Sunday 18 August 2024

ব্যালান্সিংএর রাজনীতি এবং বাংলাদেশের ডিএনএ

১৮ই অগাস্ট ২০২৪
ব্যালান্সিংএর নীতিটা খুবই চতুর; আবার একইসাথে অত্যন্ত বিপজ্জনক। কারণ এখানে সত্য-মিথ্যার মিশ্রণ হয় ভয়াবহ মাত্রায়। কথা এবং কাজের মাঝে পার্থক্য রাখার একটা রাষ্ট্রীয় সংস্কৃতি এটা। যতক্ষণ এটা কাজ করে, ততক্ষণ দেখলে বুদ্ধিদীপ্তই মনে হবে; কিন্তু যখন সমস্যায় পতিত হয়, তখন কূলকিনারা থাকে না। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ডিএনএ হচ্ছে এটাই; যা ব্রিটিশরা রেখে গিয়েছিল ১৯৪৭ সালে। 


বাংলাদেশের জন্ম ১৯৭১ সালে হলেও এই দেশের বেশিরভাগ বাস্তবতা কিন্তু তৈরি হয়েছে ১৯৪৭ সালে। যেমন বাংলাদেশের মানচিত্র এঁকেছিলেন ব্রিটিশ রাজনীতিবিদ সাইরিল র‍্যাডক্লিফ। সেই মানচিত্রকে সাত দশকের মাঝে কেউ চ্যালেঞ্জ করেনি। ১৯৭১ সালে ভারতীয় সেনাবাহিনী তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের ভেতরে ঢুকে পড়লেও পরের বছরই তাদেরকে বের হয়ে যেতে হয়। আর এমনিতেও যুদ্ধের আগেই বাংলাদেশের প্রথম পতাকার মাঝে ১৯৪৭ সালের মানচিত্র জুড়ে দেয়া হয়েছিল। এতে ভারত স্বস্তি পেয়েছিল যে, কোন বামপন্থী আন্দোলন বাংলাদেশের যুদ্ধকে হাইজ্যাক করে নিয়ে ১৯৪৭এর সীমানাকে চ্যালেঞ্জ করবে না। ১৯৪৭এর এই সীমানা শুধু বাংলাদেশের সীমানাই নয়; এটা ভারতের সীমানাও বটে। এই সীমানায় পরিবর্তন এলে ভারতের মানচিত্রও পরিবর্তিত হয়ে যায়। একারণেই বাংলাদেশ যেমন এই সীমানার ব্যাপারে খুবই সাবধান, তেমনি ভারতও।

ব্রিটিশরা এই সীমানা তৈরির সময় নিছক একটা ডিজাইন এঁকে দিয়ে চলে যায়নি। তারা সকল প্রকারের হিসেব কষেই এই সীমানাগুলি এঁকেছিল। এই হিসেবের মূলে ছিল তাদের নিজস্ব দীর্ঘমেয়াদী স্বার্থগুলিকে সমুন্নত রাখা। সাত দশকে বিশ্বব্যাপী ব্রিটেনের প্রভাব অনেকাংশেই কমে গেছে। কিন্তু কেউই ব্রিটিশদের আঁকা সীমানাগুলিকে চ্যালেঞ্জ করে সুবিধা করতে পারেনি। উদাহরণস্বরূপ, ব্রিটিশরা মধ্যপ্রাচ্যের সীমানাগুলি এমনভাবে এঁকেছে, যাতে করে কোনভাবেই এই সীমানাকে পরিবর্তন করে নতুন করে আঁকা না যায়। যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যে একটা জাতিগত কুর্দী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করলেও তা ভেস্তে গেছে তুরস্ক, সিরিয়া, ইরাক এবং ইরানের বাধায়। অর্থাৎ ব্রিটেন নিশ্চিত করেছিল যে, কেউ যদি এই সীমানাগুলিকে পরিবর্তন করার চেষ্টা করে, তাহলে এই রাষ্ট্রগুলি নিজেরাই সেই কাজে বাধা হয়ে দাঁড়াবে। যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্য থেকে সেই শিক্ষাটাই নিয়েছে; যেকারণে কুর্দীরা বুঝে গেছে যে, যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ বাস্তবায়নে তারা সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করলেও তাদের ভাগ্যে নিজস্ব জাতি রাষ্ট্র নেই। এমনকি সুপারপাওয়ার যুক্তরাষ্ট্রও সেখানে অপারগ। এটাই হচ্ছে ব্রিটেনের প্রভাব। সাত দশক পরেও ব্রিটেন যেকোন আলোচনার টেবিলে হাজির থাকে এই সুবাদেই। তারাই সেই দেশের মানচিত্র এঁকেছে; তারা অনেক ক্ষেত্রেই সেই দেশের সংবিধান লিখে দিয়েছে এবং অভ্যন্তরের বিভিন্ন ইন্সটিটিউট তৈরি করেছে। তাই তাদের হাতে তৈরি হওয়া সেই রাষ্ট্রের গতিপ্রকৃতির ধরণ তাদের চাইতে বেশি আর কেউ বুঝতে পারে না।

১৯৪৭ সালে ভারতীয় উপমহাদেশকে ভাগ করার পর ব্রিটিশরা এমন একটা বাস্তবতা রেখে গিয়েছে, যাতে করে একটা বিশাল রাষ্ট্রের আশেপাশে কয়েকটা ছোট রাষ্ট্র নিজেদের অস্তিত্ব সংকটে থাকে। শুধু তা-ই নয়, তারা ভারতের মানচিত্রকেও আশেপাশের ছোট রাষ্ট্রের উপরে নির্ভর করে দিয়েছে; যাতে করে ছোট রাষ্ট্রগুলি চাইলে ভারতকে চ্যালেঞ্জ করতে পারে। এতে করে এই ছোট রাষ্ট্রগুলি যদি নিজেদেরকে রক্ষা করতে অপারগ হয়, তাহলে তারা ব্রিটেন, তথা পশ্চিমাদের সহায়তা চাইবে। এক্ষেত্রে পশ্চিমারা হয় ভারতকে আগ্রাসী হবার সার্টিফিকেট দেবে, নয়তো ভারতের লাগাম টেনে ধরবে। এই মানচিত্রের সবচাইতে অদ্ভুত অংশটা হলো ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সাত রাজ্য বা সেভেন সিস্টার্স। এই রাজ্যগুলি ভারতের মূল ভূখন্ডের সাথে মাত্র ১৫ মাইল চওড়া একটা করিডোরের মাধ্যমে যুক্ত। আর জাতিগত সমস্যা থাকার কারণে এই সেভেন সিস্টার্স প্রায় সর্বদাই অস্থির। অস্থির এই সাত রাজ্যের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দিল্লীর কর্তাব্যক্তিদের যখন ঘুম হয়না, ঠিক তখনই তাদেরকে এটা নিয়েও চিন্তা করতে হচ্ছে যে, সেই ১৫ মাইলের করিডোর যেন কখনও হুমকির মাঝে পড়ে না যায়। এই হুমকি মোকাবিলায় ১৯৭৫ সালের এপ্রিলে ভারত সিকিম রাজ্যকে দখল করে নিয়েছিল; যা ব্রিটিশরা ১৯৪৭ সালে ভারতের খাদ্য হিসেবেই রেখে গিয়েছিল। তবে সিকিম দখলের পরেও ভারতের এই ১৫ মাইলের করিডোরের নিরাপত্তা খুব একটা বাড়েনি। বর্তমানে এই ১৫ মাইলকে সকলেই 'চিকেন নেক' বলে আখ্যা দেয় এবং এটা যে ভারতের দুশ্চিন্তার একটা বড় কারণ, সেটাও এখন প্রায় সকলেই জানেন।

