Saturday, 8 March 2025

ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ ২০২৫ – রাইজ অব এইচটি

০৯ই মার্চ ২০২৫

ডোনাল্ড ট্রাম্পের হোয়াইট হাউজে আগমণ যুক্তরাষ্ট্রে শুধু সরকার পরিবর্তন নয়, ভূরাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিরও পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছে; যার প্রমাণ ন্যাটো, ইউক্রেন এবং মধ্যপ্রাচ্য ইস্যুতে দৃশ্যমান। আটলান্টিকের ওপাড়ে এহেন বড় পরিবর্তনের সন্ধিক্ষণে ঢাকায় এইচটি-র উত্থান একটা উল্লেখযোগ্য ঘটনা। ৭ই মার্চ ২০২৫ সত্যিই ছিল একটা ঐতিহাসিক দিন!


গত ০৭ই মার্চ রমজান মাসের প্রথম জুমআর দিনে ঢাকার বাইতুল মুকাররম মসজিদের উত্তর গেটে হিযবুত তাহরীর বা এইচটি-র মিছিল নিয়ে পুরো দেশব্যাপী ব্যাপক আলোচনার ঝড় উঠেছে। সেকুলার ব্যক্তিত্বদের মাঝে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন যে, নিষিদ্ধ্ব ঘোষণা করা এই দল কিভাবে দিনে দুপুরে এরকম একটা গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ঘোষণা দিয়ে একটা মিছিলের আয়োজন করতে পারে? অনেকেই মন্তব্য করছেন যে, আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের সময় ব্যাপক দমন-পীড়নের মাঝ দিয়ে যাবার পরেও কি করে তারা ১৬ বছর পর এতবড় মিছিলের আয়োজন করতে পেরেছে? অনেকেই আইনশৃংখলা বাহিনীর সমালোচনা করেছেন যে, কেন পুলিশ আরও কঠোর হলো না। কেউ কেউ বলছেন যে, পুলিশ কেন গুলি চালালো না? অবশ্য যারা বুঝতে পেরেছেন যে, এইচটি-র মিছিলে গুলি চালালে এই পুলিশ আর হাসিনা সরকারের জুলুমবাজ পুলিশের মাঝে কোন পার্থক্য থাকে না, তারা কিন্তু অন্ততঃ রয়েসয়ে কথা বলেছেন। তদুপরি অনেকেই বলেছেন যে, পুলিশের উচিৎ ছিল এইচটি-র সদস্যরা যাতে মিছিল শুরুই করতে না পারে, সেই ব্যবস্থা করা। এই কথা বলেও তারা অবশ্য ফেঁসে গেছেন যে, ঠিক এই কাজটাই আওয়ামী সরকার করেছিল বিএনপি-জামাতের বিরুদ্ধে - রাজনৈতিক কর্মকান্ড শুরু করার আগেই সেটাকে পুলিশ এবং গুন্ডাবাহিনী দ্বারা লন্ডভন্ড করে দেয়া। পুলিশ অবশ্য গত সাত মাসের অক্ষমতার রেকর্ড অক্ষুন্ন রেখেই নিজেদের অবস্থানকে তুলে ধরেছে - এখানে তো অনেক সাধারণ মুসল্লী ছিল। অর্থাৎ পুলিশ অন্ততঃ বুঝেছে যে, যখন বহু পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে হাসিনা সরকারের নির্দেশ মান্য করার জন্যে মামলা ঝুলছে, তখন নতুন করে কোন অমানবিক কাজের ফাঁদে আরেকবার পা দেয়াটা বিচক্ষণের কাজ হবে না। তারা অন্ততঃ এটা বুঝেছেন যে, কোন সরকারই স্থায়ী নয় – এমনকি আওয়ামী সরকার - যারা একসময় যখন মনে করতো যে তারা জার্মানির 'থাউজ্যান্ড ইয়ার রাইখ'এর মতো কিছু একটা বাংলাদেশের মাটিতে কায়েম করবে - তাদেরও পতন হয়েছে। সুতরাং আর কাউকেই পুরোপুরিভাবে বিশ্বাস করে আগুনে ঝাঁপ দেয়ার মতো বোকামি তারা করতে রাজি ছিল না। তবে সরকারের চাপ ছিল বলেই তারা কাপুরুষের মতো মিছিলের পেছন থেকে কোন উস্কানি ছাড়াই টিয়ার শেল, সাউন্ড গ্রেনেড এবং লাঠিচার্চের মাধ্যমে হামলা করেছে। এতে মিছিলকারীদের তেমন কোন ক্ষতি না হলেও পুলিশের কপালে কিন্তু আবারও জুলুমবাজের তকমা জুটে গেলো! বেচারা পুলিশ!
 
