১৪ই মার্চ ২০২০
৯ই মার্চ আন্তর্জাতিক জ্বালানি তেলের বাজার মূল্য একদিনে ৩০ শতাংশের বেশি কমে যায়। ১৯৯১ সালের প্রথম উপসাগরীয় যুদ্ধের পর থেকে এটা ছিল তেলের বাজারে একদিনের সর্বোচ্চ ধ্বস। এই ধ্বসের একটা কারণ ছিল বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের কারণে তেলের চাহিদা পড়ে যাওয়া। তবে এর সাথে যোগ হয়েছে সৌদি আরব এবং রাশিয়ার মাঝে তেলের বাজার নিয়ন্ত্রণে সমঝোতায় না পৌঁছানো। গত ৬ই মার্চ ভিয়েনায় এক বৈঠকে সৌদি কর্মকর্তারা করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবিলায় রুশদেরকে তেলের উৎপাদন কমাতে অনুরোধ করেন। এই প্রস্তাবে রাশিয়া রাজি না হওয়ায় সৌদিরা প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে উৎপাদন ১ কোটি ২৩ লাখ ব্যারেলে ওঠানো এবং বিশেষ ক্রেতাদের জন্যে ২০ বছরের মাঝে সর্বোচ্চ মূল্য কর্তনের ঘোষণা দেয়। ‘ব্লুমবার্গ’ এর ব্যাখ্যা দিয়ে বলছে যে, সৌদিদের কমদামি তেলের বাজার ধরতে উত্তরপূর্ব এশিয়ার ক্রেতারা ব্যর্থ হবার ফলে এটা নিশ্চিত হয়ে যায় যে সৌদিদের তেলের বাজার হতে যাচ্ছে ইউরোপ, যা কিনা রুশ তেলের মূল বাজার। উত্তর এশিয়ার ক্রেতারা লাইট ক্রুড চাইলেও সৌদিরা তাদেরকে মিডিয়াম ও হেভি ক্রুড কেনার অফার দেয়। এতে এশিয়রা বাধ্য হয় সৌদিদের তেলের অফার ছেড়ে দিতে। অন্যদিকে ভারতসহ দক্ষিণ এশিয়ায় সৌদিরা মিডিয়াম ক্রুডের সরবরাহ বাড়াচ্ছে।
‘গোল্ডমান সাকস’এর বিশ্লেষকেরা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন যে, তেলের মূল্য ব্যারেলপ্রতি ২০ ডলারে নেমে যাবার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেয়া যায় না। তেলের বাজারে ধ্বসের সাথেসাথে তেল কোম্পানিগুলির শেয়ারের মূল্যেও ব্যাপক দরপতন হয়েছে। দু’দিন পর ১১ই মার্চ সৌদি তেল কোম্পানি আরামকো ঘোষণা দেয় যে, তারা তাদের তেলের উৎপাদন ২০২০ সালের মাঝেই বাড়িয়ে দৈনিক ১ কোটি ৩০ লাখ ব্যারেল করবে। একইসাথে আবুধাবি ন্যাশনাল অয়েল কোম্পানিও ঘোষণা দেয় যে, তারা এপ্রিল মাসে তাদের উৎপাদন ১০ লাখ ব্যারেল বাড়িয়ে ৪০ লাখ ব্যারেল করবে। ‘ব্লুমবার্গ’ জানাচ্ছে যে, ইরাক এবং নাইজেরিয়াও তেল উৎপাদন বাড়াবার ঘোষণা দিয়েছে। এই ব্যাপারটার ব্যাখ্যা দিয়ে ‘সিএনএন’ বলছে যে, তেলের মূল্যের এই যুদ্ধের মাঝে সকলেই চাইবে যে করেই হোক তেলের বাজারে নিজস্ব হিস্যা বাড়িয়ে নিতে। গত তিন বছর ধরে সৌদিরা রুশদের সাথে সমঝোতা করে তেলের বাজারে উৎপাদন নিয়ন্ত্রণ করেছে। কিন্তু এখন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে সমঝোতা শেষ হয়ে যাওয়ায় সৌদি যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমান বাজার হিস্যা ধরতে অত্যন্ত আক্রমণাত্মক একটা কৌশল নিয়েছেন।
