২৯শে নভেম্বর ২০১৬
ডিফেন্স কনট্রাকটর কারা?
ইস্রাইলের মেরকাভা (Merkava) ট্যাঙ্কের বিভিন্ন কম্পোনেন্ট-এর সাপ্লাইয়ারের নাম আমরা কতটুকু জানি? অথবা জিজ্ঞেস করার মতো চিন্তা কতজন করি? আমরা যতটুকু জানি সেটা হলো ইস্রাইল মেরকাভা ট্যাঙ্ক তৈরি করে। কিন্তু একটা ট্যাঙ্ক তো আর এমনি এমনি কেউ তৈরি করে ফেলতে পারবে না। এর বিভিন্ন কম্পোনেন্ট তৈরিতে বিভিন্ন ব্যাপারে এক্সপার্ট হতে হবে। যেমন যে ট্যাঙ্কের কামান তৈরি করবে, সে ইলেকট্রনিক্স বা ইঞ্জিন বা ট্র্যাক তৈরি করবে না। এই ট্যাঙ্কের কমিউনিকেশন যন্ত্রপাতির encryption-এর সাপ্লাইয়ার হলো Motorola, যাকে আমরা মোবাইল হ্যান্ডসেট কোম্পানি বলে চিনি। এর ব্যালিস্টিক প্রোটেকশনের জন্যে যেসব জিনিস লাগছে, সেগুলি আসছে কেমিক্যাল কোম্পানি DuPont-এর কাছ থেকে। Caterpillar-কে আমরা চিনি কন্সট্রাকশন যন্ত্রপাতি তৈরি করার কোম্পানি হিসেবে; এরা সাহায্য করেছে ট্যাঙ্কটির ট্র্যাক ডিজাইন করতে। কাজেই এখন Motorola, DuPont আর Caterpillar-কে আপনি কি ধরনের কোম্পানি হিসেবে দেখবেন? এরা যে সকলেই ডিফেন্স কনট্রাকটর হিসেবে কাজ করছে এটা কি আমরা এখন বুঝতে পারছি?
ভারতীয় কর্পোরেট হাউস, নাকি ডিফেন্স কনট্রাকটর?
এবার দেশের কাছাকাছি কিছু উদাহরণ দেয়া যাক। মেরকাভা ট্যাঙ্কের ব্যালিস্টিক কম্পিউটার এবং ফায়ার কন্ট্রোল সিস্টেম তৈরি করেছে ইস্রাইলের Elbit Systems Ltd, যারা কিনা মূলত ডিফেন্স-এর কনট্রাকটর। এই একই কোম্পানি ভারতের অর্জুন ট্যাঙ্কের Laser Warning Control System (LWCS) তৈরি করতে সাহায্য করেছে। এই একই ট্যাঙ্কের ইঞ্জিনটি এখন ডেভেলপ করছে ভারতের কয়েকটি কোম্পানি মিলে। এর মাঝে রয়েছে মহারাষ্ট্রের পুনের Kirloskar Group, যারা পাম্প, ইঞ্জিন, মোটর, ট্রান্সফরমার, জেনারেটর, কমপ্রেসার, CNC Lathe, মোটরগাড়ি, ইত্যাদি তৈরি করে। ১৯৮৮ সালে এই গ্রুপের ১০০তম জন্মদিনে ভারতের রাষ্ট্রীয় ডাকটিকেট উন্মোচন করা হয়। এতে বোঝা যাচ্ছে যে সেই রাষ্ট্রের কাছে এই কোম্পানিটি শুধু একটি প্রাইভেট কোম্পানি নয়; অন্য কিছু। কোম্পানিটির ইঞ্জিন তৈরি করার সাবসিডিয়ারি ৩ হর্সপাওয়ারের পানির পাম্পের ইঞ্জিন থেকে শুধু করে ১১ হাজার হর্সপাওয়ারের ইলেকট্রিক পাওয়ার জেনারেশন ইঞ্জিন তৈরি করে। এরা ভারতে Toyota গাড়ি তৈরি করে। বর্তমানে কোম্পানিটি আমেরিকার Cummins-এর সাথে একত্রে অর্জুন ট্যাঙ্কের ইঞ্জিন ডেভেলপ করছে; সাথে অন্যান্যদের সহায়তাও রয়েছে। এখন Kirloskar Group-কে আমরা কি কোম্পানি বলবো? পানির পাম্প বা ইলেকট্রিক ট্রান্সফরমার তৈরি করা কোম্পানি, নাকি ডিফেন্স কনট্রাকটর?
