Saturday 27 July 2019

নেপালের একটা নৌবাহিনী থাকা উচিৎ

২৮শে জুলাই ২০১৯
  
  
নেপালের চ্যালেঞ্জকে বুঝতে হলে নেপালের দিক হতে বিশ্বকে দেখতে হবে। মানচিত্রকে উল্টো করে, অর্থাৎ দক্ষিণ দিককে মানচিত্রের উপরের দিকে রেখে দেখা হয়। দক্ষিণে নেপালের এই দৃষ্টিই বলে দেবে নেপাল আসলে কি দেখতে পাচ্ছে, আর কি চাইছে। নেপালের প্রয়োজন সমুদ্র বাণিজ্যের। নেপালের থাকতে পারে একটা মার্চেন্ট মেরিন ফ্লিট। আর সেই ফ্লিটের নিরাপত্তা দেয়ার জন্যে তাদের একটা নৌবহরও থাকতে পারে।


নেপালের সবচাইতে বড় চ্যালেঞ্জ হলো ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশদের এঁকে দেয়া মানচিত্র। দেশটাকে এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে, যাতে তা সারাজীবন ভারতের উপর নির্ভরশীল থাকে। মদেশী আন্দোলনকে ব্যবহার করে ভারত নেপালের উপর অঘোষিত অবরোধ দেবার পরেও নেপাল ভারতের উপর থেকে নির্ভরশীলতা কমাতে পারেনি। নেপালের উত্তরে রয়েছে হিমালয় পর্বত; যার উত্তরে চীনের তিব্বত। ভারতের নিষেধাজ্ঞাকে এড়িয়ে চীন নেপালকে সহায়তা করতে উদ্দ্যত হলেও হিমালয়ের বাস্তবতাকে এড়াতে পারেনি চীন। কিছুদিনের জন্যে চীন নেপালের জন্যে আশা জাগালেও শেষ পর্যন্ত ভারতের গ্রাস থেকে বের হতে পারেনি দেশটা। নেপালের এই চ্যালেঞ্জকে বুঝতে হলে নেপালের দিক হতে বিশ্বকে দেখতে হবে। মানচিত্রে দেশগুলিকে সাধারণতঃ যেভাবে দেখানো হয়, তাতে একেকটা দেশের নিজস্ব দৃষ্টিকে বোঝা যায় না। নেপালের ক্ষেত্রে এর কিছুটা উপলব্ধি করা সম্ভব যদি এর মানচিত্রকে উল্টো করে, অর্থাৎ দক্ষিণ দিককে মানচিত্রের উপরের দিকে রেখে দেখা হয়। যেহেতু উত্তরের হিমালয়কে অতিক্রম করাটা অতি দুরূহ কাজ, তাই হিমালয়কে পিছনের দেয়াল মনে করেই নেপাল দৃষ্টি দেয় দক্ষিণে।

দক্ষিণে নেপালের এই দৃষ্টিই বলে দেবে নেপাল আসলে কি দেখতে পাচ্ছে, আর কি চাইছে। নেপালের অর্থনৈতিক সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে দেশটার জনগণকে দারিদ্র্য থেকে বের করে আনতে হলে নেপালকে বাইরের দুনিয়ার সাথে যোগাযোগ করার সুযোগ দিতে হবে। বাণিজ্য বৃদ্ধির জন্যে স্থলপথে নেপালকে যুক্ত হতে হবে আশেপাশের দেশগুলির সাথে। আর এক্ষেত্রে নেপাল থেকে দক্ষিণে তাকালে ভারত-বাংলাদেশই প্রথমে চোখে পড়বে। এই দুই দেশই যে নেপালের সাথে সকল ধরনের বাণিজ্য করবে, তা যুক্তিযুক্ত হতে পারে না। এর বাইরে অন্য দেশের সাথেও নেপালকে বাণিজ্যের অধিকার দিতে হবে। আর সেক্ষেত্রে নেপালের প্রয়োজন সমুদ্র বাণিজ্যের। স্থলবেষ্টিত একটা দেশের জন্যে সমুদ্র পর্যন্ত পৌঁছানো একটা চ্যালেঞ্জই বটে। এতদিন সমুদ্রে পৌঁছতে গেলে নেপালের জন্যে ভারতের উপর নির্ভর করা ছাড়া কোন গতি ছিল না। তবে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করতে পারার সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছে নেপালের জন্যে।

