Wednesday 22 May 2019

আর্কটিকে যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়ার দ্বন্দ্ব কোনদিকে যাচ্ছে?

‘গ্লোবাল ওয়ার্মিং’এর কারণে আর্কটিকে বরফ গলার সাথেসাথে সমুদ্রপথ উন্মুক্ত হচ্ছে। এখন বছরের বেশ কয়েক মাস রুশ আর্কটিক দিয়ে জাহাজ চলাচল করতে পারছে, যা ইতিহাসে প্রথম। এই নৌ-রুটের সাথে সাথে এর নিরাপত্তার ব্যাপারটাও রাশিয়ার কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।
২৩শে মে ২০১৯

৬ই মে মার্কিন পররাষ্ট্র সচিব মাইক পম্পেও উত্তর মেরুর কাছের আর্কটিক এলাকায় রাশিয়া এবং চীনের আগ্রাসী ভূমিকার বিরুদ্ধে সাবধান করেন। তিনি বলেন যে, আর্কটিক এলাকা এখন বিশ্বশক্তিদের প্রতিযোগিতার ক্ষেত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে। পম্পেও ফিনল্যান্ডে ‘আর্কটিক কাউন্সিল’এর এক সভায় এই কথাগুলি বলেন। ‘আর্কটিক কাউন্সিল’এ রয়েছে আর্কটিক অঞ্চলের আটটা রাষ্ট্র এবং ঐ অঞ্চলে বসবাসরত মানুষদের প্রতিনিধিরা। পম্পেও আর্কটিকের পরিবেশগত চ্যালেঞ্জগুলি নিয়ে কথা না বলে বরং এই অঞ্চলকে একটা সুযোগের অঞ্চল বলে আখ্যা দেন। আর্কটিকের তেল, গ্যাস, ইউরেনিয়াম, স্বর্ণ, মৎস্য সম্পদ এবং ‘রেয়ার আর্থ’ খনিজ-কেই তিনি বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন। একইসাথে আর্কটিকের সমুদ্র রুটের উপর বেইজিং এবং মস্কোর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা অত্র অঞ্চলে দক্ষিণ চীন সাগরের মতোই এক প্রতিযোগিতার জন্ম দিতে পারে বলে বলেন তিনি। ‘নিউ ইয়র্ক টাইমস’ মনে করিয়ে দিচ্ছে যে, এই কাউন্সিল তৈরির সময় এর মূল আলোচ্য বিষয় ছিল পরিবেশ; আর নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনার কোন ব্যবস্থাই এখানে রাখা হয়নি। তাই পম্পেও-এর কথায় আলোচনায় অংশ নেয়া প্রতিনিধিরা হতবাক হয়ে যান।

শুধু তা-ই নয়, পম্পেও কানাডার মাঝ দিয়ে যাওয়া ‘নর্থ-ওয়েস্ট প্যাসেজ’-কে আন্তর্জাতিক নৌ-রুট বলে আখ্যা দেন, যা কিনা কানাডা নিজেদের বলে মনে করে। পম্পেও-এর কথায় কানাডিয়রা বেশ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তবে রাশিয়ার আর্কটিকের ‘নর্দার্ন সী রুট’ বা ‘এনএসআর’কে আন্তর্জাতিক নৌ-রুট হিসেবে আখ্যা দেবার জন্যেই যে পম্পেও কানাডার ‘নর্থ-ওয়েস্ট প্যাসেজ’-কে আন্তর্জাতিক নৌ-রুট বলে আখ্যা দেন, তা বোঝা যাচ্ছে। তদুপরি ‘নর্থ-ওয়েস্ট প্যাসেজ’-কে রক্ষা করার নিমিত্তে কানাডা সেখানে যতটা নিরাপত্তা কার্যক্রমে হাত দিয়েছে, তা রাশিয়ার নিরাপত্তা কার্যক্রমের সাথে তুলনীয় নয় মোটেই। ‘গ্লোবাল ওয়ার্মিং’এর কারণে আর্কটিকে বরফ গলার সাথেসাথে সমুদ্রপথ উন্মুক্ত হচ্ছে। এখন বছরের বেশ কয়েক মাস রুশ আর্কটিক দিয়ে জাহাজ চলাচল করতে পারছে, যা ইতিহাসে প্রথম। এই নৌ-রুটের সাথে সাথে এর নিরাপত্তার ব্যাপারটাও রাশিয়ার কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।

