০১লা মে ২০২১
গত ২৪শে এপ্রিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ১৯১৫ সালের আর্মেনিয় হত্যাকান্ডকে ‘গণহত্যা’র স্বীকৃতি দেয়ার পর থেকে তুরস্ক এবং যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। ২০১৬ সালে তুরস্কে ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে দুই দেশের সম্পর্ক নিম্নগামী রয়েছে। সেই ব্যর্থ অভ্যুত্থানে যুক্তরাষ্ট্রের হাত ছিল বলে তুর্কিরা অভিযোগ করেছেন। সাম্প্রতিক সময়ে রাশিয়া থেকে ‘এস ৪০০’ বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনার ফলশ্রুতিতে যুক্তরাষ্ট্র তুরস্ককে ‘এফ ৩৫’ স্টেলথ যুদ্ধবিমান প্রকল্প থেকে বাদ দেয়। সিরিয়াতে কুর্দি মিলিশিয়া গ্রুপ ‘ওয়াইপিজি’কে সন্ত্রাসী আখ্যা দেয়ার পরেও যুক্তরাষ্ট্র তাদেরকে অব্যাহত সহায়তা দেয়ায় তুরস্কের সাথে সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। তুরস্কের প্রতিরক্ষা শিল্পের উপরেও যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এছাড়াও মার্কিন আদালতে তুর্কি সরকারি ব্যাঙ্কের বিরুদ্ধে মামলা চলা নিয়েও চলছে বাকবিতন্ডা। জো বাইডেন নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হবার আগেই নির্বাচনী প্রচারণার সময়েই তুরস্কের সরকার, বিশেষ করে প্রেসিডেন্ট রিচেপ তাইয়িপ এরদোগানের কঠোর সমালোচনা করেছেন। ডেমোক্র্যাট সরকারের আমলে দুই দেশের সম্পর্ক যে আরও বেশি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে যাচ্ছে, এটা প্রায় জানাই ছিল।
বাইডেনের ঘোষণার পর তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগলু এক টুইটার বার্তায় বলেন যে, তুরস্কের অতীতের ব্যাপারে অন্য কারুর কাছ থেকে তুর্কিদের শিখতে হবে না। শুধুমাত্র জনসমর্থন আদায়ের জন্যে এধরনের চেষ্টাকে তুরস্ক পুরোপুরিভাবে প্রত্যাখ্যান করছে। তুর্কি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বাইডেনের ‘বিশাল ভুল’কে শুধরে নিতে বলা হয়। একইসাথে বলা হয় যে, এর মাধ্যমে এমন এক ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে, যা সারিয়ে নেয়া কঠিন। ‘জার্মান মার্শাল ফান্ড অব দ্যা ইউনাইটেড স্টেটস’এর আঙ্কারা ডিরেক্টর ওজগুর উনলুহিসারচিকলি ‘এরাব নিউজ’এর সাথে এক সাক্ষাতে বলছেন যে, বাইডেনের ঘোষণা বেশিরভাগ তুর্কির কাছেই দ্বিমুখী নীতি হিসেবে দেখা দিয়েছে; যা কিনা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গিতে দীর্ঘ মেয়াদী নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। একইসাথে বলা যায় যে, তুরস্কে মার্কিন বিরোধী চিন্তা যতটা খারাপ হওয়া সম্ভব ইতোমধ্যেই তা হয়ে গেছে। তিনি আরও বলেন যে, প্রতিশোধ হিসেবে তুরস্ক আফগানিস্তানের শান্তি আলোচনায় সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে; সিরিয়াতে নতুন করে সামরিক অভিযান চালাতে পারে; অথবা তুরস্কের মাটিতে ন্যাটোর ইনচিরলিক বিমান ঘাঁটিতে মার্কিন বিমান ওঠানামায় নিষেধাজ্ঞা দিতে পারে। তবে এখনও পর্যন্ত তুরস্কের বড় কোন প্রত্যুত্তর না দেয়া দেখে মনে হচ্ছে যে, হয় তুরস্ক যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আরেকটা সংঘাতে জড়াতে চাইছে না; অথবা আরেকটা সংঘাত বহণ করার সক্ষমতা তুরস্কের নেই।
