১৩ই জুন ২০২০
১২ই জুন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন মস্কোতে জাতীয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে পতাকা উত্তোলন করেন। ‘বিবিসি’ মনে করিয়ে দিচ্ছে যে গত ৯ই মের পর থেকে পুতিন প্রথমবারের মতো জনসমক্ষে আসলেন। করোনাভাইরাসের কারণে রাশিয়ার ঐতিহ্যবাহী প্যারেড ২৪শে জুন পর্যন্ত স্থগিত করা হয়। রাশিয়াতে মহামারি ঠেকাতে বলবত করা লকডাউন এখন উঠিয়ে নেয়া হচ্ছে। ১লা জুলাই পুতিন রাশিয়ার সংবিধান পরিবর্তনের জন্যে গণভোট ডেকেছেন। অভিযোগ রয়েছে যে, গণভোটে অংশ নিতে উদ্বুদ্ধ করার জন্যে জনগণকে শপিং ভাউচার দেবার পরিকল্পনা করা হয়েছে। করোনা পরিস্থিতির মাঝে রাশিয়া খুব খারাপ সময় পার করছে। ৫ লক্ষ ১১ হাজারেরও বেশি মানুষ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে; যার মাঝে কমপক্ষে ৬ হাজার ৭’শ ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। অনেকেরই অভিযোগ যে, রুশ সরকার মৃতের প্রকৃত সংখ্যা প্রকাশ করছে না। জনগণের একটা বড় অংশ সরকারি সাহায্যের উপর বেঁচে আছে। বিভিন্ন সেচ্ছাসেবী সংগঠন রাস্তায় মানুষকে খাবার সরবরাহ করছে। ভ্লাদিমির পুতিনের জনপ্রিয়তা গত দুই দশকের মাঝে সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে। এমন অবস্থাতেই পুতিন গণভোট ডেকেছেন। এই গণভোটে অনুমোদন পেলে ২০২৪ সালে পুতিনের বর্তমান ছয় বছরের ক্ষমতার মেয়াদ শেষ হলে তিনি আরও দুই বার নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন। অর্থাৎ কাগজে কলমে হলেও ৬৭ বছর বয়স্ক পুতিন ২০৩৬ সাল পর্যন্ত ক্ষমতা ধরে রাখার সুযোগ পাবেন।
করোনাভাইরাসের লকডাউনও যেন যথেষ্ট ছিল না। মার্চ মাসে রাশিয়া এবং সৌদি আরব তেলের বাজারে অদ্ভুত এক প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়, যার কারণে করোনা দুর্যোগে চাহিদা কমে যাওয়ার পরও ব্যাপকভাবে সরবরাহ বৃদ্ধি পায়। ফলস্বরূপ তেলের বাজারে রেকর্ড দরপতনের পর রুশ অর্থনীতি ব্যাপক ধাক্কা খেয়েছে। তেল বিক্রির উপর রাশিয়ার জিডিপির ৩০ শতাংশ নির্ভরশীল। অথচ তেলের বাজারের নিয়ন্ত্রণে নেই রাশিয়া। এই বাস্তবতাই রাশিয়াকে বিপদে ফেলেছে। ‘সিএনবিসি’র সাথে এক সাক্ষাতে কাতারের জ্বালানি মন্ত্রী সাদ আল-কাবি বলেন যে, রাশিয়া এবং সৌদি আরবের তেলের বাজারের প্রতিযোগিতা একটা বড় ভুল ছিল। আর একারণে এখন কেউ উৎপাদনেই যেতে পারছে না।