আর্কটিকের সামরিকীকরণ
রাশিয়ার তিনি-কোণা এই ঘাঁটিগুলিকে বলা হচ্ছে ‘আর্কটিক ট্রেফয়েল’। লাল-সাদা-নীল রং-এর এই ঘাঁটিগুলির ১৪ হাজার বর্গমিটার স্থানে ১’শ ৫০ জন সেনা দেড় বছর থাকতে পারবে বলে বলা হচ্ছে।

২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে রুশ সেনারা সাইবেরিয়ার উত্তরে নিউ সাইবেরিয়ান দ্বীপপুঞ্জের কোটেলনি দ্বীপে সামরিক ঘাঁটি তৈরি করা শুরু করে। একইসাথে সেখানে সারাবছর সাপ্লাই পৌঁছানোর জন্যে একটা বড়সড় এয়ারফিল্ড এবং উপকূলে একটা জেটি তৈরি শুরু করে। আর্কটিকে দ্বিতীয় ঘাঁটিটি তৈরি করা হয় আরও পশ্চিমে ফ্রাঞ্জ যোসেফ ল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জের আলেক্সান্দ্রা ল্যান্ড-এ। এখানেও একটা আড়াই কিঃমিঃ লম্বা এয়ারফিল্ড তৈরি করা হচ্ছে। তিনি-কোণা এই ঘাঁটিগুলিকে বলা হচ্ছে ‘আর্কটিক ট্রেফয়েল’। লাল-সাদা-নীল রং-এর এই ঘাঁটিগুলির ১৪ হাজার বর্গমিটার স্থানে ১’শ ৫০ জন সেনা দেড় বছর থাকতে পারবে বলে বলা হচ্ছে। এগুলি ছাড়াও নোভায়া জেমলিয়া দ্বীপের রোগাচেভো, সাইবেরিয়ার চুকচি সাগরে কেপ শ্মিট ও র‍্যাংগেল দ্বীপ, এবং মুরমানস্ক-এর কাছাকাছি স্রেদনি-তে আরও সামরিক ঘাঁটি তৈরি করা হচ্ছে।

গত মার্চে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পত্রিকা ‘ক্রাসনায়া জুএজদা’র সাথে কথা বলতে গিয়ে রুশ নৌবাহিনীর নর্দার্ন ফ্লিটের কমান্ডার এডমিরাল নিকোলাই ইয়েভমেনভ বলেন যে, রুশ সাইবেরিয়ার উত্তরে তিকসি শহরে নতুন করে বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা স্থাপন করা হবে, যা কিনা আর্কটিকের ‘নর্দার্ন সী রুট’ বা ‘এনএসআর’এর আকাশের নিরাপত্তা দেবে। এয়েভমেনভ আরও বলেন যে, নির্দার্ন ফ্লিটকে ‘ব্যাসচন’ উপকূল প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা দিয়ে সজ্জিত করা হবে। ‘ব্যাসচন’ ব্যবস্থার মূলে রয়েছে ৬’শ কিঃমিঃ পাল্লার জাহাজ বিধ্বংসী সুপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ‘ওনিক্স’। ২০১৮-এর সেপ্টেম্বরে এক সামরিক মহড়ায় আর্কটিকের কোতেলনি দ্বীপে ‘ব্যাসচন’ ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করা হয়েছিল বলে রুশ মিডিয়া ‘ইন্টারফ্যাক্স’ জানায়। আর একই বছরের নভেম্বর থেকে আর্কটিকে ‘টর-এম২ডিটি’ স্বল্পপাল্লার বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মোতায়েন শুরু হয়েছে বলে রুশ বার্তা সংস্থা ‘তাস’ জানায়।