নিষেধাজ্ঞা না তোলার পরেও এইচটি তাদের কর্মকান্ড চালিয়ে যেতে পেরেছে; এবং একইসাথে ইউনুস সরকার কেন হাসিনা সরকারের জুলুমবাজ নীতিকে চালিয়ে নিলো, সেটার জন্যে ইউনুস সরকারের গণতন্ত্র রক্ষা করার কৌশলও প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। কারণ ইউনুস সরকার যদি শক্তিশালী গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতেই চায়, তাহলে সেটাকে পুলিশী কর্মকান্ডের মাধ্যমে রক্ষা করতে হবে কেন? দুর্বল গণতন্ত্রকে যদি স্ক্যাচে ভর করে চলতে হয়, তাহলে সেটা এইচটি-র বিরুদ্ধে বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে লড়বে কিভাবে? প্রকারান্তরে হাসিনার সিদ্ধান্তকে সমুন্নত রাখতে গিয়ে পুলিশি ব্যবস্থা প্রয়োগ করে সরকার এইচটি-র কাছে বুদ্ধিবৃত্তিক হারই স্বীকার করে নিয়েছে।


এইচটি কতটা সফল ছিল?

এখন প্রশ্ন হলো, এইচটি-র জন্যে এটা কি সফলতা ছিল কিনা? এটা বুঝতে হলে দেখতে হবে যে, তারা এর মাধ্যমে কি করতে চেয়েছে। 'মার্চ ফর খিলাফত' নামের প্রকল্প এবং এর ন্যারেটিভগুলি মোটামুটিভাবে ৩রা মার্চ থেকে পোস্টার আকারে সারা ঢাকা শহরে ছড়িয়ে যেতে থাকে। এতে একদিকে যেমন এইচটি তাদের দলীয় সক্ষমতার প্রমাণ দেয়, তেমনি সমাজের মাঝে তাদের সরাসরি ও চাপা সমর্থনের প্রমাণও সামনে চলে আসে। কারণ অনেক ক্ষেত্রেই তারা দিনের বেলায় পোস্টার লাগিয়েছে; এবং অনেক ক্ষেত্রেই মানুষ তাদেরকে সরাসরি বা পরোক্ষভাবে সহায়তা করেছে। পুলিশ এক্ষেত্রে বর্তমান প্রেক্ষাপটে নীরব ভূমিকা পালন করাটাকেই যুক্তিযুক্ত মনে করেছে। অন্ততঃ আওয়ামী সময়ে এইচটি-র সদস্যদের ধরে ধরে আয়নাঘরে ছুঁড়ে ফেলার মতো বাজে কাজের দুর্গন্ধ তাদের ইউনিফর্মে যখন লেগে আছে, তখন পুলিশ বক্সের উপর এইচটি-র পোস্টার লাগানোতে বাধা দিয়ে সেই জঘন্য স্মৃতি তারা আর সামনে আনতে চায়নি। তাই পোস্টার লাগানো চলেছে; যে যা কিছুই মনে করুক; এটাই বাস্তবতা। যারা অভিযোগ করছেন, তাদেরকে বাস্তবতা মেনে নিতেই হবে।

মোটকথা এইচটি বাস্তবতাকে তাদের পক্ষে পরিবর্তন করিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছে; যা অবশ্য ২০২৪এর ০৫ই অগাস্ট-পরবর্তী পরিস্থিতি দ্বারা প্রভাবিত হলেও ১৫ বছরের শক্তিশালী রাজনৈতিক কর্মকান্ডের ফলাফল হিসেবেই এসেছে। কেননা, আওয়ামী সময়ের ১৫ বছর তারা যদি কোন কাজ করতে না-ই পারতো, তাহলে কেউই বলতে পারতো না যে, এইচটি ০৫ই অগাস্টের অভ্যুত্থানের অংশীদার। আর কেউ যদি এইচটি-র নাম না-ই জানতো, তাহলে তারা আওয়ামী লীগের পতনের পরপরই বাইতুল মুকাররমের উত্তর গেটে দু'টা বড় বড় মিছিল করতে সক্ষম হতো না। এছাড়াও তারা গত ২৯শে নভেম্বর একটা আন্তর্জাতিক অনলাইন কনফারেন্সও করেছে। প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এইচটি-র উপর থেকে হাসিনা সরকারের দেয়া নিষেধাজ্ঞা তুলে না নিলেও এই কর্মকান্ডগুলিকে আটকানো সম্ভব হয়নি। অর্থাৎ নিষেধাজ্ঞা না তোলার পরেও এইচটি তাদের কর্মকান্ড চালিয়ে যেতে পেরেছে; এবং একইসাথে ইউনুস সরকার কেন হাসিনা সরকারের জুলুমবাজ নীতিকে চালিয়ে নিলো, সেটার জন্যে ইউনুস সরকারের গণতন্ত্র রক্ষা করার কৌশলও প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। কারণ ইউনুস সরকার যদি শক্তিশালী গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতেই চায়, তাহলে সেটাকে পুলিশী কর্মকান্ডের মাধ্যমে রক্ষা করতে হবে কেন? দুর্বল গণতন্ত্রকে যদি স্ক্যাচে ভর করে চলতে হয়, তাহলে সেটা এইচটি-র বিরুদ্ধে বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে লড়বে কিভাবে? প্রকারান্তরে হাসিনার সিদ্ধান্তকে সমুন্নত রাখতে গিয়ে পুলিশি ব্যবস্থা প্রয়োগ করে সরকার এইচটি-র কাছে বুদ্ধিবৃত্তিক হারই স্বীকার করে নিয়েছে।
 
