Tuesday 11 May 2021

ফিলিস্তিনে নতুন করে সহিংসতার ভূরাজনৈতিক গুরুত্ব

১১ই মে ২০২১
ফিলিস্তিন ইস্যুতে মুসলিম দেশগুলির নেতৃত্বের নিষ্ক্রিয়তা এবং ইস্রাইলের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ মুসলিম বিশ্বে নেতৃত্বহীনতার অভাবকে প্রকটভাবে সামনে নিয়ে এসেছে; যা বিশ্বব্যাপী মুসলিমদেরকে বড় কোন পরিবর্তনের দিকে ধাবিত হতে অনুপ্রাণিত করবে। ইস্রাইলের সাথে ফিলিস্তিনীদের সংঘাত যত মারাত্মক আকার ধারণ করতে থাকবে, মুসলিম বিশ্বেও পরিবর্তনের আকাংক্ষা ততটাই প্রবল হতে থাকবে।



রমজান মাসে ফিলিস্তিনে উত্তেজনা চরমভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ৯ই এবং ১০ই মে গাজা উপত্যকায় ইস্রাইলী বিমান হামলায় কমপক্ষে ২২ জন নিহত হয়েছে বলে বলছেন গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ কেদ্রা। নিহতদের মাঝে ৯জন শিশুও রয়েছে। এছাড়াও ১’শ ৬ জন আহত হয়েছে; যার মাঝে কিছু লোকের অবস্থা গুরুতর। বিমান হামলার প্রতিবাদে গাজার সরকারে থাকা হামাস ১৩ কিঃমিঃ দূরে আশকেলন এলাকায় রয়েট হামলা করে। ইস্রাইলী সরকার ঘোষণা দেয় যে, ফিলিস্তিনী গ্রুপগুলি ইস্রাইলের উপর রকেট হামলা করার পর প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে তারা গাজায় বিমান হামলা শুরু করেছে। এর আগে ফিলিস্তিনীরা রকেট হামলা করেছিল আল আকসা মসজিদে ইস্রাইলী পুলিশের হামলার পর। গাজায় বিমান হামলার মাধ্যমে ফিলিস্তিনে সংঘাত আরও ঘনীভূত হলো।

রমজান মাসের শুরু থেকেই ফিলিস্তিনে উত্তেজনা শুরু হয়। মুসল্লীরা জেরুজালেমের আল আকসা মসজিদে রাতের বেলায় তারাবির নামাজ আদায়ের জন্যে আসতে থাকলে ইস্রাইলী পুলিশ তাদের বাধা দেয়। পূর্ব জেরুজালেমের দামাস্কাস গেট এলাকায় ইস্রাইলী পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে বাধা প্রদান করতে থাকলে সেখানে নিয়মিত সংঘর্ষ চলে। এর সাথে সাথে ফিলিস্তিনী এলাকায় উগ্র জাতীয়তাবাদী ইহুদী ‘জায়নিস্ট’দের এক মিছিল শুরু হয়; যাকে কেন্দ্র করে আরও সংঘর্ষ চলে। ১৯৬৭ সালের যুদ্ধে পূর্ব জেরুজালেম ইস্রাইলের দখলে আসার বার্ষিকীতে ‘জেরুজালেম দিবস’ উদযাপন উপলক্ষে ‘জায়নিস্ট’রা এই মিছিলের আয়োজন করে। ৭ই মে রজমান মাসের শেষ জুমআর নামাজ আদায় করতে আসা মুসল্লীদের উপর ইস্রাইলীরা বাধা দেয়। পরদিন ৮ই মে হাজার হাজার মুসল্লী আল আকসা মসজিদে লাইলাতুল কদরের রাতে নামাজ পড়তে আসলে ইস্রাইলী হামলা শুরু হয়। ফিলিস্তিনী হাসপাতালের বরাত দিয়ে ‘বিবিসি’ জানায় যে, দামাস্কাস গেট এলাকায় প্রতিবাদকারীদের সাথে ইস্রাইলী বাহিনীর সংঘর্ষে প্রায় শ’খানেক ফিলিস্তনী আহত হয়। এর আগের রাতেও ইস্রাইলী পুলিশের হামলায় প্রায় ২’শ ফিলিস্তিনী আহত হয়। ফিলিস্তিনী রেড ক্রিসেন্টের বরাত দিয়ে ‘আল জাজিরা’ জানায় যে, শুক্রবারের সংঘর্ষে এক ব্যক্তি চোখ হারিয়েছে এবং দুইজন মস্তিষ্কে মারাত্মক আঘাতপ্রাপ্ত হয়। বেশিরভাগ মানুষই ইস্রাইলী রাবার বুলেট ও স্টান গ্রেনেডের আঘাতে মুখমন্ডল এবং চোখে আঘাত পেয়েছে।