আর্মেনিয়রা বাইডেনের ঘোষণাকে স্বাগত জানালেও কিছুদিন আগেই নাগোর্নো কারাবাখ ছিটমহল নিয়ে আর্মেনিয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয়লাভ করা আজেরবাইজান ব্যাপারটাকে অন্যভাবে দেখেছে। বাইডেনের ঘোষণার চারদিন পর মার্কিন পররাষ্ট্রসচিব এন্টনি ব্লিনকেনের সাথে এক টেলিফোন আলাপে আজেরি প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিইয়েভ বলেন যে, দেশটার নেতৃত্ব এবং জনগণ বাইডেনের ঘোষণায় ‘উদ্বিগ্ন’। তবে আজেরবাইজানের সরকারি বার্তাসংস্থা ‘আজেরতাগ’ বলছে যে, ফোনালাপে তারা আর্মেনিয়ার সাথে যুদ্ধের পর পুনর্বাসন কর্মকান্ড এবং গ্যাস পাইপলাইনে মার্কিন সরকারের সমর্থন নিয়েই বেশি কথা বলেছেন।
ওয়াশিংটনে তুরস্কের রাষ্ট্রদূত হাসান মুরাত মেরকান ওয়াশিংটনের মধ্যপ্রাচ্যকেন্দ্রিক পত্রিকা ‘আল মনিটর’এর সাথে এক সাক্ষাতে বলেন যে, যুক্তরাষ্ট্রের সাথে তুরস্কের বিরোধের অনেক জায়গা থাকলেও তিনি দুই দেশের মাঝে সহযোগিতার ভবিষ্যৎ দেখতে পান। তিনি সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলির উপরই বেশি গুরুত্ব দিতে ইচ্ছুক। বিশেষ করে আফগানিস্তান এবং সিরিয়ায় শান্তি ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে তিনি দুই দেশের সহযোগিতার সুযোগ দেখছেন। অপরদিকে আঙ্কারাতে প্রাক্তন মার্কিন রাষ্ট্রদূত জেমস জেফরি তুরস্কের ‘আনাদোলু এজেন্সি’কে দেয়া এক সাক্ষাতে বলছেন যে, যদিও দুই দেশের মাঝে সম্পর্ক বর্তমানে ‘খুব একটা কাছাকাছি নয়’, ছয় মাসের মাঝে নিশ্চিত যে, সম্পর্কের উন্নয়ন হবে। সিরিয়ার কুর্দি ‘ওয়াইপিজি’ মিলিশিয়াদেরকে সন্ত্রাসী আক্ষ্যা দেয়ার পরেও যুক্তরাষ্ট্র আইসিসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের সহযোগী হিসেবে নিয়েছে তাদেরকে; যা কিনা তুরস্কের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের মতবিরোধের একটা বড় জায়গা। অন্যদিকে ‘এস ৪০০’ এবং ‘এফ ৩৫’ স্টেলথ যুদ্ধবিমান ইস্যুগুলি দুই দেশের সম্পর্ককে আরও কলুষিত করেছে। জেমস জেফরি সম্পর্ককে আগের অবস্থানে ফেরত নিতে পারার কথা বলেননি; তবে সম্পর্ক মেরামত সম্ভব হতে পারে বলে মনে করছেন।
তুরস্কের ‘ন্যাশনাল ডিফেন্স ইউনিভার্সিটি’র প্রফেসর এবং তুর্কি প্রেসিডেন্টের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা গুলনার আইবেত ব্রিটেনের ‘রয়াল ইউনাইটেড সার্ভিসেস ইন্সটিটিউট’এর এক লেখায় বলছেন যে, পরিবর্তিত বিশ্বে তুরস্ককে সাথে না রেখে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা রক্ষা করা সম্ভব নয়। তিনি বলছেন যে, আর্মেনিয়া নিয়ে তুরস্কের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান বিরোধ শুধুমাত্র দুই দেশের সরকারের বিরোধ নয়। বিষয়টা তুরস্কের জনগণের কাছেও খুবই সংবেদনশীল। একসময় তুরস্কের বন্ধুত্ব হারাবার ভয়েই ওয়াশিংটনের লবিং গ্রুপগুলির কথা শোনেনি মার্কিন সরকার। এখন পরিবর্তিত এবং অনিশ্চিত বিশ্বে দুই দেশের কৌশলগত সম্পর্ক আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হওয়া উচিৎ।