পুরো ব্যাপারটাই দৃষ্টিভঙ্গির উপর

ডলারের হিসেবে নেপালের ৬৬% বাণিজ্য সংঘটিত হয় ভারতের সাথে। বাকি ৩৪%-এর বেশিরভাগটাই সমুদ্র পার হয়ে আসতে হয়। এখানেই বাংলাদেশ পারে নেপালকে নতুন আশা জাগাতে। নেপাল থেকে সমুদ্রে পৌঁছাবার সবচাইতে সহজ পথ হলো বাংলাদেশের মাঝ দিয়ে। এই ব্যাপারটা দক্ষিণ দিককে মানচিত্রের উপরের দিকে দিয়ে দেখলেই কেবলমাত্র বোঝা সম্ভব। শুধু সমুদ্র পর্যন্ত পৌঁছানোই নয়, নেপালের থাকতে পারে একটা মার্চেন্ট মেরিন ফ্লিট। আর সেই ফ্লিটের নিরাপত্তা দেয়ার জন্যে তাদের একটা নৌবহরও থাকতে পারে। ব্যাপারটা অবাস্তব মনে হলেও একটু গভীরভাবে চিন্তা করলেই বোঝা যাবে যে, এটা কতটা বাস্তবসম্মত। পুরোটাই আটকে আছে দৃষ্টিভঙ্গির উপর।

প্রথমতঃ সুইজারল্যান্ডের মতো একটা স্থলবেষ্টিত দেশ হলো বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম কনটেইনার পরিবহন কোম্পানি ‘এমএসসি’এর কেন্দ্র। অন্যদিকে ইথিওপিয়া এখন স্থলবেষ্টিত হলেও একসময় তার সমুদ্রতট ছিল। ঠান্ডা যুদ্ধের সময় সুপারপাওয়ারদের দ্বন্দ্বে বলি হয়ে এরিত্রিয়া যুদ্ধ করে ইথিওপিয়া থেকে আলাদা হয়ে যায়। আর তাতে ইথিওপিয়ার পুরো সমুদ্রতট এরিত্রিয়ার হয়ে যায়। ইথিওপিয়া তার নৌবহর এবং মার্চেন্ট মেরিন হারায়। কারণ এরিত্রিয়ার সাথে ইথিওপিয়ার সম্পর্ক ভালো ছিল না। বর্তমানে ইথিওপিয়া জিবুতির মাধ্যমে তাদের সমুদ্র বাণিজ্য চালাচ্ছে। এবং তারা তাদের মার্চেন্ট মেরিন আবারও তৈরি করতে যাচ্ছে। এই ইতিহাসগুলি বলে যে, ইথিওপিয়ার সমুদ্রে যাওয়াটা অবাস্তব কিছু নয়। আরও একটা উদাহরণ দেয়া যায় বলিভিয়ার। একসময় বলিভিয়ার প্রশান্ত মহাসাগরে সমুদ্রতট ছিল। সুপারপাওয়ারদের দ্বন্দ্বে পেরু এবং চিলি বলিভিয়ার কাছ থেকে সেই সমুদ্রতট সামরিকভাবে দখল করে নেয়। বলিভিয়া এখনও একটা নৌবাহিনী রেখেছে; এবং প্রতি বছর একটা দিনে সেই নৌবাহিনীর সদস্যরা রাস্তায় প্যারেড করে। তারা এখনও তাদের সমুদ্রে যাবার ন্যায্য হিস্যা চায়।