তবে এত দুর্যোগের মাঝেও ভূরাজনৈতিক প্রতিযোগিতা থেকে ঝরে পড়তে চাইছে না পুতিনের রাশিয়া। লিবিয়া এবং সিরিয়াতে রুশ ভূরাজনৈতিক আকাংক্ষা রয়েছে। ২৯শে মে মার্কিন সামরিক বাহিনীর আফ্রিকা কমান্ডের ব্রিগেডিয়ার জেনারেল গ্রগরি হ্যাডফিল্ড বলেন যে, তারা তথ্য পেয়েছেন যে রুশরা লিবিয়াতে ১৪টা ফাইটার বিমান মোতায়েন করেছে। মার্কিনীরা বলছে যে, লিবিয়াতে এই বিমানগুলি মোতায়েনের মাধ্যমে রাশিয়া ইউরোপের দক্ষিণ দিক থেকে ইউরোপকে হুমকিতে ফেলতে পারে। বিমানগুলি রাশিয়া থেকে সিরিয়া হয়ে লিবিয়া পৌঁছায়। তবে রাশিয়াকে চাপে রাখার জন্যে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে অনেকগুলি কার্ড রয়েছে। ১১ই জুন মার্কিন কংগ্রেসে ইউক্রেনের জন্যে আড়াই’শ মিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তার ট্রাম্প প্রশাসনের পরিকল্পনা পাস করা হয়।
‘মিলিটারি টাইমস’এর এক প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে যে, রাশিয়ার সীমানার কাছাকাছি বল্টিক সাগরে ন্যাটোর বার্ষিক নৌ মহড়া ‘ব্যালটপস ২০২০’তে নেতৃত্ব দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। ১১ই জুন রুশ বল্টিক ফ্লিটের এক বিবৃতিতে বলা হয় যে, কয়েক ডজন রুশ ‘সুখোই ২৪’, ‘সুখোই ২৭’ এবং ‘সুখোই ৩০’ যুদ্ধবিমান একই সময়ে পাল্টা এক মহড়ায় অংশ নিচ্ছে। রাশিয়া বারংবারই তার সীমানার কাছাকাছি ন্যাটোর সামরিক মহড়াকে রাশিয়ার জাতীয় নিরাপত্তার প্রতি হুমকি হিসেবে দেখছে বলে বলছে। শুধু বল্টিকেই নয়; রাশিয়া চেয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের মহড়ার জবাব সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের সীমানায় দিতে। ১০ই জুন যুক্তরাষ্ট্রের ‘নর্থ আমেরিকান এরোস্পেস ডিফেন্স কমান্ড’ বা ‘নোরাড’এর এক বিবৃতিতে বলা হয় যে, মার্কিন বিমান বাহিনীর বিমান আলাস্কা থেকে মাত্র ২০ নটিক্যাল মাইল দূরে রুশ বিমান বাহিনীর ৫টা বিমানকে বাধা দেয়। এরপর আরও তিনটা রুশ বিমান আলাস্কার ৩২ নটিক্যাল মাইলের মাঝে চলে আসে। তবে ‘নোরাড’ বলছে যে, রুশ বিমানগুলি আন্তর্জাতিক আকাশ সীমাতেই অবস্থান করছিলো। এছাড়াও বল্টিক সাগরে যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি এবং রাশিয়ার ত্রিমুখী উত্তেজনা চলছে গ্যাস পাইপলাইন তৈরি নিয়ে। রাশিয়া আশেপাশের সকল দেশকে বাইপাস করে ‘নর্ড স্ট্রিম ২’ পাইপলাইন তৈরি করছে জার্মানি পর্যন্ত, যা রাশিয়ার অর্থনীতির জন্যে অতি জরুরি। যুক্তরাষ্ট্র চাইছে না যে, রুশ গ্যাসের উপর জার্মানির নির্ভরশীলতা বৃদ্ধি পাক। এই লক্ষ্যে মার্কিন কংগ্রেস এই প্রকল্পে অংশ নেয়া কোম্পানিগুলির উপর অবরোধ দেয়ার জন্যে আইন পাস করছে। ১২ই জুন জার্মান অর্থ মন্ত্রণলায়রের এই প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে জার্মান পত্রিকা ‘ফ্রাঙ্কফুরটার আলেমাইন জাইটুং’ বলে যে, মার্কিন অবরোধ জার্মান কোম্পানি ছাড়াও সরকারি সংস্থাগুলিকেও ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