২১শে মে রুশ নৌবাহিনীর নর্দার্ন ফ্লিটের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা ‘ইজভেস্তিয়া’ জানাচ্ছে যে, রুশ সামরিক বাহিনী পুরো আর্কটিক অঞ্চল জুড়ে ইলেকট্রনিক যুদ্ধের সরঞ্জাম বসিয়েছে। এই সুবাদে পুরো উত্তর মেরু এলাকা জুড়ে শত্রুপক্ষের যেকোন সামরিক ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতিকে অকার্যকর করে ফেলার সক্ষমতা অর্জন করেছে তারা। মোতায়েনকৃত সরঞ্জামের মাঝে রয়েছে সর্বশেষ প্রযুক্তির ‘মুরমানস্ক-বিএন’ নামের স্ট্রাটেজিক জ্যামিং সিস্টেম, যা কিনা ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার কিঃমিঃ দূর পর্যন্ত প্রতিপক্ষের শর্টওয়েভ রেডিও যোগাযোগ ব্যবস্থা অকার্যকর করে দিয়ে সক্ষম। এই প্রযুক্তি তৈরি করা হয়েছে পশ্চিমাদের ‘হাই-ফ্রিকুয়েন্সি গ্লোবাল কমিউনিকেন্স সিস্টেম’কে টার্গেট করে। ২০১৬ সালের নভেম্বর থেকে এই প্রযুক্তি কার্যকর হয়েছে। রুশ পত্রিকা ‘ব্যারেন্টস অবজার্ভার’ জানাচ্ছে যে, এই সিস্টেমের একটা মোতায়েন করা হয়েছে রুশ আর্কটিকের একেবারে পশ্চিমে স্ক্যান্ডিনেভিয়া (নরওয়ে, সুইডেন, ফিনল্যান্ড, ডেনমার্ক)-এর কাছে কোলা উপদ্বীপের সেভেরোমোরস্ক-এ; আর আরেকটা মোতায়েন করা হয়েছে একেবারে পূর্বে প্রশান্ত মহাসাগরের উপকূলে কামচাটকা উপদ্বীপে। রুশ আর্কটিকে পশ্চিম এবং পূর্ব দিক থেকে ঢোকার পথগুলিকেই পাহাড়া দিচ্ছে এই স্থাপনাগুলি।

‘মুরমানস্ক-বিএন’ ছাড়াও রুশরা ‘ক্রাসুখা-২’ এবং ‘ক্রাসুখা-৪’ নামের মধ্যম-পাল্লার জ্যামিং সিস্টেম মোতায়েন করেছে। এগুলি আড়াই’শ থেকে ৩’শ কিঃমিঃ দূর পর্যন্ত শত্রুর আকাশে পরিবাহিত রাডার অকার্যকর করে ফেলতে সক্ষম। পশ্চিমাদের ‘এয়ারবোর্ন ওয়ার্নিং এন্ড কন্ট্রোল সিস্টেম’ বা ‘এওয়াকস’ বিমানকে টার্গেট করে এই প্রযুক্তি তৈরি করা হলেও ‘ক্রাসুখা-৪’ স্যাটেলাইটের সাথে যোগাযোগ ব্যাহত করতে সক্ষম বলে মনে করা হয়। ২০১৪ সাল থেকে এগুলি সার্ভিসে এসেছে। রুশ আর্কটিকের নোভায়া জেমলিয়া, সেভেরনায়া জেমলিয়া, নিউ সাইবেরিয়ান দ্বীপপুঞ্জ এবং চুকোতকা-তে এই সিস্টেমগুলি মোতায়েন করা হয়েছে। এগুলি ছাড়াও সর্বশেষ প্রযুক্তির ‘দিভনোমোরইয়ে’ নামের আরও একটা জ্যামিং সিস্টেম মোতায়েন করা হয়েছে, যা কিনা আকাশে ওড়া বিমানের রাডার ও ইলেকট্রনিক্স এবং স্যাটেলাইট যোগাযোগ অচল করে দিতে সক্ষম। মধ্যম-পাল্লার এই জ্যামিং সিস্টেমগুলি রুশ আর্কটিকের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলিকে নিরাপত্তা দেবার উদ্দেশ্যে মোতায়েন করা হয়েছে। এগুলিকে খুব দ্রুত মোতায়েন করা এবং সরিয়ে নেয়া সম্ভব। ‘ব্যারেন্টস অবজার্ভার’ বলছে যে, গত দুই বছর ধরেই স্ক্যান্ডিনেভিয়া অঞ্চলে বেসামরিক বিমান এবং বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রিতে স্যাটেলাইটের সাথে যোগাযোগ হারাবার ঘটনা ঘটছে। এবছরের মার্চে নরওয়ের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় রুশ সামরিক বাহিনীকে তাদের জ্যামিং অপারেশন থামাবার জন্যে অনুরোধ করেছে। তারা বলছেন যে, রাশিয়া তার নিজ ভূখন্ডে নিজেদের সক্ষমতা যাচাইয়ে যেকোন কিছুই করতে পারে, কিন্তু তা নরওয়ের আকাশের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করে নয়।