১৯৪৭ সালে উপমহাদেশের সীমানা আঁকার সময় ব্রিটিশরা খুব ভালোভাবেই জানতো যে, ভারত 'চিকেন নেক'এর নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাবে। এই করিডোরের উত্তরে নেপাল এবং দক্ষিণে বাংলাদেশের উপর ভারতের চাপ থাকবে ভারতের নিজস্ব বাস্তবতার কারণেই। আর এই চাপ ১৯৪৭এর অসমান ভূমি বন্টনের বাস্তবতার (বিশাল ভারতের পাশে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাষ্ট্র) সাথে যুক্ত হয়ে নেপাল এবং বাংলাদেশকে ভারতের ব্যাপারে আরও বেশি সাবধানী করে তুলবে। এই বাস্তবতাগুলিকে রাজনৈতিকভাবে কিভাবে দেখা হবে, তা কিন্তু ১৯৪৭-পরবর্তী রাষ্ট্রগুলির রাজনীতিকেরা শিখেছিল কোলকাতা থেকেই। উপমহাদেশের প্রায় সকল রাজনীতিকেরই রাজনীতি শেখার স্কুল ছিলো কোলকাতা। পাকিস্তান রাষ্ট্র তৈরি হবার পরে কয়েক বছর ধরে নতুন এই রাষ্ট্রের প্রায় সকল উচ্চপদস্থ রাজনৈতিক নেতারা কিন্তু বেঙ্গল থেকেই এসেছিলেন; যাদের রাজনীতির হাতেখড়ি হয়েছিল কোলকাতায়। পশ্চিম পাকিস্তানে প্রকৃতপক্ষে আঞ্চলিক কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ছাড়া রাষ্ট্রীয় ব্যক্তিত্ব ছিল না; কারণ সেটা ছিল ব্রিটিশ ভারতের রাজনীতির একটা দূরের এলাকা মাত্র। পাকিস্তানের এই বাস্তবতাটা পরিবর্তিত হতে থাকে নতুন সুপারপাওয়ার যুক্তরাষ্ট্রের হাত ধরে পাকিস্তানের রাজনীতিতে সামরিক বাহিনীর উত্থানের পর থেকে। তখন পূর্ব পাকিস্তানের রাজনীতিবিদেরা, যারা কিনা ব্রিটিশদের অধীনে কোলকাতায় রাজনীতি শিখেছেন, তারা কোনঠাসা হয়ে পড়েন। বাংলাদেশের সেনাবাহিনী পাকিস্তানের সেনাবাহিনী থেকেই সৃষ্টি হলেও বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতা সর্বদাই পশ্চিম পাকিস্তানের বাস্তবতা থেকে ছিল ভিন্ন। ১৯৪৭ সালে পশ্চিম পাকিস্তানে রাষ্ট্রীয় রাজনৈতিক কর্মকান্ডের শক্ত ভিত তৈরি না হলেও কোলকাতার সুবাদে সেটা কিন্তু পূর্ব পাকিস্তান তথা বাংলাদেশে প্রথম থেকেই ছিল। একারণেই যুক্তরাষ্ট্রের ছত্রছায়ায় পাকিস্তানে সামরিক শাসন যতটা গভীরভাবে গেঁথে গিয়েছিল, বাংলাদেশে সেটা সেভাবে হয়নি।

শুধু তা-ই নয়, ১৯৪৭এর পর থেকে পাকিস্তানের সাথে ভারতের কয়েকবার যুদ্ধের মাঝে কাশ্মির ছিল সংঘর্ষের কেন্দ্রবিন্দু; যেখানে সীমানা নিয়ে চলেছে ব্যাপক সংঘাত। পূর্বদিকে বাংলাদেশের সীমানায় কিন্তু সংঘাতের সমাধানের কথা কেউ চিন্তা করেনি। পশ্চিম পাকিস্তানের কারুর পক্ষে চিন্তা করাটা কঠিন যে পূর্ব পাকিস্তানের সীমানার জটিলতা কতটুকু। আর যদি কোলকাতায় রাজনীতি শেখার অভিজ্ঞতা তাদের না থাকে, তাহলে পূর্ব পাকিস্তানের রাজনীতিবিদদের সাথে তাদের চিন্তাগত পার্থক্য কখনোই ঘুচবে না। ঠিক এই ব্যাপারটাই হয়েছে বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের মাঝে। রাষ্ট্রীয় রাজনৈতিক সংস্কৃতি না থাকায় পাকিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের ছত্রছায়ায় সেনাশাসন চলেছে। আর বাংলাদেশে সেনাশাসন থাকার পরেও রাষ্ট্রীয় রাজনৈতিক চিন্তাধারা ব্রিটিশদের দেখিয়ে দেয়া পথেই হেঁটেছে। বাংলাদেশ ঠান্ডা যুদ্ধের সময় সোভিয়েত এবং মার্কিন দুই পক্ষের কোনটাতে নাম না লিখিয়ে নাম লিখিয়েছে ব্রিটিশদের ছত্রছায়ায় গঠিত জোট নিরপেক্ষ আন্দোলন বা 'নন-এলাইন্ড মুভমেন্ট'এ। এই জোটে থেকে তারা কমিউনিস্টও হয়নি; আবার যুক্তরাষ্ট্রের কোলেও বসেনি। কিন্তু উভয় পক্ষ থেকেই তারা বেনেফিট নেয়ার চেষ্টা করেছে। এই চিন্তাটাই ব্রিটিশ। কারণ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে ব্রিটেনের পক্ষে কোন রাষ্ট্রকে সরাসরি নিরাপত্তা দেয়া কঠিন হয়ে পড়ে। তখন সোভিয়েত-মার্কিন সংঘাতকে রাজনৈতিক কূটচালের মাধ্যমে ব্যালান্স করে চলার নীতিতেই এগুতে হয় ব্রিটিশ প্রভাবে থাকা দেশগুলিকে। ১৯৭২ থেকে সোভিয়েত সহায়তায় চট্টগ্রাম বন্দরকে কার্যক্ষম করা হয় এবং বাংলাদেশের বিমানবাহিনীর ডিটারেন্স তৈরি হয়। ব্রিটিশ সহায়তায় তৈরি হয় বাংলাদেশ নৌবাহিনী। খাদ্য সহায়তার জন্যে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের উপরে ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল ছিল। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের পছন্দ না হলেও কিউবার সাথেও বাণিজ্য করেছে বাংলাদেশ। অপরিদকে যুক্তরাষ্ট্রের বলয়ে থাকা দেশগুলি শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্রের বলয়ে থাকা অন্যান্য দেশের সাথেই সম্পর্ক রেখেছে; বাকিদের সাথে সম্পর্ক খারাপ করতে বিন্দুমাত্র দ্বিধান্বিত হয়নি।

