Monday, 24 March 2014

বঙ্গোপসাগরে অস্ত্রের ঝনঝনানি

২৪ মার্চ ২০১৪


http://www.ispr.gov.bd/newsfile/4d88991daa93e6cc4ad5cdd142c40f9b.jpg



সাগর বক্ষ চিরে ছুটে চলেছে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর দ্রুতগামী মিসাইল বোট বিএনএস উত্তাল আর বিএনএস দুর্বারনির্দেশ এলো কমান্ড শিপ অত্যাধুনিক ফ্রিগেট বিএনএস বঙ্গবন্ধু থেকে; সাথে সাথে গগন বিদারী শব্দে আগুনের শিখা আর ধোঁয়ার চাদরে ঢেকে গেল সাগর। ছোট্ট জাহাজগুলি তাদের শক্তি প্রদর্শন করলো; ছুঁড়ে দিল আকাশে তাদের শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্রগুলিকে। মুহুর্তের মধ্যে কিছু বুঝে ওঠার আগেই দিগন্তের ওপাড়ে হারিয়ে গেল ক্ষেপণাস্ত্রগুলি। কিছুক্ষণ পরে বিএনএস বঙ্গবন্ধু থেকে উড়ে যাওয়া আগুস্টা এ-১০৯ হেলিকপ্টার নিশ্চিত করলো লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস হয়েছে। সাথে সাথে শোনা গেল উল্লাস! এটা হলো মাত্র কিছুদিন আগে ১৭ই ফেব্রুয়ারী শেষ হয়ে যাওয়া বাংলাদেশ নৌবাহিনীর বার্ষিক মহড়া এক্সারসাইজ সী থান্ডার ২০১৪-এর শেষ দিনের একটা ঘটনার বর্ণনা। প্রতিবছরই এই মহড়া হয়। তবে ২০০৮ সালের পর থেকে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষাটা এই এক্সারসাইজের একটা প্রধান আকর্ষণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সমরের জন্য নিজেদের প্রস্তুত রাখা যেন আসল সময়ে ক্ষেপণাস্ত্র ফায়ার করতে যেয়ে কোন সমস্যায় পড়তে না হয়। সত্যিকারের ক্ষেপণাস্ত্র ফায়ার না করলে বোঝা তো যাচ্ছে না যে সেটা আসলেই ঠিকমতো কাজ করছে কিনা। ব্যাপারটা খুবই স্বাভাবিক মনে হলেও এই লাইভ মিসাইল ফায়ারিং-এর আরেকটা দিক আছে যেটা চিন্তা করে দেখার মত।