‘জেপি মরগ্যান’এর বিশ্লেষক যোসেফ লুপটন এক বিশ্লেষণে বলছেন যে, তেলের মূল্য কমায় তেলের ব্যবহারকারী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে সুবিধা হবে। তবে সেদেশের তেল কোম্পানিগুলির যেগুলি শেইল অয়েলের ব্যবসায় রয়েছে, সেগুলি সমস্যায় পতিত হতে পারে। তিনি সৌদিদের লক্ষ্যের ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন যে, সৌদিরা বাজারে তেলের বন্যা বইয়ে দিতে চাইছে যুক্তরাষ্ট্রের তেল কোম্পানিগুলিকে চাপে ফেলার জন্যে। ২০১৫-১৬ সালের দিকে তেলের মূল্য ব্যারেলপ্রতি ১১০ ডলার থেকে ৩০ ডলারে নেমে গেলে সেবারেও শেইল অয়েল ইন্ডাস্ট্রি ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়েছিল; বিনিয়োগ চলে গিয়েছিল; চাকুরি হারিয়েছিল বহু মানুষ। এখন মার্কিন শেইল ইন্ডাস্ট্রি আগের চাইতে আরও শক্ত অবস্থানে থাকলেও পূর্বে প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার ক্ষতি হওয়ায় মার্কিন ব্যাংকগুলি সেখানে আরও বিনিয়োগ করতে আর রাজি নয়। আবার তেলের বাজারে ধ্বসের সাথেসাথে শেয়ার বাজারে যেমন ধ্বস নেমেছে, তেমনি তেল কোম্পানিগুলির বন্ডগুলিও ব্যাপকভাবে মূল্য হারাচ্ছে। ‘জেপি মরগ্যান’ বলছে যে, ২০২০ সালের দ্বিতীয়াংশে তেলের মূল্য ব্যারেলপ্রতি ৪০ ডলার এবং ২০২১ সালে ৫০ ডলারে উঠলেও ২০২১ সালে প্রায় ২৪ শতাংশ তেলের কোম্পানির বন্ড খেলাপি হয়ে যেতে পারে।
‘সিএনএন’ তাদের বিশ্লেষণে বলছে যে, সৌদিরা তেলের মূল্যের যুদ্ধে নেমে ঘোষণা দিচ্ছে যে, প্রথমতঃ সৌদিরা নিয়ন্ত্রণ না করে তেলের বাজারকে মুক্ত বাজার হিসেবে চলতে দিলে বিপর্যয় নেমে আসবে। সুতরাং বিশ্বকে সৌদিদের এই নিয়ন্ত্রণ মেনে নিতে হবে। আর দ্বিতীয়তঃ তেলের মূল্য যুদ্ধে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলির তেলের উৎপাদন খরচ সর্বনিম্ন হওয়ায় তারাই শেষ পর্যন্ত টিকে থাকবে। বিশেষ করে মার্কিন শেইল অয়েলের চাইতে তারা অনেক কমে বিশ্বকে তেল দিতে সক্ষম।
তেলের বাজারের পত্রিকা ‘অয়েল প্রাইস’এর এক প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে যে, যদিও কেউকেউ ধারণা করছিলেন যে, চীনে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমে আসার সাথেসাথে তেলের বাজারে চাহিদার অবস্থার হয়তো উন্নতি হবে। কিন্তু ভুলে গেলে চলবে না যে, বিশ্বের সবচাইতে বড় তেলের ব্যবহারকারী যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসের সাথে যুদ্ধ শুরু হয়েছে মাত্র। মার্কিন ‘এনার্জি ইনফরমেশন এডমিনিস্ট্রেশন’এর হিসেবে ২০১৭ সালে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিদিন প্রায় ২ কোটি ব্যারেল তেল ব্যবহার করেছে, যা সারা দুনিয়ার তেল ব্যবহারের প্রায় ২০ শতাংশ। এর সাথে তুলনামূলকভাবে চীন ব্যবহার করেছে ১ কোটি ৩৬ লাখ ব্যারেল তেল। যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের সাথেসাথে মানুষ বাড়ির বাইরে যাওয়া কমিয়ে দেবে; অর্থাৎ মানুষের যাতায়াত কমতে শুরু করবে। মার্কিন ক্রীড়াঙ্গনের মধ্যমনি বাস্কেটবল, আইস হকি এবং বেইসবল লীগ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। দোকানপাট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, আদালত, অনুষ্ঠান বা খেলাধূলার আসরে যাতায়াত কমতে থাকলেই তেলের চাহিদায় ধ্বস আসতে থাকবে।
