১০ই জানুয়ারি ২০২০
ইরাকে মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর ৯ই জানুয়ারি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক ভাষণে বলেন যে, আপাতদৃষ্টে মনে হচ্ছে যে, ইরান যুদ্ধংদেহী অবস্থান থেকে সরে আসছে। ইরাকের রাজধানী বাগদাদে মার্কিন বিমান হামলায় ইরানের ‘রেভোলিউশনারি গার্ড কোর’ বা ‘আইআরজিসি’র বিশেষ বাহিনী ‘কুদস ফোর্স’এর কমান্ডার মেজর জেনারেল কাসেম সুলাইমানির মৃত্যুর পর প্রতিশোধ হিসেবে ইরাকে মার্কিন স্থাপনাগুলিতে হামলা করা হয়েছে বলে জানায় ‘আইআরজিসি’। একইসাথে ইরাক থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের দাবিও তোলা হয়। ‘আইআরজিসি’ আরও বলে যে, যুক্তরাষ্ট্র যদি আবারও কোন আগ্রাসী কার্যকলাপে জড়ায়, তবে ইরানও তার প্রত্যুত্তর দেবে। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি টেলিভিশনে প্রচারিত এক বার্তায় বলেন যে, ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের চেহারায় চপেটাঘাত করা হয়েছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন যে, ইরানের এই বার্তাগুলি বলে দিচ্ছে যে, যুক্তরাষ্ট্র যদি ইরানের উপর পাল্টা হামলা না করে, তাহলে ইরানও তার সামরিক প্রতিশোধকে এখানেই সীমাবদ্ধ করে ফেলতে চাইছে। আর অন্যদিকে সুলাইমানিকে হত্যার পর থেকেই ট্রাম্প প্রশাসনও উত্তেজনা প্রশমন করতে ইচ্ছুক বলে জানান দিচ্ছিল। ট্রাম্প বলেছিলেন যে, যুক্তরাষ্ট্র এই হত্যাকান্ড করেছে যুদ্ধ বন্ধ করতে; যুদ্ধ শুরু করতে নয়। আর ইরাকে মার্কিন স্থাপনায় ইরানের হামলার পরপরই ট্রাম্প রাতের বেলায় এক টুইটার বার্তায় লিখেন যে, ‘সবকিছু ঠিকই আছে’। তিনি আরও বলেন যে, আপাততঃ সব ভালোই ঠেকছে। তিনি পরদিন সকালে একটা বার্তা দেবেন বলে জানান। ট্রাম্প যে রাতের বেলায়ই কোন প্রতিশোধমূলক হামলা থেকে বিরত থেকে ঘুমাতে গিয়েছিলেন, তখনই অনেকে ধারণা করেছিলেন যে, ট্রাম্প হয়তো যা চাইছিলেন তা-ই পেয়েছেন।
ইরাকের সামরিক বাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয় যে, ৮ই জানুয়ারি ইরাকে মার্কিন সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে ইরানের সামরিক বাহিনী মোট ২২টি ভূমি থেকে ভূমিতে নিক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়ে। এর মাঝে ১৭টা ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়া হয়েছিল আনবার প্রদেশে অবস্থিত আইন আল-আসাদ ঘাঁটিকে লক্ষ্য করে। বাকি পাঁচটা ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়া হয়েছিল ইরাকের উত্তরের আরবিল শহরের কাছে মার্কিন ঘাঁটি লক্ষ্য করে। ‘সিএনএন’ বলছে যে, অনেক মার্কিন কর্মকর্তারাই ধারণা করছেন যে, ইরান ইচ্ছে করেই ক্ষেপণাস্ত্রগুলি এমনভাবে টার্গেট করেছে, যাতে মার্কিন সেনারা হতাহত না হয়। তারা বলছেন যে, ইরান হয়তো এমন একটা বার্তা দিতে যাচ্ছিল, যার ফলাফল