Wednesday 8 August 2018

লাক্সারি ইয়ট, নাকি প্রাইভেট নৌবাহিনী?

০৮ অগাস্ট ২০১৮

সমাজের কিছু লোকের হাতে অত্যধিক পরিমাণ সম্পদ চলে যাবার ফলে লাক্সারি ইয়টের মতো জাহাজের আবির্ভাব হয়েছে। এখন এর সাথে যুক্ত হচ্ছে ইয়ট সাপোর্ট ভেসেল। হল্যান্ডের ডামেন শিপইয়ার্ডের তৈরি এমনই এক জাহাজ ৬৭ মিটার লম্বা 'গারচন' (ছবিতে সামনের জাহাজ), যা পিছনের সুপারইয়টকে সহায়তা দেয়াই এর কাজ।  



সম্পদের অসম বন্টনের নেপথ্যে... 

সমাজের কিছু মানুষের হাতে এখন বিপুল পরিমাণ সম্পদ। পুঁজিবাদ সমাজের কিছু লোকের হাতে সকল সম্পদ তুলে দিয়ে বিশ্বব্যাপী চরম দারিদ্র্যের জন্ম দিয়েছে। এই সম্পদশালী লোকগুলি এখন তাদের সম্পদ দিয়ে কি করবে, তা বুঝে উঠতে হিমসিম খাচ্ছে। একটা মানুষ কতোই বা খেতে পারে; কয়টা জামা বা জুতা কিনতে পারে? হ্যাঁ, অনেকগুলি বাড়ির মালিক সে হতে পারে। একসময় সে চাইবে তার বাড়িটিকে আরও বিলাসিতায় ভরে ফেলতে। কিন্তু সেই বিলাসিতার তো কোন শেষ নেই। পাঁচ-তারকা স্ট্যান্ডার্ডের উপরে কোন কিছু থাকলে সেটাও তার দরকার। গাড়ি তো এখন অনেকেরই আছে; তার দরকার সবচাইতে দামি গাড়িটা। সেটাও একসময় তার ইচ্ছাকে খুশি করতে পারবে না। কেউ কেউ প্রাইভেট বিমান কিনেছে। হ্যাঁ, যাতায়াতের সুবিধার জন্যে তো অবশ্যই। তবে এখানে নিজের স্ট্যাটাসটাও গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে অনেকের কাছেই। নিজের বিজনেস জেটে করে ভ্রমণের সময়ে অতিথিদের মনে দাগ কাটার সকল চেষ্টাই তার থাকে। মান-ইজ্জত বলে তো কথা!

আরও কিছু লোক যাচ্ছে সমুদ্রের মাঝে; জাহাজ কিনছে সে। পাঁচ-তারকা হোটেলকে এবার সে নিয়ে গেছে সমুদ্রের মাঝে। সেই জাহাজে অতিথিদের আপ্যায়ন করে সন্মান কুড়াবার চেষ্টা তার। জাহাজগুলির মাঝেও সবচাইতে ভালো এবং সবচাইতে বড়টা তার চাই; সবচাইতে বেশি বিলাসবহুল। বিলাসিতার আবার শেষ নেই। জাহাজের উপরে হেলিকপ্টার তো স্বাভাবিক ব্যাপার। স্পীডবোটে রাইড; সেইলিং বোট চালনা; মাছ ধরা; জেট-স্কি চালনা; প্যারা গ্লাইডিং; স্কুবা ডাইভিং। এর সাথে যোগ হয়েছে সাবমেরিন! পানির নিচের জগত নিজ চোখে দেখার জন্যে এই সাবমেরিন। কিছু জাহাজে ল্যান্ডিং ক্রাফট বা হভারক্রাফটও থাকছে, যাতে করে গাড়ি বা মোটর সাইকেল নিয়ে জাহাজ থেকে স্থলে অবতরণ করা যায়। কিছু জাহাজে ছোটখাটো ফ্লাইং বোট বহণ করা হচ্ছে। এতসব যানবাহন এবং যন্ত্রপাতির জন্যে যে টেকনিক্যাল জ্ঞান এবং রক্ষণাবেক্ষণ দরকার, তার জন্যে তার জাহাজে স্পেশালিস্ট লোকজন বহণ করতে হচ্ছে। এতকিছু এক জাহাজে ঢোকানো অনেক সময় বিভিন্ন সমস্যার জন্ম দিচ্ছে। বোট, সাবমেরিন, হেলিকপ্টার – এগুলির নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ দরকার। বিলাসবহুল জীবনযাপনের জন্যে যে জাহাজ সে কিনেছে, সেই জাহাজে যদি সারাদিন যন্ত্রপাতি রক্ষণাবেক্ষণের জন্যে ঠুকঠাক খুটখাট শব্দ হতে থাকে, তাহলে সেটাকে বরং ওয়ার্কশপ বলাই ভালো। তদুপরি, এতোসব যন্ত্রপাতি দিয়ে ডেকের উপরটা ভরে ফেললে ডেকের উপরে আরাম করে বসার স্থানটাও তো কমে যাচ্ছে। কেউবা আবার নিজের অফিসটাকেও সাথে নিতে চাচ্ছেন; অফিসের স্টাফসহ। অর্থাৎ তার পুরো জীবনটাকেই জাহাজে চড়িয়ে সে তার সাথে নিতে চাচ্ছে। একের ভিতরে সব চাইতে গেলে অনেক প্রশ্নের উত্তর তাকে দিয়ে আসতে হবে।
  
