Friday 1 October 2021

‘অকাস’ চুক্তির মাধ্যমে ইন্দোপ্যাসিফিকে নিজের অবস্থানকে আরও সুসংহত করলো ‘গ্লোবাল ব্রিটেন’

০১লা অক্টোবর ২০২১

ব্রিটেন এবং তার ইংরেজি ভাষাভাষী কমনওয়েলথের সদস্যদের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের গভীর চিন্তাগত একাত্মতা এতটাই শক্ত ভিতের উপর স্থাপিত, যা এই দেশগুলির সম্পর্ককে আরও কাছাকাছি নেবে। পরিবর্তিত বিশ্ব ব্যবস্থায় ক্রমান্বয়ে প্রভাবশালী হওয়া ‘গ্লোবাল ব্রিটেন’ এখন ক্রমেই যুক্তরাষ্ট্রের ইন্দোপ্যাসিফিক কৌশলের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে যাচ্ছে; যেখান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ফেরত আসার কোন পথ থাকছে না।

 প্রায় হঠাত করেই গত ১৫ই সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন এবং অস্ট্রেলিয়া ইন্দোপ্যাসিফিককে ঘিরে একটা কৌশলগত চুক্তির ঘোষণা দিয়েছে; যা অনেককেই যেমন অবাক করেছে, আবার কোন কোন পক্ষকে যথেষ্ট বিরক্তির মাঝে ফেলেছে। তিন দেশের মাঝে স্বাক্ষরিত এই চুক্তি, যা ‘এইউকেইউএস’ বা ‘অকাস’ নামে পরিচিত হচ্ছে, তার ব্যাপারে মন্তব্য এসেছে বেশ দ্রুতই। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নিজেই এই চুক্তির ঘোষণা দেন।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনজন চুক্তির ঘোষণার দিন বলেন যে, ব্রেক্সিটের পর ব্রিটেন প্রযুক্তিগত দিক থেকে তাদের জাতীয় সক্ষমতাকে আরও শক্তিশালী করবে; এবং আরও গুরুত্ব সহকারে ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্র আরও কাছাকাছি থেকে কাজ করবে। তিন দেশের কেউই চীনকে নিয়ন্ত্রণ করাকে এই চুক্তির স্তম্ভ হিসেবে আখ্যা না দিলেও তা ছিল বেশ পরিষ্কার। অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন বলেন যে, ‘অকাস’এর সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ দিক হবে অস্ট্রেলিয়ার জন্যে একটা পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিন ফ্লিট। আগামী ১৮ মাসে সেই লক্ষ্যে তিন দেশ একত্রে কাজ করবে বলে বলেন তিনি।

চীন ক্ষুব্ধ; কিন্তু ফ্রান্সও কেন?

চুক্তির মূল টার্গেট চীন থাকার কারণে বেইজিং থেকে ‘অকাস’এর বিরুদ্ধে দ্রুত বিবৃতি আসে। চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান সাংবাদিকদের বলেন যে, এই চুক্তি পুরো অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করবে। তিনি বলেন যে, অস্ট্রেলিয়ার কাছে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের পারমাণবিক সাবমেরিন বিক্রি করাটা দেখিয়ে দিচ্ছে যে, পারমাণবিক প্রযুক্তির বিক্রিকে তারা ভূরাজনৈতিক খেলার অংশ হিসেবে ব্যবহার করবে। এটা একটা দ্বিমুখী নীতি এবং যথেষ্টই দায়িত্বজ্ঞানহীন। তবে চীন ছাড়াও একইসাথে বিষয়টা নিয়ে কথা বলে ফ্রান্স। ২০১৬ সাল থেকে ফরাসিরা অস্ট্রেলিয়ার কাছে সাবমেরিন বিক্রির চেষ্টায় রয়েছে; যা এখন বাতিল হয়ে গেলো। ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জঁ ইভস লেড্রিয়ান এই ‘অকাস’ চুক্তিকে পিছন থেকে ছুরি মারার সাথে তুলনা করেন; এবং বলেন যে, এই চুক্তি সহযোগিতার চিন্তার বিরুদ্ধে। ফরাসিরা ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ওয়াশিংটন এবং ক্যানবেরা থেকে তাদের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাঠায় আলোচনা করার জন্যে। তবে লন্ডনে ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতকে অবশ্য ডেকে পাঠানো হয়নি।