হিসেবে মার্কিনীরা ব্যাপক সামরিক হামলা থেকে বিরত থাকবে। হোয়াইট হাউজও চাইছে উত্তেজনা প্রশমনের দিকে ঘটনাকে ধাবিত করতে। ইরাকের প্রেসিডেন্ট আদেল আব্দুল মাহদি বলেন যে, ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরুর আগেই ইরাকের সরকারকে সতর্ক করে দেয় ইরান; আর সেই হিসবে ইরাকিরা প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা নিয়েছিল। মাহদি বলেন যে, ইরান তাদেরকে বলেছে যে, ইরাকে মার্কিন সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করেই হামলা করা হবে। আর মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন যে, সেই হিসেবে ইরাকিরা মার্কিনীদেরকে আগেভাগেই সতর্ক করে। ইরান ইচ্ছে করলেই এমন টার্গেটে হামলা করতে পারতো, যেখানে অনেক মার্কিন সেনাকে হতাহত করা যেতো। হামলার আগে থেকে মার্কিনীরা যথেষ্ট সতর্কবার্তা পেয়েছিল, যার মাধ্যমে মার্কিন সেনারা নিরাপদে থাকতে পেরেছে।
‘মিডলবুরি ইন্সটিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ’এর জন্যে ‘প্ল্যানেট’ নামের একটা কোম্পানি বাণিজ্যিক স্যাটেলাইটের মাধ্যমে ইরাকে আইন আল-আসাদ ঘাঁটির ছবি তোলে। ‘মিডলবুরি ইন্সটিটিউট’এর বিশ্লেষক ডেভিড স্মারলার ‘এনপিআর’এর সাথে কথা বলতে গিয়ে বলেন যে, ঐ ঘাঁটিতে কমপক্ষে পাঁচটা স্থাপনা ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ধ্বংস হয়েছে। এই স্থাপনাগুলি সম্ভবতঃ বিমান রাখার জন্যে ব্যবহৃত হচ্ছিল। একই ঘাঁটিতে অন্যান্য স্থাপনা ছিল যেখানে মার্কিন সেনারা বসবাস করতো। ইরান সেসব স্থাপনায় হামলা করেনি। এর অর্থ হতে পারে যে, তারা হয়তো জান নয়, বরং মালের ক্ষয়ক্ষতি চাইছিল। ‘সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক এন্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ’এর সিনিয়র ফেলো টম কারাকো বলছেন যে, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রগুলি যথেষ্ট উন্নত এবং এগুলি মোটামুটি নির্ভুলভাবে টার্গেটে আঘাত হানতে পারে। যদি ইরানিরা হতাহতের সংখ্যা বাড়াতে চাইতো, তাহলে তারা অন্য কোন কিছু করতো।
ট্রাম্প তার ভাষণে বলেন যে, আগের মার্কিন প্রশাসন ইরানের সাথে পারমাণবিক চুক্তি করেছিল; যার অংশ হিসেবে ইরানকে ১’শ ৫০ বিলিয়ন ডলার দেয়া হয়। এই অর্থ ব্যবহার করেই ইরান তার ক্ষেপণাস্ত্রের বহর তৈরি করেছে। তিনি ব্রিটেন ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া এবং চীনকে আগের পারমাণবিক চুক্তি থেকে বের হয়ে আসতে বলেন, যাতে ইরানের সাথে নতুন করে আরেকটা চুক্তি করা যায়। ট্রাম্প আরও বলেন যে, বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের সবচাইতে বড় তেল-গ্যাস উৎপাদনকারী দেশ। মধ্যপ্রাচ্যের তেলের কোন দরকার যুক্তরাষ্ট্রের নেই। তিনি মনে করিয়ে দেন যে, আইসিস স্বাভাবিকভাবেই ইরানের শত্রু। আইসিস এবং আরও কিছু কারণে ইরান এবং যুক্তরাষ্ট্রের একত্রে কাজ করা উচিৎ।