বাংলাদেশে স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে তৈরি হয় বিভিন্ন ইন্সটিটিউট; যেখানে ১৯৪৭ এবং এর আগে থেকে শেখা রাজনৈতিক চিন্তাগুলিকে লালন পালন করা হয়। সেনা, বিমান এবং নৌবাহিনীর একাডেমিগুলি, সরকারি কর্মকর্তাদের ট্রেনিং একাডেমি, কূটনীতিকদের একাডেমি, পুলিশের ট্রেনিং একাডেমি, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ইন্সটিটিউট, ইত্যাদির মাধ্যমে কিছু রাষ্ট্রচিন্তাকে শক্ত ভিতের উপরে প্রতিষ্ঠিত করা হয়। একারণেই বাংলাদেশে যত সরকারই আসুক না কেন, সেটা সেনা-সমর্থিত বা বেসামরিকই হোক, রাষ্ট্রের মূল চিন্তাতে খুব বেশি একটা পরিবর্তন দেখা যায়নি। উদাহরণস্বরূপ, বাংলাদেশ সর্বদাই সকলের সাথে সম্পর্ক রাখার নীতিতে এগিয়েছে। একদিকে এর অর্থ যেমন দাঁড়ায় যে, বাংলাদেশ শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্রের বলয়েই থাকবে না; তেমনি এর অর্থ এ-ও দাঁড়ায় যে, বাংলাদেশ ভারতকেও ব্যালান্স করে চলবে। মুখে ভারতের সাথে ভালো সম্পর্ক রাখার কথা বাংলাদেশের সকল সরকারই বলেছে। কিন্তু বাংলাদেশের সামরিক ডিটারেন্ট তৈরি করার প্রচেষ্টাটা ছিল শুধুমাত্র ভারতকে মাথায় রেখে। কারণ ১৯৪৭এ ব্রিটিশদের তৈরি করা বাস্তবতা হলো, বাংলাদেশের চিন্তার কেন্দ্রে থাকবে 'বিশাল' ভারত।

বাংলাদেশের জনগণের মাঝে ভারত-বিরোধিতা বৃদ্ধি পাওয়াটা প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশের রাষ্ট্র-চিন্তার সংস্কৃতির একটা অংশ; ঠিক যেমনটা ভারতে বাংলাদেশের উপর নিয়ন্ত্রণমূলক কর্মকান্ড চালানোর ব্যাপারে। ব্রিটিশদের তৈরি করা চিন্তার এই ফাঁদ থেকে বের হতে না পেরেছে ভারত, না পেরেছে বাংলাদেশ। ব্যালান্স করার চিন্তাটা বাংলাদেশের চিন্তার মাঝে যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে ভারতের চিন্তাতেও। পাকিস্তানের রাজনৈতিক চিন্তাতে ব্যালান্স শব্দটাই নেই। সাম্প্রতিক সময়ে পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান চেয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে একটা ব্যালান্সের সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করা যায় কিনা। তিনি তুরস্কের এরদোগান এবং মালয়েশিয়ার মাহাথিরের সাথে একত্রে বসে 'ইসলামোফোবিয়া'কে নিয়ন্ত্রণে একটা গ্লোবাল স্ট্র্যাটেজির সূচনা করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু পাকিস্তানের সেনাবাহিনী তাকে শিখিয়ে দিয়েছে যে, পাকিস্তানে ব্যালান্সিংএর ব্রিটিশ নীতি চলবে না; পাকিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রই সর্বেসর্বা থাকবে।

ব্যালান্সিংএর নীতিটা খুবই চতুর; আবার একইসাথে অত্যন্ত বিপজ্জনক। কারণ এখানে সত্য-মিথ্যার মিশ্রণ হয় ভয়াবহ মাত্রায়। কথা এবং কাজের মাঝে পার্থক্য রাখার একটা রাষ্ট্রীয় সংস্কৃতি এটা। যতক্ষণ এটা কাজ করে, ততক্ষণ দেখলে বুদ্ধিদীপ্তই মনে হবে; কিন্তু যখন সমস্যায় পতিত হয়, তখন কূলকিনারা থাকে না। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ডিএনএ হচ্ছে এটাই; যা ব্রিটিশরা রেখে গিয়েছিল ১৯৪৭ সালে। ১৯৭১ সালে এর নতুন নামকরণ হয়েছে এবং পাকিস্তানের যুক্তরাষ্ট্র-কেন্দ্রিক চিন্তা থেকে আলাদা হয়ে ব্যালান্সিংএর রাষ্ট্র-চিন্তাকে বাস্তবায়িত করতে কিছুটা স্বাধীনতা পেয়েছে। ২০২৪ সালেও বাংলাদেশের ডিএনএ পরিবর্তিত হয়নি। কারণ ১৯৭১ সালের মতো এখনও বাংলাদেশের সীমানা সেই ১৯৪৭ সালেরটাই রয়ে গেছে। বাস্তবতা তো বিন্দুমাত্র পরিবর্তিত হয়নি। আর এই বাস্তবতার উপরেই বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ইন্সটিটিউটগুলি গড়ে উঠেছে। যেই ছাত্ররা চাকরির দাবিতে কোটা আন্দোলন করেছে, তারাও এই রাষ্ট্রীয় ইন্সটিটিউটগুলিতেই প্রশিক্ষিত হবে এবং নিজেদের মাঝে ১৯৪৭এর বাস্তবতাকে ধারণ করবে।

16 comments:

  1. যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আকসা ও জিসোমিয়া চুক্তি, IMF থেলে লোন নিয়ে বাংলাদেশের বাণিজ্যক ও অর্থনৈতিক কাঠামোগুলোকে যুক্তরাষ্ট্রের একপাক্ষিক নির্দেশনা মোতাবেক অনুযায়ী চলার তাগিদ দিচ্ছে না এবং চীনের সাথে যুদ্ধে বাংলাদেশের সেনাবাহিনীকে সরাসরি ব্যবহার করতে দেওয়া এবং চীন ও রাশিয়ার সাথে আগাম ভবিষ্যৎ খারাপ সম্পর্কের অবনতি কি ১৯৪৭ সালে রেখে যাওয়া ব্যালেন্সের চিন্তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে না নাকি নতুন সরকার ৪৭ এর ব্যালেন্সের নীতিকেই অনুসরণ করবে??