 
মাইক্রোসফটের কো-ফাউন্ডার পল এলেনের ১২৬ মিটার লম্বা ১০ হাজার টনের এক্সপ্লোরার ইয়ট 'অক্টোপাস'। জাহাজটায় রয়েছে দুইটা হেলিডেক। পিছনের হেলিডেকের সাথে রয়েছে বিরাট এক হ্যাঙ্গার, যার ভেতরে দুইটা হেলিকপ্টার রাখা যায়। হেলিডেকের নিচে রয়েছে ডক, যার ভেতরে কয়েকটা স্পীডবোট এবং ল্যান্ডিং ক্রাফট রাখা যায়। এডভেঞ্চারার গোছের মানুষদের প্রবৃত্তিকে খুশি করতে এধনের ইয়টে কি রাখা হয়নি? 


কিছু লোক তাদের প্রবৃত্তিকে খুশি করতে অজানাকে খুঁজে বেড়াতে চায়। যেমন - এন্টার্কটিকা ভ্রমণ, পানির নিচে প্রাচীনকালে ডুবে যাওয়া জাহাজ খুঁজে বের করা, দুর্গম অঞ্চলের জীবজন্তু দেখতে যাওয়া, গুপ্তধনের সন্ধান করা, গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়া, ইত্যাদি। এই ভ্রমণগুলি ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে সূর্যস্নানের মতো নয়। যারা এগুলি পছন্দ করে, তাদেরকে এডভেঞ্চারিস্ট বলছে অনেকে। এসব কর্মকান্ডে প্রযুক্তির আধিক্য বেশি এবং যন্ত্রপাতি যথেষ্টই লাগছে সেখানে। কাজেই তাদের জাহাজগুলিতে বহু পদের যন্ত্রপাতি রাখার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ঠুকঠাক-খুটখাট শব্দও সয়ে নিচ্ছে সে। তবে যথেষ্টই বিলাশবহুল এগুলি। এধরনের জাহাজগুলিকে ‘এক্সপ্লোরার ইয়ট’ বলা হচ্ছে। তবে যেসব জাহাজে এতসব যন্ত্রপাতি রাখা হচ্ছে না, তাদেরও কিন্তু ইচ্ছের কমতি নেই। তারাও যন্ত্রপাতি চাইছেন তাদের প্রবৃত্তিকে খুশি করতে; তবে খুটখাট শব্দও চাইছেন না। মার্কেটাররাও কম যায় না। তারা এধরনের ক্রেতাদের খুশি করতে আরেক ধরনের জাহাজ তৈরি করার চিন্তা করলো; এর নাম দেয়া হলো ‘ইয়ট সাপোর্ট ভেসেল’। এর কাজ হলো মূল ইয়ট (মাদার ইয়ট)-এর সাথে সাথে যাওয়া এবং যন্ত্রপাতি বহণ, দরকারে অতিরিক্তি ক্রু বা অতিথিদের নেয়া, অফিস স্টাফদের নেয়া, যন্ত্রপাতির রক্ষণাবেক্ষণ করা, জ্বালানি, অন্যান্য সাপ্লাই ও স্পেয়ার পার্টস বহণ করা, মূল ইয়টের দরকারের জিনিসগুলি বহণ করা, এবং আরও অনান্য লজিস্টিক্যাল সাপোর্ট দেয়া। তবে এধরনের জাহাজের সবচাইতে বড় কাজ হলো মূল ইয়টের নিরাপত্তা দেয়া।