স্নায়ুচাপ

ইরানের সামরিক বাহিনীর মহড়া প্রায় সবসময়েই খবরে স্থান পায়। অন্যান্য মহড়াও স্থান পায়; তবে ইরানের ক্ষেত্রে সেটা বেশি। আবার, মাত্র কিছুদিন আগে ইউক্রেনের সীমান্তে রাশিয়া সামরিক মহড়ার আয়োজন করে। রাশিয়া বলেছে যে এটা রুটিন একটা মহড়া। কিন্তু এই মহড়া এমন সময়ে হলো যখন ইউক্রেনকে ঘিরে রাশিয়া আর পশ্চিমের ব্যাপক টানাপোড়েন চলছে। কাজেই সেই মহড়া শুধু রাশিয়ার সামরিক বাহিনীকে প্রস্তুত রাখার জন্যে আয়োজন করা হয়েছিল বলে মনে করা যায় না। সেই মহড়ার একটা মেসেজ বা বার্তাও ছিল। ঠিক একইভাবে ইরানের ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা তাই। যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ইরানের পারমাণবিক প্রকল্প নিয়ে বিরোধ বেশকিছুদিনের। তাই ইরানের প্রতিটি মহড়ার গুরুত্ব প্রচুর। ইরানও এটা জানে। আর তাই তারাও মহড়াগুলি সবাইকে জানান দিয়ে ঘটা করে করে। তাদের মহড়াতে দরকারের চাইতে মোটামুটি বেশ খানিকটা বেশিই লাইভ ফায়ারিং করা হয়। একসাথে ৫-৭টা ব্যালিস্টিক মিসাইল ছোঁড়া হয়; সেটা ধারণ করা হয় অনেকগুলি ক্যামেরা দিয়ে। ব্যাপার একটাই একটা মেসেজ ছেড়ে দেওয়া; তাদের প্রতি, যারা দেশটির সাথে দ্বন্দে জড়ানোর চিন্তা করছে। উত্তর কোরিয়া, ভারত, পাকিস্তান সকলেরই ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা মানেই একটা ইন্টারন্যাশনাল নিউজ। কারণ প্রতি ক্ষেত্রেই নিউটনের তৃতীয় সূত্রের মত একটা পালটা মেসেজ আসার সম্ভাবনা থেকে যায়। এটাই স্নায়ুযুদ্ধ; অস্ত্রের ঝনঝনানি যুদ্ধ না করেই। পৃথিবীতে এখন এইরকম স্নায়ুযুদ্ধ চলছে অনেকগুলি ভারত-পাকিস্তান; চীনকে নিয়ে জাপান-তাইওয়ান-যুক্তরাষ্ট্র; ইরানের সাথে যুক্তরাষ্ট্র, ইত্যাদি। এই স্নায়ুযুদ্ধগুলি জন্ম দিচ্ছে বিলিয়ন-বিলিয়ন ডলারের অস্ত্রের প্রতিযোগিতা; মুহুর্মুহু সৃষ্টি করছে সঙ্ঘাতের ক্ষেত্র; বাড়াচ্ছে স্নায়ুচাপ। তাহলে বিএনএস উত্তাল আর বিএনএস দুর্বারের ক্ষেপণাস্ত্র উতক্ষেপণ এখানে কোথায় দাঁড়াচ্ছে? সেটাই দেখা যাক। 

https://fbcdn-sphotos-a-a.akamaihd.net/hphotos-ak-ash3/t1.0-9/1623732_669576156417876_932240927_n.jpg
মিয়ানমার নৌবাহিনী গত ১লা মার্চ তারা তাদের লাইট ফ্রিগেট (কর্ভেট) আনাওইয়াহতার থেকে জাহাজ ধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালায়

পালটা মেসেজ

কোন দেশের সাথে বাংলাদেশকে যদি যুদ্ধের ময়দানে যেতে হয়, তাহলে সেই দেশের নাম মিয়ানমার বা ভারত হবার সম্ভাবনাই বেশি; কারণ এই দুই দেশের সাথেই আমাদের সীমান্ত রয়েছে; রয়েছে অমীমাংসীত বিষয়যদিও সসস্ত্র বিবাদ কখনোই কাম্য নয়, তবু দরকারের সময়ে হাত তুলে আত্মসমর্পণের জাতি আমরা যে নই সেই প্রমাণ আমরা রেখেছি। আর সেই অবাঞ্ছিত ভবিষ্যতের বিরূদ্ধে প্রস্তুতির জন্যেই এইসব মহড়ার আয়োজন। ভারত একটা শক্তিশালী রাষ্ট্র; আর তাদের নৌবাহিনী দাপিয়ে বেড়াচ্ছে পুরো ভারত মহাসাগর। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ও শক্তিশালী নৌবহরের একটি এখন ভারতের। আমাদের এখনো ভারতকে অন্তত সমুদ্রে ভয় দেখানোর সময় আসেনি, যদিও বাংলাদেশের সাবমেরিন কেনা নিয়ে ভারতীয় নৌবাহিনীর কর্মকর্তারা ভ্রু কুঁচকেছেন। বাকি থাকছে আরেক প্রতিবেশী মিয়ানমার। আমাদের সামরিক মহড়ার মাধ্যমে কারও কাছে যদি মেসেজ যায়, সেটা মিয়ানমার হবার সম্ভাবনা সবথেকে বেশি। আর আমরা ইচ্ছে করি আর না করি, মেসেজটা গেছেও বৈকি। মিয়ানমারের নৌবাহিনী ৬ই মার্চ এক বিবৃতিতে জানায় যে গত ১লা মার্চ তারা তাদের লাইট ফ্রিগেট (কর্ভেট) আনাওইয়াহতার থেকে জাহাজ ধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে; পরীক্ষার ছবিও প্রকাশ করেছে সকলকে জানান দেবার জন্যতাদের নৌবাহিনী প্রধান জেনারেল থেট শোয়ে নিজে সেই পরীক্ষা অবলোকন করেছেন। তারা একই সাথে এই ঘোষনাও দিয়েছেন যে ২৭শে মার্চ মিয়ানমারের ৬৯তম সসস্ত্র বাহিনী দিবসে তারা বড় আকারের একটা নৌ মহড়ার আয়োজন করবেন। জনসন্মুখে না বললেও এই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা যে কারো জন্য মেসেজ দিচ্ছে সেটা বলাই বাহুল্য। 