    আবার মায়ানমারের সাথে আরাকান ও জান্তা বাহিনীর ঝামেলার চিন্তা সেটা শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের ভূমিতেই পতিত হচ্ছে। রোহিঙ্গা ইস্যুটাও মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে কুকি চীনের আবির্ভাব এবং তাদেরকে বহির্বিশ্বে থেকে ফিনানশিয়াল হেল্প, তারা যদি স্বাধীনতা চেয়ে বসে তাহলে বাংলাদেশের পদক্ষেপ কি ব্যালেন্সের অভিমুখী থাকবে, তারা কি কোনো স্টেপ গ্রহণ করবে না??

    একইসাথে গুরুত্বপূর্ণ বন্দর, ইলেকট্রিক প্লান্ট, বিশেষ করে রেল ট্রানজিট, পদ্মা সেতু ও মাতাবাড়ি সমুদ্রবন্দর ভারতের সামরিক বাহিনীকে চীনের বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে দেওয়া এটা কি বাংলাদেশের মানচিত্রকে আরো অস্তিত্বের মুখে ফেলে দেবে না যদি সবসময় ব্যালেন্সের চিন্তাকে মাথায় রাখি, এটা ত বাংলাদেশের জনগণকে হুমকির মুখে ফেলে দিবে এবং একইসাথে অস্তিত্বকে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য মধ্যপাচ্যের মতো বিভিন্ন বিদ্রোহ গোষ্ঠী এ দেশে তৈরি হতে বাধ্য থাকবে এবং এই সুযোগে বিভিন্ন উপনিবেশবাদীদের Battleground হিসেবে খেলার ধারাবাহিকতা আরো ধবংসাত্মক রূপ নিবে না ??

    ReplyDelete
    Replies
    1. অনেকগুলি প্রশ্ন। প্রথমতঃ আইএমএফএর ঋণ নেয়ার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক চাপের বহিঃপ্রকাশ হয়েছে দেশের ভেতর বিভিন্ন ব্যক্তি এবং সংস্থার চাপ সৃষ্টি করার মাধ্যমে। এর মূল উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্বাধীনতাকে যতদূর সম্ভব কমিয়ে ফেলা। মালদ্বীপ এবং শ্রীলঙ্কাকে ঋণ দেয়ার মতো ব্যাপারগুলিকে পশ্চিমা বিশ্ব ভালো চোখে দেখেনি। তার ঋণ দেয়ার ব্যাপারটাকে তাদের একমাত্র অধিকার হিসেবে দেখে। কারণ ঋণ দেয়ার মাধ্যমে একটা রাষ্ট্রের নীতির উপর প্রভাব বিস্তার করা সম্ভব। ঠিক একারণেই বাংলাদেশে পশ্চিমা-ঘেঁষা ব্যক্তিবর্গরা আইএমএফএর ঋণের ব্যাপারে বেশ সরব ছিলেন। এই জায়গাটায় প্রাক্তন সরকার ছাড় দিতে বাধ্য হয়েছিল। কারণ ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে বাংলাদেশের আমদানি-নির্ভর অর্থনীতি চাপের মাঝে পড়তে শুরু করেছিল।

      দ্বিতীয়তঃ যুক্তরাষ্ট্রের সাথে কৌশলগত চুক্তি খুব সহজেই স্বাক্ষরিত হয়ে যাবে সেটা মনে করাটা উচিৎ নয়। এই লেখাতেই যে ব্যাপারটাকে পরিষ্কার করা হয়েছে তা হলো, এই রাষ্ট্রের মূল চিন্তার মাঝেই রয়েছে 'ব্যালান্স'। কৌশলগত চুক্তি, বিশেষ করে আকসা (বেইসিং রাইটস) এবং জিসোমিয়া (ইন্টেলিজেন্স শেয়ারিং) বাংলাদেশের ব্যালান্সিংএর নীতিকে একেবারে ছুড়ে ফেলে দেবে। কারণ এই চুক্তি স্বাক্ষরে বাংলাদেশের পক্ষে মার্কিন ঘরানার বাইরে অন্য কোন দেশের বিশ্বাসযোগ্য হওয়া সম্ভব হবে না। বিশেষ করে চীন এবং রাশিয়ার সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক চাপের মাঝে পড়ে যাবে। এর অর্থ হলো, বাংলাদেশকে ব্যালান্সিংএর নীতি পুরোপুরিভাবে পরিত্যাগ করতে হবে। কিন্তু এটা হওয়াটা খুবই কঠিন; যা এই লেখাতেই বলা হয়েছে।

      তৃতীয়তঃ মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে সরাসরি জড়িয়ে যাওয়ার মতো কঠিন সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের কোন সরকারই রাজনৈতিক ঐক্যে পৌঁছাতে পারবে না। এরূপ সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক ঐক্য ছাড়া সম্ভব নয়। কাজেই সর্বোচ্চ যেটা হতে পারে তা হলো, বাংলাদেশ আরাকান আর্মির সাথে একটা যোগাযোগের চ্যানেল তৈরি করতে সচেষ্ট হতে পারে। এব্যাপারে বর্তমান পররাষ্ট্র উপদেষ্টাও একসময় বলেছিলেন। এর মূল উদ্দেশ্য হবে রাখাইনের মুসলিম শরণার্থীদেরকে সেখানে ফেরত পাঠানোর গ্রাউন্ড তৈরি করা।

      চতুর্থতঃ এই লেখায় একটা কথা রাখঢাক না রেখেই বলা হয়েছে, যা হলো - সত্য-মিথ্যার সংমিশ্রণ। আপনি মুখে এক কথা বলে কাজে করছেন অন্য কিছু। অর্থাৎ কথা দিয়ে ঠান্ডা করছেন; কাজে নয়। এর মাধ্যমে সংঘাতপূর্ণ জায়গাগুলিকে সন্তর্পণে এড়িয়ে যাওয়ার একটা চেষ্টা কিছু আমরা দেখতে পাই। কিন্তু অর্থ এটা নয় যে, সমস্যা চলে গেছে, বা বাংলাদেশের উপর চাপ আর আসবে না। অর্থাৎ এরূপ ব্যালাংসিংএর নীতি দেখতে স্মার্ট হলেও মহা বিপদ ডেকে নিয়ে আসতে পারে। আপনি একজনকে আশা দিয়ে রাখলেন যাতে করে সে আপনার বিরুদ্ধে আগ্রাসী না হয়; কিছুদিন পর সে যখন বুঝে যাবে যে, আপনি তার সাথে মিথ্যা বলেছেন, তখন কিন্তু আপনাকে নতুন কোন কৌশল সামনে নিয়ে আসতে হবে। এক চালাকি তো বারবার করা যায় না। ব্যালাংসিংএর নীতি আসলে চালাকি করা ছাড়া আর কিছুই নয়।