এরকম বহু উদাহরণ রয়েছে ভারতে এবং বাকি বিশ্বে। ভারতের প্রাইভেট ডিফেন্স কনট্রাকটরদের মাঝে রয়েছে Tata, Mahindra, Reliance, Hinduja, Larsen & Toubro, Godrej ইত্যাদি। Tata Advanced Systems Limited নামে কোম্পানিটি আমেরিকার Sikorsky Aircraft Corporation-এর সাথে জয়েন্ট ভেঞ্চারে Sikorsky S-92 হেলিকপ্টার তৈরি করছে। Israel Aircraft Industries-এর সাথে একত্রে তারা ড্রোন তৈরি করছে। হিন্দুজা গ্রুপের Ashok Leyland Defence Systems ভারতীয় সেনাবাহিনীর বেশিরভাগ ট্রাক তৈরি করেছে। মাহিন্দ্রা সেনাবাহিনীর জন্যে গাড়ি তৈরি করে। মাহিন্দ্রার সাথে Airbus Helicopters-এর চুক্তি হয়েছে সামরিক হেলিকপ্টার তৈরি করার জন্যে। Reliance Defence and Engineering Limited ভারতের নৌবাহিনীর জন্যে যুদ্ধজাহাজ তৈরি করছে। Godrej Aerospace ভারতের স্যাটেলাইট লঞ্চ ভেভিকেলের জন্যে ইঞ্জিন তৈরি করছে, BrahMos মিসাইল তৈরি করছে; যুক্তরাষ্ট্রের GE, Honeywell, যুক্তরাজ্যের Rolls-Royce এবং ইস্রাইলের Rafael-এর জন্যে বিভিন্ন কম্পোনেন্ট তৈরি করছে। Larsen & Toubro ভারতীয় সামরিক বাহিনীর জন্যে রাডার, মিসাইল, রকেট, নেভাল টর্পেডো, সাবমেরিন হাল, সোনার, ইত্যাদি তৈরি করে। Prithvi-II-সহ ভারতের অনেক স্ট্র্যাটেজিক মিসাইলের মোবাইল প্ল্যাটফর্ম Larsen & Toubro-এর হাতে তৈরি। এই কোম্পানিগুলিকে আমরা কি বলে চিনি? বাংলাদেশে ভেড়ামারার ৩৬০ মেগাওয়াট গ্যাস-ভিত্তিক বিদ্যুত কেন্দ্র এবং শিকলবাহার ২২৫ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুত কেন্দ্রের কাজ করছে Larsen & Toubro. গোদরেজ-কে আমরা চিনি চুলের কালার এবং গুডনাইট মশার ওষুধের জন্যে। টাটা, মাহিন্দ্রা, অশোক লেল্যান্ড আমাদের কাছে গাড়ির কোম্পানি; রিলায়েন্স হলো মোবাইল ফোন কোম্পানি। মোটকথা, আমাদের কাছে এই কোম্পানিগুলি বেসামরিক কোম্পানি, মিসাইল-রাডার-ট্যাঙ্কের ইঞ্জিন তৈরির কোম্পানি নয়। আমরা এমন অদ্ভূত শিশুসুলভ আচরণ কতোদিন করে যাবো সেটাই কি প্রশ্ন নয়?
আমরা রাষ্ট্রের জন্যে কাজ করা শুরু করবো কবে থেকে?