এছাড়াও প্রায় মাসখানেক ধরেই ফিলিস্তিনের পূর্ব জেরুজালেমের শেখ জাররাহ এলাকায় দখলকৃত জমিতে ইহুদীদের অবৈধ বসতি স্থাপন এবং ফিলিস্তিনীদের নিজেদের বাড়িঘর থেকে উৎখাত করা নিয়ে উত্তেজনা চলছে। সেই এলাকার চারটা পরিবার উতখাতের শিকার হয়ে অনেক বছর আগে ইস্রাইলের আদালতের সরণাপন্ন হয়েছিল। এই পরিবারগুলি ১৯৪৮ সালে ইস্রাইলী দখরদারিত্বের কারণে বাড়িঘর হারিয়ে ১৯৫৬ সালে শেখ জাররাহ এলাকায় বসতি স্থাপন করে। এই এলাকার তৎকালীন নিয়ন্ত্রক জর্দান এবং জাতিসংঘের উদ্বাস্তু সংতস্থা এই ব্যবস্থা করে দেয়। ইহুদী বসতি স্থাপনকারীরা আদালতে বলে যে, এই এলাকা প্রথম থেকেই ইহুদীদের জমি ছিল। সাম্প্রতিককালে ইস্রাইলের জেলা আদালত বলে যে, ফিলিস্তিনী পরিবারগুলিকে হয় এই এলাকা ছাড়তে হবে, নতুবা ইহুদীদেরকে জমির মালিক মেনে নিয়ে তাদেরকে ভাড়া প্রদান করবে। এই রায়কে কেন্দ্র করেই চলা উত্তেজনার সাথে যুক্ত হয়েছে আল আকসায় নামাজ আদায় করার সময়কার উত্তেজনা। ‘আল জাজিরা’র সাথে কথা বলতে গিয়ে ফিলিস্তিনী প্রতিবাদকারীরা বলছেন যে, আজকে শেখ জাররাহ থেকে মানুষকে উৎখাত করছে; কালকে অন্য এলাকা থেকেও ফিলিস্তিনীদের উৎখাত করবে। একারণেই তারা প্রতিবাদ করছেন। ৭ই মে ইস্রাইলী পুলিশ শেখ জাররাহ এলাকায় শতশত প্রতিবাদকারীর যাবার পথে বাধা সৃষ্টি করে। প্রতিবাদকারীরা ব্যারিকেডের বাইরেই ইফতার করে এবং অবস্থান ধর্মঘট করে। তবে এই প্রতিবাদ প্রতিদিন শান্তিপূর্ণ ছিল না। ৬ই মে পুলিশ অবস্থান ধর্মঘট পালনকারীদের উপর জলকামান, স্টান গ্রেনেড, কাঁদানে গ্যাস এবং রাবার বুলেট ব্যবহার করে। এতে ৩০ জন আহত হওয়া ছাড়াও ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। শেখ জাররাহ এলাকার বাসিন্দারা মোবাইলে ছবি তুলে সোশাল মিডিয়াতে দিচ্ছে; যেখানে দেখা যাচ্ছে যে ইহুদী দখলদারিরা অস্ত্রসহ টহল দিচ্ছে। সোশাল মিডিয়ার ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে যে, ইফতার করার সময় ফিলিস্তিনীদের উপর ইস্রাইলীরা হামলা করছে। ১০ই মে ইস্রাইলের সুপ্রিম কোর্টের রায় দেবার কথা থাকলেও তা আদালত এক মাসের জন্যে পিছিয়ে দিয়েছে। এর মাধ্যমে সংঘাতের কারণটা রয়েই যাচ্ছে।