আইসিস ধ্বংসের পর থেকে ইরাক এবং সিরিয়াতে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের একত্রে কাজ করার ক্ষেত্র কমে গেছে। এমতাবস্থায় ইরানের আঞ্চলিক কর্মকান্ডকে সীমাবদ্ধ করতেই ট্রাম্প ইরানের উপর চাপ সৃষ্টি করতে চাইছেন। অন্যদিকে মধ্যপ্রাচ্যের তেলের উপর যুক্তরাষ্ট্রের নির্ভরশীলতা কমে যাওয়ায় ইরানের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের উপর কৌশলগত চাপ সৃষ্টি করার অপশনও কমে গেছে। মধ্যপ্রাচ্যে যেকোন সংঘাত ইউরোপ এবং এশিয়ার দেশগুলিকেই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করবে। পারমাণবিক চুক্তির ব্যাপারটা ট্রাম্প প্রশাসনের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হলেও পারমাণবিক ইস্যুতে শক্তিশালী দেশগুলির সাথে চুক্তি করতে ছাড় দেয়ার মানসিকতা রাখায় ইরানের আঞ্চলিক প্রভাব বৃদ্ধিকেই যুক্তরাষ্ট্র বড় সমস্যা হিসেবে দেখছে। ইরান যেমন ইরাকে তার প্রভাব বৃদ্ধি করতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্থান চাইছে, তেমনি যুক্তরাষ্ট্রও ইরাকের নিয়ন্ত্রণ ইরানের হাতে পুরোপুরি ছেড়ে দিতে নারাজ। তবে সুলাইমানির হত্যাকান্ডের ঘটনায় ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক অবস্থানের পক্ষে যুক্তিগুলি দুর্বল হতে থাকবে। আর তাতে যুক্তরাষ্ট্রের অবর্তমানে ইরাকে ইরানের প্রভাবকে ব্যালান্স করতে তুরস্ক এবং সৌদি আরবের মতো প্রতিবেশি দেশগুলিকে যুক্তরাষ্ট্র আরও বেশি সক্রিয় দেখতে চাইতে পারে।
ইরাকে মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর ৯ই জানুয়ারি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক ভাষণে বলেন যে, আপাতদৃষ্টে মনে হচ্ছে যে, ইরান যুদ্ধংদেহী অবস্থান থেকে সরে আসছে। ইরাকের রাজধানী বাগদাদে মার্কিন বিমান হামলায় ইরানের ‘রেভোলিউশনারি গার্ড কোর’ বা ‘আইআরজিসি’র বিশেষ বাহিনী ‘কুদস ফোর্স’এর কমান্ডার মেজর জেনারেল কাসেম সুলাইমানির মৃত্যুর পর প্রতিশোধ হিসেবে ইরাকে মার্কিন স্থাপনাগুলিতে হামলা করা হয়েছে বলে জানায় ‘আইআরজিসি’। একইসাথে ইরাক থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের দাবিও তোলা হয়। ‘আইআরজিসি’ আরও বলে যে, যুক্তরাষ্ট্র যদি আবারও কোন আগ্রাসী কার্যকলাপে জড়ায়, তবে ইরানও তার প্রত্যুত্তর দেবে। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি টেলিভিশনে প্রচারিত এক বার্তায় বলেন যে, ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের চেহারায় চপেটাঘাত করা হয়েছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন যে, ইরানের এই বার্তাগুলি বলে দিচ্ছে যে, যুক্তরাষ্ট্র যদি ইরানের উপর পাল্টা হামলা না করে, তাহলে ইরানও তার সামরিক প্রতিশোধকে এখানেই সীমাবদ্ধ করে ফেলতে চাইছে। আর অন্যদিকে সুলাইমানিকে হত্যার পর থেকেই