সবকিছুর মূলেই অর্থনীতি

রুশরা আর্কটিকে তাদের অর্থনৈতিক স্থাপনাগুলির নিরাপত্তা দিতেই এই সামরিকীকরণ করছে। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আশা করছেন যে, আর্কটিকের ‘নর্দার্ন সী রুট’ বা ‘এনএসআর’ দিয়ে মালামাল পরিবহণ ২০২৫ সাল নাগাদ ৮ কোটি টন হবে। ‘সেন্টার ফর হাই নর্থ লজিস্টিকস’এর হিসেবে ২০১৮ সালে ‘এনএসআর’ দিয়ে ২ কোটি ২ লক্ষ টন মালামাল পরিবাহিত হয়েছে, যা আগের বছর ছিল ১ কোটি ৭ লক্ষ টন। রুশ মিডিয়া ‘আরবিসি’ জানাচ্ছে যে, গত মার্চে রুশ ‘ন্যাচারাল রিসোর্সেস এন্ড এনভায়রনমেন্ট মিনিস্ট্রি’ আর্কটিকে মোট ১’শ ১৮টা প্রকল্পের এক বিশাল তালিকা সরকারের কাছে পাঠিয়েছে। তাদের হিসেবে এই প্রকল্পগুলিতে মোট বিনিয়োগ হবে ১০ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন রুবল বা ১’শ ৬৪ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার। এই পুরো বিনিয়োগই ‘এনএসআর’ বরাবর হবে। বর্তমানে চলমান ২৫টা প্রকল্পের মাঝে রয়েছে রুশ সরকারি কোম্পানি ‘গ্যাজপ্রম’এর ‘নভোপোর্টোভস্কই’ তেলের খনি; রুশ সরকারি কোম্পানি ‘রজফেফত’এর ‘ভ্যানকর’ তেলের খনি; সাইবেরিয়াতে ‘গ্যাজপ্রম’এর ‘আচিমগ্যাজ’ খনি; এবং সবচাইতে বড় ‘ইয়ামাল’ এলএনজি প্রকল্প। ২০১৬ সালের মে মাসে ভ্লাদিমির পুতিন ‘নভোপোর্টোভস্কই’ তেলের খনি থেকে প্রথমবারের মতো তেল উত্তোলন এবং পরিবহন উদ্ভোধন করেন। এই প্রকল্পে মোট ১’শ ৮৬ বিলিয়ন রুবল বা ৩ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ হয়েছে বলে বলেন তিনি।

রুশ ইহুদি বিলিয়নেয়ার লিওনিড মিখেলসন-এর কোম্পানি ‘নোভাটেক’-এর নেতৃত্বে ‘ইয়ামাল’ উপদ্বীপে চলছে ২৭ বিলিয়ন ডলারের এক বিশাল কর্মযজ্ঞ। এখান থেকে প্রাকৃতিক গ্যাস উত্তোলন করে তরলীকৃত করে ‘এলএনজি’ আকারে জাহাজে করে গ্যাস রপ্তানি করা হচ্ছে চীনে। ‘ইয়ামাল’এর মালিকারার ৫০ শতাংশ রয়েছে রুশ কোম্পানি ‘নোভাটেক’-এর হাতে। বাকিটার ২০ শতাংশ রয়েছে ফরাসী কোম্পানি ‘টোটাল’এর কাছে; আরও ২০ শতাংশ চীনা কোম্পানি ‘সিএনপিসি’এর কাছে; আর আর বাকি প্রায় ১০ শতাংশের মতো রয়েছে চীনা ‘সিল্ক রোড ফান্ড’এর কাছে। ‘ইয়ামাল’ বছরে প্রায় ১ কোটি ৬৫ লক্ষ টন এলএনজি উৎপাদন করতে সক্ষম। এলএনজি পরিবহণের জন্যে সেখানে তৈরি করা হচ্ছে ‘সাবেত্তা’ নামের এক সমুদ্রবন্দর। সেখান থেকে এলএনজি পরিবহণ করে চীন পর্যন্ত নিয়ে যাবার জন্যে দৈত্যাকৃতির একেকটা প্রায় ৩’শ মিটার লম্বা এবং ১ লক্ষ ১০ হাজার টন এলএনজি ধারণক্ষমতার ১৫টা জাহাজ তৈরি করা হচ্ছে, যেগুলি কিনা আড়াই মিটার পর্যন্ত পুরু বরফ ভেঙ্গে চলতে সক্ষম। ফিনল্যান্ডে ডিজাইন করা এই জাহাজগুলিকে তৈরি করছে দক্ষিণ কোরিয়ার কোম্পানি দাইউ শিপবিল্ডিং। জাহাজগুলির মালিকানা রয়েছে মূলতঃ আন্তর্জাতিক শিপিং কোম্পানিগুলির কাছে – ড্যানিশ-ক্যানাডিয়ান কোম্পানি ‘টিকে কর্পোরেশন’ এবং ‘চায়না এলএনজি’এর জয়েন্ট ভেঞ্চার (৬টা), গ্রীক বিলিয়নেয়ার জর্জ প্রকোপিউ-এর কোম্পানি ‘ডাইনাগ্যাস’ (৫টা), জাপানি কোম্পানি ‘এমওএল’ (৩টা) এবং রুশ কোম্পানি ‘সভকমফ্লট’ (১টা)।
 