তারা যে ব্যাপারটা ধরতেই পারেনি তা হলো, এইচটি-র পক্ষে বা বিপক্ষে যেকোন কিছু লিখলেই সেটা এইচটি-কে সহায়তা করবে। কারণ এইচটি হলো একটা আদর্শিক দল; যারা সকল মুসলিমকে নিজেদের দাওয়ার আওতায় ধরে। অর্থাৎ তারা আওয়ামী লীগ, বিএনপি, সরকারি-বেসরকারি চাকুরিজীবি, ব্যবসায়ী, সামরিক অফিসার, শিক্ষক, চিন্তাবিদ, যে কাউকে দাওয়া করে; বিশেষ করে যারা সমাজের এলিট শ্রেণি। বর্তমানে কেউ কেউ বলছে যে, এইচটি-র বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সাথে সখ্যতা রয়েছে। আবার আরেক দল বলছে যে, এইচটি-র পেছনে আওয়ামী লীগের পান্ডারা লুকিয়ে আছে। 


এইচটি-র ব্যাপারে হাসিনা সরকারের নীতি

গত ১৫ বছর হাসিনা সরকার মার্কিন ইন্টেলিজেন্সের গাইডলাইন অনুযায়ী চলেছে। এইচটি হলো একটা আদর্শিক সংগঠন। তাদেরকে হয় আদর্শিক কাউন্টার-ন্যারেটিভের মাধ্যমে আটকাতে হবে; নতুবা তাদের কথা জনগণের কাছে যাতে একেবারেই পৌঁছাতে না পারে, সেটার ব্যবস্থা করতে হবে। প্রথমটা বেশ কঠিন। কারণ এইচটি কোন জিহাদী গ্রুপ নয়; যার বিরুদ্ধে সহজেই কোন ন্যারেটিভ তৈরি করে সাধারণ মানুষকে বুদ্ধিবৃত্তিক আলোচনা থেকে দূরে রাখা সম্ভব। একারণে হাসিনা সরকার দ্বিতীয় পদ্ধতিটা অনুসরণ করেছে; যদিও তাদের সামনে আর কোন পদ্ধতিও খোলা ছিল না। কারণ ২০০৯ সালে বিডিআর বিদ্রোহে ভারত এবং আওয়ামী লীগের সরাসরি সম্পৃক্ততা থাকার ব্যাপারে লিফলেট ইস্যু করার পর এইচটি আওয়ামীদের চক্ষুশূলে পরিণত হয়। একইসাথে এইচটি হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে তাদের কাছে হস্তান্তরের জন্যে সামরিক বাহিনীর অফিসারদের দিকে আহ্বান করতে থাকে। নিষেধাজ্ঞা আসাটা ছিল প্রায় অবধারিত। এটা জানা সত্ত্বেও তারা তাদের অবস্থান থেকে সরে আসেনি এবং পরবর্তীতে অনেক বছর ধরে ব্যাপক জুলুম নির্যাতন সহ্য করেছে। বাংলাদেশের আইনে কোন অপরাধ প্রমাণিত না হলেও কোন কারণ ছাড়াই তাদের সদস্যদেরকে মাসের পর মাস, এমনকি বছরের পর বছর জেলে পুরে রাখা হয়েছিল। আয়নাঘরে আটকে রেখে শারীরিক ও মানসিকভাবে মারত্মক নির্যাতন করা হয়েছিল।

তবে এই ১৫ বছরের সবচাইতে উল্লেখযোগ্য দিক ছিল টোটাল মিডিয়া ব্ল্যাকআউট। সকল মিডিয়াকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছিলো, যাতে করে কোন মিডিয়াতে এইচটি-র কোন কর্মকান্ড না আসে। এই সুযোগে হাসিনা সরকার এইচটি-র বিরুদ্ধে বিভিন্ন মিথ্যা তথ্য ছড়াতে সক্ষম হয়েছিলো। কারণ জগগণ শুধু সরকার-নিয়ন্ত্রিত মিডিয়াই দেখতে পেতো। এরপরেও এইচটি এই সময়ে তাদের কর্মকান্ডকে চালিয়ে নিতে পেরেছে; যা কিনা যে কোন সাধারণ রাজনৈতিক দলের জন্যে প্রায় অসম্ভব কাজ। এক্ষেত্রে অন্যান্য দেশে এইচটি-র অভিজ্ঞতা কাজে লেগেছে। কারণ এইচটি বিভিন্ন দেশে ভয়াবহতম একনায়ককে মোকাবিলা করেছে; যাদের মাঝে ছিল ইরাকের সাদ্দাম হোসেন, লিবিয়ার মুয়াম্মার গাদ্দাফি, মিশরের হোসনি মুবারক এবং উজবেকিস্তানের ইসলাম কারিমভ। গ্লোবাল আদর্শিক দল হবার কারণে তারা বাংলাদেশে ১৫ বছরের আওয়ামী দুঃশাসনের মাঝে শুধু টিকেই যায়নি; নিজেদের দলকে আরও বড় ও মজবুত করেছে। ঢাকার স্বনামধন্য স্কুল-কলেজের ছাত্ররা কালেমা খচিত পতাকা নিয়ে মিছিল করার পর দিল্লীতে অনেকেরই ঘাম ঝড়ে গিয়েছে। কারণ ভারত মনে করেছে যে, এটা এইচটি-ই করেছে। ঢাকায় জেনারেশন-জেড (জেন-জি)এর পতাকা মিছিল দিল্লীর জন্যে ছিল অশনি সংকেত।