‘ওয়াল স্ট্রীট জার্নাল’ বলছে যে, তেলের মূল্য যুদ্ধের মাঝ দিয়ে রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্রের শেইল অয়েলের ইন্ডাস্ট্রিকে টার্গেট করেছে। মার্কিন থিঙ্কট্যাঙ্ক ‘হাডসন ইন্সটিটিউট’এর থমাস দুস্তারবার্গ ‘ফোর্বস’ ম্যাগাজিনের এক লেখায় বলছেন যে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণের বৈশ্বিক বিপর্যয়ের মাঝে সৌদি এবং রুশদের তেলের যুদ্ধ যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপক ঋণগ্রস্ত তেলের কোম্পানিগুলিকে দেউলিয়াত্বের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। বিশ্লেষকদের কথায় এটা নিশ্চিত যে, করোনাভাইরাসের অনিশ্চয়তার মাঝে সকলেই নিজেদের অবস্থানকে সুদৃঢ় দেখতে চাইছে; এতে অন্য কারুর ক্ষতি হোক বা না হোক। বাজার হিস্যা দখলের সাথেসাথে ভূরাজনৈতিক প্রভাবের হিস্যার মাঝেও ব্যাপক পরিবর্তন আসতে পারে। উত্তরপূর্ব এশিয়া, ইউরোপ এবং আমেরিকায় ভাইরাসের আক্রমণ যে ভূরাজনৈতিক ভূমিকম্পের সূচনা করেছে, তেল-যুদ্ধ তার একটা ফলাফল মাত্র।
৯ই মার্চ আন্তর্জাতিক জ্বালানি তেলের বাজার মূল্য একদিনে ৩০ শতাংশের বেশি কমে যায়। ১৯৯১ সালের প্রথম উপসাগরীয় যুদ্ধের পর থেকে এটা ছিল তেলের বাজারে একদিনের সর্বোচ্চ ধ্বস। এই ধ্বসের একটা কারণ ছিল বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের কারণে তেলের চাহিদা পড়ে যাওয়া। তবে এর সাথে যোগ হয়েছে সৌদি আরব এবং রাশিয়ার মাঝে তেলের বাজার নিয়ন্ত্রণে সমঝোতায় না পৌঁছানো। গত ৬ই মার্চ ভিয়েনায় এক বৈঠকে সৌদি কর্মকর্তারা করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবিলায় রুশদেরকে তেলের উৎপাদন কমাতে অনুরোধ করেন। এই প্রস্তাবে রাশিয়া রাজি না হওয়ায় সৌদিরা প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে উৎপাদন ১ কোটি ২৩ লাখ ব্যারেলে ওঠানো এবং বিশেষ ক্রেতাদের জন্যে ২০ বছরের মাঝে সর্বোচ্চ মূল্য কর্তনের ঘোষণা দেয়। ‘ব্লুমবার্গ’ এর ব্যাখ্যা দিয়ে বলছে যে, সৌদিদের কমদামি তেলের বাজার ধরতে উত্তরপূর্ব এশিয়ার ক্রেতারা ব্যর্থ হবার ফলে এটা নিশ্চিত হয়ে যায় যে সৌদিদের তেলের বাজার হতে যাচ্ছে ইউরোপ, যা কিনা রুশ তেলের মূল বাজার। উত্তর এশিয়ার ক্রেতারা লাইট ক্রুড চাইলেও সৌদিরা তাদেরকে মিডিয়াম ও হেভি ক্রুড কেনার অফার দেয়। এতে এশিয়রা বাধ্য হয় সৌদিদের তেলের অফার ছেড়ে দিতে। অন্যদিকে ভারতসহ দক্ষিণ এশিয়ায় সৌদিরা মিডিয়াম ক্রুডের সরবরাহ বাড়াচ্ছে।
‘গোল্ডমান সাকস’এর বিশ্লেষকেরা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন যে, তেলের মূল্য ব্যারেলপ্রতি ২০ ডলারে নেমে যাবার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেয়া যায় না। তেলের বাজারে ধ্বসের সাথেসাথে তেল কোম্পানিগুলির শেয়ারের মূল্যেও ব্যাপক দরপতন হয়েছে। দু’দিন পর ১১ই মার্চ সৌদি তেল কোম্পানি আরামকো ঘোষণা দেয় যে, তারা তাদের তেলের উৎপাদন ২০২০ সালের মাঝেই বাড়িয়ে দৈনিক ১ কোটি ৩০ লাখ ব্যারেল করবে। একইসাথে আবুধাবি ন্যাশনাল অয়েল কোম্পানিও ঘোষণা দেয় যে, তারা এপ্রিল মাসে তাদের উৎপাদন ১০ লাখ ব্যারেল বাড়িয়ে ৪০ লাখ ব্যারেল করবে। ‘ব্লুমবার্গ’ জানাচ্ছে যে, ইরাক এবং নাইজেরিয়াও তেল উৎপাদন বাড়াবার ঘোষণা দিয়েছে। এই ব্যাপারটার ব্যাখ্যা দিয়ে ‘সিএনএন’ বলছে যে, তেলের মূল্যের এই যুদ্ধের মাঝে সকলেই চাইবে যে করেই হোক তেলের বাজারে নিজস্ব হিস্যা বাড়িয়ে নিতে। গত তিন বছর ধরে সৌদিরা রুশদের সাথে সমঝোতা করে তেলের বাজারে উৎপাদন নিয়ন্ত্রণ করেছে। কিন্তু এখন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে সমঝোতা শেষ হয়ে যাওয়ায় সৌদি যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমান বাজার হিস্যা ধরতে অত্যন্ত আক্রমণাত্মক একটা কৌশল নিয়েছেন।
