২২শে নভেম্বর ২০১৬
বাংলাদেশের সামরিক বাজেট নিয়ে কম বিতর্ক দেখিনি আমরা। সবসময়েই বিতর্কের নেতৃত্ব দিয়েছে বিদেশী অর্থে লালিত এনজিও-গুলি এবং তাদের মুখপাত্র কিছু আদর্শিক পত্রিকা। কিন্তু এই সামরিক বাজেট আসলে কি? বেসামরিক বাজেটই বা কি? সামরিক বাজেটকে বুঝতে হলে বুঝতে হবে যে বেসামরিক বাজেটটা আসলে কি। এর আগে সামরিক-বেসামরিক আলাদা করার লাইনের কৃত্রিমতা নিয়ে লিখেছিলাম। আবার এরও আগে লিখেছিলাম যে রাষ্ট্রের নিরাপত্তা শুধু সামরিক কোন বিষয় নয়। আসলে সামরিক-বেসামরিক বিভেদ তৈরি করে সেটাকে জিইয়ে রাখার একটা উতকৃষ্ট পদ্ধতি হলো আলাদা করে সামরিক বাজেট ঘোষণা করে সেটিকে ইস্যু হিসেবে সামনে নিয়ে আসা। বেসামরিক জনগণের মাঝে একটা চিন্তার সূত্রপাত ঘটানো যে সামরিক বাজেট সব টাকা খেয়ে ফেলছে। দেশের সকল মানুষের হক খেয়ে ফেলছে সামরিক বাজেট। এভাবে দেশের মানুষকে দিয়েই দেশের নিজ নিরাপত্তার বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেয়া হয়। অর্থাৎ দেশের জনগণ নিজেরাই নিজেদের প্রতিরক্ষা দুর্বল করে ফেলতে থাকে। আর দেশের প্রতিরক্ষা দুর্বল হলে তাদেরই লাভ হয়, যারা এই দেশের প্রতিদ্বন্দ্বী।
দেশের বেসামরিক বাজেটের মাঝে যা থাকে, সেটার কি আসলে কোন সামরিক গুরুত্ব নেই? তাহলে কেন জরুরী মুহুর্তে বেসামরিক স্থাপনার নিরাপত্তা নিশ্চিতে সামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হয়? সেটা করা হয়, কারণ সেটা “বেসামরিক” হবার কারণে গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং সেটা গুরুত্বপূর্ণ কারণ সেটা “কৌশলগত” দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ। এই “কৌশলগত” ব্যাপারটাই রাষ্ট্রের নিরাপত্তার সাথে সম্পর্কিত। এভাবে অনেক ব্যাপারই রয়েছে যেগুলি কৌশলগত দিক থেকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু সেগুলিকে বলা হয় “বেসামরিক” বাজেট। যেমন –
১. যদি দেশের মানুষ অপুষ্টিতে ভোগে, তাহলে আপনি দরকারের সময়ে সামরিক বাহিনীর জন্যে রিক্রুট পাবেন কোথা থেকে? দুর্বল স্বাস্থ্যের একটা লোক তো একটা রাইফেলই তুলতে পারবে না। ১৯৭১ সালে সালে যত মানুষ যুদ্ধ করেছিল, তার বেশিরভাগই তো ছিল বেসামরিক লোক। তাহলে সেই সময়ের “সামরিক সামরিক” এবং “বেসামরিক সামরিক” লোকগুলিকে আপনি কি করে আলাদা করবেন? এরা সবাই তো অস্ত্রধারী যোদ্ধা ছিল এবং রক্ত ঝড়িয়েছে। দেশের খাদ্য এবং স্বাস্থ্যনীতি তাই দেশের নিরাপত্তার সাথে সম্পর্কিত।
৩. ষোল কোটি মানুষকে খাইয়ে-পড়িয়ে বাঁচিয়ে রাখতে যে অর্থনীতির চাকা চালিত রাখতে হবে, সেটা কাউকে বোঝাতে হবে না। এই চাকাকে সর্বদা সচল রাখতে না পারলে রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে এবং সামরিক সক্ষমতাও হ্রাস পাবে। বাণিজ্যনীতি, জ্বালানিনীতি, পরিবহণনীতি, সমুদ্রনীতি, ইত্যাদি আরও অনেক কিছুই এর মাঝে পড়ে যাবে।
৪. মূল শিল্পগুলিকে উন্নত না করলে সামরিক সক্ষমতা কখনোই তৈরি হবে না; অন্যের উপরে নির্ভরশীল থাকতে হবে। যেমন – স্টিল, এলুমিনিয়াম, কপার, ইত্যাদি মেটাল ইন্ডাস্ট্রি উন্নত করতে না পারলে সামরিক শিল্প গড়ে উঠবে না। ইলেকট্রনিক্স শিল্প, ইলেকট্রোম্যাগনেটিক্স শিল্প, পেট্রোকেমিক্যাল শিল্প, অটোমোবাইল শিল্প, জাহাজ-নির্মাণ শিল্প, এরোনটিক্যাল শিল্প, মহাকাশ শিল্প, অবকাঠামোগত শিল্প, ইত্যাদি গড়ে না উঠলে সামরিক সক্ষমতা তৈরি হবে না কখনোই। শিল্পনীতি তাই দেশের নিরাপত্তার জন্যে ততটাই গুরুত্বপূর্ণ।