দ্বিতীয়তঃ কে সমুদ্রে যেতে পারবে, আর কে যেতে পারবে না, সেটা সৃষ্টিকর্তা ঠিক করে দেননি; মানুষ ঠিক করেছে। মানুষ নিজেদের মাঝে হিংসাত্মক কাজের অংশ হিসেবে অন্য আরেক জাতিকে সমুদ্রে পৌঁছানো থেকে বাধা দিয়েছে। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশরাই সৃষ্টিকর্তার স্থানে নিজেদেরকে বসিয়ে অত্র এলাকার বাউন্ডারিগুলি এঁকে দেয়। সেই আঁকা মানচিত্রে নেপালকে সমুদ্রে পৌঁছানো থেকে বাধা দেয়া হয়। অথচ বাংলা যখন সুলতান এবং নবাবদের অধীনে ছিল, তখন যে কেউই সমুদ্র পর্যন্ত পৌঁছাতে পারতো; কারুরই ভিসা লাগতো না এতে! নেপালের মানুষগুলির দিনাজপুরের মানুষগুলির মতোই সমুদ্রে যাবার অধিকার ছিল।

তৃতীয়তঃ পুরো ব্যাপারটা আসলে একটা নির্দিষ্ট আয়তনের ভূখন্ডের মানুষের সমুদ্রবন্দর পর্যন্ত রাস্তার উপরে নির্ভরশীল। যেমন – যদি ঢাকা একটা আলাদা দেশ হতো, তাহলে ঢাকার মানুষকে রাস্তা, রেল বা নদীপথে চট্টগ্রাম, মংলা বা পায়রা সমুদ্রবন্দরে পৌঁছাতে হতো। ব্রিটিশরা ঢাকা আর চট্টগ্রামকে এক দেশের অধীনে রাখার ফলে ঢাকার মানুষের চট্টগ্রাম বন্দরে যেতে ভিসা লাগেনা। কিন্তু কাঠমুন্ডুর মানুষের লাগে!

নেপালের ফ্লিট এবং এর ভবিষ্যৎ ফলাফল

নেপালকে বাংলাদেশ তার সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করতে দিলে নেপালকে শুধু বাংলাদেশের বন্দর পর্যন্ত একটা পথ বের করতে হবে; সেটা রাস্তা, রেল বা নদীপথই হোক। দিনাজপুর থেকে চট্টগ্রাম পৌঁছাতে যেমন রাস্তা তৈরি করতে হয়েছে, তেমনি কাঠমুন্ডু থেকে চট্টগ্রাম বা মংলা পৌঁছাতেও সেই ব্যবস্থাই করতে হবে। নেপালকে শুধু সমুদ্র পর্যন্ত পৌঁছানো নয়, তাদেরকে একটা মার্চেন্ট ফ্লিট গঠন করতেও বাংলাদেশের সহায়তা করা উচিৎ। আর সেই মার্চেন্ট ফ্লিটের নিরাপত্তা দিতে নেপালকে একটা নৌবাহিনী তৈরি করার জন্যেও সব ধরনের সহায়তা করা দরকার। এর ফলশ্রুতিতে যে ব্যাপারগুলি গুরুত্বপূর্ণ ফলাফল হিসেবে দেখা দেবে তা হলো –

১। সমুদ্র বাণিজ্যের প্রসারে নেপালের অর্থনৈতিক উন্নয়ন হবে; দারিদ্র্য থেকে বের হয়ে আসবে নেপালের জনগণ। নেপাল অত্র এলাকার ব্যবসায়ীদের জন্যে আরও আকর্ষণীয় বাজার হিসেবে আবির্ভূত হবে।

২। বাংলাদেশের সাথে নেপালের বাণিজ্য ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাবে, যা এখন নেই বললেই চলে।

৩। নেপালের জনগণের সাথে বাংলাদেশের জনগণের যোগাযোগ বৃদ্ধি পাবে এবং দীর্ঘমেয়াদী বন্ধুত্ব তৈরি হবে, যা কিনা বঙ্গোপসাগরে একটা শক্তিশালী রাষ্ট্র তৈরি হবার শর্ত।