ট্রাম্প প্রশাসনও উত্তেজনা প্রশমন করতে ইচ্ছুক বলে জানান দিচ্ছিল। ট্রাম্প বলেছিলেন যে, যুক্তরাষ্ট্র এই হত্যাকান্ড করেছে যুদ্ধ বন্ধ করতে; যুদ্ধ শুরু করতে নয়। আর ইরাকে মার্কিন স্থাপনায় ইরানের হামলার পরপরই ট্রাম্প রাতের বেলায় এক টুইটার বার্তায় লিখেন যে, ‘সবকিছু ঠিকই আছে’। তিনি আরও বলেন যে, আপাততঃ সব ভালোই ঠেকছে। তিনি পরদিন সকালে একটা বার্তা দেবেন বলে জানান। ট্রাম্প যে রাতের বেলায়ই কোন প্রতিশোধমূলক হামলা থেকে বিরত থেকে ঘুমাতে গিয়েছিলেন, তখনই অনেকে ধারণা করেছিলেন যে, ট্রাম্প হয়তো যা চাইছিলেন তা-ই পেয়েছেন।
ইরাকের সামরিক বাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয় যে, ৮ই জানুয়ারি ইরাকে মার্কিন সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে ইরানের সামরিক বাহিনী মোট ২২টি ভূমি থেকে ভূমিতে নিক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়ে। এর মাঝে ১৭টা ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়া হয়েছিল আনবার প্রদেশে অবস্থিত আইন আল-আসাদ ঘাঁটিকে লক্ষ্য করে। বাকি পাঁচটা ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়া হয়েছিল ইরাকের উত্তরের আরবিল শহরের কাছে মার্কিন ঘাঁটি লক্ষ্য করে। ‘সিএনএন’ বলছে যে, অনেক মার্কিন কর্মকর্তারাই ধারণা করছেন যে, ইরান ইচ্ছে করেই ক্ষেপণাস্ত্রগুলি এমনভাবে টার্গেট করেছে, যাতে মার্কিন সেনারা হতাহত না হয়। তারা বলছেন যে, ইরান হয়তো এমন একটা বার্তা দিতে যাচ্ছিল, যার ফলাফল হিসেবে মার্কিনীরা ব্যাপক সামরিক হামলা থেকে বিরত থাকবে। হোয়াইট হাউজও চাইছে উত্তেজনা প্রশমনের দিকে ঘটনাকে ধাবিত করতে। ইরাকের প্রেসিডেন্ট আদেল আব্দুল মাহদি বলেন যে, ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরুর আগেই ইরাকের সরকারকে সতর্ক করে দেয় ইরান; আর সেই হিসবে ইরাকিরা প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা নিয়েছিল। মাহদি বলেন যে, ইরান তাদেরকে বলেছে যে, ইরাকে মার্কিন সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করেই হামলা করা হবে। আর মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন যে, সেই হিসেবে ইরাকিরা মার্কিনীদেরকে আগেভাগেই সতর্ক করে। ইরান ইচ্ছে করলেই এমন টার্গেটে হামলা করতে পারতো, যেখানে অনেক মার্কিন সেনাকে হতাহত করা যেতো। হামলার আগে থেকে মার্কিনীরা যথেষ্ট সতর্কবার্তা পেয়েছিল, যার মাধ্যমে মার্কিন সেনারা নিরাপদে থাকতে পেরেছে।