ডাচ শিপবিল্ডার ডামেনের তৈরি করা ইয়ট সাপোর্ট ভেসেল 'গেম চেঞ্জার'। ৬৯ মিটার লম্বা এই জাহাজের এর হেলিডেকের নিচে রয়েছে হ্যাঙ্গার। আর এর ডেকের উপরে রয়েছে কয়েক ধরনের স্পীডবোট এবং একটা সাবমেরিন। জাহাজের পিছন দিকে রয়েছে ডাইভিং সাপোর্ট রুম, যার সাথে ১২ জন স্কুবা ডাইভারের সরঞ্জামাদি রয়েছে; সাথে রয়েছে ডিকম্প্রেশন চেম্বার। এধরনের জাহাজগুলি কিছু মানুষের হাতে প্রাইভেট নৌবাহিনী দিয়ে দিচ্ছে। 


লাক্সারি ইয়টের নিরাপত্তা

যারা এসব ইয়টের মার্কেটিং করছে, তাদের চিন্তার মাঝে এই নিরাপত্তা ব্যাপারটাই গুরুত্ব পাচ্ছে বেশি। এতো বিত্তশালী এই ব্যাক্তির বিত্তের সাথে সাথে নিজের নিরাপত্তার শঙ্কাও বেড়েছে। তাই বিরাট একটা বিশালবহুল ইয়টকে সমুদ্রে নিয়ে গেলে সেই জাহাজের নিরাপত্তার কথা তাকে আলাদাভাবে চিন্তা করতে হচ্ছে। বিশেষতঃ সমুদ্রে জলদস্যু দ্বারা আক্রান্ত হলে তিনি কি করবেন? নিরাপত্তাও এখন কেনাবেচার বিষয়। বিশ্বের বহু প্রান্তে অবসরপ্রাপ্ত সেনারা এখন ভাড়াটে সেনা হিসেবে খাটছেন। এরা এই ‘ইয়ট সাপোর্ট ভেসেল’এ স্থান নিচ্ছেন মূল লাক্সারি ইয়ট বা মাদার ইয়টের নিরাপত্তা দিতে। তারা স্পীডবোট, হেলিকপ্টার, সাবমেরিন, ল্যান্ডিং ক্রাফট, হোভারক্রাফট, ফ্লাইং বোট, ইত্যাদি চালাচ্ছেন এবং সেগুলির রক্ষণাবেক্ষণ করছেন। জাহাজগুলির ক্রু-ই শুধু নয়, জাহাজের ডিজাইন এবং কন্সট্রাকশনও মিলিটারি গ্রেডের। এসব জাহাজে কি কি দেয়া হচ্ছে, তার একটা ফিরিস্তি দিলেই সেটা পরিষ্কার হয়ে যাবে।

- কিছু জাহাজে শুধু হেলিকপ্টার ল্যান্ডিং প্যাডই নয়; হেলিকপ্টার রাখার জন্যে হ্যাঙ্গারও দেয়া হচ্ছে। সেখানে হেলিকপ্টার মেইনটেন্যান্স-এর সুবিধাও থাকছে। আগুস্টা এডব্লিউ-১০৯ বা ইউরোকপ্টার ইসি-১৩৫ হেলিকপ্টার এসব জাহাজে দেখা যাচ্ছে নিয়মিত। বিভিন্ন দেশের নিরাপত্তা বাহিনীও এধরনের হেলিকপ্টার ব্যবহার করে থাকে।

- ছোটবড় বিভিন্ন প্রকারের ৪-৫টা স্পীডবোট এসব জাহাজে থাকছেই। স্পীডবোটগুলির মাঝে মিলিটারি গ্রেডের ইন্টারসেপ্টর বোটও থাকছে, যা কিনা স্পেশাল ফোর্সের সেনারা ব্যবহার করে।

- সাবমেরিন থাকছে অনেক ক্ষেত্রেই। কখনো কখনো মনুষ্যবিহীন সাবমেরিনও থাকছে, যা কিনা অতি-গভীর সমুদ্র থেকে ভিডিও পাঠাতে পারে।

- স্কুভা ডাইভার অপারেশনের জন্যে সকল ব্যবস্থা দেয়া হচ্ছে। ডজনখানেক স্কুবা অপারেট করতে পারার মতো যন্ত্রপাতি দিচ্ছে কেউ কেউ। ডিকম্প্রেশন চেম্বারও দেয়া হচ্ছে ডাইভারদের জন্যে। স্কুবা ডাইভারদের অভিজ্ঞতা শেয়ারের জন্যে বড়সড় রুম দেয়া হচ্ছে ডিজিটাল ডিসপ্লে-সহ, যাতে পানির নিচে ধারণ করা ভিডিও শেয়ার করতে পারে সবাই।