      পঞ্চমতঃ বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ভিত নড়ে গেছে অল্প কিছুদিনের সহিংসতায়। এর আগের লেখাগুলিতে আলোচিত হয়েছে যে, রাষ্ট্রকে দুর্বল করে সরকার পরিবর্তন শিশুসুলভ। কারণ একবার রাষ্ট্রকে দুর্বল করে ফেললে আপনার সমস্যা সমাধান দূরে থাক, আপনি নতুন নতুন সমস্যার মাঝে পড়তে থাকবেন এবং বাইরের শক্তিরা আপনার দুর্বলতা সুযোগ নিয়ে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি করবে। এক্ষেত্রে আপনার নীতির চাইতে রাষ্ট্রের দুর্বলতা বেশি বিপজ্জনক। প্রায় ছয় দিনের মতো দেশে কোন সরকার ছিলো না। এতে কতটা ক্ষতি হয়েছে, তা এখনও সকলে বুঝে উঠতে পারেনি। স্বাধীনতার পর ৫৩ বছরেও এই ক্ষতি হয়নি!

      Delete
  2. রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে ফেরত পাঠানোর চেষ্টা ত অনেক আগেই থেকেই করে আসছে কিন্তু পারছে না কেন?? আর আরাকান আর্মি ও জান্তা বাহিনী এরা দুইয়ে মিলেই ত মূলত রাখাইন রোহিঙ্গাদের উপর বর্বর হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে,তাহলে প্রশ্ন আসে আরকান আর্মিদের সাথে যোগাযোগ করে রাষ্ট্র কতটুকুই বা লাভবান হবে এরা ত লজিস্টিকাল হেল্পও চাইতে পারে, আর এই আরাকান আর্মিদের গড়ার পিছনে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমাদের স্বার্থ লুকায়িত আছে, আর রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে পশ্চিমারা ত অনেক আগেই বুলি ছুড়ছে, আন্তর্জাতিক আদালতে গিয়ে মামলা করেও লাভ হচ্ছে না আর এখন মায়ানমার সামরিক সক্ষমতা বাংলাদেশ থেকে অনেকদূর এগিয়ে গেছে.

    IMF থেকে আরো লোন নিয়ে যদি রাষ্ট্রের নীতিকে চেঞ্জ করতে পারে তাহলে বাংলাদেশের ভারসাম্য চিরতরে হারিয়ে যাবে নই কি। প্রাক্তন সরকার জোড় গলায় তার পদ হারানো নিয়ে মিডিয়ার কাছে বলছে যে বঙ্গোপসাগর ও সেন্টমার্টিন দিতে রাজি হয় নাই বিধাই যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করেছেন,সামনে যে কৌশলগত চুক্তি সম্পন্ন হবে না যে এটার ত guarantee দেখছি না. বাংলাদেশের ভিতর দিয়ে ভারতের সামরিক ট্রানজিট দেওয়া বিভিন্ন প্রকল্প বাসতবায়নের মধ্য দিয়ে কি বাংলাদেশের ভারসাম্য হারিয়ে যাই নি?? তাহলে বলা যায় কি বাংলাদেশের ব্যালেন্সিং এর ব্যাপারটা অনেক আগেই হারিয়ে গেছে, ভূ-রাজনীতি ত থেমে থাকে নি,এখন আগের মতো ব্যালেন্সিং এর ব্যাপারটা নেই,এখন অনেকটা হেলে গিয়েছে তা নয় কি, ধীরে ধীরে একপাক্ষিক শক্তির দিকে ঝুঁকে গিয়েছে??

    ReplyDelete
    Replies
    1. প্রথমতঃ রাখাইনের মুসলিমদের উপর অত্যাচার কেন করা হচ্ছে, সেটা বুঝতে হবে। এই মানুষগুলির একমাত্র দোষ হলো এরা মুসলিম। তবে মানুষগুলির সবচাইতে করুণ সমস্যা হলো, এদের কোন অভিভাবক নেই। অর্থাৎ বিশ্বাসের কারণে তাদের শত্রু রয়েছে; কিন্তু তাদেরকে রক্ষা করার কেউ নেই। একারণে তাদেরকে বাস্তুচ্যুত করাটা একটা সহজ ব্যাপারই বলা চলে। আর দ্বিতীয়তঃ কোন একটা পক্ষ এখানে রাখাইনের মুসলিমদের বিরুদ্ধে মিয়ানমারের উগ্রবাদীদের বিদ্বেষকে ভূরাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করেছে। তারা একটা স্পার্ক তৈরি করেছে; যা পুরো রাখাইনকে জ্বালিয়ে দিয়েছে। এর উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশে উদ্বাস্তু পরিস্থিতির সৃষ্টি করে বাংলাদেশের নীতির উপর চাপ সৃষ্টি। এই লক্ষ্যে তারা বেশ কিছুটা সফলও হয়েছে। এরা বাংলাদেশের পক্ষে হয়ে শরণার্থীদেরকে ফেরত পাঠাবার ব্যবস্থা করবে - এই চিন্তা করাটা অবান্তর। তৃতীয়তঃ আরাকান আর্মি সকলের সাথেই সম্পর্ক রেখে চলেছে। মিয়ানমারের অনেক বিদ্রোহী গ্রুপই এরূপ। কারণ তারা জানে যে, মিয়ানমারের কেন্দ্রীয় সরকার বা অন্য কোন অঞ্চলে ক্ষমতা নিতে হলে তাদেরকে চীনের সাথে সম্পর্ক রাখতে হবে। তাই এই বিদ্রোহী গ্রুপগুলি খেয়াল রেখেছে যাতে করে রাখাইন রাজ্যের উপকূল থেকে চীনের সীমানা পর্যন্ত গ্যাস ও তেলের পাইপপাইনের উপর কোনরূপ সহিংসতা যেন না হয়। আপাততঃ কোন গ্রুপই সরাসরি চীনের বিপক্ষে যেতে সাহস পায়নি।

      চুক্তির ব্যাপারটা কমেন্ট সেকশনে আলোচনা করা হয়েছে। এগুলি রাষ্ট্রীয় সংস্কৃতির অংশ; যেকোন সরকারের পক্ষেই এই সংস্কৃতি পরিবর্তন করা দুষ্কর অথবা অসম্ভব। রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে পরিবর্তন না করতে পারলে এগুলি পরিবর্তন সম্ভব নয়; এগুলি সরকার পরিবর্তন করে সম্ভব নয়।