মার্কিন থিঙ্কট্যাঙ্ক ‘ইউরেশিয়া গ্রুপ’এর প্রেসিডেন্ট ইয়ান ব্রেমার বলছেন যে, যুক্তরাষ্ট্রের কাছে এখন প্রধান ফোকাস হলো চীন। একারণেই মার্কিনীরা মধ্যপ্রাচ্যে তাদের অবস্থানকে কমিয়ে আনতে চাচ্ছে। যেহেতু সেখানে এখন যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ তেমন নেই, তাই তার হারাবারও খুব বেশি কিছু নেই। একারণেই মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্র এখন এমন সব সিদ্ধান্ত নিতে পারছে, যা আগে নেয়া কষ্টকর ছিল। এই নীতির অংশ হিসেবেই যুক্তরাষ্ট্রের কাছে তুরস্কের গুরুত্ব কমে গেছে। এখন তুরস্ককে নিজের পক্ষে রাখার তেমন কোন কারণ যুক্তরাষ্ট্রের কাছে নেই। অপরপক্ষে তুর্কি নেতৃত্ব এবং বুদ্ধিজীবিরা জোর দিয়ে বলতে চাইছে যে, তুরস্ককে ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র তার বিশ্ব নেতৃত্বকে ধরে রাখতে পারবে না; তাই দুই দেশের সম্পর্কোন্নয়ন ছাড়া আর কোন গত্যন্তর নেই। তবে যে ব্যাপারটাতে সকলেই একমত তা হলো, বাইডেন প্রশাসনের নীতি শুধু তুর্কি সরকার নয়, রাষ্ট্র হিসেবে তুরস্ককেই কাছের বন্ধু হিসেবে দরকার মনে করছে না। এতে সন্দেহাতীতভাবেই তুরস্কের জনগণের মাঝে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি হৃদ্যতাবোধ যতটুকু অবশিষ্ট ছিল, তাও বাতাসে মিলিয়ে যাবে। পরিবর্তিত বিশ্ব ব্যবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব বলয় থেকে বের হয়ে আসা ছাড়া তুরস্কের সামনে কোন পথই খোলা থাকছে না।
বাইডেন মিডল ইস্টে পুরুপুরি তুরষ্ককে ব্যাবহার করতে চাইতেছে বা করছে।তার সক্ষ্মতা যাতে নিয়ন্ত্রণের বাইরে না যায় ঐটাও ব্যালেন্স করছে মনে হচ্ছে। তুরষ্ককের আদর্শিক্ অধঃপতনের তাকে অবশ্যই প্রভুর নিছে থাকতে হবে।। আর এরদোগানের ভেলকি বাজি যতই দিক গত ক্যু ছিল EU ব্যাকড। এরদোগান কখনো প্রভূহীন অবস্তায় পড়ত চাইবেনা। বাইডেন তুরষ্ককে সিরিয়ার মত অন্যান্য অঞ্চলেও বের করে তাঁর যুদ্ধগুলো বহণ করার দ্বায়িত্ব নিতে বলছে প্রচ্চন্ন ভাবে।আফগানেও হয়ত তুরষ্কের ভুমিকা চাইবে বাইডেন,এই কারণে প্রসার কৃয়েট করছে। তুরষ্ক বর্তমানে আমেরিকার এজেন্ট স্টেট হিসেবে কাজ করছে তার নিজস্ব চিন্তার ভিত্তি না থাকাই এই দরুন অবস্থা।ওসমানীয়দের নাম ব্যাবহার বর্তমান তুরষ্ককে আরো সার্ভাইভাল ইস্যুয় প্রবলেম তৈরি করছে। কারণে এই তুরষ্কতো ওসমানী আদর্শের তুরষ্কনা যে একটা আদর্শিক ভিউপয়েন্ট থেকে ডীল করবে। বাইডেন এই জায়গায় উসকানী দিয়ে তার্কিকে আরোবেশী আদেশ অনুসরণের জন্য প্রচ্ছন্ন ভাবে ইংগিত দিচ্ছে। তুরষ্ক আগের মতাদর্শে ফিরে যাওয়া ছাড়া এই ট্রপ থেকে বের হতে পারবেনা। আপনার মতামত আশা করছি,
ReplyDeleteধন্যবাদ আপনার চমৎকার কমেন্টের জন্যে।
Deleteউসমানি খিলাফত ধ্বংসের পর তুরস্কের জন্মের সাথেসাথেই তুরস্কের উদ্দেশ্য ঠিক করে ফেলা হয়েছিল। এর উদ্দেশ্য ঠিক করেছিল ইস্তাম্বুল ও আনাতোলিয়ার জনগণ নয়, বরং ইউরোপিয়রা। কিন্তু জনগণের বিশ্বাসগত ব্যাপারগুলি পুরোপুরি মুছে ফেলা দুষ্কর, যেটা কেমালিস্টরা চেষ্টা করেছিল। পশ্চিমারা একারণেই ঠান্ডা যুদ্ধের পর তুরস্ক এবং আরও কিছু মুসলিম দেশের সামরিক শক্তিকে টার্গেটে রেখেছিল; যদিও প্রতিটা দেশই সেকুলার সংবিধান দ্বারা পরিচালিত। নিজেদের আদর্শকে রক্ষা করার নিমিত্তেই তারা এটা করেছে। আফগানিস্তান ধ্বংসের