বল্টিক সাগর ছাড়াও গত পহেলা মে মার্কিন এবং ব্রিটিশ নৌবাহিনী নরওয়ের উত্তরে আর্কটিকের কাছাকাছি নৌ মহড়ায় অংশ নেয়। এরও আগে মার্চের শুরুতে ব্রিটিশ নেতৃত্বে নরওয়েতে ১৬ হাজার সৈন্যের বড়সড় সামরিক মহড়া শুরু হয়। ‘দ্যা ব্যারেন্টস অবজারভার’ বলছে যে, শূণ্যের ২০ ডিগ্রি নিচের তাপমাত্রায় অনুষ্ঠিত দুই সপ্তাহের এই মহড়ার নাম ছিল ‘এক্সারসাইজ কোল্ড রেসপঞ্জ ২০২০’। এই মহড়া শেষ হতে না হতেই জবাব হিসেবে রাশিয়া তার সামরিক শক্তিকে ব্রিটেনের আশেপাশে মোতায়েন করে। একসাথে ৭টা রুশ যুদ্ধজাহাজ কয়েকদিন ধরে ইংলিশ চ্যানেলের আশেপাশে দিয়ে ঘোরাঘুরি করে। এর জবাবে ব্রিটিশ রয়াল নেভি একত্রে ৯টা যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করতে বাধ্য হয়। এছাড়াও ‘দ্যা গার্ডিয়ান’ বলছে যে, রুশ বিমান বাহিনীর বোমারু বিমানগুলি শেটল্যান্ড আইল্যান্ডের উত্তরে এসে হাজির হয়। ব্রিটিশ রয়াল এয়ার ফোর্সের ‘টাইফুন’ ফাইটার বিমান রুশ বিমানগুলিকে বাধা দেয়।
‘গ্রেট পাওয়ার’ প্রতিযোগিতায় ব্যারেন্টস সাগর, বল্টিক সাগর, কৃষ্ণ সাগরে রাশিয়াকে ব্যাতিব্যস্ত রাখতে চাইছে যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রিটেন। তবে পুতিনের রাশিয়াও এর জবাব দিতে চাইছে বিভিন্নভাবে। এবং একইসাথে লিবিয়া এবং সিরিয়াতেও সে তার অবস্থান ধরে রাখতে চাইছে। কিন্তু করোনা দুর্যোগ এবং তেলের বাজারে মন্দার মাঝে দুর্বল অর্থনীতি নিয়ে রাশিয়া এই প্রতিযোগিতাকে কতদূর এগিয়ে নিতে পারবে, তা প্রশ্নবিদ্ধ।
রাশিয়ার জাতীয় দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠান। করোনাভাইরাসের লকডাউন তুলে নেবার পর রাশিয়ায় এটাই প্রথম বড় অনুষ্ঠান। |
করোনাভাইরাসের লকডাউনও যেন যথেষ্ট ছিল না। মার্চ মাসে রাশিয়া এবং সৌদি আরব তেলের বাজারে অদ্ভুত এক প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়, যার কারণে করোনা দুর্যোগে চাহিদা কমে যাওয়ার পরও ব্যাপকভাবে সরবরাহ বৃদ্ধি পায়। ফলস্বরূপ তেলের বাজারে রেকর্ড দরপতনের পর রুশ অর্থনীতি ব্যাপক ধাক্কা খেয়েছে। তেল বিক্রির উপর রাশিয়ার জিডিপির ৩০ শতাংশ নির্ভরশীল। অথচ তেলের বাজারের নিয়ন্ত্রণে নেই রাশিয়া। এই বাস্তবতাই রাশিয়াকে বিপদে ফেলেছে। ‘সিএনবিসি’র সাথে এক সাক্ষাতে কাতারের জ্বালানি মন্ত্রী সাদ আল-কাবি বলেন যে, রাশিয়া এবং সৌদি আরবের তেলের বাজারের প্রতিযোগিতা একটা বড় ভুল ছিল। আর একারণে এখন কেউ উৎপাদনেই যেতে পারছে না।
