Thursday 28 October 2021

মার্কিন ম্যারিন কোর কেন তাদের ট্যাংকগুলি ফেলে দিচ্ছে?

২৮শে অক্টোবর ২০২১

২০০১ সালের ১১ই সেপ্টেম্বর থেকে দুই দশক ধরে তথাকথিত ‘সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে’ যুক্তরাষ্ট্র সারা মুসলিম বিশ্বে সেনাবাহিনীর পাশাপাশি ম্যারিন সেনাদেরও মোতায়েন করেছিল। ম্যারিনদের বিশেষ সক্ষমতা সর্বদাই ছিল উভচর অপারেশন; যা থেকে তারা বহুকাল দূরে থেকেছিল। এখন তারা সমুদ্রে ফেরত আসছে ঠিকই, কিন্তু ব্যাপক পরিবর্তনের মাঝ দিয়ে। দুই দশক ধরে তথাকথিত ‘সন্ত্রাসী’ দমন অভিযানে বিশ্বব্যাপী যুদ্ধ করার পর মার্কিনীরা হঠাত করেই চীনাদেরকে তাদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দেখতে শুরু করেছে।


চীনকে মোকাবিলায় মার্কিন ম্যারিন কোর নিজেদের কাঠামোকে ব্যাপকভাবে পরিবর্তন করছে। গত বছরের মার্চ মাসে ম্যারিন কোর ঘোষণা দেয় যে, তারা তাদের সংস্থাকে আগের মতো সমুদ্রকেন্দ্রিক বাহিনী হিসেবে দেখতে চাইছে। ২০২১এর ২৩শে ফেব্রুয়ারি ম্যারিন কোরের প্রধান জেনারেল ডেভিড বারজার মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড অস্টিনের নিকট একটা মেমো লেখেন। সেখানে তিনি বলেন যে, ইন্দোপ্যাসিফিক অঞ্চলে চীনের হুমকি মোকাবিলা করতে গেলে অত্র অঞ্চলে অবস্থিত ২৭ হাজার ম্যারিন সদস্যদেরকে বড় ধরনের উন্নয়ন এবং কাঠামোগত পরিবর্তনের মাঝ দিয়ে যেতে হবে। জেনারেল বারজারের মেমোর বরাত দিয়ে ‘ডিফেন্স নিউজ’ জানাচ্ছে যে, ম্যারিন কোর নতুন করে ‘ম্যারিন লিটোরাল রেজিমেন্ট’ গঠন করতে চাইছে; যেগুলি গুয়াম দ্বীপ, জাপান এবং হাওয়াই দ্বীপে অবস্থান করবে। সেখান থেকে এই ইউনিটগুলি নৌবাহিনীর ছোট আকারের উভচর জাহাজে চেপে বিভিন্ন দ্বীপাঞ্চলে মোতায়েন করা হবে। এই মিশনে এই রেজিমেন্টগুলির সাথে জাহাজে থাকবে নিজস্ব সার্ভেইল্যান্স ড্রোন, নিজস্ব যোগাযোগ ব্যবস্থা, এবং তারা একইসাথে বহণ করবে জাহাজ ধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র, যা কিনা চীনা নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজগুলিকে দূরে রাখবে। ম্যারিন কোরের এই ইউনিটগুলি চীনা ক্ষেপণাস্ত্র এবং বিমান বাহিনীর পাল্লার মাঝে থেকেই অপারেট করবে। এরকম একেকটা ‘লিটোরাল রেজিমেন্টে’ ১৮’শ থেকে ২ হাজার ম্যারিন সেনা থাকবে।