‘ডয়েচে ভেলে’র এক প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে যে, ন্যাটো নতুন ‘অকাস’ চুক্তি সম্পর্কে একেবারেই চিন্তিত নয়। ন্যাটোর চিন্তায় চীন অনেক বড় কোন অংশ দখল না করলেও ইন্দোপ্যাসিফিকে চীনের আকাংক্ষাকে নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে ন্যাটোর সদস্যদের মাঝে বিরোধ নেই। তবে ফ্রান্স এবং ইইউএর প্রতিনিধিরা ব্যাপারটাকে ভালোভাবে দেখেনি। ফ্রান্স পছন্দ করছে না যে, প্যারিসকে না বলে এরকম একটা চুক্তি করা হলো। ফ্রান্স ছাড়াও ইইউএর পরররাষ্ট্রনীতি প্রধান জোসেফ বুরেল তার বিরক্তি প্রকাশ করে বলেন যে, ‘অকাস’ চুক্তির ব্যাপারে তাকে কিছুই বলা হয়নি। তিনি বলছেন যে, এই চুক্তি নিয়ে হয়তো অনেক আগ থেকেই কথা হচ্ছিলো; কিন্তু তাকে এব্যাপারে কোন তথ্যই কেউ দেয়নি। ‘ডয়েচে ভেলে’ বলছে যে, যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে চীনের সাথে সম্পর্ককে দেখতে চাইছে, ইইউ সেভাবে চীনের সাথে সম্পর্ককে স্থির করে ফেলতে চাইছে না। যদিও চীনের ব্যাপারে ইইউ মোটা দাগে যুক্তরাষ্ট্রের সাথেই থাকছে, তথাপি চীনের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের মতো শক্ত অবস্থানে যেতে চাইছে না ইইউ।

 