আল আকসা মসজিদে দুই দিনের ইস্রাইলী পুলিশী হামলার পর ইস্রাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এক টেলিভিশন ভাষণে ঘোষণা দেন যে, ইস্রাইল কোন ‘উগ্রবাদী’ গ্রুপকে শান্তি নষ্ট করতে দেবে না। ‘জেরুজালেম দিবস’ উদযাপন উপলক্ষে নেতানিয়াহু এই ভাষণ দিচ্ছিলেন। অধিকৃত এলাকায় ইহুদী বসতি স্থাপনের চেষ্টার বিরুদ্ধে যেকোন চাপ প্রয়োগকে প্রতিহত করার কথা বলেন তিনি। ইস্রাইলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয় যে, পূর্ব জেরুজালেমে জমি নিয়ে কিছু লোকের ব্যক্তিগত কলহকে ফিলিস্তিনিরা জাতীয় ইস্যু হিসেবে তৈরি করে জেরুজালেমে সহিংসতা তৈরি করছে।

৮ই মে যুক্তরাষ্ট্র, ইইউ, রাশিয়া এবং জাতিসংঘ তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। জর্দান, মিশর, তুরস্ক, তিউনিসিয়া, পাকিস্তান, কাতার, বাংলাদেশ, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং বাহরাইন এই ঘটনায় ইস্রাইলের নিন্দা করেছে। ফিলিস্তিনী প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস ঘটনার নিন্দা করে জাতিসংঘের জরুরি অধিবেশন দাবি করেন। জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের মুখপাত্র রুপার্ট কোলভিল সাংবাদিকদের বলেন যে, শেখ জাররাহ এলাকায় ইস্রাইলের জোরপূর্বক উৎখাত অভিযান বন্ধ করতে আহ্ববান জানাচ্ছে জাতিসংঘ।

ইস্রাইলকে পশ্চিমা বিশ্বের প্রচ্ছন্ন ও সরাসরি সমর্থন চলছে ইস্রাইলের জন্মলগ্ন থেকেই। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলির নেতৃবৃন্দও বিভিন্ন সময়ে ইস্রাইলের সাথে শান্তি চুক্তি করেছে; যাদের মাঝে রয়েছে মিশর ও জর্দান। তুরস্ক প্রথম থেকেই ইস্রাইলের সাথে কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক রেখে চলেছে। আর সাম্প্রতিক সময়ে এর সাথে যুক্ত হয়েছে সৌদি গ্রুপের অন্তর্গত সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন এবং মরক্কোর সাথে ইস্রাইলের সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ। অন্যান্য মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলি আরবদের সাথে ইস্রাইলের সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের ব্যাপারটাতে ‘নিরপেক্ষ’ থাকার চেষ্টা করেছে। যুক্তরাষ্ট্রে জো বাইডেন সরকারের নির্বাচন জয়ের ব্যাপারটা নিশ্চিত হবার সাথেসাথেই আরব দেশগুলি এবং ইস্রাইল নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে থাকে। তাদের কাছে ইস্যু হলো বাইডেন সরকারের সাথে ইরানের পারমাণবিক চুক্তির আলোচনা পুনরায় শুরুর সম্ভাবনা। আরব দেশগুলির সাথে ইস্রাইলের সম্পর্ক উন্নয়নের ফলাফলস্বরূপ ফিলিস্তিনে, বিশেষ করে অধিকৃত এলাকায় ইস্রাইলী আগ্রাসন যে বাড়বে, তা মোটামুটি জানাই ছিল। ফিলিস্তিন ইস্যুতে মুসলিম দেশগুলির নেতৃত্বের নিষ্ক্রিয়তা এবং ইস্রাইলের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ মুসলিম বিশ্বে নেতৃত্বহীনতার অভাবকে প্রকটভাবে সামনে নিয়ে এসেছে; যা বিশ্বব্যাপী মুসলিমদেরকে বড় কোন পরিবর্তনের দিকে ধাবিত হতে অনুপ্রাণিত করবে। ইস্রাইলের সাথে ফিলিস্তিনীদের সংঘাত যত মারাত্মক আকার ধারণ করতে থাকবে, মুসলিম বিশ্বেও পরিবর্তনের আকাংক্ষা ততটাই প্রবল হতে থাকবে।