‘ইয়ামাল’এর পাশেই ‘গাইদান’ উপদ্বীপে নেয়া হয়েছে ‘আর্কটিক এলএনজি-২’ নামের ২৫ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারের আরও একখানা মেগা প্রকল্প। এর উৎপাদন ক্ষমতা হবে বছরে ১ কোটি ৯৮ লক্ষ টন এলএনজি। রুশ কোম্পানি ‘নোভাটেক’ নিজেদের কাছে ৬০ শতাংশের মতো মালিকানা রেখে বাকিটা বিক্রি করার প্রচেষ্টায় রয়েছে। ‘রয়টার্স’ জানাচ্ছে যে, গত এপ্রিলে ‘নোভাটেক’ চীনের দু’টা কোম্পানির (‘সিএনওডিসি’ ও ‘সিএনওওসি’) কাছে ২০ শতাংশ মালিকানা বিক্রি করেছে। এর আগেই ২০১৯-এর শুরুতে ফরসী কোম্পানি ‘টোটাল’ কিনেছে ১০ শতাংশ মালিকানা। ‘নোভাটেক’ কোম্পানির মাঝেই আবার ‘টোটাল’এর ১৬ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। গত ডিসেম্বরেই খবর আসে যে, এই প্রকল্পে সৌদি কোম্পানি ‘আরামকো’, জাপানি কোম্পানি ‘মিতসুই’ এবং ‘রাশান ডিরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড’ বিনিয়োগ করতে চাইছে। ২০২২-২৩ সাল থেকে এই প্রকল্পে উৎপাদন শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে। ক’দিন আগেই ফরাসী কোম্পানি ‘টেকনিপ’কে এই প্রকল্প তৈরি করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বলে খবরে প্রকাশ।

চীনারা রুশ আর্কটিকে তেল-গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কারে বিনিয়োগ করছে। আর্কটিকে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে চীনা কোম্পানি ‘সিএনওওসি’এর সাথে রুশ কোম্পানি ‘গ্যাজপ্রম’এর এক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এর ফলে ইয়ামাল উপদ্বীপের পশ্চিমে কারা সাগরে ২০১৭ সাল থেকে কাজ করছে ১৫ হাজার টনের চীনা ড্রিলিং রিগ ‘নান হাই বা হাও’। ইতোমধ্যেই চীনারা সেখানে ১ দশমিক ২ ট্রিলিয়ন কিউবিক মিটার বা প্রায় ৪২ ট্রিলিয়ন কিউবিক ফিট গ্যাস আবিষ্কার করেছে।


২০১৮-এর মার্চে ‘আইস এক্সারসাইজ-২০১৮’ নামের মহড়ার সময় মার্কিন নৌবাহিনীর সাবমেরিন ‘ইউএসএস হার্টফোর্ড’ ও ‘ইউএসএস কানেকটিকাট’ এবং ব্রিটিশ রয়াল নেভির সাবমেরিন ‘এইচএমএস ট্রেনচ্যান্ট’ একত্রে আর্কটিক অঞ্চলের বরফ ফুঁড়ে উঠে আসে। এধরনের মিশনের মাধ্যমে পশ্চিমারা দক্ষিণ চীন সাগরে যে কাজটা করছে, সেটাই উত্তর মেরুতে করছে; আর তা হলো, পশ্চিমাদের ঘোষিত আন্তর্জাতিক সমুদ্রপথে নিজেদের সামরিক জাহাজ যেতে পারার অধিকার প্রতিষ্ঠা করা।