০৫ই অগাস্টের পরিবর্তনের পর এইচটি-র জন্যে সবচাইতে বড় ব্যাপার ছিল প্রকাশ্যে দাওয়ার কাজ করতে পারা। এটা অবশ্য পুলিশ এবং অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনীর ধ্বংসপ্রাপ্ত হওয়ার কারণেই সম্ভব হয়েছে। তথাপি মিডিয়া ব্ল্যাকআউট কিন্তু ঠিকই চলেছে। এই ব্যাপারটা পুরোপুরিভাবে পরিবর্তন হয়ে গেছে, যখন 'মার্চ ফর খিলাফত' অনুষ্ঠানের ব্যাপারে পুলিশের বিবৃতি আসে এবং সকল মিডিয়া এটাকে ফলাও করে প্রচার করে। এটা ঠিক যে, পুলিশের এই নিষেধাজ্ঞার কারণে এইচটি-র অনেক সমর্থকই হয়তো মিছিলে যোগ দেয়নি। তথাপি যে পরিমাণ প্রচার পুলিশ এবং মিডিয়ার মাধ্যমে তারা পেয়েছে, তাতে অনুষ্ঠানের আগেই তাদের অর্ধেক বিজয় হয়ে গিয়েছে। অর্থাৎ বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে এইচটি-র বড় একটা বিজয় হয়ে গিয়েছে অনুষ্ঠানের আগেই। আর অনুষ্ঠানের দিন জুমআর নামাজ শেষ হবার সাথেসাথেই যখন দেখা গেলো যে, হাজারো মুসল্লির বিশাল জনস্রোত এইচটি-র সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেছে, তখন বাকি অর্ধেক বিজয়ও তারা পেয়ে গেছে। কারণ নিষেধাজ্ঞার পরেও এত মানুষ এই মিছিলে যোগ দেবে, এটা কেউ কল্পনাও করতে পারেনি!

বাকিটা ছিল ইতিহাস। যে এইচটি ১৫ বছরে মিডিয়াতে আসতে পারেনি, তারা ৭ই মার্চ ছিল সকল মিডিয়ার প্রধান শিরোনাম। প্রকৃতপক্ষে সেদিন এইচটি ছিল বাংলাদেশের একমাত্র শিরোনাম! এটা এই দলকে কতটা এগিয়ে নিয়ে গেছে, তা যারা ভূরাজনীতি নিয়ে চিন্তাভাবনা করেন তাদের বোঝার কথা। এইচটি-র টার্গেট অডিয়েন্স ছিল মূলতঃ সামরিক বাহিনীর সদস্যরা; যারা এইচটি-র সক্ষমতার একটা চাক্ষুশ প্রমাণ পেলো। অন্ততঃ তাদের টার্গেট অডিয়েন্সের কাছে এইচটি-র সন্মান যে বহুগুণে বেড়েছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
 
হাসিনা সরকারের ১৫ বছরের দমন পীড়নের পরেও এইচটি যখন এতবড় জনসমাগম করতে সক্ষম হয়েছে, তখন এদেশের সেকুলার সমাজ ধ্বংসপ্রাপ্ত পুলিশকে দোষারোপ করেছে; যেখানে সকলেই জানে যে, সারা দেশের কোথাও নিরাপত্তা দেয়ার সক্ষমতা পুলিশের নেই। কোন বুদ্ধিবৃত্তিক কাউন্টার-ন্যারেটিভ বের করতে না পেরে হাসিনা সরকারের পদাঙ্ক অনুসরণ করে জুলুমবাজ নীতিকে অগ্রাধিকার দেয়ার ব্যাপারটা সেকুলার চিন্তাবিদদের বুদ্ধিবৃত্তিক দেউলিউয়াত্বকেই তুলে ধরে। অথচ এইচটি-র কন্ঠরোধ করার এই নীতিতে তাদের গণতান্ত্রিক আদর্শের প্রধান একটা স্তম্ভ বাক-স্বাধীনতা যে ভূলুন্ঠিত হয়ে যাচ্ছে, সেদিকে তাদের খেয়ালই নেই।


এইচটি-র বিরুদ্ধে প্রচারণা - লাভ কার?