৪। সমুদ্রবন্দরগুলির উন্নয়ন হবে; বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে। নেপালও বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়নে অংশ নেবে। যেমন, এই মুহুর্তে নেপাল বাংলাদেশের সাথে হাইড্রোইলেকট্রিক প্রকল্প করতে চাইছে।

৫। সমুদ্র বাণিজ্য বৃদ্ধির সাথে সাথে বঙ্গোপসাগরের নিরাপত্তা বৃদ্ধি পাবে। নেপাল নিজের স্বার্থের জন্যেই চাইবে বঙ্গোপসাগরকে নিরাপদ রাখতে। বাংলাদেশের নৌবাহিনীর সাথে তারা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করবে।


৬। এই বন্ধুত্বের নিদর্শন নেপালের জনগণ কখনও ভুলবে না। এর ফলে হিমালয়ের পাদদেশে যে অকৃত্রিম বন্ধুর আবির্ভাব হবে, তা আর কোন ভাবেই পাওয়া সম্ভব নয়।


-------------------------------------------------------------------------------



নেপাল – একটা পরিচিতি

জনসংখ্যা – প্রায় ৩ কোটি (২০১৮)

জিডিপি –২৭ বিলিয়ন ডলার (২০১৮)

মাথাপিছু জিডিপি – ৯২০ ডলার (২০১৮)

আমদানি – ৯ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার (২০১৭)

রপ্তানি – ৮০৩ মিলিয়ন ডলার (২০১৭)

প্রধান আমদানি পণ্য – পরিশোধিত জ্বালানি তেল (১ দশমিক ৫৩ বিলিয়ন ডলার), সেমি-ফিনিশড আয়রন (৪৪৭ মিলিয়ন ডলার), বিমান, হেলিকপ্টার (৩৩০ মিলিয়ন), স্বর্ণ (২৪৬ মিলিয়ন), কন্সট্রাকশন ভেহিকল (২৩৩ মিলিয়ন)।

মূলতঃ (৬৬%) ভারত থেকেই আমদানি করা হয় (৬ দশমিক ৫২ বিলিয়ন ডলার) – কনজিউমার গুডস ২ দশমিক ৫৪ বিলিয়ন ডলার, ইন্টারমিডিয়ারি গুডস ২ দশমিক ০৪ বিলিয়ন ডলার, জ্বালানি তেল (১ দশমিক ৪২ বিলিয়ন ডলার), ক্যাপিটাল গুডস (১ দশমিক ২১ বিলিয়ন ডলার), মেটাল (১ দশমিক ১৩ বিলিয়ন ডলার), মেশিনারি (৭০০ মিলিয়ন), শাকসবজি (৬৮২ মিলিয়ন), ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইনপুট (৬৭৪ মিলিয়ন), ট্রান্সপোর্ট (৬৫৮ মিলিয়ন), কেমিক্যাল (৪৪৭ মিলিয়ন), মিনারাল (৩৬২ মিলিয়ন), ফুড প্রডাক্টস (৩০৫ মিলিয়ন), প্লাস্টিক এন্ড রাবার (২৬০ মিলিয়ন), টেক্সটাইল (১৯০ মিলিয়ন), কাঠ (১২৫ মিলিয়ন), স্টোন এন্ড গ্লাস (১০৮ মিলিয়ন), পশু (৫৫ মিলিয়ন), ফুটওয়্যার (১২ মিলিয়ন)।