পশ্চিমা প্রত্যুত্তর

আর্কটিকে রাশিয়ার সামরিকীকরণের প্রত্যুত্তর হিসেবে পশ্চিমা দেশগুলিও আর্কটিক এলাকায় মহড়া চালাচ্ছে। স্ক্যান্ডিনেভিয়ার নরওয়ে এবং ফিনল্যান্ডে মার্কিন এবং ব্রিটিশ সেনারা নিয়মিত মহড়া চালাচ্ছে। সেখানে তাপমাত্রা শূণ্যের ৩০ ডিগ্রী নিচে পর্যন্ত নেমে যায়। গত বছরের অক্টোবর-নভেম্বরে ন্যাটো ‘ট্রাইডেন্ট জাঙ্কচার’ নামে এক সামরিক মহড়া করে, যাতে অংশ নেয় ৫০ হাজার সৈন্য, ৬৫টা যুদ্ধজাহাজ, ২’শ ৫০টা যুদ্ধবিমান, ১০ হাজার গাড়ি। ১৯৮৭ সালের পর থেকে প্রথমবারের মতো মার্কিন নৌবাহিনী আর্কটিক অঞ্চলের কাছাকাছি একটা বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ পাঠায়। ন্যাটোভুক্ত দেশগুলি ছাড়াও এতে অংশ নেয় সুইডেন এবং ফিনল্যান্ড। ‘দ্যা ন্যাশনাল ইন্টারেস্ট’ ম্যাগাজিনের এক লেখায় ‘ইউএস নেভাল ওয়ার কলেজ’এর ম্যারি থম্পসন বলছেন যে, এধরনের মহড়া সংজ্ঞাগতভাবেই সীমাবদ্ধ। এই মহড়ার কারণে অত্র এলাকার সামরিক ব্যালান্সে স্থায়ী কোন পরিবর্তন সংগঠিত হবে না; স্থায়ী কোন সামরিক স্থাপনাও তৈরি হবে না। আবার এর ফলশ্রুতিতে বরফাচ্ছাদিত এলাকায় চলাচলের জন্যে কোন আইসব্রেকারও তৈরি করা হবে না।

২০১৩ সালের অগাস্টে মার্কিন নৌবাহিনীর পারমানবিক শক্তিচাইল সাবমেরিন ‘ইউএসএস সীউলফ’ যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম উপকূলের ওয়াশিংটনে রাজ্যের ব্রেমারটন নৌঘাঁটি থেকে যাত্রা করে এক মাস পর নরওয়ের হাকন্সভার্ন নৌঁঘাঁটিতে গিয়ে নোঙ্গর করে; যেখানে নরওয়েতে মার্কিন রাষ্ট্রদূত ব্যারি হোয়াইট সাবমেরিন পরিদর্শন করেন। মানচিত্রের দিকে তাকালেই বোঝা সম্ভব যে সাবমেরিনটার প্রশান্ত মহাসাগর থেকে ইউরোপ যাবার একমাত্র পদ্ধতিই হলো উত্তর মেরুর বরফের নিচ দিয়ে যাওয়া! ২০১৮-এর মার্চে ‘আইস এক্সারসাইজ-২০১৮’ নামের মহড়ার সময় মার্কিন নৌবাহিনীর সাবমেরিন ‘ইউএসএস হার্টফোর্ড’ ও ‘ইউএসএস কানেকটিকাট’ এবং ব্রিটিশ রয়াল নেভির সাবমেরিন ‘এইচএমএস ট্রেনচ্যান্ট’ একত্রে আর্কটিক অঞ্চলের বরফ ফুঁড়ে উঠে আসে। এধরনের মিশনের মাধ্যমে পশ্চিমারা দক্ষিণ চীন সাগরে যে কাজটা করছে, সেটাই উত্তর মেরুতে করছে; আর তা হলো, পশ্চিমাদের ঘোষিত আন্তর্জাতিক সমুদ্রপথে নিজেদের সামরিক জাহাজ যেতে পারার অধিকার প্রতিষ্ঠা করা।

সাবমেরিনের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র আর্কটিকে তার শক্তি প্রদর্শন করতে পারবে নিশ্চিত, তবে পানির উপরের ভাসমান জাহাজও তার দরকার হবে। আর ভাসমান জাহাজকে আর্কটিক অঞ্চলে চালাতে হলে পুরু বরফের আচ্ছাদন ভেঙ্গে চলার মতো আইসব্রেকার দরকার হবে। মার্কিন কোস্ট গার্ডের হিসেবে ২০ হাজার ব্রেকহর্সপাওয়ার বা এর চাইতে বেশি শক্তিশালী আইসব্রেকারের পক্ষেই শুধুমাত্র আর্কটিকে কাজ করা সম্ভব। আর্কটিক যে এতকাল যুক্তরাষ্ট্রের জন্যে তেমন গুরুত্ব বহণ করেনি, তার প্রমাণ হলো যুক্তরাষ্ট্রের হাতে রয়েছে মাত্র ৪টা আইসব্রেকার, যা কিনা আর্কটিক অঞ্চলে চলাচলে সক্ষম। ৪৩ বছর পর গত ফেব্রুয়ারিতে অবশেষে মার্কিন সরকার দু’টা আইসব্রেকার তৈরি করার জন্যে অর্থের সঙ্কুলান করেছে। কানাডার ৫টা আইসব্রেকারের মাঝে মাত্র দু’টা আর্কটিকে চলতে পারে। তারা বর্তমানে ৬টা হেভি আইসব্রেকার তৈরি করছে, যার প্রথমটা তৈরি প্রায় সম্পন্ন হয়েছে। ফিনল্যান্ডের ১০টা আইসব্রেকারের মাঝে মাত্র ৩টা আর্কটিকের জন্য উপযোগী; সুইডেনের ১টা; আর জাপানের ১টা।
‘এনএসআর’এর নিরাপত্তা নিশ্চিতে রাশিয়া কিছু আইসব্রেকারকে অস্ত্রসজ্জিতও করছে। বর্তমানে নির্মীয়মান ‘প্রজেক্ট ২৩৫৫০’ প্রকল্পের জাহাজগুলি প্যাট্রোল জাহাজ হলেও এগুলি আর্কটিকে বরফ ভেঙ্গে চলার মতো করে তৈরি করা হচ্ছে। এগুলিকে কামান এবং ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে সজ্জিত করা হচ্ছে