এর আগে ২০২০এর সেপ্টেম্বরে জেনারেল বার্জার এক কনফারেন্সে তার পরিকল্পনার পিছনে চিন্তার স্তম্ভগুলি উল্লেখ করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন যে, নতুন হুমকি মোকাবিলায় ইন্দোপ্যাসিফিকে ম্যারিন সেনারা গত ৭০ বছর ধরে যেভাবে অপারেট করেছে, সেভাবে অপারেট করলে চলবে না। কারণ ম্যারিন সেনাদের এখন একইসাথে বহু স্থানে অবস্থান নিতে হবে, এবং সেটাও অনেক বড় এলাকা জুড়ে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ এবং কোরিয়ান যুদ্ধের পর থেকে মার্কিন নৌবাহিনী এবং ম্যারিন সেনাদের লক্ষ্য কোরিয় উপদ্বীপে অবস্থান নিয়ে সম্ভব দ্বন্দ্ব মোকাবিলা করা। কিন্তু চীনের উত্থানের সাথেসাথে সেই হিসেব পরিবর্তিত হয়ে গেছে এবং আগামী ১০ বছর বা ২০ বছরের জন্যে সেই কৌশল মোটেই সমীচিন নয়। ‘ডিফেন্স নিউজ’এর এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হচ্ছে যে, ইন্দোপ্যাসিফিকে যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনী এবং ম্যারিন কোরের বেশিরভাগ শক্তিই রয়েছে জাপানে। জাপানের ইয়োকোসুকা থেকে অপারেট করে মার্কিন নৌবানীর একটা বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ এবং তার সাথের ক্রুজার ও ডেস্ট্রয়ারগুলি। এছাড়াও নৌবাহিনীর উভচর জাহাজের বাহিনী অপারেট করে সাসেবো বন্দর থেকে। ‘থার্ড ম্যারিন এক্সপিডিশনারি ফোর্স’এর ১৮ হাজার ম্যারিন সেনা অবস্থান করছে জাপানের দক্ষিণের ওকিনাওয়া দ্বীপে। অনেকেই সমালোচনা করছেন যে, নৌবাহিনী এবং ম্যারিন সেনাদের এতবড় বাহিনীকে চীনের এত কাছাকাছি এলাকায় অল্প কিছু স্থানের মাঝে জড়ো করে রাখা হয়েছে। এধরনের স্থায়ী ঘাঁটিগুলি খুব সহজেই চীনা ক্ষেপণাস্ত্র এবং বোমারু বিমানের দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে। ২০২০ সালে মার্কিন সরকারের প্রকাশিত ‘চায়না মিলিটারি পাওয়ার’এ বলা হচ্ছে যে, সাম্প্রতিক সময়ে জাপান এবং গুয়াম দ্বীপে চীনাদের আক্রমণ করার সক্ষমতা অনেক বেড়ে গেছে। জাপানে মার্কিন ঘাঁটিগুলি এখন চীনা মধ্যম পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লার মাঝে। চীনাদের ‘এইচ ৬কে’ বোমারু বিমানগুলি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে গুয়াম দ্বীপ আক্রমণ করতে পারবে। এছাড়াও ‘ডিএফ ২৬’ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেও চীনারা গুয়ামে হামলা করতে সক্ষম। জেনারেল বারজার বলছেন যে, চীনাদের এই সক্ষমতাগুলি মোকাবিলা করতেই মার্কিন সেনাদের ছড়িয়ে ছিটিয়ে মোতায়েন করতে হবে, যাতে চীনারা নির্দিষ্ট করে কোথাও টার্গেট করতে সক্ষম না হয়। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পুরো ইন্দোপ্যাসিফিক অঞ্চলে মার্কিন বন্ধু দেশগুলিকে তাদের সাথে রাখতে চাইছে যুক্তরাষ্ট্র। জেনারেল বারজার ২০২০এর জুলাই মাসে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির সদস্যদের সামনে তার পরিকল্পনাগুলির প্রাথমিক ধারণা দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন যে, নতুন পরিকল্পনায় ট্যাংকের দরকার নেই; দরকার দূরপাল্লার নিখুঁত ক্ষেপণাস্ত্র। 

ম্যারিনরা মনে করছে না যে, ছোট্ট দ্বীপগুলিকে দখলে নিতে ট্যাঙ্ক ব্যবহার করতে হবে। আর চীনারাও হয়তো এই দ্বীপগুলি দখলে রাখতে ট্যাংক ব্যবহার করবে না। আর আর্টিলারি কামান ব্যবহার করার জন্যেও এই দ্বীপগুলি অতি ক্ষুদ্র। তবে ম্যারিনরা তাদের ‘হাই মোবিলিটি আর্টিলারি রকেট সিস্টেম’ বা ‘হিমারস’কে অতি গুরুত্বের সাথে ব্যবহার করবে। ‘প্রিসিশন স্ট্রাইক মিসাইল’ বা ‘পিআরএসএম’ প্রকল্পের অধীনে এই রকেট সিস্টেমের রকেটগুলিকে আরও উন্নত করে এগুলির পাল্লা এবং নিখুঁতভাবে আঘাত করার সক্ষমতা বহুগুণে বৃদ্ধি করা হচ্ছে।


মার্কিন সামরিক ম্যাগাজিন ‘মিলিটারি ডট কম’এর এক প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে যে, জেনারেল বারজারের পরিকল্পনা অনুসারে ম্যারিন কোরের খরচ কমানো হচ্ছে; যা বিনিয়োগ করা হবে নতুন সক্ষমতা অর্জনে। ট্যাংক ব্যাটালিয়নগুলি বাতিল করে দেয়ায় শতশত ম্যারিন সেনা হয় ইন্টেলিজেন্স, সাইবার বা লজিস্টিকসে নাম লেখাচ্ছে, অথবা সেনাবাহিনীতে চলে যাচ্ছে, অথবা চাকুরি থেকে অবসরে যাচ্ছে। প্রায় ১৩’শ ম্যারিনকে তাদের ক্যারিয়ার নিয়ে নতুন করে ভাবতে হচ্ছে। ২০৩০ সাল নাগাদ ম্যারিন কোরের সদস্যসংখ্যা ১২ হাজার কমিয়ে ১ লক্ষ ৭৪ হাজারে নামিয়ে আনা হবে। ‘নেভি লীগ অব দ্যা ইউনাইটেড স্টেটস’এর পত্রিকা ‘সী পাওয়ার’এর এক প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে যে, ম্যারিন কোর তাদের পদাতিক ব্যাটালিয়নের সংখ্যা ২৪ থেকে ২১ নামিয়ে আনা ছাড়াও আর্টিলারি কামানের ব্যাটারির সংখ্যা ২১ থেকে মাত্র ৫টায় নামিয়ে আনবে। উভচর যানের কোম্পানির সংখ্যা ৬ থেকে ৪এ নামিয়ে আনা ছাড়াও হেলিকপ্টার স্কোয়াড্রনের সংখ্যাও কমিয়ে আনা হবে। এছাড়াও ম্যারিন কোরের প্রতিটা ‘এফ ৩৫বি’ এবং ‘এফ ৩৫সি’ স্টেলথ ফাইটার স্কোয়াড্রনে ১৬টা বিমানের পরিবর্তে থাকবে মাত্র ১০টা বিমান।