মিয়ানমারের নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি অত্যাধুনিক ৪৯মিটার লম্বা 'স্টিলথ' ডিজাইনের গাইডেড-মিসাইল কর্ভেট
মিয়ানমারের নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি অত্যাধুনিক 'স্টিলথ' ডিজাইনের ফ্রিগেট 'কায়ান সিথ থার'।
বিশ্বাস করা দুষ্কর যে এটা তৃতীয় বিশ্বের একটি দেশে তৈরি

প্রতিযোগিতা

২০০৮ সালে নভেম্বরে সেন্ট মার্টিনের দক্ষিণে গ্যাস রিগ বসানো নিয়ে দুই দেশের মধ্যে যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছিল, তা কিন্তু স্নায়ুযুদ্ধের দিকে মোড় নেওয়া থেকে দূরে নেই। ২০০৯ সালে বাংলাদেশ নৌবাহিনী ১০ বছরের পরিকল্পনা দেয় সরকারের কাছে। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী বাংলাদেশ নৌবাহিনী গত ৫ বছরে যে শক্তি অর্জন করেছে, তা এর আগের ২৫ বছরেও অর্জন করতে পারেনি। আমরা বঙ্গোপসাগরের স্ট্র্যাটেজিক গুরুত্ব বাড়ার কথা অনেক বলেছি, কিন্তু ভেঙ্গে বলার চেষ্টা করিনি শক্তিশালী নৌবাহিনী কার বিরূদ্ধে প্রতিরোধ গঠন করবে ভারতের বিরূদ্ধে? নাকি যুক্তরাষ্ট্রের বিরূদ্ধে? নাকি অন্য কেউ? অবশ্যই এখন যদি আমরা বলা শুরু করি যে ভারতীয় নৌবহরকে টেক্কা দেব আমরা, তাহলে আমাদের নিজেদের না খেয়ে নৌবহর বানাতে হবে। তাহলে কাদের মাথায় রেখে এই নৌবহর তৈরি করা হচ্ছে সেটা বুঝতে বাকি থাকেনা। বাংলাদেশ নৌবাহিনী তাদের প্রথম নিজস্ব যুদ্ধজাহাজ তৈরি করেছে ২০১২-১৩ সালে। এই জাহাজগুলি হলো ৫০ মিটার লম্বা প্যাট্রোল বোট। আমরা এখন চিন্তা করছি আরও বড় এবং আরও শক্তিশালী যুদ্ধজাহাজ তৈরি করবো ৬৪ মিটার লম্বা মিসাইল-সজ্জিত বিএনএস দুর্জয়ের মত জাহাজ, যা কিনা চীন থেকে আমরা তৈরি করে এনেছি। এরপরে আরও বড় যুদ্ধজাহাজ ৯৫ মিটার লম্বা কর্ভেট (ছোট ফ্রিগেট), যেগুলির দুটি এখন চীনে তৈরি হচ্ছে। এরপরে হয়তো ১০০ মিটারের চাইতে বড় ফ্রিগেট। তবে এগুলি এখনো বাস্তবতায় রূপ নেয়নি। এটা হচ্ছে আমাদের স্বনির্ভরতার বর্তমান অবস্থা অন্যদিকে মিয়ানমার তাদের নৌবাহিনীর সবচেয়ে বড় ফ্রিগেট অং জে-ইয়া তৈরি করেছে ২০০৮ সালে। ১০৮ মিটার লম্বা এই অত্যাধুনিক যুদ্ধজাহাজ বানাবার পরে এর চাইতেও আরও আধুনিক যুদ্ধজাহাজ তারা তৈরি করে নৌবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করেছে। ১৯৯৬ সাল থেকে ২০১২ সালের মাঝে তারা ৪৫ মিটার লম্বা ২০টি যুদ্ধজাহাজ তৈরি করেছে যেগুলির ১১টি সজ্জিত হয়েছে চীনে তৈরি অত্যাধুনিক মিসাইল দিয়ে। ৭৭ মিটার লম্বা দুটা কর্ভেটও তারা তৈরি করেছে ফিগেট বানাবার আগেই, যার একটি থেকে এই মাসে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করা হয়েছে। তাদের সবশেষ বানানো ফ্রিগেট কায়ান সিথথার আর ৪৯ মিটার লম্বা মিসাইল বোটের ডিজাইন দেখলে বিশ্বাস করা দুষ্কর যে সেগুলি মিয়ানমারের মত তৃতীয় বিশ্বের একটা দেশে তৈরি। বলা বাহুল্য যে নৌবাহিনীর স্বয়ংসম্পূর্ণতার দিক থেকে মিয়ানমার আমাদের চাইতে বহু বছর এগিয়ে আছে। তাদের নৌবহরের গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধজাহাজগুলির বেশিরভাগই মোটামুটি নতুন ১৫ বছর বা তার চাইতেও কম পুরোনো। আর আমাদের নৌবাহিনীর জাহাজগুলি মোটামুটি গড়ে ২৮ বছরের পুরোনো। তবে আমাদের নৌবাহিনীর অপারেশনাল রেডিনেস অনেক ভালো। আমরা জানি কিভাবে ৪০ বছরের পুরোনো একটা জাহাজ কার্যক্ষম রাখতে হয়। সংখ্যার দিক থেকেও আমরা মিয়ানমারের চাইতে এগিয়ে নেইআমাদের নৌবাহিনীর ৯টা শক্তিশালী জাহাজ (ফ্রিগেট এবং কর্ভেট) ৪৮টা জাহাজ ধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র বহণ করছে (নৌবাহিনীর সবচেয়ে বড় ফ্রিগেট বিএনএস সমুদ্র জয়ে এখনো মিসাইল বসানো হয়নি) অপরদিকে মিয়ানমারের ৮টা জাহাজে রয়েছে ৪৮টা ক্ষেপণাস্ত্র। আমাদের ৯টা মিসাইল বোটে বসানো আছে ২৬টা মিসাইল; আর মিয়ানমারের ১৭টা বোটে বসানো আছে ৫৬টা মিসাইল। মিয়ানমার এখনো বহির্বিশ্ব থেকে অনেকটাই নিজেকে গুটিয়ে রেখেছে। আর সামরিক বাহিনীর খবরাখবরের ক্ষেত্রে তো তা আরও বেশি। তাদের জবাবদিহিতা আমাদের চাইতে অনেক কমকাজেই কাউকে না জানিয়েই সামরিক ক্ষেত্রে খরচ করা হয়। তাদের সামরিক ক্রয় বেশিরভাগক্ষেত্রেই থাকে গোপনীয়তার চাদরে ঢাকা। তাদের অনেক কিছুই আমরা এখনো জানার চেষ্টা করছি। অনেক বছর বহির্বিশ্ব থেকে আলাদা থাকার কারণে তাদের নিজেদের স্বনির্ভরতা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা খোলা অর্থনীতিতে থেকে এখনো বাইরের সাহায্য ছাড়া এগুতে পারিনা। সেটা জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বেশ বড় একটা প্রতিবন্ধকতাই বটে। 