এর আগেই লিখেছিলাম যে আমাদের শিল্পপতিরা কিভাবে ব্লু ইকনমি গড়বেন। সামরিক-বেসামরিক বিভেদ চিন্তা এখানে আসতে দিলে রাষ্ট্র হবে ক্ষতিগ্রস্ত। রাষ্ট্রের জন্যে কাজ করাই হচ্ছে উচ্চতর কাজ; বাকি সব গৌণ। ১০০ টাকার কাজের মাঝে ১ টাকার কাজ যদি রাষ্ট্রের জন্যে করা হয়, তার মানে হলো সেই কোম্পানিকে রাষ্ট্র বিশ্বাস করে। ওই ১% কাজই সেই কোম্পানিকে রাষ্ট্রের অংশ বানিয়ে ফেলে। আর সেটাই হয়ে যায় তার মার্কেটিং-এর সবচাইতে বড় অস্ত্র – “আমরা রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে থাকি”। তার আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয় না। ডিফেন্স কনট্রাকটর হওয়াটা রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ কাজের অংশ। চিপস-এর প্যাকেট, আন্ডারওয়্যার, বিউটি সাবান অনেক তৈরি হয়েছে; এবার রাষ্ট্রের জন্যে কাজ করার পালা। বাংলাদেশ এখন আর বিশ্বব্যাংকের সংজ্ঞায় পড়ছে না; যেকারণে শুধু দিল্লীতে নয়, আটলান্টিকের ওপাড়েও ক্রাইসিস চলছে। এই রাষ্ট্র এখন বিশ্বকে আগের মতো দেখছে না – আমাদের কর্পোরেটদের এই ব্যাপারটাকে শুধু অনুধাবন করা নয়, কাজে প্রমাণ করার সময় এসেছে। যারা এসময় গালে হাত দিয়ে বসে থাকবেন, তাদের একসময় বিরাট আফসোসের মাঝে পড়তে হবে। মনে রাখতে হবে – সময় ফেরত আসে না।
Motorola-কে আমরা মোবাইল হ্যান্ডসেট কোম্পানি বলে চিনি। কিন্তু তারা যে ডিফেন্স সাপ্লাইয়ার, সেটা আমরা কতজন জানি? |
ডিফেন্স কনট্রাকটর কারা?
ইস্রাইলের মেরকাভা (Merkava) ট্যাঙ্কের বিভিন্ন কম্পোনেন্ট-এর সাপ্লাইয়ারের নাম আমরা কতটুকু জানি? অথবা জিজ্ঞেস করার মতো চিন্তা কতজন করি? আমরা যতটুকু জানি সেটা হলো ইস্রাইল মেরকাভা ট্যাঙ্ক তৈরি করে। কিন্তু একটা ট্যাঙ্ক তো আর এমনি এমনি কেউ তৈরি করে ফেলতে পারবে না। এর বিভিন্ন কম্পোনেন্ট তৈরিতে বিভিন্ন ব্যাপারে এক্সপার্ট হতে হবে। যেমন যে ট্যাঙ্কের কামান তৈরি করবে, সে ইলেকট্রনিক্স বা ইঞ্জিন বা ট্র্যাক তৈরি করবে না। এই ট্যাঙ্কের কমিউনিকেশন যন্ত্রপাতির encryption-এর সাপ্লাইয়ার হলো Motorola, যাকে আমরা মোবাইল হ্যান্ডসেট কোম্পানি বলে চিনি। এর ব্যালিস্টিক প্রোটেকশনের জন্যে যেসব জিনিস লাগছে, সেগুলি আসছে কেমিক্যাল কোম্পানি DuPont-এর কাছ থেকে। Caterpillar-কে আমরা চিনি কন্সট্রাকশন যন্ত্রপাতি তৈরি করার কোম্পানি হিসেবে; এরা সাহায্য করেছে ট্যাঙ্কটির ট্র্যাক ডিজাইন করতে। কাজেই এখন Motorola, DuPont আর Caterpillar-কে আপনি কি ধরনের কোম্পানি হিসেবে দেখবেন? এরা যে সকলেই ডিফেন্স কনট্রাকটর হিসেবে কাজ করছে এটা কি আমরা এখন বুঝতে পারছি?
মাহিন্দ্রা আমাদের কাছে গাড়ির কোম্পানি।মাহিন্দ্রা সেনাবাহিনীর জন্যে গাড়ি তৈরি করে। মাহিন্দ্রার সাথে Airbus Helicopters-এর চুক্তি হয়েছে সামরিক হেলিকপ্টার তৈরি করার জন্যে। |
ভারতীয় কর্পোরেট হাউস, নাকি ডিফেন্স কনট্রাকটর?