      আর ট্রানজিটের ব্যাপারটা বুঝতে হলে হিসেব করে দেখবেন যে, বাংলাদেশ থেকে ত্রিপুরাতে রপ্তানি কতটুকু আর কোলকাতা থেকে আশুগঞ্জ হয়ে ত্রিপুরাতে ট্রানজিটে মালামাল যায় কতটুকু। তাহলেই ট্রানজিটের বাস্তবতা চোখে পড়বে। চুক্তি সই করা আর বাস্তবায়ন এক জিনিস নয়। এই ব্যাপারটাই আলোচিত হয়েছে মূল লেখার শেষ প্যারায়। কথা এবং কাজের মাঝে কোন পার্থক্য রয়েছে কিনা, সেটা সর্বদাই হিসেব করে দেখতে হবে। এই হিসেব না করে যদি কোন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, তাহলে সেটা অবশ্যই কোন দলীয় রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে। রাষ্ট্রীয় রাজনীতি বুঝতে হলে শুধুমাত্র বিবৃতি নয়, বাস্তবতা যাচাই বাঞ্ছনীয়।

      Delete
    2. ভারত মিয়ানমারকে ডিটারেন্টগুলোকে শক্তিশালী করছে তাতে চীন বাধা দিচ্ছে না কেনো কারণ চীন ত ঐ অঞ্চল গুলোতে ভালো প্রভাব সৃষ্টি করেছে কিন্তু মিয়ানমার ভারত থেকে অত্যাধনিক সামরিক সরঞ্জাম নিচ্ছে, এটা কি বলা যায় না চীনের ব্যালেন্সকে নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার জন্য ভারত লজিস্টিকাল সাপোর্ট দিচ্ছে??

      Delete
    3. মিয়ানমারকে ভারতের সামরিক সহায়তা নিয়ে এর আগে অনেক লেখা হয়েছে। দয়া করে সেগুলি পড়ে নেবেন।

      https://koushol.blogspot.com/2023/09/what-is-aim-of-myanmar-navy.html

      https://koushol.blogspot.com/2023/09/why-india-strengthening-myanmar.html

      মিয়ানমারের সামরিকভাবে শক্তিশালী হওয়াটা চীনের স্বার্থের সাথে সাংঘর্ষিক নয়। কারণ মিয়ানমারের সরকার চীনের উপরে যথেষ্টই নির্ভরশীল।

      Delete
  3. আপনার সবগুলো ব্লগ আদর্শ নিয়ে লেখা কিন্তু কোন আদর্শ শক্তিশালী এটি লিখেন নাই। এখন প্রশ্ন হচ্ছে কোন আদর্শ সবচেয়ে শক্তিশালী, এটার বুঝার প্যারামিটার কি এবং এটিই যে সবাই সানন্দে গ্রহণ করবে ও এর সত্যতা কিভাবে যাচাই করবে এবং এটার চর্চা এমনভাবে করবে যেন রাষ্ট্র থেকে বেকারত্ব, কর্মসংস্থানে অভাব,বিচার অচলব্যবস্থা,সিন্ডিকেট, সম্পদ আত্তীকরণ এবং সামাজিক অবক্ষয় হ্রাস পাবে ইত্যাদি ইত্যাদি??

    ReplyDelete
    Replies
    1. আদর্শ কোনটা ভালো বা খারাপ, সেটা বোঝার সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ মাপকাঠি হলো, আদর্শ জনগণের জন্যে শান্তি বয়ে আনতে পারে কিনা। যদি কোন আদর্শ জনগণের মৌলিক চাহিদা পূরণে গুরুত্ব না দেয়, অথবা স্বল্প কিছু ব্যক্তির স্বার্থকে প্রাধান্য দেয়, তাহলে তা মাপকাঠিতে নিচের দিকে থাকবে। দ্বিতীয় মাপকাঠি হলো, আদর্শ কি বারবার পরিবর্তিত হয়ে যায় কিনা। অন্য কথায় বলতে গেলে, আদর্শ যদি বারংবার পরিবর্তিত হতে থাকে, তার অর্থ হলো, তার দৃঢ়তা নেই। এপ্রকারের আদর্শ মানুষের সৃষ্টির সাথে সম্পর্কিত ব্যাপারগুলিকে এড়িয়ে গিয়েছে; যেকারণে তা সময়ের সাথেসাথে নিজেকে পরিবর্তন করেছে। উদাহরণস্বরূপ, মানুষের জন্ম-মৃত্যু, পরিবার, জৈবিক চাহিদা, প্রবৃত্তি, ইত্যাদি বিষয়গুলি মানুষের সৃষ্টির সময় থেকেই চলে আসছে; এগুলি সময়ের সাথে সম্পর্কিত নয়। আদর্শ যদি এই ব্যাপারগুলিকে কেন্দ্রীয় বিষয় হিসেবে না নেয়, তাহলে সমাজে মারাত্মক সমস্যার সৃষ্টি হবে।

      এখানে আপনি যেসকল সমস্যার কথা বলেছেন, তার সবগুলিই আদর্শের সমস্যা; যা কিনা এই মাপকাঠিতে খুবই কম নম্বর পেয়ে ফেল করেছে।

      Delete
  4. রাজনীতিকেরই রাজনীতি শেখার স্কুল ছিলো কোলকাতা, এই ব্যাপারটা বুঝলাম না, যদি কোলকাতা থেকে ভারতীয় উপমহাদেশের রাজনৈতিক কর্তাব্যাক্তিরা রাজনীতি শিখেই থাকে তাহলে পাকিস্তান ব্যাপারটা ভিন্ন দিকে কিভাবে চলে গেলো,যতদূর জানি ব্রিটিশরা এই এলাকা থেকে চলে যাওয়ার সময় তাদের কাছে প্রিয় পরিচিতমুখ রাজনৈতিক ব্যাক্তিদেরকেই বসিয়ে দিয়ে যায়,তাহলে পাকিস্তানের রাজনীতিতে ব্রিটিশদের ব্যালেন্সিং এর চিন্তাটা থাকা দরকার ছিলো কিন্তু দিনশেষে যুক্তরাষ্ট্রের দিকে ঝুকে গেলো, এটা একটু ইলাভোরেট করবেন??