3 comments:

  1. সবাই জানে যে সে একদিন মারা যাবেন কিন্তু কেউ জানেনা সে কিভাবে বা কখন মারা যাবেন। "ইস্রাইলের সাথে ফিলিস্তিনীদের সংঘাত যত মারাত্মক আকার ধারণ করতে থাকবে, মুসলিম বিশ্বেও পরিবর্তনের আকাংক্ষা ততটাই প্রবল হতে থাকবে।" - এই আকাংখা কিভাবে প্রবল হবে বা কিভাবে মুসলিম বিশ্বে পরিবর্তন আসবে সেই বিষয়ে যদি কিছুটা ধারণা প্রদান করতেন তাহলে আপনার বক্তব্য চিন্তা করা যেত।

    ReplyDelete
    Replies
    1. ভূরাজনীতিতে বর্তমান এবং অতীত বিশ্লেষণ করা হয় ভবিষ্যৎ বুঝতে পারার জন্যে। ভবিষ্যৎ নির্ভর করে সুপারপাওয়ার রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণের সক্ষমতার উপর। সেই সক্ষমতা নির্ভর করবে সুপারপাওয়ার রাষ্ট্রের বুদ্ধিবৃত্তিক শক্তি এবং এর ম্যাটেরিয়াল সক্ষমতার সমন্বয়ের উপর। সুপারপাওয়ার দুনিয়ার নিয়মকানুন নিয়ন্ত্রণ করে (তৈরিও করতে পারে) ব্রিটেন একসময় সুপারপাওয়ার ছিল; বর্তমানে সুপারপাওয়ার যুক্তরাষ্ট্র।

      ব্রিটেন-যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে পশ্চিমা চিন্তার উপর ভিত্তি করেই বর্তমান দুনিয়ার নিয়মকানুনগুলি তৈরি করা হয়েছে। এর মাঝে একটা নিয়ম হলো সার্বভৌমত্বের সংজ্ঞা। এই সংজ্ঞা ১৬৪৮ সালে ওয়েস্টফালিয়া চুক্তির মাধ্যমে লেখা হয়েছিল। পরবর্তীতে এতে বিভিন্ন পরিবর্তন আনা হলেও মূল চিন্তাগত পরিবর্তন আসেনি। বর্তমান বিশ্বের জাতিরাষ্ট্রের ভিতই হলো এই ওয়েস্টফালিয়ান সিস্টেম। এখানে একটা রাষ্ট্রের বাউন্ডারি আঁকা হয় এবং সেই বাউন্ডারির ভেতরে একেকটা জাতিরাষ্ট্রের আইন চলে। এই আইন তৈরি করা হয় পশ্চিমা চিন্তার অনুসারে তৈরি করা সেকুলার সংবিধানের উপর ভিত্তি করে। এখানে বিশ্বাসগত কোন ব্যাপারকে সংবিধানের মূল জায়গাগুলিতে রাখা হয় না। এগুলি একারণে সেকুলার রাষ্ট্র; যেখানে রাষ্ট্রের মাঝে ধর্মের কোন স্থান থাকে না।