‘মিডলবুরি ইন্সটিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ’এর জন্যে ‘প্ল্যানেট’ নামের একটা কোম্পানি বাণিজ্যিক স্যাটেলাইটের মাধ্যমে ইরাকে আইন আল-আসাদ ঘাঁটির ছবি তোলে। ‘মিডলবুরি ইন্সটিটিউট’এর বিশ্লেষক ডেভিড স্মারলার ‘এনপিআর’এর সাথে কথা বলতে গিয়ে বলেন যে, ঐ ঘাঁটিতে কমপক্ষে পাঁচটা স্থাপনা ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ধ্বংস হয়েছে। এই স্থাপনাগুলি সম্ভবতঃ বিমান রাখার জন্যে ব্যবহৃত হচ্ছিল। একই ঘাঁটিতে অন্যান্য স্থাপনা ছিল যেখানে মার্কিন সেনারা বসবাস করতো। ইরান সেসব স্থাপনায় হামলা করেনি। এর অর্থ হতে পারে যে, তারা হয়তো জান নয়, বরং মালের ক্ষয়ক্ষতি চাইছিল। ‘সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক এন্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ’এর সিনিয়র ফেলো টম কারাকো বলছেন যে, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রগুলি যথেষ্ট উন্নত এবং এগুলি মোটামুটি নির্ভুলভাবে টার্গেটে আঘাত হানতে পারে। যদি ইরানিরা হতাহতের সংখ্যা বাড়াতে চাইতো, তাহলে তারা অন্য কোন কিছু করতো।
ট্রাম্প তার ভাষণে বলেন যে, আগের মার্কিন প্রশাসন ইরানের সাথে পারমাণবিক চুক্তি করেছিল; যার অংশ হিসেবে ইরানকে ১’শ ৫০ বিলিয়ন ডলার দেয়া হয়। এই অর্থ ব্যবহার করেই ইরান তার ক্ষেপণাস্ত্রের বহর তৈরি করেছে। তিনি ব্রিটেন ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া এবং চীনকে আগের পারমাণবিক চুক্তি থেকে বের হয়ে আসতে বলেন, যাতে ইরানের সাথে নতুন করে আরেকটা চুক্তি করা যায়। ট্রাম্প আরও বলেন যে, বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের সবচাইতে বড় তেল-গ্যাস উৎপাদনকারী দেশ। মধ্যপ্রাচ্যের তেলের কোন দরকার যুক্তরাষ্ট্রের নেই। তিনি মনে করিয়ে দেন যে, আইসিস স্বাভাবিকভাবেই ইরানের শত্রু। আইসিস এবং আরও কিছু কারণে ইরান এবং যুক্তরাষ্ট্রের একত্রে কাজ করা উচিৎ।
আইসিস ধ্বংসের পর থেকে ইরাক এবং সিরিয়াতে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের একত্রে কাজ করার ক্ষেত্র কমে গেছে। এমতাবস্থায় ইরানের আঞ্চলিক কর্মকান্ডকে সীমাবদ্ধ করতেই ট্রাম্প ইরানের উপর চাপ সৃষ্টি করতে চাইছেন। অন্যদিকে মধ্যপ্রাচ্যের তেলের উপর যুক্তরাষ্ট্রের নির্ভরশীলতা কমে যাওয়ায় ইরানের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের উপর কৌশলগত চাপ সৃষ্টি করার অপশনও কমে গেছে। মধ্যপ্রাচ্যে যেকোন সংঘাত ইউরোপ এবং এশিয়ার দেশগুলিকেই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করবে। পারমাণবিক চুক্তির ব্যাপারটা ট্রাম্প প্রশাসনের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হলেও পারমাণবিক ইস্যুতে শক্তিশালী দেশগুলির সাথে চুক্তি করতে ছাড় দেয়ার মানসিকতা রাখায় ইরানের আঞ্চলিক প্রভাব বৃদ্ধিকেই যুক্তরাষ্ট্র বড় সমস্যা হিসেবে দেখছে। ইরান যেমন ইরাকে তার প্রভাব বৃদ্ধি করতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্থান চাইছে, তেমনি যুক্তরাষ্ট্রও ইরাকের নিয়ন্ত্রণ ইরানের হাতে পুরোপুরি ছেড়ে দিতে নারাজ। তবে সুলাইমানির হত্যাকান্ডের ঘটনায় ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক অবস্থানের পক্ষে যুক্তিগুলি দুর্বল হতে থাকবে। আর তাতে যুক্তরাষ্ট্রের অবর্তমানে ইরাকে ইরানের প্রভাবকে ব্যালান্স করতে তুরস্ক এবং সৌদি আরবের মতো প্রতিবেশি দেশগুলিকে যুক্তরাষ্ট্র আরও বেশি সক্রিয় দেখতে চাইতে পারে।