- কিছু ক্ষেত্রে ছোট ফ্লাইং বোট রাখা হচ্ছে এই ইয়ট সাপোর্ট ভেসেলে। এর ডানাগুলি গুটিয়ে ডেকের উপরে স্বল্প জায়গায় রেখে দেয়া যায়।

- গাড়ি বা মোটরসাইকেল রাখা হচ্ছে কিছু জাহাজে। দরকার বিশেষে ল্যান্ডিং ক্রাফট বা হোভারক্রাফটের মাধ্যমে এই যানবাহন উপকূলে নামিয়ে দেয়া হচ্ছে। ক্রাফটগুলি বেশিরভাগ সময়েই জাহাজের ডেকের উপরে বহণ করা হচ্ছে।

- স্পীডবোট, সাবমেরিন, ল্যান্ডিং ক্রাফট, হোভারক্রাফট, ফ্লাইং বোট, ইত্যাদি ডেকের উপর থেকে পানিতে নামাবার জন্যে শক্তিশালী ক্রেন রাখা হচ্ছে ডেকে।

- কিছু জাহাজের পিছন দিকে ডক থাকছে, যেখানে পাম্পের মাধ্যমে পানি পাম্প করে ডুকিয়ে দেয়া যায় আবার বেরও করে দেয়া যায়। বোটগুলি পানিতে নামাতে হলে বা পানি থেকে তোলার দরকার হলে পাম্প করে পানি ঢোকানো হয়। তবে এধরনের ডক থাকে মূলতঃ বড় এক্সপ্লোরার ইয়টগুলিতে।

- জাহাজের ডিজাইন মিলিটারি গ্রেডের। এগুলির গতি ঘন্টায় ২০ নটিক্যাল মাইল থেকে ২৮ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত থাকছে। সবধরনের আবহাওয়ায় এগুলি চলমান রাখা সম্ভব হচ্ছে।

- জাহাজগুলির ইলেকট্রনিক্স এবং কমিউনিকেশন যন্ত্রপাতি একেবারেই অত্যাধুনিক এবং মিলিটারি গ্রেডের। জাহাজগুলির ব্রিজ যেকোন মিলিটারি জাহাজের ব্রিজের মতোই মনে হবে।

- ৪ হাজার থেকে ৯ হাজার নটিক্যাল মাইল এসব জাহাজের পাল্লা, যা কিনা একে লম্বা সময় সমুদ্রে থাকার পথ খুলে দিয়েছে।

হল্যান্ডের শিপবিল্ডিং কোম্পানি ডামেন সাম্প্রতিককালে মিলিটারি জাহাজ তৈরি করে বেশ নাম করেছে। তাদের কয়েকটা ডিজাইন বহু দেশের কাছে বিক্রি হয়েছে। তাদের প্যাট্রোল বোটগুলি বিভিন্ন কোম্পানির কাছেও বিক্রি হয়েছে, যারা সামুদ্রিক বিভিন্ন স্ট্রাকচারের নিরাপত্তা দিতে সেগুলিকে ব্যবহার করে। সেসব জাহাজের ডিজাইন পরিবর্তন করেই ইয়ট সাপোর্ট ভেসেলের ডিজাইন করা হয়েছে। অর্থাৎ মিলিটারি জাহাজকেই তারা ‘সুগার-কোট’ করে বিক্রি করছে। ডজনখানেক ইয়ট সাপোর্ট ভেসেল ইতোমধ্যেই বিক্রি করেছে ডামেন। অন্যরাও বানাচ্ছে। জাহাজগুলিতে কোন সমস্যা ছাড়াই একটা শক্তিশালী স্পেশাল ফোর্স ইউনিট বহণ করা সম্ভব; তাদের হেলিকপ্টার, স্পীডবোট, ডাইভিং গিয়ার, ইত্যাদিও সাথে রাখা যাবে। খুব বেশি একটা মডিফিকেশন ছাড়াই এতে বিভিন্ন প্রকারের অস্ত্র বহণ করা সম্ভব। ড্রোনও অপারেট করা সম্ভব; যার জন্যে যথেষ্ট স্থান এসব জাহাজের বেশ কয়েকটাতেই রয়েছে।