বাংলাদেশের পুরো সেকুলার সমাজের ব্যাপক প্রচেষ্টা শুরু হয়ে গেলো কিভাবে এইচটি-কে জনগণের সামনে খারাপভাবে তুলে ধরা যায়। সত্যাসত্য অনেক কিছুই সোশাল মিডিয়াতে ভরিয়ে দিতে থাকে অনেকে। অথচ তারা যে ব্যাপারটা ধরতেই পারেনি তা হলো, এইচটি-র পক্ষে বা বিপক্ষে যেকোন কিছু লিখলেই সেটা এইচটি-কে সহায়তা করবে। কারণ এইচটি হলো একটা আদর্শিক দল; যারা সকল মুসলিমকে নিজেদের দাওয়ার আওতায় ধরে। অর্থাৎ তারা আওয়ামী লীগ, বিএনপি, সরকারি-বেসরকারি চাকুরিজীবি, ব্যবসায়ী, সামরিক অফিসার, শিক্ষক, চিন্তাবিদ, যে কাউকে দাওয়া করে; বিশেষ করে যারা সমাজের এলিট শ্রেণি। বর্তমানে কেউ কেউ বলছে যে, এইচটি-র বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সাথে সখ্যতা রয়েছে। আবার আরেক দল বলছে যে, এইচটি-র পেছনে আওয়ামী লীগের পান্ডারা লুকিয়ে আছে। যেটা এরা কেউই চিন্তা করতে পারছে না তা হলো, এইচটি-র এব্যাপারে কোন মাথাব্যাথা থাকবে না। কারণ এত বছরে এইচটি-র কোন ন্যারেটিভে দেখা যাবে না যে, তারা অন্য কারুর কর্মকান্ডকে অনুসরণ করে নিজেদের কর্মকান্ডকে সাজিয়েছে। তারা সর্বদাই নিজেদের অদর্শকে সমুন্নত রেখে তাদের লক্ষ্য ঠিক করেছে এবং সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নে বিভিন্ন কর্মকান্ড করেছে। অর্থাৎ তারা সর্বদাই 'প্রোএকটিভ' থেকেছে; কখনোই 'রিএকটিভ' হয়নি। কাজেই এটা আশা করা যায় না যে, তারা কারুর মিথ্যা তথ্য ছড়ানোতে 'রিএকশন' দেখাবে। বরং এতে এইচটি-র ব্যাপারে সমাজে আরও বেশি কৌতুহল তৈরি হবে এবং আরও বেশি আলোচনা হবে; যেখানে এইচটি-কে কেউই বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে হারাতে সক্ষম হবে না। কারণ তাদের বিরুদ্ধে কাউন্টার-ন্যারেটিভ তৈরি করাটা যথেষ্টই কঠিন। মোটকথা, এর মাধ্যমে এইচটি আবারও বাস্তবতাকে পরিবর্তন করতে সক্ষম হয়েছে। একসময় তাদের ব্যাপারে কেউ কোন কথা বলতো না; আর এখন তাদের কথা সকলের মুখে মুখে। এটা এইচটি-র জন্যে অনেক বড় একটা বিজয়।