উপরে যে কথাগুলি আলোচনা করেছি, সেগুলি সর্বদাই দেশের শত্রুর জন্যে টার্গেট থাকবে। এর আগে সবিস্তারে লিখেছি যে একটা দেশকে কিভাবে দুর্বল করা হয়। সেখানে বলেছিলাম যে আদর্শিক আক্রমণে কিভাবে একটি দেশকে দুর্বল করে ফেলা হয়। এখানে যেগুলি লিখেছিল সেগুলি একটা দেশের material power-এর সাথে সম্পর্কিত। এগুলি ঠিকমতো পরিচালনা করতে না পারলে রাষ্ট্র দুর্বল থাকবে।
একটা দেশের নিরাপত্তা দরকার হয় কেন? কারণ তার কিছু একটা রক্ষা করতে হয়। সেটা কি? সেটা হচ্ছে দেশের ভিত্তি; একটা চিন্তা। সেই চিন্তাকে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে, নিরাপত্তা দেয় এবং বিশ্বে ছড়িয়ে দেয়। সেটাই হচ্ছে রাষ্ট্রের লক্ষ্য। এই লক্ষ্যে বাধা আসবেই। কারো পৌষ মাস; কারো সর্বনাশ! সেই বাধা অতিক্রম করার জন্যেই রাষ্ট্রের physical নিরাপত্তা দরকার হয়। এই নিরাপত্তার মাঝে সামরিক-বেসামরিক কোন ব্যাপার নেই। সেই ব্যাপারটা তৈরি করা মানেই রাষ্ট্রের লক্ষ্যকে আঘাত করা। নিরাপত্তা না থাকলে রাষ্ট্রের লক্ষ্য বাস্তবায়িত হবে না। আর চিন্তা না থাকলে রাষ্ট্র হবে লক্ষ্যহীন; অর্থহীন।
বাংলাদেশের সামরিক বাজেট নিয়ে কম বিতর্ক দেখিনি আমরা। সবসময়েই বিতর্কের নেতৃত্ব দিয়েছে বিদেশী অর্থে লালিত এনজিও-গুলি এবং তাদের মুখপাত্র কিছু আদর্শিক পত্রিকা। কিন্তু এই সামরিক বাজেট আসলে কি? বেসামরিক বাজেটই বা কি? সামরিক বাজেটকে বুঝতে হলে বুঝতে হবে যে বেসামরিক বাজেটটা আসলে কি। এর আগে সামরিক-বেসামরিক আলাদা করার লাইনের কৃত্রিমতা নিয়ে লিখেছিলাম। আবার এরও আগে লিখেছিলাম যে রাষ্ট্রের নিরাপত্তা শুধু সামরিক কোন বিষয় নয়। আসলে সামরিক-বেসামরিক বিভেদ তৈরি করে সেটাকে জিইয়ে রাখার একটা উতকৃষ্ট পদ্ধতি হলো আলাদা করে সামরিক বাজেট ঘোষণা করে সেটিকে ইস্যু হিসেবে সামনে নিয়ে আসা। বেসামরিক জনগণের মাঝে একটা চিন্তার সূত্রপাত ঘটানো যে সামরিক বাজেট সব টাকা খেয়ে ফেলছে। দেশের সকল মানুষের হক খেয়ে ফেলছে সামরিক বাজেট। এভাবে দেশের মানুষকে দিয়েই দেশের নিজ নিরাপত্তার বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেয়া হয়। অর্থাৎ দেশের জনগণ নিজেরাই নিজেদের প্রতিরক্ষা দুর্বল করে ফেলতে থাকে। আর দেশের প্রতিরক্ষা দুর্বল হলে তাদেরই লাভ হয়, যারা এই দেশের প্রতিদ্বন্দ্বী।
দেশের বেসামরিক বাজেটের মাঝে যা থাকে, সেটার কি আসলে কোন সামরিক গুরুত্ব নেই? তাহলে কেন জরুরী মুহুর্তে বেসামরিক স্থাপনার নিরাপত্তা নিশ্চিতে সামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হয়? সেটা করা হয়, কারণ সেটা “বেসামরিক” হবার কারণে গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং সেটা গুরুত্বপূর্ণ কারণ সেটা “কৌশলগত” দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ। এই “কৌশলগত” ব্যাপারটাই রাষ্ট্রের নিরাপত্তার সাথে সম্পর্কিত। এভাবে অনেক ব্যাপারই রয়েছে যেগুলি কৌশলগত দিক থেকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু সেগুলিকে বলা হয় “বেসামরিক” বাজেট। যেমন –
দুর্বল স্বাস্থ্যের একটা লোক তো একটা রাইফেলই তুলতে পারবে না। দেশের খাদ্য এবং স্বাস্থ্যনীতি তাই দেশের নিরাপত্তার সাথে সম্পর্কিত। |
১. যদি দেশের মানুষ অপুষ্টিতে ভোগে, তাহলে আপনি দরকারের সময়ে সামরিক বাহিনীর জন্যে রিক্রুট পাবেন কোথা থেকে? দুর্বল স্বাস্থ্যের একটা লোক তো একটা রাইফেলই তুলতে পারবে না। ১৯৭১ সালে সালে যত মানুষ যুদ্ধ করেছিল, তার বেশিরভাগই তো ছিল বেসামরিক লোক। তাহলে সেই সময়ের “সামরিক সামরিক” এবং “বেসামরিক সামরিক” লোকগুলিকে আপনি কি করে আলাদা করবেন? এরা সবাই তো অস্ত্রধারী যোদ্ধা ছিল এবং রক্ত ঝড়িয়েছে। দেশের খাদ্য এবং স্বাস্থ্যনীতি তাই দেশের নিরাপত্তার সাথে সম্পর্কিত।