ইন্দোপ্যাসিফিকে পারমাণবিক প্রযুক্তি

‘ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস, অস্টিন’এর নিরাপত্তা ম্যাগাজিন ‘ওয়ার অন দ্যা রক্স’এর এক অনলাইন বিতর্কে ‘অকাস’ চুক্তি সম্পর্কে মার্কিন চিন্তাবিদদের বিশ্লেষণের কিছুটা ধারণা পাওয়া যায়। মার্কিন থিঙ্কট্যাঙ্ক ‘সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক এন্ড ইন্টারন্যাশনাল স্ট্রাডিজ’এর মেলানি মারলো বলছেন যে, ফরাসিদের বিরক্ত হওয়াটা অবাক হবার মতো কিছু ছিল না। কারণ তারা একদিকে যেমন ইন্দোপ্যাসিফিকে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান ধরে রেখেছে, তেমনি অস্ট্রেলিয়াকে ১২টা ডিজেল সাবমেরিন বিক্রি করার ৬৬ বিলিয়ন ডলারের একটা কৌশলগত বাণিজ্যিক চুক্তিও তারা হারিয়েছে। ফ্রান্সের বিকল্প সরবরাহকারী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রিটেন এখন অস্ট্রেলিয়াকে কমপক্ষে ৮টা পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিন সরবরাহ করবে। দীর্ঘমেয়াদী এই চুক্তির অংশ হিসেবে সাবমেরিনের সাথে ক্ষেপণাস্ত্র এবং অন্যান্য প্রযুক্তি ছাড়াও আঞ্চলিক নৌঘাঁটি ব্যবহার এবং ইন্দোপ্যাসিফিকে কৌশলগত শক্তি মোতায়েনের সমন্বয়নও থাকবে। সাবমেরিন ছাড়াও এই চুক্তিতে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, সাইবার নিরাপত্তা, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং, মনুষ্যবিহীন ড্রোন প্রযুক্তি, ইত্যাদিও থাকছে। ফরাসিরা মনে করছে যে, তাদের মার্কিন বন্ধুরা তাদেরকে পিছন থেকে ছুরি বসিয়েছে। তবে মেলানি মারলো অস্ট্রেলিয়ানদের কঠিন সিদ্ধান্ত নেবার সাহসিকতার প্রশংসা করে বলেন যে, অসিরা অবশেষে বুঝতে পেরেছে যে, ইন্দোপ্যাসিফিকে কৌশলগত অবস্থানকে শক্তিশালী করতে গেলে পারমাণবিক সাবমেরিন ছাড়া গত্যন্তর নেই। মারলো বলছেন যে, এই তিন দেশের মাঝে চুক্তি শুধু একটা চুক্তিই নয়। এর মাধ্যমে পরিষ্কার বোঝা যায় যে, তাদের মাঝে চিন্তাগত দিক থেকে একাত্মতা কতটুকু। আগামী দুই, তিন বা পাঁচ দশকের কথা চিন্তা করলেও তাদের চিন্তার মাঝে সমন্বয় পাওয়া যাবে। তিন দেশের মাঝে শেয়ার করা কিছু অতি সংবেদনশীল প্রযুক্তি রয়েছে, যেগুলি হয়তো সকলের সাথে তারা শেয়ার করতে চাইবে না; তবে এই তিন দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা আলাদা। এই দেশগুলি অতি গোপণীয় ‘ফাইভ আইজ’ ইন্টেলিজেন্স নেটওয়ার্কের সদস্য, যার মাধ্যমে তাদের মাঝে গভীর সম্পর্ক বিদ্যমান। ‘ফাইভ আইজ’এর বাকি সদস্য দেশগুলি হলো ব্রিটিশ কমনওয়েলথের অপরাপর সদস্য কানাডা এবং নিউজিল্যান্ড। এখানে শুধু সামরিক দিক থেকেই নয়, দেশগুলির জনগণের মাঝে, শিক্ষাবিদদের মাঝে এবং ব্যবসায়িক সংগঠনগুলির মাঝেও সম্পর্ক গভীর। মার্কিন বাইডেন প্রশাসন হয়তো ইন্দোপ্যাসিফিকে চীনকে নিয়ন্ত্রণে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ততটা শক্তভাবে বন্ধুদের উপর চাপ প্রয়োগ করতে চাইবে না; যতটা কৌশলগত, সামরিক বা ইন্টেলিজেন্সের দিক থেকে সহযোগিতা করবে। ইন্দোপ্যাসিফিকের দেশগুলির উপর চাপ সৃষ্টি না করে হলেও অন্ততঃ তাদেরকে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে রাখতে চাইবে।

‘আমেরিকান এন্টারপ্রাইজ ইন্সটিটিউট’এর সিনিয়র ফেলো জ্যাক কুপার বলছেন যে, ফরাসিদেরকে নতুন চুক্তির ব্যাপারে আগে থেকেই হয়তো বলা উচিৎ ছিলো। ফরাসিরা যেভাবে ব্যাপারটা জেনেছে, তা তাদের বিরক্তির উদ্রেক করেছে। তবে বাস্তবতা হলো গত কয়েক বছর ধরেই অস্ট্রেলিয়ার সাথে সাবমেরিনের চুক্তি নিয়ে ফরাসিরা খুব ভালো অগ্রগতি দেখায়নি। তারা সকল ক্ষেত্রেই সময়ক্ষেপণ করেছে এবং খরচ বৃদ্ধি পাবার সাথেসাথে প্রকল্পের নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছিলো। তবে কুপার এখানে মনে করিয়ে দিচ্ছেন পারমাণবিক প্রযুক্তির ছড়িয়ে পড়ার ব্যাপারটাকে। তিনি মনে করছেন যে, অস্ট্রেলিয়ার কাছে পারমাণবিক প্রযুক্তি যাওয়াটা বরং অত্র অঞ্চলে পারমাণবিক প্রযুক্তি ছড়িয়ে পড়াকে আটকাবে।