পুরো বাংলাদেশের মানুষ অবাক হয়ে দেখেছে কিভাবে এইচটি ঘোষণা দিয়ে বাইতুল মুকাররমে মিছিল করেছে; সেটাও আবার পুলিশের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও। হাসিনা সরকারের ১৫ বছরের দমন পীড়নের পরেও এইচটি যখন এতবড় জনসমাগম করতে সক্ষম হয়েছে, তখন এদেশের সেকুলার সমাজ ধ্বংসপ্রাপ্ত পুলিশকে দোষারোপ করেছে; যেখানে সকলেই জানে যে, সারা দেশের কোথাও নিরাপত্তা দেয়ার সক্ষমতা পুলিশের নেই। কোন বুদ্ধিবৃত্তিক কাউন্টার-ন্যারেটিভ বের করতে না পেরে হাসিনা সরকারের পদাঙ্ক অনুসরণ করে জুলুমবাজ নীতিকে অগ্রাধিকার দেয়ার ব্যাপারটা সেকুলার চিন্তাবিদদের বুদ্ধিবৃত্তিক দেউলিউয়াত্বকেই তুলে ধরে। অথচ এইচটি-র কন্ঠরোধ করার এই নীতিতে তাদের গণতান্ত্রিক আদর্শের প্রধান একটা স্তম্ভ বাক-স্বাধীনতা যে ভূলুন্ঠিত হয়ে যাচ্ছে, সেদিকে তাদের খেয়ালই নেই। অপরদিকে সেকুলার রাজনৈতিক দলের সমর্থকেরা হতবিহ্বল হয়ে একে অপরকে দোষারোপ করছে - বলছে যে, এইচটি উমুক বা তুমুক দলের সাথে রয়েছে। এইচটি কিছুই বলবে না। তারা তো আদর্শিক দল হবার কারণে সকলকেই দাওয়া করে। তাই তারা সকলকেই তাদের নিজেদের লোক মনে করে। কাজেই কেউ যদি বলে যে, এইচটি ওদের লোক, তারা কখনোই এতে ব্যাথিত হবে না। কারণ এতে তাদের সংখ্যা শুধু বৃদ্ধিই পায়। শুধুমাত্র এই বাস্তবতাটুকু অনুধাবন করার সক্ষমতাও যে বাংলাদেশের বেশিরভাগ বুদ্ধিজীবিদের নেই, সেটা আজ প্রমাণিত সত্য। বাংলাদেশের পুরো সেকুলার সমাজ আজকে এইচটি-র কাছে বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে পরাজিত! এটা ভূরাজনৈতিক দিক থেকেও দিনটাকে গুরুত্বপূর্ণ করেছে। কারণ প্রথমতঃ এইদিনের মিছিল ছিল ৩রা মার্চের খিলাফত পতন দিবসের ১০১তম (ইংরেজি ক্যালেন্ডারে) বর্ষপুর্তি উপলক্ষে; যা সারা বিশ্বে রমজানের প্রথম জুমআর দিনে একযোগে পালিত হয়েছে। আর দ্বিতীয়তঃ ঢাকায় এইচটি-র এতবড় উত্থান ওয়াশিংটন ও দিল্লীর জন্যে বড় একটা চিন্তার বিষয়। ওয়াশিংটনে যখন বড় রকমের পরিবর্তন চলছে, দিল্লীর নেতৃত্ব তখন শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে বিপদ গুণছে। ০৫ই অগাস্টের পর থেকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারত বিভিন্ন সাবভার্সনের কাজ করে বাংলাদেশ সরকারকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ছাড় দিতে বাধ্য করেছে। তথাপি এক্ষেত্রে হোয়াইট হাউজে বাইডেন সরকার থাকার সময় ওয়াশিংটন থেকে বাংলাদেশের উপর রাজনৈতিক চাপ বড় ভূমিকা রেখেছিল। এখন ডোনাল্ড ট্রাম্পের হোয়াইট হাউজে আগমণ যুক্তরাষ্ট্রে শুধু সরকার পরিবর্তন নয়, ভূরাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিরও পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছে; যার প্রমাণ ন্যাটো, ইউক্রেন এবং মধ্যপ্রাচ্য ইস্যুতে দৃশ্যমান। আটলান্টিকের ওপাড়ে এহেন বড় পরিবর্তনের সন্ধিক্ষণে ঢাকায় এইচটি-র উত্থান একটা উল্লেখযোগ্য ঘটনা। ৭ই মার্চ ২০২৫ সত্যিই ছিল একটা ঐতিহাসিক দিন!

6 comments:

  1. HT have the capability to rule the world, they proved it.

    ReplyDelete
    Replies
    1. Well, HT hasn't had the chance to rule a state up to now. So, from one point, they are still untested. But it can be seen that it was the same for any state leadership at the start. During the 16th century, who thought that Britain would later rule the entire world? Or, in 1775, who thought that USA would later rule the world? The point is, everyone is untested until they get a chance to show their performance. And until someone practically shows how capable they are, you have look at their words and activities; e.g. whether their words and deeds are aligned or not; or whether they deviate from their ideology over time; or whether they are willing to sacrifice to establish their ideology. From these criteria, you can try to judge anyone who is intent on establishing a state.

      On another point, the current system led by the West is crumbling. Indeed, since the advent of Donald Trump in the White House, it became much clearer that Western Liberalism is basically dead. This is now a talking point in all levels of Western think-tanks. So, when the current system is showing its age, it may be the right time to look for alternatives. At least, this is what sincere people should look for. Think about it - when in 1991 Soviet Union collapsed, did anyone say that Socialism needs to be supported or kept alive on a crutch? No! Then why would someone want to keep Secular Capitalism alive on crutch? This is an intellectual debate that needs to be present in all levels of a thinking society.

      Delete
  2. হিজবের ব্যাপারে ব্যাপক নেতিবাচক প্রচারণা চলছে। মানুষের এখনো অনেক ভূল ধারণা আছে। অধিকাংশই নেগেটিভ?? এইটা ডিল করবে কীভাবে?? রাস্তায় বা মসজিদে গেলেই মার খাওয়ার সম্ভাবনা আছে।
    টার্গেট অডিয়েন্স আর্মি এইটা দ্বারা কী বুঝালেন??চীফের অনুমতিছাড়া কি সম্ভব??

    খিলাফাহ আসলে সবার আগে বিদেশ মিশন বাতিল হবে এববং গার্মেন্টসসেক্ট্অর বন্ধ হিবে। যদিও গার্মেন্টসসেকটর এ অনেক শোষণ হয়বাট একটা পাইপ্লাইন তো কাগবে। এই দুইটা বিষয়কে কীভাবে ট্যাকেল দেওয়া হবে

    ReplyDelete
    Replies
    1. প্রথমতঃ এইচটি-র লীডারশিপ এই উত্তরগুলি দিতে পারবে। হয়তো তাদেরকে জিজ্ঞেস করাটাই উত্তম। দ্বিতীয়তঃ র‍্যাশনাল আলোচনায় যে ব্যাপারটা বলা যায় তা হলো, এইচটি-র বিরুদ্ধে নেগেটিভ প্রপাগান্ডা তো আজকের নয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই চলেছে। অনেকেই প্রচার করতে চেষ্টা করেছে যা তারা ইহুদিদের এজেন্ট। এই অভিযোগ অবশ্য ধোপে টেকেনি। কারণ মাত্র কিছুদিন আগেই ব্রিটেন তাদেরকে ব্যান করেছে ইস্রাইলের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনের পক্ষে মিছিল আয়োজন করার 'অপরাধে'। এদেশের কিছু মানুষ আবার প্রশ্ন করে যে, তাদের রং কমলা কেন, বা তাদের রংএর সাথে হিন্দুত্ববাদীদের রংএর মিল কেন? এটাও ধোপে টেকেনা, যখন দেখা যায় যে, এইচটি ভারতের বিরুদ্ধে মিছিল করে ভারতকে শত্রু রাষ্ট্র আখ্যা দেয়ার দাবি তুলেছে; যা কিনা বাংলাদেশ সরকারও করতে পারেনি। আর তৃতীয়তঃ ১৫ বছর ধরে আওয়ামী দুঃশাসনের মাঝেও তারা নিজেদের অবস্থানকে ধরে রেখে যে তাদের কর্মকান্ডকে প্রসারিত করতে পেরেছে, সেটাই তো একটা আশ্চর্য্য ব্যাপার! এই ব্যাপারে বরং স্টাডি হওয়া প্রয়োজন যে, তারা কিভাবে কোন শক্তির বলে এত অত্যাচারের পরেও একটা দলকে শুধু টিকিয়েই রাখেনি, প্রসারিতও করেছে! কাজেই তারা মার খাওয়ার ভয়ে কোন কাজ করা থেকে বিরত থাকবে - এটা বিশ্বাস করা কঠিন।

      টার্গেট অডিয়েন্স সেনাবাহিনী; কারণ এটা তাদের কর্মপন্থা বা মেথড। তারা যে খিলাফত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে, সেই প্রতিষ্ঠা করার কর্মপদ্ধতি হলো নুসরাহ বা সাহায্য। এই সাহায্য তারা চায় সামরিক বাহিনীর কাছ থেকে। এটা সামরিক বাহিনীর কোন লেভেল থেকে তারা চায়, সেটা বলা মুস্কিল। বাংলাদেশের ইতিহাসেই অবশ্য অনেকগুলি উদাহরণ রয়েছে; যেগুলি বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী ইতিহাস পড়লেই জানা যায়। অভ্যুত্থান ছাড়া জিয়াউর রহমান কিভাবে ক্ষমতায় গেলেন? ৭ই নভেম্বর ১৯৭৫এর অভ্যুত্থান না হলে তো বিএনপি তৈরিই হতো না! জাতীয় পার্টিও তো তৈরি করেছিলেন জেনারেল এরশাদ; যিনি সামরিক শক্তিবলে ক্ষমতা নিয়েছিলেন। ২০০৭ সালের ১১ই জানুয়ারিও আরেকটা অভ্যুত্থান হয়েছিল; যার পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছিল ২০০৮-০৯ সালে। তবে এটা বলাই বাহুল্য যে, সামরিক বাহিনীতে এইচটি-র ব্যাপক সমর্থন রয়েছে। এটা ভারতীয় সরকারের বিভিন্ন রিপোর্ট এবং বক্তব্যেও বারংবার এসেছে। তারা বিভিন্ন দেশে ক্ষমতা নেয়ার বেশ কাছাকাছি গিয়েছিল বলেও শোনা যায়।