সাথে যেমন পাকিস্তানের সামরিক শক্তি ধ্বংসের পরিকল্পনা ছিল, তেমনি ইরাক এবং সিরিয়া ধ্বংসের সাথে তুরস্কের সামরিক সক্ষমতাও ধ্বংসের পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু পশ্চিমারা যে বিধাতা নয়, তা এখন প্রমাণিত। পাকিস্তান এবং তুরস্কের সরকার পশ্চিমাদের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে যারপরনাই চেষ্টা করলেও এই রাষ্ট্রগুলির সামরিক বাহিনী এবং প্রতিরক্ষা শিল্প ধ্বংস করা সম্ভব হয়নি।
উল্টো চীনের আবির্ভাব এখন পশ্চিমা, বিশেষ করে মার্কিন শক্তিকে এমনভাবে ব্যালান্স করেছে যে, ইচ্ছে থাকলেও তাদের আদর্শিক ইচ্ছাগুলি আর বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না। তুরস্কের মতো অন্যান্য মুসলিম দেশের সরকারগুলি দুর্বল। জনগণের আদর্শিক আকাংক্ষার সামনে এই দুর্বলতাগুলি যখন প্রকাশ পেয়ে যাচ্ছে, তখনই দেখা যাচ্ছে যে এই কৃত্রিম রাষ্ট্রগুলি তাদের প্রথম তৈরি করার সময়কার উদ্দেশ্যের বাইরেও কাজ করতে শুরু করেছে। আর আদর্শিক দুর্বলতার কারণে পশ্চিমারা আগের মতো এই রাষ্ট্রগুলিকে নিয়ন্ত্রণও করতে পারছে না। কিছুক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ করলেও অনেককিছুই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলছে, যা কিনা পত্রিকার রিপোর্টের বাইরে।
সুতরাং সরকার নয়; বরং রাষ্ট্র এবং জনগণের আকাংক্ষা কোনদিকে ধাবিত হচ্ছে, সেটাই বলে দেবে ভবিষ্যৎ।
আপনার লেখাটি আর কমেন্ট এর জন্য ধন্যবাদ।
ReplyDeleteএখানে আমি শুধু একটি কমেন্ট করতে চাই,এরদোয়ান এর তুর্কী কতটা তার ফাউন্ডেশনাল বেস থেকে সরে আস্তে পেরেছে এবং অবশ্যই তাদের প্রকৃত লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য কি?
আর অনুরোধ জানাবো, আফঘানিস্তান নিয়ে কিছু লিখতে, আফগানিস্তানে কি সত্যি শান্তি ফিরবে?
এরদোগানের 'একে পার্টি' মূলতঃ 'ইখুয়ান' বা মুসলিম ব্রাদারহুডের চিন্তাটাই ধারণ করে। এই চিন্তার মাধ্যমে তারা বাস্তবতাকে ভিত ধরে নিয়ে ইসলামকে বাস্তবায়িত করতে চায়। এই পদ্ধতিতে সমস্যা হলো, বাস্তবতা বারংবারই পরিবর্তি হয়। সেইসাথে তারাও তাদের পদ্ধতি পরিবর্তিত করে ফেলে। আর যেহেতু বাস্তবতাকে ভিত ধরা হয়, তাই ইসলামের সাথে বাস্তবতার সাংঘর্ষিক অবস্থান থাকলেও তারা বাস্তবতাকেই মেনে নেয়, এবং ইসলামকে বাস্তবতার মাঝে 'ফিট' করে। একারণেই একেক দেশের বাস্তবতা অনুসারে মুসলিম ব্রাদারহুডের ধরণ একেক রকম হয়। এই মুহুর্তে তুরস্কের ক্ষমতা যেহেতু 'একে পার্টি'র হাতে, তাই তুরস্কের কৌশলগত অবস্থান অনেকাংশেই ব্রাদারহুডের চিন্তাধারার সাথে যাবে। তবে রাষ্ট্র হিসেবে তুরস্ক এবং তার জনগণের আকাংক্ষা ব্রাদারহুডের চিন্তার সাথে পুরোপুরি যাবে না, এটা নিশ্চিত। একারণেই তুরস্ককে আমরা এমন অনেক কিছুই করতে দেখবো, যা কিনা সেকুরার তুরস্কের সাথে যায় না, অথবা ব্রাদারহুডের সাথেও যায় না। 'একে পার্টি' এই কৌশলগত বাস্তবতার সাথেই তাল মেলাবে। কারণ তাদের মূল চিন্তাধারা বাস্তবতার সাথে পরিবর্তিত হয়।
Deleteআফগানিস্তান নিয়ে একটা লেখা আসছে ইনশআল্লাহ।
অসংখ্য ধন্যবাদ।
Deleteরিপ্লাই আর অনুরোধ রাখার জন্য।
পশ্চিমাদে্র কি কি আর্দশিক দূর্বলতা তৈরি হয়েছে। উদাহরনস্বরুপ বলবেন?