দিকনির্দেশনা

আমরা আমাদের নৌবাহিনীর পেছনে গত পাঁচ বছরে এত খরচ করার পরেও এই প্রতিবেশীর থেকে এগিয়ে থাকতে পারিনি। আবার সংখ্যায় মিয়ানমারের বিমান বাহিনী আমাদের বিমান বাহিনী থেকে বেশি শক্তিশালী। আমাদের বিমান বাহিনীতে প্রধান জঙ্গী বিমান ৮টি মিগ-২৯; মিয়ানমারের যা রয়েছে ৩২টি। চীনা এফ-৭ বিমানও সংখ্যায় আমাদের চাইতে বেশি। তাদের দুটি মিগ-২৯ বিমানকে ইস্রাইলের সহযোগিতায় জাহাজ-ধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র বহনে সক্ষম করা হয়েছে। এই বিমান শক্তি সম্ভাব্য সমুদ্রের যুদ্ধকে বিশালভাবে প্রভাবিত করবে। আমাদের বাহিনীর ট্রেনিং বিশ্বমানের। তবে আমরা অন্যদের ট্রেনিং নিয়ে কটাক্ষও করতে পারি না। যাদের সাথে সংঘর্ষের সম্ভাবনা আমরা উড়িয়ে দিতে পারি না, তাদের সাথে একটা সমতা রাখাটা খুব জরুরী; যাতে তারা আলোচনা ছেড়ে অস্ত্র ব্যবহারে সাহসী না হয়ে উঠে। কিন্তু গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে আমাদের জনগণের চাহিদা পূরণ না করে অস্ত্রের পিছনে খরচেও আমরা মনোনিবেশ করতে পারি না। আবার সমস্যা হলো একটা উগ্রপন্থী সামরিক জান্তাকে বিশ্বাস করা কঠিন। আমরা সঙ্ঘাত এড়িয়ে চলার চেষ্টা করলেও সঙ্ঘাত আমাদের ঘাড়েও এসে পড়তে পারে। তাই তৈরি থাকা ছাড়া গত্যন্তরও নেই। মিয়ানমারের সাথে সমুদ্রসীমা ঠিক হয়েছে ঠিকই, তবে যতদিন রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান না হবে, ততদিন সঙ্ঘাতের ভয় থাকছেই। এই উভয়সঙ্কটে আমাদের একটা ভালো স্ট্র্যাটেজিক দিক নির্দেশনা প্রয়োজন। সেই দিকনির্দেশনাই ঠিক করবে আগামীতে কাদের সাথে আমাদের কলহের সম্ভাবনা বেশি, এবং সেই কলহে সাফল্য পেতে হলে আমাদের কোন দিকে এগুতে হবে। নৌবাহিনী একটা জাহাজ সমুদ্রে ছাড়া হয় ৩০-৪০ বছরের জন্যে। কাজেই একটা জাহাজের পরিকল্পনা করার আগে আগামী অন্তত ১৫-২০ বছরের একটা দূরদৃষ্টি আমাদের থাকতে হবে। এসব পরিকল্পনায় ট্যাক্সপেয়ারদের অনেক টাকা খরচ হবে; প্রশ্ন আসবে। তাই সকলকে সাথে নিয়ে এগুলে জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত না হয়ে বরং সংহত হবে জাতীয় ইস্যুতে বিভেদের চাইতে খারাপ কিছু নেই। কেউই চায় না আমাদের দেশ পিছিয়ে থাকুক; সামরিক বাহিনীর ক্ষেত্রে তো নয়ই, কারণ তারা আমাদের দেশের গৌরবআর জাতীয় গৌরবের ব্যাপারে মানুষ জীবন দিয়ে হলেও গৌরবের পথই বেছে নেবে।

1 comment: