Wednesday 28 October 2020

‘গ্লোবাল ব্রিটেন’এর অস্ট্রেলিয়া ইন্দো-প্যাসিফিকে প্রভাব বাড়াচ্ছে

২৯শে অক্টোবর ২০২০
জুলাই ২০২০। যুক্তরাষ্ট্রের সাথে অস্ট্রেলিয়ার ৩০তম ‘অস্ট্রেলিয়া ইউনাইটেড স্টেটস মিনিস্টেরিয়াল কনসালটেশন্স’ বা ‘অসমিন’ বৈঠক। অত্র অঞ্চলের সবচাইতে বড় শক্তি যুক্তরাষ্ট্রকেও অস্ট্রেলিয়া সাথে রাখতে চাইছে শক্তিধর চীনকে ব্যালান্স করতে। তথাপি অস্ট্রেলিয়া তার এই কৌশলগত চিন্তায় যুক্তরাষ্ট্রের উপর নির্ভরশীল থাকতে চাইছে না।



করোনা মহামারির মাঝেই অস্ট্রেলিয়া ইন্দো-প্যাসিফিকে তার কৌশলগত অবস্থানকে আরও দৃঢ় করতে সচেষ্ট হয়েছে। বিশেষ করে গত কয়েক মাসে অস্ট্রেলিয়া পুরো ইন্দো-প্যাসিফিকে তার প্রভাব বৃদ্ধির পিছনে যথেষ্ট বিনিয়োগ করেছে। মাত্র আড়াই কোটি জনসংখ্যার দেশ অস্ট্রেলিয়া অত্র অঞ্চলে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি ও ১’শ ৪০ কোটি জনসংখ্যার দেশ চীনের প্রভাব নিয়ন্ত্রণে সচেষ্ট হয়েছে, যখন সকলের দৃষ্টি মূলতঃ যুক্তরাষ্ট্রের সাথে চীনের দ্বন্দ্বের দিকে। অস্ট্রেলিয়ার এই প্রচেষ্টাকে যতটাই ঔদ্ধত্যপূর্ণ মনে হোক না কেন, অস্ট্রেলিয়াকে যদি ‘গ্লোবাল ব্রিটেন’ চিন্তার একটা অংশ হিসেবে দেখা হয়, তাহলে ব্যাপারটাকে স্বাভাবিকই মনে হবে। আদর্শিক শক্তি ব্রিটেনের অংশ হিসেবে বিশ্বব্যাপী পশ্চিমা চিন্তার ঝান্ডাবাহক হবার কারণেই অস্ট্রেলিয়া এই প্রভাব বিস্তারের খেলায় বিচলিত খেলোয়াড় নয়।

অস্ট্রেলিয়ার ইন্দো-প্যাসিফিক কূটনীতি

গত জুলাই মাসে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে অস্ট্রেলিয়ার ৩০তম ‘অস্ট্রেলিয়া ইউনাইটেড স্টেটস মিনিস্টেরিয়াল কনসালটেশন্স’ বা ‘অসমিন’ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ‘টু প্লাস টু’ এই বৈঠকে দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রীরা অংশ নেন। আলোচনায় মূল বিষয়বস্তুই ছিল চীনকে নিয়ন্ত্রণ। আলোচনা শেষে অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারিজ পেইন বলেন যে, তারা ইন্দো-প্যাসিফিকের বিভিন্ন বহুপাক্ষিক প্ল্যাটফর্মকে কাজে লাগাবেন; যার মাঝে রয়েছে ‘ফাইভ আইজ’ ইন্টেলিজেন্স গ্রুপ; ‘এসোসিয়েশন অব সাইথ ইস্ট এশিয়ান নেশন্স’ বা ‘আসিয়ান’ অর্থনৈতিক ফোরাম; যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, জাপান ও অস্ট্রেলিয়াকে নিয়ে তৈরি করা নিরাপত্তা সংগঠন ‘কোয়াড্রিল্যাটেরাল স্ট্র্যাটেজিক ডায়ালগ’ বা ‘কোয়াড’; ইন্দো-প্যাসিফিকের ১৮টা দেশ নিয়ে প্রতিবছর অনুষ্ঠিত হওয়া ‘ইস্ট এশিয়া সামিট’; অস্ট্রেলিয়া, জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অর্থলগ্নী উন্নয়ন সংস্থা মিলে তৈরি করা অবকাঠামো উন্নয়ন সংস্থা ‘ট্রাইল্যাটেরাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার পার্টনারশিপ’। তবে তিনি ইন্দো-প্যাসিফিকে অস্ট্রেলিয়ার অবস্থানকে আরও সুসংহত করতে আরও নতুন কিছু গ্রুপ তৈরি করার ইচ্ছাও ব্যক্ত করেন। অস্ট্রেলিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী লিন্ডা রেইনল্ডস বলেন যে, প্রতিরক্ষা, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং শিল্পের ক্ষেত্রে দুই দেশ সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে সম্মত হয়েছে; বিশেষ করে হাইপারসনিক অস্ত্র, ইলেকট্রনিক যুদ্ধ ও মহাকাশ সক্ষমতার ব্যাপারে সমঝোতা হয়েছে। ‘নিকেই এশিয়া’ ব্যাখ্যা দিয়ে বলছে যে, এই সমঝোতাগুলি চীনের ‘এন্টি একসেস / এরিয়া ডিনাইয়াল’ বা ‘এটু/এডি’ কৌশলকে মোকাবিলার টার্গেট করেই করা হয়েছে। তবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেইন এটাও বলেন যে, চিনের সাথে অস্ট্রেলিয়ার যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে, তা অস্ট্রেলিয়ার কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং অস্ট্রেলিয়া সেই সম্পর্ককে আঘাত করতে চায় না।
 

অক্টোবর ২০২০। অস্ট্রেলিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী লিন্ডা রেইনল্ডস জাপানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী কিশি নোবুওএর সাথে। দুই দেশের মাঝে সমঝোতা হয়েছে যে, যুদ্ধবস্থা না থাকলে জাপান অস্ট্রেলিয়ার সামরিক শক্তিকে রক্ষা করবে। যুক্তরাষ্ট্রের পর অস্ট্রেলিয়া মাত্র দ্বিতীয় দেশ হিসেবে জাপানের কাছ থেকে এই সহায়তার নিশ্চয়তা পেলো। ইন্দো-প্যাসিফিকের দেশগুলিকে অস্ট্রেলিয়া নিজের প্রভাব বলয়ে আনার জন্যে কাজ করে যাচ্ছে এবং তাতে তারা বেশ সাফল্যও পাচ্ছে।

অস্ট্রেলিয়ার প্রতিরক্ষা কূটনীতি চলছে জোর গতিতে

অক্টোবরে ইন্দো-প্যাসিফিকের দেশগুলিতে ভ্রমণ শুরু করার আগে অস্ট্রেলিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী লিন্ডা রেইনল্ডস বলেন যে, তিনি দেশগুলির সাথে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়ন করতে যাচ্ছেন। প্রতিরক্ষা কূটনীতি ও সহযোগিতা এবং সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে তিনি এই সম্পর্কোন্নয়নের কথা বলেন। তিনি বলেন যে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইন্দো-প্যাসিফিকে সবচাইতে বড় কৌশলগত পরিবর্তন হতে চলেছে। ২৬শে অক্টোবর রেইনল্ডস তার এশিয়া-প্যাসিফিক ভ্রমণের শেষ দেশ হিসেবে ফিলিপাইন গিয়ে ফিলিপাইনের সামরিক বাহিনীর করোনা মোকাবিলায় সহায়তা দেবার উদ্দেশ্যে ২ মিলিয়ন ডলারের মেডিক্যাল সরঞ্জাম দেবার ঘোষণা দেন। অস্ট্রেলিয়ার প্রতিরক্ষা ম্যাগাজিন ‘ডিফেন্স কানেক্ট’ বলছে যে, এই বছরের শুরুর দিকে অস্ট্রেলিয়া আরও ১ মিলিয়ন ডলারের মেডিক্যাল সহায়তা দেয় ফিলিপাইনের সামরিক বাহিনীকে। ফিলিপাইনের প্রতিরক্ষা সচিব ডেলফিন লরেনজানার সাথে বৈঠকে তারা দক্ষিণ চীন সাগরে অবাধ চলাচল নিশ্চিত করার ব্যাপারে কথা বলেন; যা মূলতঃ অত্র অঞ্চলে চীনের অবস্থানকে চ্যালেঞ্জ করাকেই বোঝায়। অস্ট্রেলিয়া ফিলিপাইনকে আরও আগে থেকেই প্রতিরক্ষা সহায়তা দিয়ে আসছে। ২০১৭ থেকে ২০১৯এর মাঝে অস্ট্রেলিয়া ‘অপারেশন অগারি ফিলিপিন্স’এর অধীনে ১০ হাজারেরও বেশি ফিলিপিনো সামরিক সদস্যকে সন্ত্রাস দমনের ট্রেনিং দেয়। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে দুই দেশের মাঝে ‘এনহান্সড ডিফেন্স কোঅপারেশন প্রোগ্রাম’ নামের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যার অধীনে অস্ট্রেলিয়া ফিলিপাইনকে আরও সামরিক সহায়তা দিচ্ছে। ফিলিপাইন আসার তিন দিন আগে লিন্ডা রেইনল্ডস ব্রুনাই সফরের সময় বলেন যে, সেদেশের সরকার একজন অস্ট্রেলিয় সামরিক অফিসারকে স্থায়িভাবে সামরিক উপদেষ্টা হিসেবে রাখার ব্যাপারে একমত হয়েছে। এছাড়াও আলোচনার সময় বলা হয় যে, ব্রুনাইএর সাথে সামরিক সম্পর্কের অগ্রগতির অংশ হিসেবে গত মার্চে অস্ট্রেলিয়ার নৌবাহিনীর একটা সামবমেরিন ব্রুনাই সফর করে। অগাস্ট মাসে দুই দেশের নৌবাহিনী পাসেক্স মহড়া দেয়।

এশিয়া-প্যাসিফিক ভ্রমণের অংশ হিসেবে অস্ট্রেলিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী ২২শে অক্টোবর সিঙ্গাপুর সফর করেন। সফরকালে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে সিঙ্গাপুরের সামরিক বাহিনীর ট্রেনিং নেবার ৩০ বছর উদযাপন করা হয়। সিঙ্গাপুরে স্থানের অভাবে সামরিক ট্রেনিং নেয়া সম্ভব হয়না বলেই অন্য দেশের মাটিতে ট্রেনিং নিতে হয়; অস্ট্রেলিয়া এক্ষেত্রে অর্থিকভাবে লাভবান হওয়া ছাড়াও সিঙ্গাপুরের সাথে সামরিক সম্পর্ক গভীর করে। অস্ট্রেলিয়ার দাবানলের সময় সিঙ্গাপুরের ‘শিনুক’ হেলিকপ্টারগুলি জরুরি কাজে ব্যবহৃত হতে দেয়ায় রেইনল্ডস সিঙ্গাপুর সরকারকে ধন্যবাদ দেন। প্রতিরক্ষা ম্যাগাজিন ‘আইএইচএস জেন্স’এর এক প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে যে, সিঙ্গাপুরের ‘শিনুক’ হেলিকপ্টারগুলি এখন অস্ট্রেলিয়ার বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ থেকে অপারেট করার লাইসেন্স পেয়েছে ক’দিন আগেই। এর মাধ্যমে দুই দেশের সামরিক সহযোগিতা অন্য এক উচ্চতায় পৌঁছাতে যাচ্ছে।

এর আগে ১৯শে অক্টোবর রেইনল্ডস তার ভ্রমণের প্রথম দেশ হিসেবে জাপান সফর করেন। জাপানের নতুন প্রতিরক্ষামন্ত্রী কিশি নোবুওএর সাথে সাক্ষাতে তারা পূর্ব চীন সাগর এবং দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের ভূমিকা নিয়ে কথা বলেন এবং একত্রে চীনের আগ্রাসী মনোভাবকে প্রতিরোধ করার ইচ্ছা ব্যক্ত করেন। তারা উত্তর কোরিয়া বিষয়েও আলাপ করেন এবং দেশটার পারমাণবিক অস্ত্র ত্যাগ করার প্রয়োজনের ব্যাপারে একাত্মতা প্রকাশ করেন। একইসাথে দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মাঝে সমন্বয় বৃদ্ধির ব্যাপারে তারা একমত হন। জাপানের সেনাবাহিনীর সাথে একজন অস্ট্রেলিয় লিয়াঁজো অফিসার রাখার ব্যাপারে এবং দুই দেশের যৌথ সামরিক মহড়াকে আরও এগিয়ে নেবার ব্যাপারেও একমত হন তারা। দুই দেশের মহাকাশ ও সাইবার নিরাপত্তা, সামরিক প্রযুক্তি এবং প্রতিরক্ষা শিল্পের মাঝে সহযোগিতার ব্যাপারেও ঔকমত্য হয়।

‘জাপান টাইমস’এর এক প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে যে, রেইনল্ডসএর জাপান সফরের সময় জাপানি প্রতিরক্ষামন্ত্রী নোবুও ঘোষণা দেন যে, যুদ্ধবস্থা না থাকলে জাপান অস্ট্রেলিয়ার সামরিক শক্তিকে রক্ষা করবে। এই সিদ্ধান্ত সম্ভব হয়েছে ২০১৫ সালে পাস করা এক আইনের কারণে; যেখানে বলা হয়েছে যে, কোন দেশ যদি জাপানের নিরাপত্তায় সহায়তা দেয়, তবে জাপানি সামরিক বাহিনী সেই দেশের সেনা ও সরঞ্জামকে সুরক্ষা দেবে। অর্থাৎ ইন্দো-প্যাসিফিকের কোথাও অস্ট্রেলিয়ার সামরিক শক্তির উপর কোন হুমকি আসলে জাপান সেখানে অস্ট্রেলিয়াকে সামরিক সহায়তা দেবে। যুক্তরাষ্ট্রের পর অস্ট্রেলিয়া মাত্র দ্বিতীয় দেশ হিসেবে জাপানের কাছ থেকে এই সহায়তার নিশ্চয়তা পেলো।

‘ফাইভ আইজ’ ইন্টেলিজেন্স নেটওয়ার্কের কর্মকান্ড সামনে নিয়ে আসা হচ্ছে

অস্ট্রেলিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী লিন্ডা রেইনল্ডসএর ব্যস্ত ইন্দো-প্যাসিফিক ভ্রমণের আগেই তিনি ‘ফাইভ আইজ’ ইন্টেলিজেন্স নেটওয়ার্কের এক অনলাইন ভিডিওকনফারেন্সে যোগ দেন। কানাডার প্রতিরক্ষামন্ত্রী হারজিত সাজ্জান এই কনফারেন্সের আয়োজন করেন। ‘ফাইভ আইজ’ হলো যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা এবং নিউজিল্যান্ডের এক ইন্টেলিজেন্স চুক্তি। এর মাধ্যমে এই দেশগুলি সারা বিশ্বে গোয়েন্দা তৎপরতা চালায় এবং অতি গোপনীয় তথ্যসহ সকল ইন্টেলিজেন্স নিজেদের মাঝে চালাচালি করে। এই নেটওয়ার্কের কর্মকান্ড তেমন একটা ফলাও করে প্রচার না পেলেও এবারের কনফারেন্সের খবর মিডিয়াতে প্রচার করা হয়। লিন্ডা রেইনল্ডস ‘ডিফেন্স কানেক্ট’কে বলেন যে, কনফারেন্সে আন্তর্জাতিক চ্যালেঞ্জগুলি মোকাবিলায় সদস্য দেশগুলি নিজেদের মাঝে সহযোগিতা আরও বৃদ্ধি করার ব্যাপারে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়। তবে কনফারেন্সে আলোচিত কোন বিষয় নিয়ে বিশেষভাবে কোনকিছু বলতে তিনি ছিলেন নারাজ। গত জুন মাসে অস্ট্রেলিয়ার অনুরোধে ‘ফাইভ আইজ’এর আরেকটা কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়। সেই কনফারেন্সেই প্রতিরক্ষামন্ত্রীরা নিয়মিত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নিয়মিত আলোচনায় বসার ব্যাপারে একমত হন।

এছাড়াও ১১ই অক্টোবর ‘ফাইভ আইজ’এর আরেক আলোচনায় জাপান এবং ভারতকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সেই আলোচনায় সদস্যরা একটা ‘ব্যাকডোর’ রেখে মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপ করার জন্যে কোম্পানিগুলির প্রতি আহ্বান জানান, যাতে ইন্টেলিজেন্সের সদস্যরা সেগুলি ব্যবহার করে বিভিন্ন ব্যবহারকারীর মোবাইল ফোনে ঢুকতে পারে। 

অক্টোবর ২০২০। জাপানের রাজধানী টোকিওতে ‘কোয়াড’এর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠক। ‘কোয়াড’এর কর্মকান্ড আটকে থাকার মূল কারণ ছিল ভারত; যারা ঐতিহাসিকভাবেই জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের অংশ ছিল। আর এখন এই জোটের সামনে চলে আসাটাও হয়েছে ভারতের জন্যেই, যারা এখন চীনের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত রয়েছে। ভারতকে রাজি করিয়ে ‘কোয়াড’এর মতো জোটকে সামরিক জোটে রূপান্তর করাটা অস্ট্রেলিয়ার আদর্শিক চিন্তার প্রভাবেরই ফলাফল।


‘কোয়াড’ এবং ‘এক্সারসাইজ মালাবার’

গত জুলাই মাসে ফিলিপাইন সাগরে যুক্তরাষ্ট্র এবং জাপানের সাথে নৌমহড়ায় অংশ নেয় অস্ট্রেলিয়া। অস্ট্রেলিয়ার বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ ‘ক্যানবেরা’সহ পাঁচটা যুদ্ধজাহাজ এতে অংশ নেয়। যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ ‘রনাল্ড রেগ্যান’সহ তিনটা যুদ্ধজাহাজ ও জাপানের একটা যুদ্ধজাহাজ এই মহড়ায় যোগ দেয়। তবে এই তিন দেশের সাথে ভারতের নামও যুক্ত করা হচ্ছে ইন্দো-প্যাসিফিকে চীনকে ব্যালান্স করতে। ‘নিকেই এশিয়া’ বলছে যে, সামনের দিনগুলিতে ইন্দো-প্যাসিফিকে গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে ‘কোয়াড’। যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, জাপান এবং অস্ট্রেলিয়ার মাঝে এই গ্রুপটা এতদিন পর্যন্ত অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক আদানপ্রদানের গ্রুপ হিসেবে থাকলেও নভেম্বরের শেষে নৌমহড়া ‘এক্সারসাইজ মালাবার’এ অস্ট্রেলিয়ার অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে ‘কোয়াড’ একটা প্রতিরক্ষা গ্রুপে রূপ নিতে যাচ্ছে। ১৯শে অক্টোবর ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে অস্ট্রেলিয়ার অন্তর্ভুক্তির কথা জানানো হয়। প্রতিবছর অনুষ্ঠিত হওয়া ‘এক্সারসাইজ মালাবার’ মূলতঃ বঙ্গোপসাগরে অনুষ্ঠিত হয়; শুধুমাত্র এক বছর এটা অনুষ্ঠিত হয়েছিল ফিলিপাইন সাগরে। তিন বছর আগে অস্ট্রেলিয়া এই মহড়ায় অংশ নেবার ইচ্ছা ব্যক্ত করলেও ভারতের অনিচ্ছায় অস্ট্রেলিয়রা অংশ নিতে পারেনি। তবে অস্ট্রেলিয়া তাদের চেষ্টা চালিয়ে গেছে এবং শেষ পর্যন্ত মহড়ার অংশ হতে পেরেছে। ভারতের ‘দ্যা হিন্দু’ পত্রিকা বলছে যে, গত অগাস্টে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বৈঠকে নীতিগতভাবে অস্ট্রেলিয়াকে এই মহড়ায় আমন্ত্রণ জানাবার ব্যাপারে ঐকমত্য হয়। বিশ্লেষকেরা বলছেন যে, এই মহড়ার মূল লক্ষ্যই হলো চীনের প্রভাবকে নিয়ন্ত্রণ করা। আর হিমালয়ের পাদদেশে লাদাখে চীনের সাথে ভারতের সংঘাত এই সিদ্ধান্তের পিছনে ভূমিকা রাখতে পারে বলে অনেকেই ধারণা করছেন।

অক্টোবরের শুরুতে জাপানের রাজধানী টোকিওতে ‘কোয়াড’এর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের এক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। ‘বিবিসি’ তাদের বিশ্লেষণে বলছে যে, ২০০৭ সালে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের মাধ্যমে এই গ্রুপের শুরু হলেও চীনের কাছ থেকে প্রতিবাদ আসার পর এই গ্রুপটার চীন বিরোধী চিন্তাটাকে সদস্য রাষ্ট্রগুলি আড়াল করে রাখার ক্ষীণ একটা প্রয়াস চালিয়ে যায়। তবে গত কয়েক বছরের মাঝে গ্রুপের সবগুলি দেশের সাথেই চীনের সম্পর্কের অবনতি ঘটার পর ‘কোয়াড’এর কৌশলগত জোটের চিন্তাটা সামনে আসতে থাকে। থিঙ্কট্যাঙ্ক ‘ইন্টারন্যাশনাল ইন্সটিটিউট ফর সিকিউরিটি স্টাডিজ’ বা ‘আইআইএসএস’এর সিঙ্গাপুর অফিসের সিনিয়র ফেলো আলেক্সান্ডার নেইল বলছেন যে, ‘কোয়াড’এর কর্মকান্ড আটকে থাকার মূল কারণ ছিল ভারত; যারা ঐতিহাসিকভাবেই জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের অংশ ছিল। আর এখন এই জোটের সামনে চলে আসাটাও হয়েছে ভারতের জন্যেই, যারা এখন চীনের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত রয়েছে। 

জুলাই ২০২০। ফিলিপাইন সাগরে যুক্তরাষ্ট্রের ও জাপানের সাথে অস্ট্রেলিয়ার নৌমহড়া। অস্ট্রেলিয়ার বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ ‘ক্যানবেরা’সহ পাঁচটা যুদ্ধজাহাজ এতে অংশ নেয়। যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ ‘রনাল্ড রেগ্যান’সহ তিনটা যুদ্ধজাহাজ ও জাপানের একটা যুদ্ধজাহাজ এই মহড়ায় যোগ দেয়। চীনকে নিয়ন্ত্রণে অস্ট্রেলিয়া ইন্দো-প্যাসিফিকের দেশগুলিকে নিয়ে কয়েকটা কৌশলগত জোট গঠন করার প্রচেষ্টায় রয়েছে।


করোনা মহামারির মাঝে ইন্দো-প্যাসিফিকের শক্তির মাপকাঠিতে এগিয়েছে অস্ট্রেলিয়া

১৮ই অক্টোবর অস্ট্রেলিয়ার থিঙ্কট্যাঙ্ক ‘লোয়ি ইন্সটিটিউট’ ‘এশিয়া পাওয়ার ইনডেক্স কি ফাইন্ডিংস ২০২০’ নামে একটা প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এর মাঝে মূল বিষয় ছিল ‘এশিয়া পাওয়ার ইনডেক্স ২০২০’ নামে একটা সূচক; যেখানে ভূরাজনৈতিক শক্তির হিসেবে ইন্দো-প্যাসিফিকে প্রভাব বিস্তার করা ২৬টা দেশের মাঝে একটা তুলনামূলক চিত্র দেখানো হয়েছে। ২০১৮ সাল থেকে প্রকাশ করে আসা এই ইনডেক্সে এশিয়ার রাষ্ট্রগুলির সম্পদ এবং প্রভাবের একটা সমন্বয় করা হয়। পশ্চিমে পাকিস্তান থেকে পূর্বে নিউজিল্যান্ড এবং উত্তরে রাশিয়া পর্যন্ত এই অঞ্চলকে সংজ্ঞায়িত করে এর মাঝের দেশগুলির আশেপাশের অঞ্চলকে প্রভাবিত করার সক্ষমতাকে মাপা হয়। প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপে বলা হয় যে, করোনাভাইরের কারণে কোন দেশের কার চাইতে বেশি অধোগতি হয়েছে, সেটাই হয়ে গিয়েছে মূল প্রতিপাদ্য বিষয়। যুক্তরাষ্ট্র তার প্রভাব অনেকটা হারালেও ৮২ পয়েন্ট নিয়ে এখনও সে শীর্ষে অবস্থান করছে; তার ঠিক পিছনে রয়েছে চীন; যার পয়েন্ট ৭৬। প্রায় ৪০ পয়েন্টের কাছাকাছি রয়েছে জাপান ও ভারত। ৩২ থেকে ৩৩ পয়েন্টের মাঝে রয়েছে রাশিয়া, অস্ট্রেলিয়া এবং দক্ষিণ কোরিয়া; ২৭ পয়েন্ট নিয়ে ৭ম স্থানে রয়েছে ছোট্ট দেশ সিঙ্গাপুর। ১৯ থেকে ২১ পয়েন্টের মাঝে রয়েছে থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম এবং নিউজিল্যান্ড। ১৫ থেকে ১৭ পয়েন্টের মাঝে রয়েছে তাইওয়ান ও পাকিস্তান। ১২ থেকে ১৩ পয়েন্টের মাঝে রয়েছে ফিলিপাইন এবং উত্তর কোরিয়া; ৯ পয়েন্ট নিয়ে ১৮ এবং ১৯তম অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ এবং ব্রুনাই। ৭০ পয়েন্টের উপর দেশগুলিকে ‘সুপারপাওয়ার’, ৪০ পয়েন্টের দেশগুলিকে ‘মেজর পাওয়ার’ এবং ১০ পয়েন্টের বেশির পাওয়া দেশগুলিকে ‘মিডল পাওয়ার বলে’ আখ্যা দেয়া হয়।

২০২০ সালের এই ইনডেক্সের গুরুত্ব আগেরগুলির চাইতে বেশি, কেননা এখানে করোনাভাইরাসের কারণে এই দেশগুলির ভূরাজনৈতিক সক্ষমতার কতটুকু পরিবর্তন হয়েছে, তার তুলনা করা হয়। আটটা ক্ষেত্রের মাঝে মোট ১’শ ২৮টা বিষয়ের উপর দেশগুলির সক্ষমতা পরিমাপ করা হয়; যার মাঝে রয়েছে সামরিক সক্ষমতা ও প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্ক; অর্থনৈতিক সক্ষমতা ও নেটওয়ার্ক; কূটনৈতিক ও সাংকৃতিক প্রভাব; এবং দৃঢ়তা ও ভবিষ্যৎ সম্পদ। এবছরের হিসেবে তিনটা নতুন বিষয় যোগ করা হয়; যেগুলি হলো, প্রধান জলবায়ুগত হুমকি; দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক প্রতিরক্ষা আলোচনা; এবং দেশে ও দেশের বাইরে করোনা মহামারি ব্যবস্থাপনার ব্যাপারে মানুষের ধারণা। এবছরে ২৬তম দেশ হিসেবে পপুয়া নিউ গিনিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে যে, চীন তার অবস্থানকে বহু প্রতিকূলতা সত্ত্বেও ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে। অন্যদিকে ভারতকে একসময় চীনের ভবিষ্যৎ প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে যারা চিন্তা করছিলেন, তাদেরকে সেটা ভুলে যেতে বলা হয়। তিনটা দেশের কথা বলা হয়, যারা ২০২০ সালে নিজেদের অবস্থানকে বেশ খানিকটা এগিয়ে নিয়েছে; যারা হলো ভিয়েতনাম, অস্ট্রেলিয়া এবং তাইওয়ান। আরেক হিসেবে দেখানো হয় যে, শক্তির সূচকে নিজেদের অবস্থান দৃঢ় থাকা সত্ত্বেও কোন দেশ করোনা পরিস্থিতিকে কাটিয়ে উঠতে কত সময় নিতে পারে। এক্ষেত্রে জাপানের কথা বলা হয় যে, ২০২৭ সাল পর্যন্ত লেগে যাবে তাদের পুরোপুরি কাটিয়ে উঠতে; যুক্তরাষ্ট্রের লাগবে ২০২৪ সাল; রাশিয়া ও নিউজিল্যান্ডের লাগবে ২০২৩ সাল। অস্ট্রেলিয়া, ভারত, পাকিস্তান, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ডের লেগে যাবে ২০২২ সাল। অপরদিকে ২০২০ সালের মাঝেই পুষিয়ে উঠতে পারবে যে দেশগুলি, তার মাঝে রয়েছে চীন, বাংলাদেশ, ভিয়েতনাম, মিয়ানমার এবং আরও কয়েকটা দেশ। \

অক্টোবর ২০২০। অস্ট্রেলিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী লিন্ডা রেইনল্ডস ব্রুনাইএর সুলতান হাসানাল বলকিয়াহএর সাথে। এই সফরের সময় ব্রুনাই সরকার একজন অস্ট্রেলিয় সামরিক অফিসারকে স্থায়িভাবে সামরিক উপদেষ্টা হিসেবে রাখার ব্যাপারে একমত হয়েছে। অস্ট্রেলিয়া ইন্দো-প্যাসিফিকের দেশগুলির মাঝে শক্তির বিচারে যথেষ্ট অগ্রগামী; যা মাত্র আড়াই কোটি জনসংখ্যার দেশটার জন্যে অস্বাভাবিক। এটা মূলতঃ অস্ট্রেলিয়ার আদর্শিক চিন্তার প্রভাবেরই ফলাফল। এই চিন্তাই অস্ট্রেলিয়াকে ইন্দো-প্যাসিফিকে ‘গ্লোবাল ব্রিটেন’এর প্রতিনিধিত্ব করাচ্ছে।


অস্ট্রেলিয়ার বাস্তবতা এবং ‘গ্লোবাল ব্রিটেন’এর আদর্শিক লক্ষ্য

তবে অস্ট্রেলিয়া কতটা স্বাধীনভাবে তাদের পররাষ্ট্রনীতিকে এগিয়ে নিতে পারবে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। বিশেষ করে চীনকে নিয়ন্ত্রণের যে নীতি নিয়ে তারা এগুতে চাইছে, তা সকল ক্ষেত্রে বাস্তবায়নযোগ্য নাও হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক থিংকট্যাঙ্ক ‘র‍্যান্ড কর্পোরেশন’এর জেষ্ঠ্য বিশ্লেষক ডেরেক গ্রসম্যান বলছেন যে, চীন অস্ট্রেলিয়ার সবচাইতে বড় বাণিজ্য সহযোগী। এমতাবস্থায় অস্ট্রেলিয়া অত সহজে বেইজিং থেকে আলাদা হতে চাইবে না। ব্রিটেনের ‘দ্যা গার্ডিয়ান’ পত্রিকার এক প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে যে, অস্ট্রেলিয়া চীনের ব্যাপারে কঠোর রাজনৈতিক অবস্থানে যাবার কারণে চীন অস্ট্রেলিয়ার পণ্য এবং সেবার উপর বাধা সৃষ্টি করছে। অস্ট্রেলিয়ার পর্যটন, শিক্ষা, কয়লা, গোমাংস, মদ, তুলা এবং বার্লি চীনারা টার্গেট করেছে। বেইজিং অস্ট্রেলিয়ার গোমাংসের উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে; চীনা শিক্ষার্থীরা অস্ট্রেলিয়ায় জাতিগত হামলার হুমকিতে থাকতে পারে বলে সতর্কতা জারি করা হয়েছে; অস্ট্রেলিয়ার কয়লা আমদানিও আপাততঃ স্থগিত রাখা হয়েছে; বার্লির উপর দেয়া হয়েছে ৮০ শতাংশ শুল্ক। তবে একদিকে অস্ট্রেলিয়া যেমন অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তেমনি চীনের পক্ষেও অস্ট্রেলিয়ার বিকল্প খুঁজে পাওয়া দুষ্কর; বিশেষ করে অস্ট্রেলিয়ার কয়লার বিকল্প চীনারা অত সহজে পাবে না। কাজেই আঞ্চলিকভাবে প্রভাব বিস্তারের প্রতিযোগিতা থাকলেও দুই দেশের মাঝে বাণিজ্য অত সহজে স্থবির হচ্ছে না।

‘গ্লোবাল ব্রিটেন’এর অংশ হিসেবে অস্ট্রেলিয়া নিজেকে একা হিসেবে দেখে না। বিশাল ইন্দো-প্যাসিফিকে ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ব্রুনাই, ভিয়েতনাম, তাইওয়ান এমনকি জাপান এবং ভারতকে নিয়েও জোট বাধার চেষ্টায় রয়েছে অস্ট্রেলিয়া। এই ‘মিডল পাওয়ার’ রাষ্ট্রগুলির সক্ষমতাকে বাড়িয়ে তা নিজের পক্ষে ব্যবহার করতে চাইছে অস্ট্রেলিয়া। করোনা মহামারিতে বেশিরভাগ দেশের সক্ষমতাই কমেছে; তথাপি ভূরাজনৈতিক প্রতিযোগিতামূলক কর্মকান্ড আরও জোরালো হয়েছে। তবে অত্র অঞ্চলের সবচাইতে বড় শক্তি যুক্তরাষ্ট্রকেও অস্ট্রেলিয়া সাথে রাখতে চাইছে শক্তিধর চীনকে ব্যালান্স করতে। তথাপি অস্ট্রেলিয়া তার এই কৌশলগত চিন্তায় যুক্তরাষ্ট্রের উপর নির্ভরশীল থাকতে চাইছে না। জাপানের সাথে আলাদা করে কৌশলগত সমঝোতা এবং ব্যাপক চেষ্টার পর ভারতকে রাজি করিয়ে ‘কোয়াড’এর মতো জোটকে সামরিক জোটে রূপান্তর করার মতো কাজগুলি অস্ট্রেলিয়ার আদর্শিক চিন্তার প্রভাবেরই ফলাফল। এই চিন্তাই অস্ট্রেলিয়াকে ইন্দো-প্যাসিফিকে ‘গ্লোবাল ব্রিটেন’এর প্রতিনিধিত্ব করাচ্ছে।

No comments:

Post a Comment