চীন থেকে আমদানি হয় ১৩% পণ্য বা ১ দশমিক ২৭ বিলিয়ন ডলার; আরব আমিরাত থেকে ১৭৫ মিলিয়ন; ফ্রান্স থেকে ১৫৫ মিলিয়ন; আর্জেন্টিনা থেকে ১৩৪ মিলিয়ন; ইন্দোনেশিয়া থেকে ১২১ মিলিয়ন; থাইল্যান্ড থেকে ১০৮ মিলিয়ন; কোরিয়া থেকে ৯৩ মিলিয়ন; ভিয়েতনাম থেকে ৯১ মিলিয়ন; সৌদি আরব থেকে ৮৯ মিলিয়ন; মালয়েশিয়া থেকে ৮৬ মিলিয়ন; কানাডা থেকে ৮৬ মিলিয়ন; যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৮২ মিলিয়ন; ইউক্রেন থেকে ৬১ মিলিয়ন; দক্ষিণ আফ্রিকা ৫৭ মিলিয়ন; জাপান ৫৬ মিলিয়ন; জার্মানি ৫২ মিলিয়ন; অস্ট্রেলিয়া ৫১ মিলিয়ন; সিঙ্গাপুর ৪৫ মিলিয়ন; সুইজারল্যান্ড ৪০ মিলিয়ন; বাংলাদেশ থেকে ৩৯ মিলিয়ন; মিয়ানমার ৩২ মিলিয়ন; তুরস্ক ৩২ মিলিয়ন; মিশর ২৬ মিলিয়ন; ব্রিটেন ২৫ মিলিয়ন।

প্রধান রপ্তানি পণ্য – সিন্থেটিক স্টেপল ফাইবার ইয়ার্ন (৮০ মিলিয়ন ডলার), নটেড কার্পেট (৭১ মিলিয়ন), ফ্লেভার্ড ড্রিঙ্ক (৪৬ মিলিয়ন), ফ্রুট জুস (৪৫ মিলিয়ন), জয়ফল (৪৩ মিলিয়ন)।

৬৬% রপ্তানি হয় ভারতে (৪২০ মিলিয়ন ডলার); যুক্তরাষ্ট্রে যায় ৮৩ মিলিয়ন; তুরস্কে ৪৭ মিলিয়ন; জার্মানিতে ২৯ মিলিয়ন; ব্রিটেনে ২৫ মিলিয়ন; চীনে ২২ মিলিয়ন; ইতালিতে ১২ মিলিয়ন; ফ্রান্সে ১১ মিলিয়ন; বাংলাদেশে ১০ মিলিয়ন; জাপানে ১০ মিলিয়ন।

রেমিট্যান্স – ৮ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার (২০১৮), যা জিডিপি-এর ২৮%

ট্যুরিজম – ৬৪৩ মিলিয়ন ডলার (২০১৮); এটা বেশিরভাগ সময় ৩৪০ মিলিয়ন থেকে ৫৫০ মিলিয়নের মাঝে ওঠানামা করে।

স্বর্ণ রিজার্ভ – ৬ দশমিক ৪ থেকে ৬ দশমিক ৫ টন;

কৃষি – ৬৬% মানুষ কৃষিতে জড়িত; জিডিপির ৩৩% কৃষি থেকে আসে; কৃষিযোগ্য জমি ১৫% বা ২১ লক্ষ হেক্টর; ১৩ লক্ষ হেক্টর সেচের আওতায়; বনভূমি ২৫%; খাদ্যশস্য উৎপাদন ৮৬ থেকে ৯৬ লক্ষ টন;

প্রধান শস্য – ধান ৫২ থেকে ৫৬ লক্ষ টন (৮৬% থেকে ৯৭% জমিতে ধান চাষ হয়);

জ্বালানি – কাঠ, গোবর, কয়লা – ৮২%; পেট্রোলিয়াম – ৮% (মূলতঃ ডিজেল, কেরোসিন, পেট্রোল);

গ্রামাঞ্চলে রান্নার জ্বালানি - কাঠ (৮১%), গোবর (৯%), এলপিজি (৪%), বায়োগ্যাস (৩ শতাংশ)। শহরাঞ্চলে রান্নার জ্বালানি – এলপিজি (৪০%), কাঠ (৩৬%), কেরোসিন (১৬%), বায়োগ্যাস (৩%), গোবর (৩%)।