      বিদেশ মিশন বা গার্মেন্টস-এর ব্যাপারটাও এইচটি-র লীডারশিপের কাছে জিজ্ঞেস করতে পারেন। তবে র‍্যাশনাল দৃষ্টিতে দেখলে বলা যায় যে, একটা রাষ্ট্র যদি অন্য দেশের মানুষের গায়ের জামাকাপড় বানানোর মাঝে নিজেদের গর্ব খোঁজে, তাহলে তারা জাতি হিসেবে নিজেদের সুবিচার করেনি। জামা-জুতা-আন্ডারওয়্যার বানিয়ে কেউ বড় হয়নি। শক্তিশালী রাষ্ট্র হতে গেলে স্ট্র্যাটেজিক ইন্ডাস্ট্রির ছাড়া কোন গত্যন্তর নেই। এই ব্লগে এব্যাপারে অনেকগুলি লেখা রয়েছে। নিজেদের স্ট্র্যাটেজিক ইন্ডাস্ট্রি গড়ে তোলার মাধ্যমে রাষ্ট্রই যে শুধু শক্তিশালী হবে না, কর্মসংস্থানও হবে। গার্মেন্টস শিল্পে যারা কাজ করে, তারা তখন কাজ করবে স্ট্র্যাটেজিক ইন্ডাস্ট্রিতে। এতে অবাক হবার কিছু নেই। যুক্তরাষ্ট্র দুনিয়ার সুপারপাওয়ার হয়েছে, কারণ তারা ফ্লাওয়ার মিলের মেশিনারি তৈরি করা কারখানাতেও নৌবাহিনীর জন্যে ল্যান্ডিং শিপ তৈরি করেছিল! সেই ল্যান্ডিং শিপ সমুদ্রে নেয়ার জন্যে খাল কাটা হয়েছে এবং জাহাজ রাস্তার উপরেও ওঠাতে হয়েছিল! তারা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ৪৫ দিনে একটা ১০ হাজার টনের কার্গো জাহাজ তৈরি করে রেকর্ডও করেছিল! অর্থাৎ ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়! বড় হতে হলে আকাংক্ষাকেও বড় করতে হবে!

      Delete
  3. অতীতে দেখা গিয়েছে হিজবুত অনেক সময় আর্মিদের দ্বারা ইউজড হইসে। যেমন লিবিয়ায়। জেনারেল নামতে বলসে, নামার পরে ফায়ার করা হইসে। জোলানি হিজবুতের কাছ থেকে অনেক সাহায্য নিয়েছে বাট ক্ষমতায় এক্সাওয়ার পর ডিজোউন করসে৷ একই কথা তালেবের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। আ একই গর্ত্তে দুইবার পরছে না এর গ্যারান্টি ককি?? পিলখানা ম্যাসাক্রের পরে আর্মিকে অনেক হেল্প করেছে হিজব বাট তারই আয়না ঘরে আটকে রেখে নির্যাতন করেছে।

    ReplyDelete
    Replies
    1. প্রথমতঃ লিবিয়া, জোলানি, তালেবানের ব্যাপারে এমন তথ্যের ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া কঠিন। কাজেই না জেনে কোন কমেন্ট করাটা সমীচিন হবে না।

      দ্বিতীয়তঃ পীলখানা ষড়যন্ত্রের ব্যাপারে এইচটি যে সরব ছিল, তা নিশ্চিত। তারা সেসময় লিফলেট ইস্যু করেছিল। আপনি তাদের লীডারশিপকে জিজ্ঞেস করলে তারা হয়তো আপনাকে সেই লিফলেট দিতে পারবে। কিন্তু সেনাবাহিনীকে তারা সহায়তা করেছে - এরকম কোন তথ্য সম্পর্কে নিশ্চিত করে বলা যাবে না। সেনাবাহিনী বা এইচটি কেউ-ই এব্যাপারে কোন কথা বলবে বলে মনে হয় না।

      তৃতীয়তঃ সেনাবাহিনী এইচটি-র সদস্যদের আটকে রেখে নির্যাতন করেছে - এই তথ্য খুব সম্ভবতঃ মিথ্যা অথবা উদ্দেশ্য প্রণোদিত। যারা এইচটি-র সাথে সেনাবাহিনীর সম্পর্ক খারাপ করতে চায়, তারা সেটা চাইতে পারে। কিছু ব্যক্তির বাজে কাজের জন্যে একটা বাহিনীকে কালার করার চেষ্টাটা রাষ্ট্রকে দুর্বল করার ষড়যন্ত্রের অংশ। যেমনটা কেউ কেউ করতে চেয়েছিল ২০০৯ সালে বিডিআর বিদ্রোহের সময়। তারা বিডিআর-এ সাধারণ সেনাদেরকে দিয়ে অফিসারদের রক্ত ঝড়িয়েছে এবং অফিসারদের পরিবারবর্গকে লাঞ্ছিত করেছে। এই একই কাজটা তারা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মাঝে ছড়িয়ে দিতে চেয়েছিল; যাতে করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী চিরকালের জন্যে পঙ্গু হয়ে যায়। ১৯৭৫ সালেও এরকম চেষ্টা করা হয়েছিল। তারা স্লোগান দিয়েছিল - "সিপাই সিপাই ভাই ভাই; অফিসারদের রক্ত চাই"! এরকম ভয়াবহতম ষড়যন্ত্র থেকেও আল্লাহ এই বাহিনীকে রক্ষা করেছেন। আল্লাহর রহমত না থাকলে এই বাহিনী বহু আগেই ধ্বংস হয়ে যেতো! কাজেই আয়নাঘরের সাথে সেনাবাহিনীকে সংযুক্ত করার চেষ্টাটা নিছক রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্র।

      Delete