতৃত্ব দেওয়ার যতটা না ইচ্ছা আছে, তার বেশি বলতে গেলে তাদের কোনো যোগ্যতাই নাই।
    যতদিন এই সব নেশন স্টেট থাকবে ততদিন তো কোনো আশাই নাই। অর্থাৎ, যতদিন পশিমা বিশ্বব্যবস্থা কায়েম থাকবে, আর যদি কোনো আদর্শভিত্তিক ইসলামী শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা হবে না/ না হয়, ততদিন কোনো আশা নেই।

    ২,বিশ্বমোড়ল ইউএস তাদের আদর্শ জলাঞ্জলি দিয়েছে, তার অবস্থান খুব দুর্বল হয়ে পড়েছে। নিজের 'সুপারপাওয়ার ' স্টেটাস মেন্টেন করতে চিনের সাথে পাল্লা দিতে গিয়ে ইন্ডিয়াকে প্রয়োজন । তাই ইন্ডিয়ান রেজিম যা খুশি তাই করুক তাদের কোনো কিচ্ছু আসেনা।

    ৩, ইন্ডিয়া এই ইন্টারনাল ডিভিশনের সুযোগ, চিন নিশ্চই নিবে। আইওআর এ নিজের উপস্থিতি বাড়াবে, যেখানে তারা বাংলাদেশকে সাথে নিতে চাইবে৷

    ৪, "সেকুলার ডেমোক্রেসি " ইন্ডিয়ার বর্তমান রেজিম আগাগোড়াই মুস্লিম বিদ্বেষী। তারা চাইবে, হিন্দু রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা করতে,যেহেতু তারা এরথেকে আর ভালো সুযোগ আর পাবে না। কারন,
    পশ্চিমা বিশ্বব্যবস্থা (পড়ুন- বিশ্বঅব্যবস্থা) ভেঙে পড়ার দিকে।

    ধন্যবাদ ।

    ReplyDelete
    Replies
    1. মিয়ানমারের ব্যাপারটাও এরমকমই। মুসলিমরা দুনিয়াতে শক্তিশালী নেতৃত্বের অধীনে থাকলে কারুর সাহস হতো না রোহিঙ্গা মুসলিমদের গায়ে হাত দেয়ার; আর তখন শরণার্থী সমস্যাও তৈরি হতো না। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলিতে মার্কিন হামলা হলো আর মুসলিম নেতৃত্ব তাদেরকে সহায়তা দিয়ে গেলো! কি অদ্ভূত! ইস্রাইলের মতো ক্ষুদ্র একটা দেশ প্রতি নিয়ত মুসলিম মেরে যাচ্ছে; এদেরকে থামিয়ে জেরুজালেম পুনরুদ্ধার তো বহুদূরের কথা, তারা ইস্রাইলকে বন্ধু ভেবে তাদের সাথে চুক্তি করছে। সারা বিশ্বে এখন মুসলিমরাই সবচাইতে বড় শরণার্থী গ্রুপ। এগুলি বর্তমান বিশ্বঅব্যবস্থারই উদাহরণ। অব্যবস্থাই পরিবর্তন ডেকে নিয়ে আসে। সেটাই স্বাভাবিক।

      Delete
    2. ঠিকই বলেছেন। এখানে রোহিঙ্গাদের নিয়ে কোনো মুসলিম রাষ্ট্রগুলি কিছু করেনি। বাংলাদেশ সরকারও কিছু করতে পারেনি৷ উইঘুরদের ব্যাপারে তাই হচ্ছে ।

      Delete
  2. অনেক দেশই মনে করছে যে, এখনই এই বিশ্বব্যবস্থা ধংস হবে না বরং মাল্টিপোলার বিশ্বব্যবস্থার উৎপত্তি হবে। আবার কেউ কেউ মনে করছে, বাই পোলার অর্ডারের সৃষ্টি হয়েছে কিন্তু স্টেবিলিটি আসেনি, ২০৩০ সাল নাগাদ আসবে৷
    আপনি কি মনে করেন?

    ReplyDelete
    Replies
    1. বিশ্বব্যবস্থা নিয়ে কে কতটুকু নিশ্চিত, তা তাদের একেকজনের কৌশলপত্র বা শ্বেতপত্র বা যেকোন নীতিপত্র দেখলেই বুঝতে পারবেন। সকলেই মোটামুটিভাবে এক সুরে তাদের লেখা শুরু করে; আর তা হলো, ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চিত। আর যেহেতু তারা সকলেই মনে করছে যে, ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত, তাই ভবিষ্যতে কি ধরনের ব্যবস্থা থাকবে, সেসম্পর্কে কোন মন্তব্য কতটা শক্ত ভিতের উপরে, সেটা যে কারুর পক্ষে অনুমেয়। মোটকথা, তারা কেউই এখন ভবিষ্যতে এমন কিছু দেখতে পাচ্ছে না, যা কিনা তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

      Delete
  3. আচ্ছা, ভবিষ্যত কেমন হবে এই ব্যবস্থা ভেঙে যাবে কি যাবে না নির্ভর করছে মূলত অর্থনৈতিক সিস্টেমের উপর৷
    তাই বলা যায় যদি অর্থনৈতিক সিস্টেম ভেঙে পড়ে তবে এই ব্যবস্থাটাই পুরোপুরি ভেঙে যাবে।

    তাই অনুরোধ করব, অর্থনৈতিক সিস্টেম যে ভেঙে পড়ছে / পড়েছে, নাকি ভেঙে পড়বে না, এই বিষয়ে বিস্তারিত আর্টিকেল লিখতে। ধন্যবাদ।

    ReplyDelete
    Replies
    1. প্রথম কথা হলো, অর্থনীতি রাজনীতিকে নিয়ন্ত্রণ করে না; রাজনীতি অর্থনীতিকে নিয়ন্ত্রণ করে। রাজনৈতিক চিন্তা হলো সবগুলি চিন্তার উপরে।

      দ্বিতীয়তাঃ বিশ্বব্যবস্থা এখন অব্যবস্থা। অর্থাৎ এখন কোন সিস্টেমে দুনিয়া চলছে না। সকল সাম্প্রতিক ঘটনা সেদিকেই ইঙ্গিত দেয়।

      তৃতীয়তাঃ অর্থনৈতিক ব্যবস্থা নিয়ে এখানে অনেকগুলি লেখা রয়েছে। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা, আইএমএফ ও ওয়ার্ল্ড ব্যাংক, ডলার ছাপানোর নীতি, করোনার মাঝে অর্থনৈতিক প্রণোদনা, ভ্যাকসিনের অর্থনীতি, ইত্যাদি অনেক বিষয়ে যথেষ্ট আলোচনা করা হয়েছে। দয়া করে একটু কষ্ট করে পড়ে নেবেন।

      Delete
    2. অসংখ্য ধন্যবাদ।

      Delete