    ReplyDelete
    Replies
    1. আপনি জিন্নাহর কথা ভুলে যাচ্ছেন। পাকিস্তানে আঞ্চলিক রাজনীতিবিদ ছাড়া রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের কোন রাজনীতিবিদ ছিল না বলেই ব্রিটিশরা জিন্নাহকে কাজে লাগিয়েছিল। জিন্নাহর জন্ম ভারতের গুজরাটে; গান্ধীর বাড়ির খুব কাছেই। জিন্নাহ তার ক্যারিয়ারে ১৯৪৭এর আগে কখনোই পাকিস্তানে যাননি। তিনি সকল কিছু শিখেছেন ব্রিটেনে। আর জিন্নাহর যে ছবিগুলি সকলের সামনে উপস্থাপন করা হয়, সেগুলি প্রকৃতপক্ষে ১৯৪৭-৪৮ সালের। কারণ তিনি পাকিস্তানে যাবার পর বেশিদিন বাঁচেননি। তার পাকিস্তানে যাবার আগের এবং পরের আউটলুক একেবারেই ভিন্ন ছিল। যদিও আমরা জিন্নাহর ছবিতে তার মাথায় একটা টুপি দেখি, সেই টুপি তিনি যে পড়তেন না, সেটা ১৯৪৭এর আগের ছবিগুলি দেখলেই বুঝতে পারবেন। সারকথা হলো পাকিস্তান চালাবার মতো কোন রাজনীতিবিদ পশ্চিম পাকিস্তানে ছিল না; একারণেই অন্য জায়গার লোক নিয়ে এসে ব্রিটিশদেরকে কর্মসম্পাদন করতে হয়েছে। গান্ধীও তার জীবনের প্রথম ৪৫ বছরের বেশিরভাগ সময়েই ব্রিটেন এবং সাউথ আফ্রিকায় ছিলেন। অর্থাৎ তার চিন্তার হাতেখড়ির পুরোটাই হয়েছে ভারতের বাইরে।

      কোলকাতায় ব্রিটিশ রাজধানী ছিল ১৯০৯ সাল পর্যন্ত। এরপর দিল্লীতে রাজধানী চলে গেলেও কোলকাতার গুরুত্ব কমে যায়নি; বিশেষ করে রাজনীতিবিদদের কাছে। কেউ রাজনীতি শিখতে গেলে তাকে সেখানেই যেতে হতো। আপনি বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনী থেকে এব্যাপারে আরও কিছু ডিটেলস জানতে পারবেন।

      আর আপনি যে ব্যালান্সিং মনে করিয়ে দিচ্ছেন, সেটা ব্রিটিশদের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ের বাস্তবতাকে কেন্দ্র করে। লেখাতেই বলা হয়েছে যে, ব্রিটিশরা যেহেতু বেশিরভাগ এলাকার নিরাপত্তা দিতে পারছিলো না, সেকারণেই তারা এই কৌশলে গিয়েছিল। পাকিস্তানের উপর যুক্তরাষ্ট্রের চোখ ছিল বিশ্বযুদ্ধের সময় থেকেই। ভারতীয় উপমহাদেশ ছেড়ে যেতে ব্রিটেনের উপর যুক্তরাষ্ট্রের যথেষ্ট চাপ ছিল। চার্চিল এবং রুজভেল্টের চিঠিগুলি এর প্রমাণ। ব্রিটেনকে সামরিক সহায়তা দেয়ার বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্র শর্ত দিয়েছিল যে, ব্রিটেনকে ভারত ছাড়তে হবে - অর্থাৎ দুনিয়ার নিয়ন্ত্রণ আমেরিকার হাতে তুলে দিতে হবে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে এবং এর মাঝে ভারতে একজন মার্কিন কর্নেল যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধ-পরবর্তী স্বার্থকে সমুন্নত রাখতে অনেক কাজ করেছিলেন। মূলতঃ তখন থেকেই যুক্তরাষ্ট্র ভবিষ্যৎ রাষ্ট্র পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নিতে কাজ করেছে। পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ নিতে কয়েকটা বছর লেগে গিয়েছিল তাদের এটা ঠিকই; তবে ১৯৫০এর দশকের মাঝেই পাকিস্তান যুক্তরাষ্ট্রের হাতে চলে যায়। এই পাওয়ার ট্রান্সফারে যুক্তরাষ্ট্রের সামনে প্রতিবন্ধকতা ছিল ব্রিটিশ ঘরানার বাঙ্গালী রাজনীতিবিদেরা; যারা কোলকাতায় রাজনীতি শিখেছিলেন। মার্কিনীর একদিকে যেমন এদের উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে পাকিস্তানকে এক রাখার চেষ্টাটা ছেড়ে দিয়েছিল; তেমনি ব্রিটেনও তার স্বার্থ রক্ষার্থে পাকিস্তানের দুই ভাগ হওয়াকে মেনে নেয়।

      Delete
    2. ভারতের দিকে তখন যুক্তরাষ্ট্রের চোখ পড়ে নি এর কারণ কি সেখানে ব্রিটিশ ঘরানার রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে রাজনৈতিক পর্যায়ে ব্যাক্তিরা বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মকান্ডে একটিভিটির শক্ত ভিত গড়ে তুলে ছিলো?

      Delete
    3. ভারতে যুক্তরাষ্ট্র ভিত গড়তে পারেনি - এর অনেক কারণ রয়েছে। প্রথমতঃ ভারতের রাজনীতিতে শুরু থেকেই কংগ্রেসের একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল। এমনকি আরএসএস-এর লোকদেরকেও কংগ্রেসের ভেতরে থেকেই রাজনীতি করতে হয়েছে। দ্বিতীয়তঃ ভারত একটা ফেডারেল স্টেট। এই রাষ্ট্রের সেনাবাহিনী একটা নির্দিষ্ট অঞ্চলের উপর নির্ভরশীল নয়; যদিও পাঞ্জাবের আধিপত্য রয়েছে ভারতের সেনাবাহিনীর উপর। শুধুমাত্র পাঞ্জাবের সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণ নেয়ার মাধ্যমে পুরো ভারতের নিয়ন্ত্রণ নেয়া সম্ভব নয়। কারণ ভারতে রাজনৈতিক শক্তি যথেষ্টই বিক্ষিপ্ত এবং আঞ্চলিক সরকারগুলি যথেষ্ট ক্ষমতা রাখে। ফেডারেল স্টেট এবং বেসামরিক নেতৃত্বের আধিপত্য থাকার কারণেই ভারতে কোনদিনই সামরিক অভ্যুত্থান হয়নি এবং সম্ভবও নয়।

      পাকিস্তানও কিন্তু ফেডারেল স্টেট। কিন্তু পাকিস্তানে এটা সম্ভব হয়েছিল সেখানে পাঞ্জাবের আধিপত্যের কারণে। জাতিগতভাবে পাঞ্জাবের লোকদের আধিপত্য নেয়ার লিপ্সাকে যুক্তরাষ্ট্র ব্যবহার করেছে তার ভূরাজনৈতিক ইচ্ছাকে বাস্তবায়নে। এর ফলশ্রুতিতে পাকিস্তান রাষ্ট্র নিজের জনগণের উপর গণহত্যা চালিয়েছে। এখনও বালুচিস্তান, ওয়াজিরিস্তান এবং সিন্ধের জনগণের সাথে পাকিস্তানের পাঞ্জাব-নিয়ন্ত্রিত রাষ্ট্রের বৈষম্যমূলক আচরণ লক্ষ্যণীয়। পাকিস্তানের অভ্যন্তরের এই অসন্তোষকে ভারত কাজে লাগাতে চেষ্টা করেছে। এতে পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা আরও বেড়েছে।

      Delete
  5. ভারতের আগাম ভবিষ্যৎ কি হতে পারে বাংলাদেশের এই অভ্যুত্থানের ফলে এবং বাংলাদেশের সাথে ভারতের সীমান্ত, কূটনীতিক, তিস্তা পানি বন্টন, আমদানি-রপ্তানি সংক্রান্ত সম্পর্ক কোন দিকে ধাবিত হতে পারে বলে আপনার কাছে মনে হয়???