বেঁচে যাওয়া অর্থ থেকে ম্যারিন কোর দূরপাল্লার নিখুঁত ক্ষেপণাস্ত্র, উন্নততর গোয়েন্দা সক্ষমতা, মনুষ্যবিহীর ড্রোন এবং শক্তিশালী যোগাযোগ ব্যবস্থায় বিনিয়োগ করবে। চীনাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা বা দক্ষিণ চীন সাগর এবং পূর্ব চীন সাগরে ‘ফার্স্ট আইল্যান্ড চেইন’এর দ্বীপগুলি বেশ ছোট। ম্যারিনরা মনে করছে না যে, এই ছোট্ট দ্বীপগুলিকে দখলে নিতে ট্যাঙ্ক ব্যবহার করতে হবে। আর চীনারাও হয়তো এই দ্বীপগুলি দখলে রাখতে ট্যাংক ব্যবহার করবে না। আর আর্টিলারি কামান ব্যবহার করার জন্যেও এই দ্বীপগুলি অতি ক্ষুদ্র। তবে ম্যারিনরা তাদের ‘হাই মোবিলিটি আর্টিলারি রকেট সিস্টেম’ বা ‘হিমারস’কে অতি গুরুত্বের সাথে ব্যবহার করবে। ‘প্রিসিশন স্ট্রাইক মিসাইল’ বা ‘পিআরএসএম’ প্রকল্পের অধীনে এই রকেট সিস্টেমের রকেটগুলিকে আরও উন্নত করে এগুলির পাল্লা এবং নিখুঁতভাবে আঘাত করার সক্ষমতা বহুগুণে বৃদ্ধি করা হচ্ছে। এছাড়াও ম্যারিন কোরের জন্যে নৌবাহিনীর ‘এনএসএম’ জাহাজ ধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র এবং ‘টোমাহক’ ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের ভূমি থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য ভার্সন ডেভেলপ করা হচ্ছে। এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলি ব্যবহার করে ম্যারিনরা চীনের আশেপাশে সকল গুরুত্বপূর্ণ সমুদ্রপথ নিয়ন্ত্রণ করার পরিকল্পনা করছে।

 

নিজস্ব চিন্তার জোরে নয়, বরং ভূরাজনৈতিক বাস্তবতার চাপেই যুক্তরাষ্ট্র বাধ্য হচ্ছে নিজেদের সামরিক বাহিনীতে ব্যাপক পরিবর্তন আনতে। প্রথমবারের মতো ছোট ছোট দ্বীপ এবং তৎসংলগ্ন দ্বীপাঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিতে যুক্তরাষ্ট্রকে তাদের ‘অতি শক্তিশালী’ নৌবাহিনী এবং বিমানবাহিনী নয়, বরং ম্যারিন কোরের সেনাদের উপর নির্ভর করতে বাধ্য হচ্ছে। কোরিয়া, জাপান, গুয়ামের ঘাঁটি এবং বিশাল বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ ও উভচর জাহাজগুলি এখন চীনা ব্যালিস্টিক ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র থেকে নিরাপদ নয়; তাই তারা এখন ম্যারিন কোরের সেনাদের ছোট ছোট দ্বীপে নামিয়ে দিয়ে পিছনে গিয়ে অবস্থান নিতে চাইছে।


জেনারেল বারজারের পরিকল্পনার সমালোচনাও হচ্ছে। মার্কিন নৌবাহিনীর প্রাক্তন সচিব জিম ওয়েব মত দিচ্ছেন যে, এই পুনর্গঠনের মাধ্যমে ম্যারিন কোরের কর্মকান্ডকে একেবারেই চীন কেন্দ্রিক করে ফেলা হচ্ছে; যেন তারা দক্ষিণ চীন সাগর ছাড়া আর কোথাও যুদ্ধ করবেই না। ওয়েব নিশ্চিত নন যে, এই যুদ্ধটাই একমাত্র যুদ্ধ হিসেবে মার্কিনীদের নেয়া উচিৎ কিনা। তিনি মনে করেন না যে, চীনারা ম্যারিন কোরের সক্ষমতাকে পেরিয়ে গেছে।