এবার দেশের কাছাকাছি কিছু উদাহরণ দেয়া যাক। মেরকাভা ট্যাঙ্কের ব্যালিস্টিক কম্পিউটার এবং ফায়ার কন্ট্রোল সিস্টেম তৈরি করেছে ইস্রাইলের Elbit Systems Ltd, যারা কিনা মূলত ডিফেন্স-এর কনট্রাকটর। এই একই কোম্পানি ভারতের অর্জুন ট্যাঙ্কের Laser Warning Control System (LWCS) তৈরি করতে সাহায্য করেছে। এই একই ট্যাঙ্কের ইঞ্জিনটি এখন ডেভেলপ করছে ভারতের কয়েকটি কোম্পানি মিলে। এর মাঝে রয়েছে মহারাষ্ট্রের পুনের Kirloskar Group, যারা পাম্প, ইঞ্জিন, মোটর, ট্রান্সফরমার, জেনারেটর, কমপ্রেসার, CNC Lathe, মোটরগাড়ি, ইত্যাদি তৈরি করে। ১৯৮৮ সালে এই গ্রুপের ১০০তম জন্মদিনে ভারতের রাষ্ট্রীয় ডাকটিকেট উন্মোচন করা হয়। এতে বোঝা যাচ্ছে যে সেই রাষ্ট্রের কাছে এই কোম্পানিটি শুধু একটি প্রাইভেট কোম্পানি নয়; অন্য কিছু। কোম্পানিটির ইঞ্জিন তৈরি করার সাবসিডিয়ারি ৩ হর্সপাওয়ারের পানির পাম্পের ইঞ্জিন থেকে শুধু করে ১১ হাজার হর্সপাওয়ারের ইলেকট্রিক পাওয়ার জেনারেশন ইঞ্জিন তৈরি করে। এরা ভারতে Toyota গাড়ি তৈরি করে। বর্তমানে কোম্পানিটি আমেরিকার Cummins-এর সাথে একত্রে অর্জুন ট্যাঙ্কের ইঞ্জিন ডেভেলপ করছে; সাথে অন্যান্যদের সহায়তাও রয়েছে। এখন Kirloskar Group-কে আমরা কি কোম্পানি বলবো? পানির পাম্প বা ইলেকট্রিক ট্রান্সফরমার তৈরি করা কোম্পানি, নাকি ডিফেন্স কনট্রাকটর?
এরকম বহু উদাহরণ রয়েছে ভারতে এবং বাকি বিশ্বে। ভারতের প্রাইভেট ডিফেন্স কনট্রাকটরদের মাঝে রয়েছে Tata, Mahindra, Reliance, Hinduja, Larsen & Toubro, Godrej ইত্যাদি। Tata Advanced Systems Limited নামে কোম্পানিটি আমেরিকার Sikorsky Aircraft Corporation-এর সাথে জয়েন্ট ভেঞ্চারে Sikorsky S-92 হেলিকপ্টার তৈরি করছে। Israel Aircraft Industries-এর সাথে একত্রে তারা ড্রোন তৈরি করছে। হিন্দুজা গ্রুপের Ashok Leyland Defence Systems ভারতীয় সেনাবাহিনীর বেশিরভাগ ট্রাক তৈরি করেছে। মাহিন্দ্রা সেনাবাহিনীর জন্যে গাড়ি তৈরি করে। মাহিন্দ্রার সাথে Airbus Helicopters-এর চুক্তি হয়েছে সামরিক হেলিকপ্টার তৈরি করার জন্যে। Reliance Defence and Engineering Limited ভারতের নৌবাহিনীর জন্যে যুদ্ধজাহাজ তৈরি করছে। Godrej Aerospace ভারতের স্যাটেলাইট লঞ্চ ভেভিকেলের জন্যে ইঞ্জিন তৈরি করছে, BrahMos মিসাইল তৈরি করছে; যুক্তরাষ্ট্রের GE, Honeywell, যুক্তরাজ্যের Rolls-Royce এবং ইস্রাইলের Rafael-এর জন্যে বিভিন্ন কম্পোনেন্ট তৈরি করছে। Larsen & Toubro ভারতীয় সামরিক বাহিনীর জন্যে রাডার, মিসাইল, রকেট, নেভাল