‘জেপি মরগ্যান’এর বিশ্লেষক যোসেফ লুপটন এক বিশ্লেষণে বলছেন যে, তেলের মূল্য কমায় তেলের ব্যবহারকারী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে সুবিধা হবে। তবে সেদেশের তেল কোম্পানিগুলির যেগুলি শেইল অয়েলের ব্যবসায় রয়েছে, সেগুলি সমস্যায় পতিত হতে পারে। তিনি সৌদিদের লক্ষ্যের ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন যে, সৌদিরা বাজারে তেলের বন্যা বইয়ে দিতে চাইছে যুক্তরাষ্ট্রের তেল কোম্পানিগুলিকে চাপে ফেলার জন্যে। ২০১৫-১৬ সালের দিকে তেলের মূল্য ব্যারেলপ্রতি ১১০ ডলার থেকে ৩০ ডলারে নেমে গেলে সেবারেও শেইল অয়েল ইন্ডাস্ট্রি ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়েছিল; বিনিয়োগ চলে গিয়েছিল; চাকুরি হারিয়েছিল বহু মানুষ। এখন মার্কিন শেইল ইন্ডাস্ট্রি আগের চাইতে আরও শক্ত অবস্থানে থাকলেও পূর্বে প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার ক্ষতি হওয়ায় মার্কিন ব্যাংকগুলি সেখানে আরও বিনিয়োগ করতে আর রাজি নয়। আবার তেলের বাজারে ধ্বসের সাথেসাথে শেয়ার বাজারে যেমন ধ্বস নেমেছে, তেমনি তেল কোম্পানিগুলির বন্ডগুলিও ব্যাপকভাবে মূল্য হারাচ্ছে। ‘জেপি মরগ্যান’ বলছে যে, ২০২০ সালের দ্বিতীয়াংশে তেলের মূল্য ব্যারেলপ্রতি ৪০ ডলার এবং ২০২১ সালে ৫০ ডলারে উঠলেও ২০২১ সালে প্রায় ২৪ শতাংশ তেলের কোম্পানির বন্ড খেলাপি হয়ে যেতে পারে।
‘সিএনএন’ তাদের বিশ্লেষণে বলছে যে, সৌদিরা তেলের মূল্যের যুদ্ধে নেমে ঘোষণা দিচ্ছে যে, প্রথমতঃ সৌদিরা নিয়ন্ত্রণ না করে তেলের বাজারকে মুক্ত বাজার হিসেবে চলতে দিলে বিপর্যয় নেমে আসবে। সুতরাং বিশ্বকে সৌদিদের এই নিয়ন্ত্রণ মেনে নিতে হবে। আর দ্বিতীয়তঃ তেলের মূল্য যুদ্ধে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলির তেলের উৎপাদন খরচ সর্বনিম্ন হওয়ায় তারাই শেষ পর্যন্ত টিকে থাকবে। বিশেষ করে মার্কিন শেইল অয়েলের চাইতে তারা অনেক কমে বিশ্বকে তেল দিতে সক্ষম।
তেলের বাজারের পত্রিকা ‘অয়েল প্রাইস’এর এক প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে যে, যদিও কেউকেউ ধারণা করছিলেন যে, চীনে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমে আসার সাথেসাথে তেলের বাজারে চাহিদার অবস্থার হয়তো উন্নতি হবে। কিন্তু ভুলে গেলে চলবে না যে, বিশ্বের সবচাইতে বড় তেলের ব্যবহারকারী যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসের সাথে যুদ্ধ শুরু হয়েছে মাত্র। মার্কিন ‘এনার্জি ইনফরমেশন এডমিনিস্ট্রেশন’এর হিসেবে ২০১৭ সালে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিদিন প্রায় ২ কোটি ব্যারেল তেল ব্যবহার করেছে, যা সারা দুনিয়ার তেল ব্যবহারের প্রায় ২০ শতাংশ। এর সাথে