 
অন্যদিকে রাশিয়ার মোট ৪৬টা আইসব্রেকারের মাঝে আর্কটিকে চলাচলের জন্যে রয়েছে ২৬টা; যার মাঝে ৬টা আবার পারমানবিক শক্তিচালিত হেভি আইসব্রেকার। আর্কটিকে বরফে কোন একটা জাহাজ আটকা পড়ে গেলে পারমাণবিক আইসব্রেকারই সবচাইতে নির্ভরযোগ্য। কারণ তেলে-চালিত হলে সেটাকে আবার তেল নিতে হবে। রুশ আর্কটিকের হাজার মাইলের বরফাচ্ছাদিত অঞ্চলে জ্বালানির ব্যবস্থা করাটা আরেক চ্যালেঞ্জ। আরও ১১টা আইসব্রেকার তৈরি করছে রাশিয়া; যার মাঝে পারমাণবিক আইসব্রেকার রয়েছে কমপক্ষে ৩টা। রুশ আর্কটিকের গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক স্থাপনা এবং সামরিক ঘাঁটিগুলিকে জ্বালানি, খাবার-দাবার এবং অন্যান্য রসদ সরবরাহ করে বছরব্যাপী চালু রাখতে আইসব্রেকারের কোন বিকল্প নেই। ‘এনএসআর’এর নিরাপত্তা নিশ্চিতে রাশিয়া কিছু আইসব্রেকারকে অস্ত্রসজ্জিতও করছে। বর্তমানে নির্মীয়মান ‘প্রজেক্ট ২৩৫৫০’ প্রকল্পের জাহাজগুলি প্যাট্রোল জাহাজ হলেও এগুলি আর্কটিকে বরফ ভেঙ্গে চলার মতো করে তৈরি করা হচ্ছে। এগুলিকে কামান এবং ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে সজ্জিত করা হচ্ছে বলেও খবরে প্রকাশ। এগুলি ছাড়াও আর্কটিকে চলার জন্যে রাশিয়া স্পেশালিস্ট ট্যাঙ্কার জাহাজ, মাল্টি-পারপাস জাহাজ, আর্মামেন্ট সাপোর্ট শিপ এবং অন্যান্য ধরনের জাহাজ তৈরি করছে, যেগুলি ঐ অঞ্চলে রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে সহায়তা করবে। পশ্চিমাদের কাছে এগুলির ধারেকাছেও কোনকিছু নেই।

পশ্চিমা দেশগুলির আর্কটিকে তেমন কোন স্থাপনা নেই বলে তাদের হেভি আইসব্রেকারের দরকারও কম। আইসব্রেকারে বিনিয়োগই বলে দিচ্ছে কে আর্কটিককে কিভাবে দেখছে। রাশিয়ার জন্যে আর্কটিক অর্থনৈতিকভাবে যতটা গুরুত্বপূর্ণ, পশ্চিমা দেশগুলির জন্যে কি ততটা গুরুত্বপূর্ণ? পশ্চিমারা আর্কটিকে শুধুমাত্র প্রভাব ধরে রাখতে সামরিক খাতে কতটা বিনিয়োগ করবে? কতগুলি আইসব্রেকারই বা তারা তৈরি করবে, যেগুলির কাজ হবে শুধুমাত্র রাশিয়াকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করা? কোন ধরনের অর্থনৈতিক সুবিধা পাবার আশা ছাড়াই পশ্চিমারা আর্কটিকে স্থায়ী স্থাপনা তৈরি করবে কি?

আর্কটিকের ভবিষ্যৎ কি?