তবে এত দুর্যোগের মাঝেও ভূরাজনৈতিক প্রতিযোগিতা থেকে ঝরে পড়তে চাইছে না পুতিনের রাশিয়া। লিবিয়া এবং সিরিয়াতে রুশ ভূরাজনৈতিক আকাংক্ষা রয়েছে। ২৯শে মে মার্কিন সামরিক বাহিনীর আফ্রিকা কমান্ডের ব্রিগেডিয়ার জেনারেল গ্রগরি হ্যাডফিল্ড বলেন যে, তারা তথ্য পেয়েছেন যে রুশরা লিবিয়াতে ১৪টা ফাইটার বিমান মোতায়েন করেছে। মার্কিনীরা বলছে যে, লিবিয়াতে এই বিমানগুলি মোতায়েনের মাধ্যমে রাশিয়া ইউরোপের দক্ষিণ দিক থেকে ইউরোপকে হুমকিতে ফেলতে পারে। বিমানগুলি রাশিয়া থেকে সিরিয়া হয়ে লিবিয়া পৌঁছায়। তবে রাশিয়াকে চাপে রাখার জন্যে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে অনেকগুলি কার্ড রয়েছে। ১১ই জুন মার্কিন কংগ্রেসে ইউক্রেনের জন্যে আড়াই’শ মিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তার ট্রাম্প প্রশাসনের পরিকল্পনা পাস করা হয়।
‘মিলিটারি টাইমস’এর এক প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে যে, রাশিয়ার সীমানার কাছাকাছি বল্টিক সাগরে ন্যাটোর বার্ষিক নৌ মহড়া ‘ব্যালটপস ২০২০’তে নেতৃত্ব দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। ১১ই জুন রুশ বল্টিক ফ্লিটের এক বিবৃতিতে বলা হয় যে, কয়েক ডজন রুশ ‘সুখোই ২৪’, ‘সুখোই ২৭’ এবং ‘সুখোই ৩০’ যুদ্ধবিমান একই সময়ে পাল্টা এক মহড়ায় অংশ নিচ্ছে। রাশিয়া বারংবারই তার সীমানার কাছাকাছি ন্যাটোর সামরিক মহড়াকে রাশিয়ার জাতীয় নিরাপত্তার প্রতি হুমকি হিসেবে দেখছে বলে বলছে। শুধু বল্টিকেই নয়; রাশিয়া চেয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের মহড়ার জবাব সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের সীমানায় দিতে। ১০ই জুন যুক্তরাষ্ট্রের ‘নর্থ আমেরিকান এরোস্পেস ডিফেন্স কমান্ড’ বা ‘নোরাড’এর এক বিবৃতিতে বলা হয় যে, মার্কিন বিমান বাহিনীর বিমান আলাস্কা থেকে মাত্র ২০ নটিক্যাল মাইল দূরে রুশ বিমান বাহিনীর ৫টা বিমানকে বাধা দেয়। এরপর আরও তিনটা রুশ বিমান আলাস্কার ৩২ নটিক্যাল মাইলের মাঝে চলে আসে। তবে ‘নোরাড’ বলছে যে, রুশ বিমানগুলি আন্তর্জাতিক আকাশ সীমাতেই অবস্থান করছিলো। এছাড়াও বল্টিক সাগরে যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি এবং রাশিয়ার ত্রিমুখী উত্তেজনা চলছে গ্যাস পাইপলাইন তৈরি