ReplyDeleteআপনি এব্যাপারে সবচাইতে ভালো উদাহরণগুলি পাবেন 'মার্কিন দুনিয়ায় পরিবর্তনের হাওয়া' এবং 'ভূরাজনৈতিক ভূমিকম্প ২০২০' বই দু'টায়।
Deleteতবে সংক্ষেপে কিছু ব্যাপার তুলে ধরা হলো।
পশ্চিমা তথাকথিত মুক্তবাজার অর্থনীতির কারণে সারা বিশ্বের অর্ধেক সম্পদ কয়েকজন মানুষের হাতে চলে যাওয়া; পশ্চিমা সমাজের চরম নৈতিক অবক্ষয় (পরিবারের বন্ধন হারিয়ে যাওয়া, বিকৃত যৌনাচার, বুলিইং, আত্মকেন্দ্রিকতা, হতাশা, আত্মহত্যা, ইত্যাদি); উগ্রবাদী ডানপন্থী শেতাঙ্গ জঙ্গীদের আবির্ভাব; রাষ্ট্র এবং রাষ্ট্রের আইনকে অমান্য করা; পশ্চিমা চিন্তার ভিত্তি হিসেবে খ্যাত মানবাধিকার, বাকস্বাধীনতা ও বিশ্বাসগত স্বাধীনতা ভূলুন্ঠিত করা; সেকুলারিজমের একটা ভিতকে রক্ষা করতে গিয়ে আরেকটা ভিতকে ক্ষতিগ্রস্ত করা; 'গণতান্ত্রিকভাবে' নির্বাচনে কারচুপি করে সেটাকে বৈধতা দেয়া; গণতন্ত্র রক্ষার নামে লক্ষ লক্ষ নিরপরাধ মানুষ নিধন করে 'কোল্যাটেরাল ড্যামেজ' হিসেবে গণ্য করা; সামরিক বাহিনীতে সার্ভিস জনগণের কাছে অগুরুত্বপূর্ণ হয়ে যাওয়া; নিজেদের সামরিক সক্ষমতা কমে যাওয়া; ইত্যাদি।
যেহেতু সেখানে এখন যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ তেমন নেই, তাই তার হারাবারও খুব বেশি কিছু নেই। - মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ কি একেবারেই নাই নাকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের প্রলম্বিত যুদ্ধ থেকে বের হয়ে আসতে?
ReplyDeleteমার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই মুহুর্তের চিন্তা হলো চীন। তারা সারা দুনিয়া থেকে নিজেদের অবস্থান গুটিয়ে নিচ্ছে চীনকে মোকাবিলা করার উদ্দেশ্যে।
Deleteমধ্যপ্রাচ্যে তাদের স্বার্থ বাস্তবায়ন দুই দশকেও সফল হয়নি। উল্টো এর মাঝে চীনের আবির্ভাব ঘটেছে; যা তারা খেয়ালই করেনি; ব্যাস্ত ছিল মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে। তাই এখন চীনকে নিয়েই তারা ব্যাস্ত; যাতে মুসলিম দেশগুলি চীনের কাছ থেকে অর্থনৈতিক, প্রযুক্তিগত ও সামরিক শক্তি পেতে না পারে।
স্যার বইগুলো কিনবো কিভাবে
ReplyDeleteবইগুলি রকমারি ডট কম-এ পাবেন। এছাড়াও পাবেন পাঠক সমাবেশ, বাতিঘর ঢাকা, বেঙ্গল বই এবং বুকএন্ডস-এ (ধানমন্ডি ও গুলশান ইউনিমার্ট-এর ভেতরে)।
Deleteবইগুলো ইন্ডিয়াতে পাবো কিভাবে?
DeleteThank you.
নির্ধিষ্ট করে বলতে পারছি না যে, এই স্টোরগুলি বাংলাদেশের বাইরে সাপ্লাই দেয় কিনা। দেখি আপনার জন্যে কি করা যায়।
Delete