তুলনামূলকভাবে চীন ব্যবহার করেছে ১ কোটি ৩৬ লাখ ব্যারেল তেল। যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের সাথেসাথে মানুষ বাড়ির বাইরে যাওয়া কমিয়ে দেবে; অর্থাৎ মানুষের যাতায়াত কমতে শুরু করবে। মার্কিন ক্রীড়াঙ্গনের মধ্যমনি বাস্কেটবল, আইস হকি এবং বেইসবল লীগ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। দোকানপাট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, আদালত, অনুষ্ঠান বা খেলাধূলার আসরে যাতায়াত কমতে থাকলেই তেলের চাহিদায় ধ্বস আসতে থাকবে।
‘ওয়াল স্ট্রীট জার্নাল’ বলছে যে, তেলের মূল্য যুদ্ধের মাঝ দিয়ে রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্রের শেইল অয়েলের ইন্ডাস্ট্রিকে টার্গেট করেছে। মার্কিন থিঙ্কট্যাঙ্ক ‘হাডসন ইন্সটিটিউট’এর থমাস দুস্তারবার্গ ‘ফোর্বস’ ম্যাগাজিনের এক লেখায় বলছেন যে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণের বৈশ্বিক বিপর্যয়ের মাঝে সৌদি এবং রুশদের তেলের যুদ্ধ যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপক ঋণগ্রস্ত তেলের কোম্পানিগুলিকে দেউলিয়াত্বের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। বিশ্লেষকদের কথায় এটা নিশ্চিত যে, করোনাভাইরাসের অনিশ্চয়তার মাঝে সকলেই নিজেদের অবস্থানকে সুদৃঢ় দেখতে চাইছে; এতে অন্য কারুর ক্ষতি হোক বা না হোক। বাজার হিস্যা দখলের সাথেসাথে ভূরাজনৈতিক প্রভাবের হিস্যার মাঝেও ব্যাপক পরিবর্তন আসতে পারে। উত্তরপূর্ব এশিয়া, ইউরোপ এবং আমেরিকায় ভাইরাসের আক্রমণ যে ভূরাজনৈতিক ভূমিকম্পের সূচনা করেছে, তেল-যুদ্ধ তার একটা ফলাফল মাত্র।
nice write up
ReplyDelete////////////////////////////////////
সৌদি এবং রুশদের তেলের যুদ্ধ যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপক ঋণগ্রস্ত তেলের কোম্পানিগুলিকে দেউলিয়াত্বের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
//////////////////////////////////
assalamu alaikum
mani je company gulo sobkisu bibechona kore business start kore silo
but tarporo amra keno tader deoleya howar kotha boltesi? r kenoy ba tara deoleya
hobe ?
jajak allah
ওয়াআলাইকুমুসসালাম!
Deleteযদি পুঁজিবাদী ব্যবস্থার উপর কিছু ধারণা রেখে থাকেন, তাহলে জানবেন যে, দেউলিয়া হওয়াটা পুঁজিবাদী ব্যবস্থার একটা সাধারণ ফলাফল। পুঁজিবাদী ব্যবস্থার হৃদয় হলো ব্যাংক। ব্যাংকগুলি অর্থনীতিকে বাঁচিয়ে রাখে। ব্যাংকের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে কোম্পানিগুলি চলে। কোম্পানিগুলি ব্যবসা করতে চাইলে ঋণ তাকে নিতেই হবে। এটাই পুঁজিবাদী অর্থনীতির বৈশিষ্ট্য। আর ব্যাংকের অনুমতি ছাড়া কেউ ব্যবসাও শুরু করতে পারে না। ব্যবসার ফিজিবিলিটি স্টাডি অনুমোদন করে ব্যাংক। ফিজিবিলিটিতে ব্যাংক স্বাক্ষর করেই বলেই সেই ব্যবসা চালু হতে পারে। কাজেই দেউলিয়া হবার সম্ভাবনা ব্যাংকের চাইতে কারুর বেশি জানার কথা নয়। যদি ব্যবসার রিস্ক কম হয়, তাহলে সুদের হার কম হয়; বেসি রিস্কি ব্যবসা হলে সুদের হার হয় বেশি। মার্কিন শেইল অয়েলের ব্যাপারটাও এই হিসেবের বাইরে নয়।