আরেক মার্কিন থিঙ্কট্যাঙ্ক ‘ফেডারেশন অব আমেরিকান সায়েনটিস্টস’এর সিনিয়র ফেলো এডাম মাউন্ট বলছেন যে, অস্ট্রেলিয়া যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রিটেনের কাছ থেকে পারমাণবিক প্রযুক্তি পেলে তার মূল ব্যবস্থাপনার জন্যে অস্ট্রেলিয়া সেই দু’টা দেশের প্রযুক্তির উপরেই নির্ভর করবে। অস্ট্রেলিয়া এক্ষেত্রে সাবমেরিনের পারমাণবিক জ্বালানিতে হাতও দেবে না। একইসাথে এই তিন দেশের মাঝে চুক্তি অন্যান্য দেশের জন্যে উদাহরণস্বরূপ হিসেবে দেখাতে হবে, যাতে করে কেউ নিয়ম বাঁকা করে এই প্রযুক্তিকে যথেচ্ছভাবে ছড়িয়ে দিতে না পারে। তবে এডাম মাউন্ট বলছেন যে, ‘লো এনরিচড ইউরেনিয়াম’ রিয়্যাক্টর ব্যবহারের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রিটেন হয়তো ফ্রান্সকেও সাথে রাখতে পারতো। কারণ ফ্রান্সও তার পারমাণবিক সাবমেরিনে ‘লো এনরিচড ইউরেনিয়াম’ ব্যবহার করে থাকে। কিন্তু পারমাণবিক প্রযুক্তিকে ছড়িয়ে পড়া থেকে নিয়ন্ত্রণ করাটা খুব একটা সহজ নয়; যখন যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধু দেশগুলির মাঝেই পারমাণবিক জ্বালানি ব্যবহার এবং পারমাণবিক অস্ত্র ডেভেলপ করার চিন্তা বিদ্যমান। বিশেষ করে দক্ষিণ কোরিয়াতে পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিন এবং পারমাণবিক অস্ত্র ডেভেলপ করার পক্ষে যথেষ্ট জনমত রয়েছে। কোরিয়ার পারমাণবিক আকাংক্ষাকে নিয়ন্ত্রণ করাটা যুক্তরাষ্ট্রের জন্যে একটা চ্যালেঞ্জ। একইসাথে কোরিয়ার প্রতিবেশী জাপানেও প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক নেতারা পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিনের দরকার নিয়ে বিতর্ক চালাচ্ছে। জ্যাক কুপার বলছেন যে, জাপানের প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনীতিবিদদের মাঝে একজন পারমাণবিক জ্বালানি এবং সাবমেরিনের বিরুদ্ধে রয়েছেন; তবে আশ্চর্য ব্যাপার হলো মাত্র কয়েক বছর আগেও এই ব্যাপারটার উপর জাপানে বিতর্ক সম্ভবই ছিল না। আর যখন দক্ষিণ কোরিয়ার আশেপাশে উত্তর কোরিয়া, চীন, রাশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্র সকলের হাতেই পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে, তখন দক্ষিণ কোরিয়াকে পারমাণবিক অস্ত্র ডেভেলপ করা থেকে বারন করাটা কঠিন।