সুপার ইয়ট 'গোল্ডেন শ্যাডো'। এর পেছনে দেখা যাচ্ছে বেশ কয়েকটা স্পীডবোট এবং একটা সী-প্লেন। পরিবর্তিত বিশ্বের পরিবর্তিত নিয়মে ইয়ট-মালিকদের হাতে থাকা সম্পদ রাষ্ট্রীয় কাজে ব্যবহার হবার মতো। তাই পুঁজিবাদের এই ক্ষয়িষ্ণু সময়ে পরিবর্তনের হাইওয়েতে এদের রাজনৈতিক সচেতনতা হয়ে দাঁড়াবে বৈশ্বিক নিরাপত্তার জন্যে উল্লেখযোগ্য মাইলফলক।


পরিবর্তিত বিশ্বে ইয়টের মালিকদের স্থান 

ধনকুবের ব্যক্তিরা তাদের প্রবৃত্তিকে খুশি করতে গিয়ে যুদ্ধাস্ত্র নির্মাতাদের জন্যে নতুন বাজারের সৃষ্টি করেছে। নিজের একটা প্রাইভেট আর্মি, প্রাইভেট নেভি এবং প্রাইভেট এয়ার ফোর্স তারা চাইতেই পারে। তবে দরকারবিশেষে তাদের এই মিলিটারি প্ল্যাটফর্মগুলি কোথায় কি করবে, সেটাই হবে মূল পরীক্ষা। মার্কিন গোয়েন্দা দপ্তরের উপদেষ্টা পরিষদ ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স কাউন্সিল-এর এক প্রতিবেদনে (Global Trends 2025: A Transformed World) ২০২৫ সালের মাঝে কি কি দেখা যেতে পারে, তার একটা ভবিষ্যদ্বানী করার চেষ্টা করা হয়েছে –

“A global multipolar system is emerging with the rise of China, India, and others.

The relative power of nonstate actors— businesses, tribes, religious organizations, and even criminal networks—also will increase. ... By 2025 a single “international community” composed of nation-states will no longer exist. Power will be more dispersed with the newer players bringing new rules of the game while risks will increase that the traditional Western alliances will weaken…. The United States will remain the single most powerful country but will be less dominant…. Shrinking economic and military capabilities may force the US into a difficult set of tradeoffs between domestic versus foreign policy priorities.”



মার্কিন চিন্তাবিদেরা যে ব্যাপারটাকে তুলে ধরেছে তা হলো, বিশ্বের একচ্ছত্র ক্ষমতা সুপারপাওয়ার আমেরিকার হাত থেকে ছুটে গিয়ে অনেকের মাঝে ভাগ হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে রাষ্ট্র ছাড়া অন্যান্য শক্তিরও আবির্ভাব হতে পারে। বিভিন্ন ব্যক্তি এবং সংস্থার হাতে প্রচুর সম্পদ পুঞ্জীভূত হয়ে যাওয়ায় এরা বিশ্বে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। এসব ব্যক্তি বা সংস্থার কাছে অর্থ ছাড়াও কৌশলগত দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ পুঞ্জীভূত হবে। নিজেদের প্রাইভেট বাহিনী এবং এদের হাতে অত্যাধুনিক অস্ত্রসস্ত্র এসকল সম্পদের মাঝে থাকবে। নিজেদের প্রবৃত্তিকে খুশি করতে গিয়ে এরা বৈশ্বিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়ে পরিণত হতে পারে। পরিবর্তিত বিশ্বের পরিবর্তিত নিয়মে এদের হাতে থাকা সম্পদ রাষ্ট্রীয় কাজে ব্যবহার হবার মতো। তাই পুঁজিবাদের এই ক্ষয়িষ্ণু সময়ে পরিবর্তনের হাইওয়েতে এদের রাজনৈতিক সচেতনতা হয়ে দাঁড়াবে বৈশ্বিক নিরাপত্তার জন্যে উল্লেখযোগ্য মাইলফলক।




3 comments:

  1. সংযুক্ত আরব আমিরাত সেরকম উদাহরন নয় কি??????????????

    ReplyDelete
    Replies
    1. না। কারণ ওটা একটা রাষ্ট্র। আমিরাত এবং মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশ থেকে থেকে আসা কিছু ব্যক্তির কাছে এরকম যন্ত্রপাতি রয়েছে বৈকি। এখানে ব্যক্তির ব্যাপারটাকেই আলোচ্য করা হয়েছে; রাষ্ট্রের নয়।

      Delete
  2. এই লেখাটারই একটা সংস্করণ প্রকাশিত হয়েছে এখানেঃ
    https://www.poriborton.com/diverse-world/139249

    ReplyDelete