মার্কিন থিংকট্যাঙ্ক ‘সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক এন্ড ইন্টানন্যাশনাল স্টাডিজ’ বা ‘সিএসআইএস’এর এক লেখায় জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা মার্ক কানসিয়ান বলছেন যে, ম্যারিন কোরের এই পরিকল্পনায় ঝুঁকি কম নয়। ভবিষ্যৎটা কেমন হবে, সেটা এখন যেমন মনে হচ্ছে, তা যদি সামনের দিনগুলিতে অন্যরকম মনে হয়? অথবা এখন যেসব কনসেপ্ট ম্যারিন কোন ডেভেলপ করছে বিভিন্ন মহড়ার মাধ্যমে, তা যদি ভবিষ্যতে বাস্তবে রূপ দিতে গিয়ে যতটা সহজ মনে হয়েছিল, ততটা না হয়? অর্থাৎ ম্যারিন কোর তাদের ভবিষ্যৎবাণী সঠিক হবার উপর পুরোপুরিভাবে নির্ভরশীল। এছাড়াও বৈশ্বিকভাবে জরুরি প্রয়োজনে যুক্তরাষ্ট্রকে অনেক মিশনে জড়াতে হয়, যেখানে বিভিন্ন বাহিনী প্রেরণ করতে হয়। ম্যারিন কোরকে এভাবে পরিবর্তন করে ফেললে মার্কিনীদের বৈশ্বিক অবস্থান ধরে রাখতে বাকি বাহিনীগুলিকে চাপের মাঝে পড়তে হবে।

২০০১ সালের ১১ই সেপ্টেম্বর থেকে দুই দশক ধরে তথাকথিত ‘সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে’ যুক্তরাষ্ট্র সারা মুসলিম বিশ্বে সেনাবাহিনীর পাশাপাশি ম্যারিন সেনাদেরও মোতায়েন করেছিল। ম্যারিনদের বিশেষ সক্ষমতা সর্বদাই ছিল উভচর অপারেশন; যা থেকে তারা বহুকাল দূরে থেকেছিল। এখন তারা সমুদ্রে ফেরত আসছে ঠিকই, কিন্তু ব্যাপক পরিবর্তনের মাঝ দিয়ে। দুই দশক ধরে তথাকথিত ‘সন্ত্রাসী’ দমন অভিযানে বিশ্বব্যাপী যুদ্ধ করার পর মার্কিনীরা হঠাত করেই চীনাদেরকে তাদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দেখতে শুরু করেছে। অর্থনৈতিক এবং সামরিক দিক থেকে উত্থানে থাকা চীন এশিয়াতে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানকে চ্যালেঞ্জ করেছে বলে মনে করছে মার্কিনীরা; যদিও এশিয়ার মাটিতে যুক্তরাষ্ট্রই বাইরের শক্তি। এতকাল কোরিয়া উপদ্বীপে নিজেদের স্বার্থ ধরে রাখার ছুতোয় মার্কিনীরা জাপান এবং কোরিয়াতে ব্যাপক সামরিক শক্তি মোতায়েন রেখেছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে চীনের দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র এবং বিমান সক্ষমতা মার্কিনীদের এই অবস্থানকে হুমকির মাঝে ফেলে দিয়েছে। নিজস্ব চিন্তার জোরে নয়, বরং ভূরাজনৈতিক বাস্তবতার চাপেই যুক্তরাষ্ট্র বাধ্য হচ্ছে নিজেদের সামরিক বাহিনীতে ব্যাপক পরিবর্তন আনতে। প্রথমবারের মতো ছোট ছোট দ্বীপ এবং তৎসংলগ্ন সমুদ্রাঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিতে যুক্তরাষ্ট্রকে তাদের ‘অতি শক্তিশালী’ নৌবাহিনী এবং বিমানবাহিনী নয়, বরং ম্যারিন কোরের সেনাদের উপর নির্ভর করতে বাধ্য হচ্ছে। কোরিয়া, জাপান, গুয়ামের ঘাঁটি এবং বিশাল বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ ও উভচর জাহাজগুলি এখন চীনা ব্যালিস্টিক ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র থেকে নিরাপদ নয়; তাই তারা এখন ম্যারিন কোরের সেনাদের ছোট ছোট দ্বীপে নামিয়ে দিয়ে পিছনে গিয়ে অবস্থান নিতে চাইছে।

No comments:

Post a Comment