বিদ্যুৎ – ৪৪% মানুষ বিদ্যুত পাচ্ছে; শীতকালে (শুষ্ক মৌসুমে) বিদ্যুৎ চাহিদা – ১,২০০ মেগাওয়াট; ৫০% নিজ উৎপাদন এবং বাকিটা ভারত থেকে আমদানিকৃত।

১,০১৬ মেগাওয়াট হাইড্রোপাওয়ার; ৩,৯০০ গিগাওয়াট-আওয়ার বিদ্যুৎ উৎপাদন; হাইড্রোপাওয়ারের সম্ভাবনা ৪২ হাজার মেগাওয়াট (৬০০ খরস্রোতা নদী)



তথ্যসূত্র -

বিশ্ব ব্যাংক; অবজারভেটরি অব ইকনমিক কমপ্লেক্সিটি (ওইসি); ফুড এন্ড আগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন (এফএও); ওয়ার্ল্ড ইন্টিগ্রেটেড ট্রেড সলিউশন; জাতিসংঘ কমট্রেড ডাটাবেস; সিইআইসি ডাটা; ইন্টারন্যাশনাল হাইড্রোপাওয়ার এসোসিয়েশন; এনার্জিপিডিয়া।


4 comments:

  1. well ....India will make Nepal just like Bhutan

    ReplyDelete
  2. On the contrary,India failed to buy off Nepal in seventy years even though Nepal was totally dependent on India for most economic activity. Rather it is time for Nepal to break out into the Bay of Bengal with the help of Bangladesh.

    ReplyDelete
  3. ভারত না চাইলে নেপাল বাংলাদেশের ভিতরে আসবে কি করে?

    ReplyDelete
    Replies
    1. প্রথমতঃ ভারতকে খুব শক্তিশালী মনে করা ঠিক নয়। ভারতের দৌর্বল্য নিয়ে লেখা অনেকগুলি আর্টিকেলের মাঝে নিচেরটা পড়ে নিতে পারেন।
      https://koushol.blogspot.com/2016/06/bangladesh-india-mirakkel.html

      দ্বিতীয়তঃ ভারতের চাওয়া না চাওয়ার উপরে অনেক কিছুই নির্ভর করেনি। উদাহরণ - একজন বাংলাভাষীকে ভূটানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মেনে নিয়েছে ভারত। আবার, ত্রিপুরার অর্থনীতিকে নিয়ন্ত্রণ করা থেকে বাংলাদেশকে নিবৃত করতে পারেনি ভারত। পশ্চিমবঙ্গের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্কোন্নয়নও ভারতকে মেনে নিতে হয়েছে। এ সম্পর্কে নিচের লেখাটা পড়ে নিতে পারেন।
      https://koushol.blogspot.com/2019/04/geopolitics-dhaka-kolkata-economic-corridor.html

      তৃতীয়তঃ বাংলাদেশের ভূরাজনৈতিক বাস্তবতাগুলিকে ভারত মেনে নিতে বাধ্য হচ্ছে। যেমন চীনের সহায়তায় বাংলাদেশ নৌবাহিনী তৈরি হচ্ছে; যার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবার কোন অপশনই ভারতের হাতে নেই। বাংলাদেশ কিভাবে ভারত এবং চীনকে ব্যালান্স করেছে, তা নিয়ে লেখাটা পড়তে পারেন।
      https://koushol.blogspot.com/2017/04/india-bangladesh-china-balance-power.html

      ভারত একটা রাষ্ট্র হিসেবে টিকে আছে বাংলাদেশের কারণেই। বাংলাদেশের সহায়তা ছাড়া ভারতের বর্তমান মানচিত্র ধরে রাখা সম্ভবন নয়। আর এটাই হলো ভারতের ভূরাজনৈতিক বাস্তবতা; যা থেকে পালানো ভারতের পক্ষে সম্ভব নয়। বাংলাদেশের সাথে নেপালের সম্পর্কোন্নয়ন চলছে এবং চলবে। আর সেটা ভারত মেনে নেবে নিজ বাস্তবতার কারণেই।

      Delete