রাশিয়া নিজেকে বিশ্বশক্তির কাতারে নিয়ে যেতে তার অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে চাইছে। সেই লক্ষ্যে আর্কটিকে বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ নিয়ে আসছে রাশিয়া। বিনিয়োগকারীরাও চাইবে তাদের বিনিয়োগের সুরক্ষা হোক। তাই আর্কটিকের অর্থনৈতিক স্থাপনাগুলির নিরাপত্তা দেবার রুশ প্রচেষ্টাকে বিনিয়োগকারীরা প্রশ্নবিদ্ধ করবে না; বরং নিরাপত্তার ব্যাপারগুলি বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের সুরক্ষা দেবার রুশ সক্ষমতাকেই তুলে ধরবে। রুশ আর্কটিকে বিনিয়োগের এক বিশেষ দিক হলো এর উৎপাদিত বেশিরভাগ খনিজ সম্পদ চীনে রপ্তানি হবে। আর চীনা অর্থনীতির সাথে জড়িত হয়ে দুনিয়ার বড় বড় বিনিয়োগকারীরাও আরও বিত্তশালী হতে চাইছেন। যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করতে চাইলেও প্রভাবশালী ব্যবসায়ী গোষ্ঠীরা বরং ‘এনএসআর’কে ঝামেলা-মুক্ত দেখতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবে। তবে ‘এনএসআর’এর গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে পশ্চিমাদের ব্যাপক বিনিয়োগ এ-ও বলে দিচ্ছে যে তারা রুশ আর্কটিককে একেবারে চীনের হাতে ছেড়ে দিতে চাইছে না। পশ্চিমাদের বিনিয়োগের কারণেই আর্কটিকে চীনা প্রভাব নিয়ন্ত্রণে থাকবে, যা কিনা রাশিয়াকেও নাখোশ করবে না। অন্যদিকে কানাডার মাঝ দিয়ে প্রবাহিত ‘নর্থ-ওয়েস্ট প্যাসেজ’ যাতে চীনা প্রভাবের মাঝে পড়ে না যায়, সেদিকেও খেয়াল রাখবে যুক্তরাষ্ট্র। এই প্যাসেজ ব্যবহার করে চীন থেকে ইউরোপে জাহাজ যেতে পারবে অনেক তাড়াতাড়ি। কানাডার উপর প্রভাব খাটাতে পারলে এটা ‘এনএসআর’এর আরেকটা বিকল্পও হতে পারে চীনের জন্যে। আর একারণেই কানাডাকে নাখোশ করে হলেও ‘নর্থ-ওয়েস্ট প্যাসেজ’এর আন্তর্জাতিকীকরণ চাইবে যুক্তরাষ্ট্র।

চীনও চাইছে তার জ্বালানি চাহিদার একটা অংশকে মার্কিন নৌশক্তির নিয়ন্ত্রিত অঞ্চল থেকে দূরে সরিয়ে নিতে। ‘এনএসআর’এর মাধ্যমে এলএনজি-বাহী জাহাজগুলি রুশ সামরিক পাহাড়ায় প্রশান্ত মহাসাগর পর্যন্ত পৌঁছাতে পারবে। আর এভাবেই রাশিয়ার এই নৌ-রুট হয়ে উঠবে গুরুত্বপূর্ণ। রাশিয়া এর আগে কখনোই গুরুত্বপূর্ণ কোন নৌপথের নিয়ন্ত্রণে ছিল না। ‘গ্লোবাং ওয়ার্মিং’এর কারণে খুলে যাওয়া ‘এনএসআর’ রাশিয়াকে একটা ম্যারিটাইম রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিতি দিতে যাচ্ছে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে রুশ পত্রিকা ‘দ্যা মস্কো টাইমস’এ এক লেখায় অস্ট্রেলিয়ার ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ‘সেন্টার ফর ইউরোপিয়ান স্টাডিজ’এর এলিজাবেথ বুকানান বলেন যে, ইউরোপ এবং এশিয়ার সংযোগ হিসেবে ‘নর্দার্ন সী রুট’ বা ‘এনএসআর’ রাশিয়াকে আর্কটিকে শক্তিশালী অবস্থানে নিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলছেন যে, ‘এনএসআর’এর ব্যবহার থেকে রাশিয়া যতটা না ট্যারিফ আয় করবে, তার চাইতে বড় ব্যাপার হবে পৃথিবীর একটা গুরুত্বপূর্ণ সমুদ্র রুটের উপরে রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পারা, যা কিনা হবে ইতিহাসে প্রথম।


No comments:

Post a Comment