নিয়ে। রাশিয়া আশেপাশের সকল দেশকে বাইপাস করে ‘নর্ড স্ট্রিম ২’ পাইপলাইন তৈরি করছে জার্মানি পর্যন্ত, যা রাশিয়ার অর্থনীতির জন্যে অতি জরুরি। যুক্তরাষ্ট্র চাইছে না যে, রুশ গ্যাসের উপর জার্মানির নির্ভরশীলতা বৃদ্ধি পাক। এই লক্ষ্যে মার্কিন কংগ্রেস এই প্রকল্পে অংশ নেয়া কোম্পানিগুলির উপর অবরোধ দেয়ার জন্যে আইন পাস করছে। ১২ই জুন জার্মান অর্থ মন্ত্রণলায়রের এই প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে জার্মান পত্রিকা ‘ফ্রাঙ্কফুরটার আলেমাইন জাইটুং’ বলে যে, মার্কিন অবরোধ জার্মান কোম্পানি ছাড়াও সরকারি সংস্থাগুলিকেও ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
বল্টিক সাগর ছাড়াও গত পহেলা মে মার্কিন এবং ব্রিটিশ নৌবাহিনী নরওয়ের উত্তরে আর্কটিকের কাছাকাছি নৌ মহড়ায় অংশ নেয়। এরও আগে মার্চের শুরুতে ব্রিটিশ নেতৃত্বে নরওয়েতে ১৬ হাজার সৈন্যের বড়সড় সামরিক মহড়া শুরু হয়। ‘দ্যা ব্যারেন্টস অবজারভার’ বলছে যে, শূণ্যের ২০ ডিগ্রি নিচের তাপমাত্রায় অনুষ্ঠিত দুই সপ্তাহের এই মহড়ার নাম ছিল ‘এক্সারসাইজ কোল্ড রেসপঞ্জ ২০২০’। এই মহড়া শেষ হতে না হতেই জবাব হিসেবে রাশিয়া তার সামরিক শক্তিকে ব্রিটেনের আশেপাশে মোতায়েন করে। একসাথে ৭টা রুশ যুদ্ধজাহাজ কয়েকদিন ধরে ইংলিশ চ্যানেলের আশেপাশে দিয়ে ঘোরাঘুরি করে। এর জবাবে ব্রিটিশ রয়াল নেভি একত্রে ৯টা যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করতে বাধ্য হয়। এছাড়াও ‘দ্যা গার্ডিয়ান’ বলছে যে, রুশ বিমান বাহিনীর বোমারু বিমানগুলি শেটল্যান্ড আইল্যান্ডের উত্তরে এসে হাজির হয়। ব্রিটিশ রয়াল এয়ার ফোর্সের ‘টাইফুন’ ফাইটার বিমান রুশ বিমানগুলিকে বাধা দেয়।
‘গ্রেট পাওয়ার’ প্রতিযোগিতায় ব্যারেন্টস সাগর, বল্টিক সাগর, কৃষ্ণ সাগরে রাশিয়াকে ব্যাতিব্যস্ত রাখতে চাইছে যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রিটেন। তবে পুতিনের রাশিয়াও এর জবাব দিতে চাইছে বিভিন্নভাবে। এবং একইসাথে লিবিয়া এবং সিরিয়াতেও সে তার অবস্থান ধরে রাখতে চাইছে। কিন্তু করোনা দুর্যোগ এবং তেলের বাজারে মন্দার মাঝে দুর্বল অর্থনীতি নিয়ে রাশিয়া এই প্রতিযোগিতাকে কতদূর এগিয়ে নিতে পারবে, তা প্রশ্নবিদ্ধ।
আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে রাশিয়া কি নিজ থেকে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে না আমেরিকা তাকে বের করে এনে ব্যবহার করছে? এক্টু বুজিয়ে বলবেন।রাশিয়ার ইন্টারনেশনাল একটু ভুমিকা দেখানো দরকার তা ব্যবহার করছে আমেরিকা, যেমন সিরিয়া তেমনি লিবিয়াতে,ইউরোপীয় পাওয়ারকে ব্যালেন্স ও EU রাষ্ট্রীয় কলোনীর কন্টোল নিতে USA লিবিয়াতে use করছে? রাশিয়াকে তার পেরিফেরিতে USA কন্টেইন করছে আবার Internationally Use করছে।