    চীন ও রাশিয়ার সাথে বাংলাদেশের অস্ত্র বাণিজ্য, প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম, মেগা প্রকল্পের সম্পর্ক কোন দিকে মোড় নিতে পারে??

    ReplyDelete
    Replies
    1. এগুলি অনেক দূরের কথা। রাষ্ট্র এখন অনেক দুর্বল। অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল; সামাজিকভাবে দুর্বল; নিরাপত্তা দিক থেকে দুর্বল। দুর্বল রাষ্ট্রের সাথে কেউই ঝুঁকি নিয়ে দীর্ঘমেয়াদী কোন কাজ করতে ইচ্ছুক হবে না; বিশেষ করে সেখানে যদি অর্থের ব্যাপার থাকে। চলমান প্রকল্প সকলেই চাইবে সুরাহা করতে। কিন্তু নতুন কিছুতে কেউ আগ্রহী হবে না; কারণ সেখানে রিটার্ন অনিশ্চিত।

      Delete
    2. 1) তাহলে বাংলাদেশের অর্থের যোগানটা দিবে কে? আগে ত চীন অনেকটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে, বাংলাদেশে স্থিতিশীল পর্যায় আসতে কত সময় লাগতে পারে??

      2) চীন ও রাশিয়ার সাথে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ সম্পর্ক কেমন হতে পারে এবং একইপথে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে??

      3)তাহলে কি ধরে নেব রাষ্ট্র এখনো পরোক্ষভাবে ভারতের উপর নির্ভরশীল থাকবে এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বলেছেন সীমন্তে কঠোর জবাব দেওয়া হবে,মৎস্য মন্ত্রাণালয়ের উপদেষ্টা বলেন যেখানে আগে ইলিশ রপ্তানির উপর ভারত নির্ভরশীল ছিলো,এখন বলছে নিজের রাষ্ট্রের জনগণকে গুরুত্ব দিতে হবে। প্রধান উপদেষ্টা সেভেন সিস্টার্স নিয়ে অস্থিতিশীল সৃষ্টি হবে যদি বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করা হলে.

      এগুলা কি জাস্ট মুখের ফাঁকা বুলি??

      Delete
    3. ব্রিটিশ ঘরানার রাজনীতি বুঝতে পারাটা কঠিনই বটে; কারণ ব্রিটিশদের মতো ধূর্ত আর কাউকে পাওয়া কঠিন। আশ্চর্য্য হলেও সত্যি যে বাংলাদেশের মানুষ এটাকেই নিয়েছে নিজেদের চিন্তা হিসেবে। এই ব্যালান্সিংএর রাজনীতি খুবই জটিল; অনেক ক্ষেত্রেই বহু বিষয় অস্পষ্ট, ঘোলাটে এবং ধোঁয়াশার মাঝে রাখা হয়। উপরের সবগুলি উত্তর এখানে সরাসরি দেয়ার চেষ্টা থাকবে না। বরং কিছু উদাহরণ দিয়ে বোঝাবার চেষ্টা করা যাক।

      বাংলাদেশের উপকূলে রাডার নেটওয়ার্ক বসাবার জন্যে ভারতের সাথে বাংলাদেশের সমঝোতা স্বাক্ষরিত হয় ২০১৯ সালে। কিন্তু ২০২২ সাল নাগাদ এই প্রকল্পে কোন অগ্রগতি না হওয়ায় ভারত আবারও বাংলাদেশকে তাগাদা দিয়েছিল।
      https://www.deccanherald.com/india/india-wants-bangladesh-to-move-fast-to-clear-way-for-installing-coastal-radars-1143157.html

      ২০১৭ সালে বাংলাদেশ সামরিক বাহিনীকে ৫০০ মিলিয়ন ডলারের লাইন অব ক্রেডিট অফার করেছিল ভারত। ২০২৪ সাল নাগাদ এর অধীনে বাংলাদেশ যা অর্ডার করেছে, তাতে ভারতের হতাশ হওয়া ছাড়া গতি ছিল না। তারপরেও ভারতে কিছু লোক এই বিক্রির বিরোধিতা করেছে এই বলে যে, এই সরঞ্জাম ভারতের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হতে পারে।

      এছাড়াও ভারত বাংলাদেশকে ৭ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি লাইন অব ক্রেডিট অফার করেছে। কিন্তু ১৩ বছরে সেই ক্রেডিটের মাত্র ২০% বাস্তবায়িত হয়েছে।
      https://www.tbsnews.net/economy/line-credit-bangladesh-india-again-stress-accelerating-fund-release-678150

      এগুলি বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় চিন্তার স্তম্ভ; যা ১৯৪৭এর বাস্তবতার উপরে ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত। এটা কোন সরকারের পক্ষে পরিবর্তন করা অত্যন্ত কঠিন বা অসম্ভব। বাংলাদেশের মানুষ মুখে ভারতের বিরুদ্ধে বহু কথা বলে; কিন্তু ঘুরতে যায় ভারতে; চিকিৎসার জন্যে যায় ভারতে; ঈদ এবং বিয়ের শপিংএ যায় ভারতে। সাধারণ মানুষও ভারতের সাথে এই সম্পর্ক বজায় রাখে ব্যালান্সিংএর কথা মাথায় রেখেই; যদিও সে সেটা বলে না; বা বুঝেও না। এই সমাজ তাকে এই চিন্তাগুলি দিয়েছে; তাই সে-ও সেভাবেই চিন্তা করে। বাংলাদেশে খুব কম মানুষই পাবেন, যারা সরাসরি কোন একটা দেশের কোলে বসে থাকার পক্ষে বলবে। যারা সেটার পক্ষে, সে-ও জানে যে, এটা সরাসরি বলা যাবে না; কারণ এটার পক্ষে জনগণের সমর্থন নেই।

      Delete