      পঞ্চাশোর্ধ মুসলিম দেশের বাউন্ডারি ইউরোপিয়দের আঁকা; এদের সংবিধানও ইউরোপিয় ধাঁচে লেখা। অর্থাৎ সেকুলার সংবিধান। সেকুলার চিন্তার ভিত্তিতে রাষ্ট্র পরিচালিত হলে তো সেখানে ধর্মের গুরুত্ব তেমন থাকার কথা নয়; যেমনটা ইউরোপে দেখা যায়। তাহলে মুসলিম দেশের সেকুলার সরকারগুলি কেন ফিলিস্তিন ইস্যুতে ইস্রাইলের বিপক্ষে কথা বলে? একটা সেকুলার রাষ্ট্র হিসেবে ইস্রাইল তো বন্ধু রাষ্ট্র হওয়া উচিৎ ছিল!! এখানেই বাস্তবতার ব্যাপারটা চলে আসে। যতই সেকুলার হোক না কেন, জনগণের আবেগকে রাষ্ট্র পুরোপুরিভাবে এড়িয়ে যেতে পারে না; হয়তো নিয়ন্ত্রণের চেষ্টাও করতে পারে। কিন্তু একেবারে ভুলে যাওয়া সম্ভব নয়। মুসলিম দেশগুলির জনগণ নামাজ পড়তে গিয়ে মক্কার দিকেই সিজদাহ দেয়; যা কিনা আরেকটা জাতিরাষ্ট্রে (সৌদি আরব) অবস্থিত। তাহলে আরেক দেশের কোন একটা ঘরের প্রতি আরেকটা সেকুলার রাষ্ট্রের জনগণের কেন দরদ থাকবে? অথবা ইস্রাইল যদি আল আকসা মসজিদে হামলা করে, তাহলে মধ্য এশিয়া বা পশ্চিম আফ্রিকার মুসলিমদের কি সমস্যা?

      মুসলিমদের এই বাস্তবতাগুলি ভূরাজনীতিকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করে। সুপারপাওয়ার বর্তমান বিশ্বের নিয়মগুলিকে রক্ষা করে চলেছে; যার একটা হলো জাতিরাষ্ট্রের বাউন্ডারি। কিন্তু মুসলিমদের বিশ্বাসগত ব্যাপারগুলি এই জাতিরাষ্ট্রের বাউন্ডারি পার হয়ে বহুদূর চলে যায়। এটা পশ্চিমা চিন্তায় চলা বিশ্বব্যাবস্থার জন্যে একটা মারাত্ম চ্যালেঞ্জ। কারণ সুপারপাওয়ার যদি দুর্বল হতে থাকে, তাহলে বিশ্ব পরিচালনা নিয়মগুলিও দুর্বল হতে থাকবে; যার একটা একটা হলো ওয়েস্টফালিয়ান সিস্টেম। মুসলিমদের এই বাউন্ডারি পার করা আবেগ ভূরাজনৈতিক ভবিষ্যতকে দেখিয়ে দেয়। ওয়েস্টফালিয়ান সিস্টেম দুর্বল হলে বা ভেঙ্গে গেলে ভবিষ্যৎ কেমন হবে, তা বুঝতে হলে এই আবেগগুলিকে আরও কিছু বাস্তবতার সাথে যুক্ত করে বুঝতে হবে। পশ্চিমা সেকুলার সিস্টেম যেমন চিরস্থায়ী নয়, তেমনি পঞ্চাশোর্ধ সেকুলার মুসলিম দেশের বাস্তবতাও চিরস্থায়ী নয়। এটাই ভূরাজনৈতিক বাস্তবতা ভিত্তি।

      Delete
  2. অনেক ধন্যবাদ।

    ReplyDelete