ReplyDeleteবর্তমান রাশিয়া সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের ছায়াও নয়। রাশিয়ার লক্ষ্য নিয়ে কথা বলতে গেলেই সেটা পরিষ্কার হতে শুরু করবে। যেহেতু রাশিয়া পশ্চিমাদের বিরোধী কোন আদর্শ এখন আর ধারণ করছে না, তাই রাশিয়ার লক্ষ্য এখন অনেকটাই সীমিত। তবে ন্যাটোর প্রবৃদ্ধি ইউরোপের নিরাপত্তা বলয়কে রাশিয়ার নিজস্ব এলাকায় নিয়ে এসেছে। বিশেষ করে ইউক্রেন যুদ্ধ, বলকান, ককেশাস এবং বল্টিকের দেশগুলিকে নিরাপত্তা সহায়তা দেয়া এবং তাদেরকে ন্যাটোর অংশ হিসেবে প্রস্তুত করার কারণে রাশিয়া তার নিজস্ব বলয়ের নিরাপত্তা নিয়েই বেশি চিন্তিত হয়ে পড়েছে। এই দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি খুঁজতেই রাশিয়া পশ্চিমাদের সাথে বিভিন্ন বিষয়ে দরকষাকষির সুযোগ খুঁজছে। এই দরকষাকষিতে নিজের অবস্থান শক্তিশালী করতেই তারা সিরিয়া, লিবিয়া, ভেনিজুয়েলা, আফ্রিকা, ইত্যাদি স্থানে বিভিন্ন প্রকারের বিনিয়োগ করছে। অর্থাৎ রাশিয়ার বিশ্বব্যাপী এই বিনিয়োগ প্রকৃতপক্ষে পশ্চিমাদের চাপে নিজের নিরাপত্তাহীনতা থেকেই সূত্রপাত। যেকারণে রাশিয়ার প্রভাব বিস্তারের চেষ্টাগুলি অনেক ক্ষেত্রেই পশ্চিমারা আগে থেকেই জানে।
Deleteকিন্তু এখানে একটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো পশ্চিমাদের নিজেদের চিন্তাগত অধঃপতন। তারা রাশিয়ার ভবিষ্যত কর্মকান্ড বুঝতে পারলেও সেগুলিকে পুরোপুরি বাধা দেয়ার মতো অবস্থানে তারা নেই - রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামরিক - কোনভাবেই নয়। বাকি দুনিয়ার উপর পশ্চিমাদের নিয়ন্ত্রণ আগের মতো আর নেই। সেকারণে রাশিয়ার ইচ্ছার সাথে যখন বাকি দুনিয়ার ইচ্ছার সংমিশ্রণ ঘটছে, তখন সেটা পশ্চিমাদের নিয়ন্ত্রণে বাইরেই থেকে যাচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ - তেলের বাজার নিয়ন্ত্রণে রাশিয়া এবং সৌদি আরবের মাঝে চুক্তি; কিউবার সহায়তায় ভেনিজুয়েলাতে রাশিয়ার পদক্ষেপ; প্রথমে আমিরাত ও মিশর এবং পরবর্তীতে ফ্রান্সের সমর্থনে লিবিয়াতে রাশিয়ার জড়িয়ে যাওয়া; ইত্যাদি।