টর্পেডো, সাবমেরিন হাল, সোনার, ইত্যাদি তৈরি করে। Prithvi-II-সহ ভারতের অনেক স্ট্র্যাটেজিক মিসাইলের মোবাইল প্ল্যাটফর্ম Larsen & Toubro-এর হাতে তৈরি। এই কোম্পানিগুলিকে আমরা কি বলে চিনি? বাংলাদেশে ভেড়ামারার ৩৬০ মেগাওয়াট গ্যাস-ভিত্তিক বিদ্যুত কেন্দ্র এবং শিকলবাহার ২২৫ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুত কেন্দ্রের কাজ করছে Larsen & Toubro. গোদরেজ-কে আমরা চিনি চুলের কালার এবং গুডনাইট মশার ওষুধের জন্যে। টাটা, মাহিন্দ্রা, অশোক লেল্যান্ড আমাদের কাছে গাড়ির কোম্পানি; রিলায়েন্স হলো মোবাইল ফোন কোম্পানি। মোটকথা, আমাদের কাছে এই কোম্পানিগুলি বেসামরিক কোম্পানি, মিসাইল-রাডার-ট্যাঙ্কের ইঞ্জিন তৈরির কোম্পানি নয়। আমরা এমন অদ্ভূত শিশুসুলভ আচরণ কতোদিন করে যাবো সেটাই কি প্রশ্ন নয়?
Caterpillar-কে আমরা চিনি কন্সট্রাকশন যন্ত্রপাতি তৈরি করার কোম্পানি হিসেবে; এরা সাহায্য করেছে ইস্রাইলের মেরকাভা ট্যাঙ্কের ট্র্যাক ডিজাইন করতে। তাদের তৈরি ইঞ্জিন বহু সামরিক ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। |
আমরা রাষ্ট্রের জন্যে কাজ করা শুরু করবো কবে থেকে?
এর আগেই লিখেছিলাম যে আমাদের শিল্পপতিরা কিভাবে ব্লু ইকনমি গড়বেন। সামরিক-বেসামরিক বিভেদ চিন্তা এখানে আসতে দিলে রাষ্ট্র হবে ক্ষতিগ্রস্ত। রাষ্ট্রের জন্যে কাজ করাই হচ্ছে উচ্চতর কাজ; বাকি সব গৌণ। ১০০ টাকার কাজের মাঝে ১ টাকার কাজ যদি রাষ্ট্রের জন্যে করা হয়, তার মানে হলো সেই কোম্পানিকে রাষ্ট্র বিশ্বাস করে। ওই ১% কাজই সেই কোম্পানিকে রাষ্ট্রের অংশ বানিয়ে ফেলে। আর সেটাই হয়ে যায় তার মার্কেটিং-এর সবচাইতে বড় অস্ত্র – “আমরা রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে থাকি”। তার আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয় না। ডিফেন্স কনট্রাকটর হওয়াটা রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ কাজের অংশ। চিপস-এর প্যাকেট, আন্ডারওয়্যার, বিউটি সাবান অনেক তৈরি হয়েছে; এবার রাষ্ট্রের জন্যে কাজ করার পালা। বাংলাদেশ এখন আর বিশ্বব্যাংকের সংজ্ঞায় পড়ছে না; যেকারণে শুধু দিল্লীতে নয়, আটলান্টিকের ওপাড়েও ক্রাইসিস চলছে। এই রাষ্ট্র এখন বিশ্বকে আগের মতো দেখছে না – আমাদের কর্পোরেটদের এই ব্যাপারটাকে শুধু অনুধাবন করা নয়, কাজে প্রমাণ করার সময় এসেছে। যারা এসময় গালে হাত দিয়ে বসে থাকবেন, তাদের একসময় বিরাট আফসোসের মাঝে পড়তে হবে। মনে রাখতে হবে – সময় ফেরত আসে না।
No comments:
Post a Comment