কিন্তু আমেরিকা তো ইরানের উপর নতুন করে আরো কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারী করেছে।
ReplyDelete"ট্রাম্প তার ভাষণে বলেন যে, আগের মার্কিন প্রশাসন ইরানের সাথে পারমাণবিক চুক্তি করেছিল; যার অংশ হিসেবে ইরানকে ১’শ ৫০ বিলিয়ন ডলার দেয়া হয়। এই অর্থ ব্যবহার করেই ইরান তার ক্ষেপণাস্ত্রের বহর তৈরি করেছে। তিনি ব্রিটেন ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া এবং চীনকে আগের পারমাণবিক চুক্তি থেকে বের হয়ে আসতে বলেন, যাতে ইরানের সাথে নতুন করে আরেকটা চুক্তি করা যায়।"
Deleteযুক্তরাষ্ট্র চাইছে ইরানের উপর চাপ সৃষ্টি করে তাকে আবারও আলোচনায় বসানো, যাতে নতুন করে আরেকখানা চুক্তি করা যায়। ব্যাপারটা বেশ সহজ। আর তেহরানে কোন সরকার পরিবর্তন যুক্তরাষ্ট্র চাইছে না। কারণ তেহরানে একটা শূণ্যস্থান পূরণ করার মতো কোন সমাধান যুক্তরাষ্ট্রের কাছে নেই। কাজেই যুক্তরাষ্ট্র তেহরানে খামেনির নেতৃত্বকেই বহাল রাখতে চাইবে। যদিও খামেনির উপর সকল ধরনের চাপই তারা প্রয়োগ করবে। এই চাপ দেখা যাবে আইআরজিসির উপর চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে। কারণ আইআরজিসিই খামেনির শক্তির কেন্দ্র।
somvoboto iran, turkey,saudi arabia eai trio er kase iran k chere diye ber hoye ashte chchhe jate east asia te focus korte pare china k chokhe chokhe rakhar jonno ?
ReplyDeleteযুক্তরাষ্ট্র তার গ্লোবাল লিডারশিপ হারাচ্ছে। এর পিছনে অনেকেই চীনের উত্থান এবং রাশিয়ার পুনরুত্থানের প্রচেষ্টাকে দায়ি করছেন। একইসাথে যুক্তরাষ্ট্র দুর্বল হবার সাথে সাথে যুক্তরাষ্ট্রের স্থানগুলি পূরণ করে নিতে সচেষ্ট হয়েছে অন্য গ্লোবাল এবং আঞ্চলিক শক্তিরা। যুক্তরাষ্ট্র একসাথে সবাইকে নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হচ্ছে। সে চীন-রাশিয়ার দিকে দৃষ্টি বেশি দিলে মধ্যপ্রাচ্য এবং আফ্রিকা হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে; আবার ভাইস ভার্সা। সুতরাং যুক্তরাষ্ট্রকে প্রাইয়রিটি করতে হচ্ছে - কোনটাকে তার কোনটার উপর স্থান দেবে। সেই হিসেবে তারা চীনকে সবচাইতে উপরে রেখেছে। এর নিচে রেখেছে রাশিয়াকে। এর নিচে রেখেছে ব্রিটেনকে। নিজেদের বলয়ে থাকলেও তুরস্ক, সৌদি আরব, পাকিস্তানের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের বয়স চোখে পড়ছে। জাপান-কোরিয়াকে যুক্তরাষ্ট্র কিভাবে কাজে লাগাবে, তা নিয়ে নিশ্চিত নয় কেউই। ভারতের অভ্যন্তরীণ অবস্থা ভালো না; তাই ভারতের পিছনে ভূরাজনৈতিক বিনিয়োগের দীর্ঘমেয়াদি সফলতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
Delete