তবে অনেক ক্ষেত্রেই বিশ্বব্যাপী রাশিয়ার কর্মকান্ড পশ্চিমাদের লক্ষ্যের বাইরে যাচ্ছে না, বা যেতে পারছে না। উদাহরণস্বরূপ - ভিয়েতনামের জন্যে রাশিয়ার অস্ত্র সরবরাহ চীনকে নিয়ন্ত্রণে ব্যবহৃত হচ্ছে; ভেনিজুয়েলার জন্যে রাশিয়ার সহায়তা আমেরিকা মহাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবকে কমিয়ে ব্রিটিশ কমনওয়েলথের কানাডার প্রভাবকে বাড়াচ্ছে; আফ্রিকাতে রাশিয়ার অস্ত্র সরবরাহ সেখানে ইউরোপিয় ঔপনিবেশিক প্রভাবকে কমিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে সহায়তা করছে; লিবিয়াতে রাশিয়ার জড়িয়ে পড়ায় ফ্রান্সের সরাসরি হাফতারকে সহায়তা না দিলেও চলছে।
আর রাশিয়ার অর্থনীতি পুরোপুরিভাবে তেল-গ্যাস বিক্রির উপর নির্ভরশীল। অথচ তেলের মূল্যের নিয়ন্ত্রণ রাশিয়ার হাতে নেই। রাশিয়ার অস্ত্রের বাজারকে চ্যালেঞ্জ করার অনেক দেশ আসছে। তাই এখন রাশিয়াকে বিশেষ কিছু দেশে বিশেষ কিছু অস্ত্রের মাঝেই সীমাবদ্ধ থাকতে হচ্ছে।
Deleteরাশিয়ার সীমানায় ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, তুরস্ক, চীন এবং জাপানের মতো দেশ থাকায় রাশিয়ার চ্যালেঞ্জ অনেক। বিশাল দেশ নিয়ন্ত্রণে রাশিয়ার মোট জনসংখ্যা একেবারেই অপ্রতুল। আর রাশিয়া একটা ফেডারেল স্টেট। এর একটা বড় অংশ মুসলিম, যা রাশিয়ার ভৌগোলিক অখন্ডতার প্রতি হুমকিস্বরূপ। আর এতবড় রাশিয়ার উষ্ণ পানির সমুদ্রবন্দর এতই কম যে, রাশিয়াকে বিশেষ কিছু স্থানে (যেমন কৃষ্ণ সাগর, বল্টিক সাগর, জাপান সাগর, ব্যারেন্টস সাগর) নিয়ন্ত্রণ করাটা অসম্ভব নয়। তদুপরি গ্লোবাল ওয়ার্মিংএর কারণে উত্তর মেরুতে বরফ গলার কারণে যে বিরাট সমুদ্রপথ খুলে গেছে, তা উত্তর মেরুর খনিজ সম্পদ উত্তোলনের জন্যে সুযোগ তৈরি করে দেয়া ছাড়াও ইউরোপ থেকে প্রশান্ত মহাসাগর পর্যন্ত সমুদ্রপথ খুলে দিয়েছে। রাশিয়া এখনও এখানে রাজা।
আরও অনেক ইস্যু আছে, যেগুলি সামনের দিনগুলিতে রাশিয়াকে জাগিয়ে রাখবে, আবার গুরুত্বপূর্ণও করবে, আবার শক্তিশালী হতেও বাধা দেবে।
যাযাক আল্লাহ। গ্লোবাল ব্রিটেনের হাত গুলো নিয়ে আলাদা একটা আরটিকেল দিলে উপকৃত হতাম
ReplyDeleteবারাকআল্লাহ!
Deleteআমার তৃতীয় বই 'যুক্তরাষ্ট্রের পর...'এ গ্লোবাল ব্রিটেনের একটা ধারণা পাবেন এব্যাপারে।
আর ২০২০ সালের ঘটনার মাঝে নিচের লেখাগুলি পড়তে পারেন -
https://koushol.blogspot.com/2020/02/future-of-post-brexit-global-britain.html
https://koushol.blogspot.com/2020/04/coronavirus-global-britain-spreads-influence.html
https://koushol.blogspot.com/2020/05/australian-shipyards-busy-during-corona-pandemic.html
https://koushol.blogspot.com/2020/06/what-is-canada-interest-in-caribbean.html