অর্থনীতির চাকাকে সর্বদা সচল রাখতে না পারলে রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে এবং সামরিক সক্ষমতাও হ্রাস পাবে। |
৩. ষোল কোটি মানুষকে খাইয়ে-পড়িয়ে বাঁচিয়ে রাখতে যে অর্থনীতির চাকা চালিত রাখতে হবে, সেটা কাউকে বোঝাতে হবে না। এই চাকাকে সর্বদা সচল রাখতে না পারলে রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে এবং সামরিক সক্ষমতাও হ্রাস পাবে। বাণিজ্যনীতি, জ্বালানিনীতি, পরিবহণনীতি, সমুদ্রনীতি, ইত্যাদি আরও অনেক কিছুই এর মাঝে পড়ে যাবে।
৪. মূল শিল্পগুলিকে উন্নত না করলে সামরিক সক্ষমতা কখনোই তৈরি হবে না; অন্যের উপরে নির্ভরশীল থাকতে হবে। যেমন – স্টিল, এলুমিনিয়াম, কপার, ইত্যাদি মেটাল ইন্ডাস্ট্রি উন্নত করতে না পারলে সামরিক শিল্প গড়ে উঠবে না। ইলেকট্রনিক্স শিল্প, ইলেকট্রোম্যাগনেটিক্স শিল্প, পেট্রোকেমিক্যাল শিল্প, অটোমোবাইল শিল্প, জাহাজ-নির্মাণ শিল্প, এরোনটিক্যাল শিল্প, মহাকাশ শিল্প, অবকাঠামোগত শিল্প, ইত্যাদি গড়ে না উঠলে সামরিক সক্ষমতা তৈরি হবে না কখনোই। শিল্পনীতি তাই দেশের নিরাপত্তার জন্যে ততটাই গুরুত্বপূর্ণ।
উপরে যে কথাগুলি আলোচনা করেছি, সেগুলি সর্বদাই দেশের শত্রুর জন্যে টার্গেট থাকবে। এর আগে সবিস্তারে লিখেছি যে একটা দেশকে কিভাবে দুর্বল করা হয়। সেখানে বলেছিলাম যে আদর্শিক আক্রমণে কিভাবে একটি দেশকে দুর্বল করে ফেলা হয়। এখানে যেগুলি লিখেছিল সেগুলি একটা দেশের material power-এর সাথে সম্পর্কিত। এগুলি ঠিকমতো পরিচালনা করতে না পারলে রাষ্ট্র দুর্বল থাকবে।
একটা দেশের নিরাপত্তা দরকার হয় কেন? কারণ তার কিছু একটা রক্ষা করতে হয়। সেটা কি? সেটা হচ্ছে দেশের ভিত্তি; একটা চিন্তা। সেই চিন্তাকে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে, নিরাপত্তা দেয় এবং বিশ্বে ছড়িয়ে দেয়। সেটাই হচ্ছে রাষ্ট্রের লক্ষ্য। এই লক্ষ্যে বাধা আসবেই। কারো পৌষ মাস; কারো সর্বনাশ! সেই বাধা অতিক্রম করার জন্যেই রাষ্ট্রের physical নিরাপত্তা দরকার হয়। এই নিরাপত্তার মাঝে সামরিক-বেসামরিক কোন ব্যাপার নেই। সেই ব্যাপারটা তৈরি করা মানেই রাষ্ট্রের লক্ষ্যকে আঘাত করা। নিরাপত্তা না থাকলে রাষ্ট্রের লক্ষ্য বাস্তবায়িত হবে না। আর চিন্তা না থাকলে রাষ্ট্র হবে লক্ষ্যহীন; অর্থহীন।
What We have to protect?
ReplyDeleteIts the basic thought on which a country a state stands... This is what the state establishes, protects and propagates... And to do that, you need security from all directions... Basically a state's base stands on security...
DeleteBut if we improve the quality of our man power and skill with proper education along with internal security then it will be more effective.
ReplyDeleteMy thoughts:
1. Each person should join military training program for 1 year when he/she is 18 years old.
2.6 months mandatory course for each person about laws of the country
Very good suggestions.... These should be the topics of discussion among people, not what they ate at fast food restaurant or what they bought from the market last night...
Delete