জ্যাক কুপার মনে করিয়ে দিচ্ছেন যে, নতুন চুক্তি অনুযায়ী অস্ট্রেলিয়া যে পারমাণবিক সাবমেরিন পাবে, তা এখনও অনেকটাই সময়সাপেক্ষ। কমপক্ষে দশ থেকে পনর বছর লেগে যাবে এসব সাবমেরিন অস্ট্রেলিয়ার হাতে পৌঁছানো শুরু হতে। তাহলে এই চুক্তির মূল দিকগুলি সাম্প্রতিক সময়ে অন্যান্য ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হবে; সাবমেরিনের ক্ষেত্রে নয়। অস্ট্রেলিয়া তার আঞ্চলিক নিয়ন্ত্রণ বাড়াতে তার ভৌগোলিক অবস্থান এবং দ্বীপাঞ্চলগুলিকে কাজে লাগাতে পারে। এক্ষেত্রে দূরপাল্লার বিমান এবং ক্ষেপণাস্ত্র অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে অবস্থান নিলে তা অস্ট্রেলিয়ার আঞ্চলিক অবস্থানকে শক্তিশালী করতে পারে।

মেলানি মারলো বলছেন যে বাইডেন প্রশাসন এখন পর্যন্ত তাদের কোন নীতিকেই মানুষের কাছে ঠিকমতো বিক্রি করতে পারেনি। ‘অকাস’ চুক্তি নিয়ে গোপনীয়তা এবং ফরাসিদের সাথে সমন্বয়হীনতা একই সমস্যার দিকেই ইঙ্গিত দেয়। এডাম মাউন্ট বলছেন যে, এই চুক্তি যেভাবে ফরাসিদের কাছ থেকে গোপন রাখা হয়েছিল, তা সত্যিই সমর্থনযোগ্য নয়। এই চুক্তি করতে গিয়ে বাকি সকল সমস্যাকে সমাধান না করে বরং এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে।

 

‘গ্লোবাল ব্রিটেন’এর সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক


মূলতঃ অস্ট্রেলিয়ার ভৌগোলিক অবস্থানই এখন ইন্দোপ্যাসিফিকে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে অস্ট্রেলিয়াকে গুরুত্বপূর্ণ করেছে। চীনকে নিয়ন্ত্রণের মার্কিন কৌশল বাস্তবায়ন করতে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ট্রেলিয়ার দিকে ফেরা ছাড়া গত্যন্তর নেই। অস্ট্রেলিয়ার মাটি থেকে ইন্দোপ্যাসিফিকের একটা বড় অংশ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলে অস্ট্রেলিয়ার এই ভৌগোলিক অবস্থানকেই কাজে লাগিয়েছে ‘গ্লোবাল ব্রিটেন’। এই সুযোগে অস্ট্রেলিয়া এমন কিছু প্রযুক্তি যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে পেতে চলেছে, যা অন্য কোন উপায়ে সম্ভব ছিল না। ‘অকাস’ চুক্তির মাধ্যমে ব্রিটেন এবং অস্ট্রেলিয়া এখন অফিশিয়ালি চীনকে নিয়ন্ত্রণের মার্কিন কৌশলের অংশ হয়ে গেলো। এই কৌশল বাস্তবায়নের খরচ ছিল ফরাসিদের তথা ইইউএর সাথে সম্পর্কের অবণতি। তবে ব্রিটেন এবং তার ইংরেজি ভাষাভাষী কমনওয়েলথের সদস্যদের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের গভীর চিন্তাগত একাত্মতা এতটাই শক্ত ভিতের উপর স্থাপিত, যা এই দেশগুলির সম্পর্ককে আরও কাছাকাছি নেবে। পরিবর্তিত বিশ্ব ব্যবস্থায় ক্রমান্বয়ে প্রভাবশালী হওয়া ‘গ্লোবাল ব্রিটেন’ এখন ক্রমেই যুক্তরাষ্ট্রের ইন্দোপ্যাসিফিক কৌশলের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে যাচ্ছে; যেখান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ফেরত আসার কোন পথ থাকছে না।

2 comments:

  1. I was waiting for your view point on this issue. How do you think the world will react on sharing such critical technologies like nuclear submarines to a non nuclear nation??
    Nations who are ambitious and under threat will definitely try to get a deal like this at any cost.
    USA is pushing the world into a nuclear end game.

    ReplyDelete
    Replies
    1. Potential reactions are already here in this writing; including that of France, China, South Korea and Japan. Hope you have some idea about that perspective.

      Delete